সফর ১৪৪১ || অক্টোবর ২০১৯

আবদুল্লাহ - সিরাজগঞ্জ, ঢাকা

৪৮৯৬. প্রশ্ন

আমার মামাতো বোনের তুলনায় ওর স্বামীর বয়স অনেক বেশি ছিল। সে কারণে ওদের মধ্যে কোনো বিষয়ে কথা কাটাকাটি হলেই আমার মামাতো বোন বলত, তুমি যদি আমাকে তালাক দিয়ে দাও তাহলে আমার কোনো সমস্যা নেই। গত সপ্তাহে আবার ঝগড়া হলে আমার মামাতো বোন কথার একপর্যায়ে বলে উঠে, তাহলে তুমি আমাকে তালাক দিয়ে দাও। তখন ওর স্বামী রাগের মাথায় বলে ফেলেছে, যা দিলাম। মুখে তালাক বা এজাতীয় কোনো শব্দ উল্লেখ করেনি। এখন একথা বলার দ্বারা তালাক হয়েছে কি না? কয়েকজন থেকে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য পাওয়া গেছে। সঠিক মাসআলাটি মুহতারামের নিকট জানতে চাচ্ছি। আর যদি তালাক হয়ে যায় তাহলে পুনরায় একত্রে থাকতে চাইলে কী করণীয়?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী স্ত্রীর ‘তুমি তালাক দিয়ে দাও’- এ কথার জবাবে যেহেতু স্বামী বলেছে ‘যা দিলাম’ তাই স্ত্রীর (আপনার মামাতো বোনের) উপর এক তালাকে রাজয়ী পতিত হয়েছে। তার স্বামী চাইলে ইদ্দতের মধ্যে পুনরায় তাকে ফিরিয়ে নিতে পারবে। এক্ষেত্রে শুধু এতটুকু বললেও যথেষ্ট হবে যে, আমি তোমাকে ফিরিয়ে নিলাম বা স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে নিলাম।

উল্লেখ্য, তালাক হল বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্নকারী চূড়ান্ত পদক্ষেপ। দাম্পত্য জীবনের সমস্যা জটিল হয়ে পড়লে উভয়ের তা থেকে নিষ্কৃতির সর্বশেষ পথ। তাই অত্যন্ত ভেবেচিন্তে ও পরামর্শ সাপেক্ষে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামীকে তালাক দিতে বলা এবং সে অনুযায়ী স্বামীরও তালাক দিয়ে দেওয়া অন্যায়। এবং ক্ষেত্রবিশেষ সন্তানদের প্রতি জুলুম হয়ে যায়। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা আবশ্যক।

আরো উল্লেখ্য, শরীয়তে তালাক অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়, যা ইচ্ছায়, অনিচ্ছায়, রাগ বা স্বাভাবিক অবস্থায়, এমনকি ঠাট্টাচ্ছলে দিলেও কার্যকর হয়ে যায়।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/৪৫৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৪০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৫৬; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২৯৪

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন