আব্দুল আলীম - কেচুয়ারপুর, শরীয়তপুর
৫০২৪. প্রশ্ন
আমাদের গ্রামে একটি পাঞ্জেগানা মসজিদ আছে। মসজিদের জন্য যিনি জমি ওয়াকফ করেছিলেন। ওয়াকফ করার অনেক আগে (২০-২৫ বছর) সেই জমিতে তার দাদাকে কবর দেওয়া হয়েছিল। ওয়াকফ করার পর সেই জমিতে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদের শেষের এক-দুই কাতার সেই কবরের উপর নির্মিত হয়েছে এবং এভাবেই দীর্ঘদিন থেকে নামায আদায় করা হচ্ছে। এখন কেউ কেউ বলছেন, কবরের উপর মসজিদ বানানো হারাম। তাই অনেকে মসজিদটি ভেঙ্গে ফেলতে চাচ্ছেন। অথচ মসজিদের এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে নতুন করে মসজিদ নির্মাণ করা যাবে। মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাচ্ছি, আসলেই কি উক্ত মসজিদটি ভেঙ্গে ফেলতে হবে?
আরেকটি বিষয় জানতে চাচ্ছি, সম্প্রসারণের প্রয়োজনে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ করা যাবে কি না?
উত্তর
প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী ঐ কবরটি যেহেতু অনেক পুরাতন ছিল তাই সেটি সমান করে তাতে মসজিদ নির্মাণ করা জায়েয হয়েছে। মসজিদে নববীর নীচেও মুশরিকদের কবর ছিল। সেগুলোকে সমান করে তার উপর মসজিদে নববী নির্মাণ করা হয়েছে। সুতরাং নিচে কবর ছিল এই অজুহাতে প্রশ্নোক্ত মসজিদের বিপক্ষে কথা বলা এবং তা ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা অন্যায়। জেনে রাখা দরকার যে, প্রশ্নোক্ত মসজিদটি শরয়ী মসজিদ। সুতরাং এর বিরুদ্ধে কথা বলা মসজিদের বিরোধিতা করা এবং তা ভেঙে ফেলা মসজিদ ভাঙ্গার শামিল।
উল্লেখ্য, মালিকানাধীন জমির কবরের লাশ পুরাতন হয়ে মাটির সাথে একেবারে মিশে যাওয়ার প্রবল ধারণা হলে সে কবর সমান করে দিয়ে তাতে মসজিদ বানানো বা সম্প্রসারণ করার সুযোগ রয়েছে।
আর প্রশ্নে ‘কবরের উপর মসজিদ বানানো হারাম’ হওয়ার যে কথা বলা হয়েছে তা কবর অক্ষত রেখে (অর্থাৎ কবরের চিহ্ন বহাল রেখে) তাতে মসজিদ বানানোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তাই পুরাতন কবরকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে তার উপর মসজিদ নির্মাণ করতে কোনো দোষ নেই।
-সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫২৪, ৫৩১; উমদাতুল কারী ৪/১৭৯; শরহে মুসলিম, নববী ৫/৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫৮৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৭; রদ্দুল মুহতার ২/২৩৩; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী পৃ. ৩৩৬