রবিউস আখির ১৪৪১ || ডিসেম্বর ২০১৯

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক - পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম

৪৯৬৯. প্রশ্ন

আমাদের সমাজে বিয়ের পূর্বে কিছু ব্যাপার ইদানীং লক্ষ্য করা যাচ্ছে; যেমন ক. বরপক্ষ যখন মেয়ে দেখতে যায় এবং কথা প্রসঙ্গে মেয়ের উচ্চতা সম্পর্কে জানতে চায় তখন বলা হয় যে, মেয়ের উচ্চতা ৫ ফুট ১ ইঞ্চি। যদিও বাস্তবে মেয়ের উচ্চতা চার ফুট দশ ইঞ্চি। খ. অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, শ্যামবর্ণের মেয়েদের বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার করে ফর্সা হিসেবে বরপক্ষের সামনে উপস্থাপন করা হয়। গ. আবার ছেলের মাসিক বেতনের ব্যাপারে কথা উঠলে যা প্রকৃত বেতন তার থেকে অনেক বাড়িয়ে বলা হয়।

এখন সম্মানিত মুফতী ছাহেবানের নিকট আমার জানার বিষয় হচ্ছে, উল্লিখিত বিষয়গুলো বিবাহের মত একটা পবিত্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে ধোঁকা বা প্রতারণার শামিল কি না এবং এই ধরনের ইস্যু নিয়ে বিয়ের পর সমস্যা দেখা দিলে কী করা উচিত?

 

উত্তর

বিবাহ শরীয়তের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান। এর সাথে জড়িয়ে আছে পুরো জীবনের নানা গুরুত্বপূর্ণ দিক। তাই তা খুবই স্বচ্ছতা ও আমানতদারীর সাথে সম্পন্ন হওয়া জরুরি। হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে বিশেষ নির্দেশনা এসেছে। এক বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

أَحَقّ الشّرُوطِ أَنْ تُوفُوا بِهِ مَا اسْتَحْلَلْتُمْ بِهِ الفُرُوجَ.

বিবাহকেন্দ্রিক শর্ত ও অঙ্গিকারগুলো অন্যান্য যে কোনো শর্ত ও অঙ্গিকারের চেয়ে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ও পূরণ করার সর্বাধিক দাবিদার। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২৭২১

বিবাহের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের বিষয়গুলোর যথাযথ ও বাস্তবসম্মত বর্ণনা দেওয়া আমানতদারীর অন্তর্ভুক্ত। এর বিপরীত করাটা খেয়ানত ও বড় ধরনের গুনাহ। আর এ কারণে পরবর্তীতে দাম্পত্য জীবনে নানা ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তাই ভবিষ্যতে বৈবাহিক সম্পর্কটিকে ঝামেলামুক্ত রাখতে এবং সর্বপরি নিজেদের দ্বীন ও ঈমানের হেফাজতের জন্য এসব মিথ্যা ও ধোঁকা থেকে বিরত থাকা জরুরি।

ছেলে পক্ষ থেকে হোক বা মেয়ে পক্ষ থেকে হোক মিথ্যা, ধোঁকা তো এমনিতেই মারাত্মক গোনাহের কাজ। এ ধরনের ক্ষেত্রে তা আরো জঘন্যতম। কোথাও এমন ঘটনা ঘটে গেলে সার্বিক অবস্থা জানিয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য আলেমের পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে হবে।

-আলমাবসূত, সারাখসী ৫/৯৮, ৩০; ফাতহুল কাদীর ৪/১৩৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/২৪৬

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন