মুহাররম ১৪৪১ || সেপ্টেম্বর ২০১৯

সাইফুল ইসলাম শান্ত - মাইজদী, নোয়াখালী

৪৮৮৬. প্রশ্ন

হযরত আমার নাম শান্ত, আমার ভাইয়ের নাম সজিব, এগুলো আমাদের ডাক নাম। এভাবে বর্তমানে ব্যাপকভাবে ডাকনাম হিসেবে সংক্ষিপ্ত বাংলা-ইংরেজি শব্দে নাম রাখার প্রচলন রয়েছে। যেমন ইমন, নীরব ইত্যাদি।

এখন মুহতারামের কাছে জানতে চাই, এরকম নাম রাখার বিধান কী? এক্ষেত্রে শরীয়তের নীতিমালা কী? আমাদের নামগুলো কি ঠিক আছে? বিষয়টি একটু বিস্তারিত বুঝিয়ে বললে উপকৃত হতাম।

উত্তর

ইসলামে সুন্দর  ও ভালো নাম রাখার গুরুত্ব অনেক। তাই রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই অনেক বাচ্চার নাম রেখে দিয়েছেন এবং কারো অসুন্দর নাম শুনলে তা পরিবর্তন করে দিতেন। তাই নাম রাখার ক্ষেত্রে নি¤েœাক্ত বিষয়াদির প্রতি লক্ষ রাখা উত্তম :

১. আল্লাহ তাআলার কোনো নামের সাথে ‘আব্দ’ যোগ করে নাম রাখা যেমন, আবদুল্লাহ, আবদুর রহমান। হাদীস শরীফে এসেছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

إِنّ أَحَبّ أَسْمَائِكُمْ إِلَى اللهِ عَبْدُ اللهِ وَعَبْدُ الرّحْمنِ.

আল্লাহর নিকট সর্বাধিক প্রিয় নাম আবদুল্লাহ ও আবদুর রহমান। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ২১৩১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২২৯১০)

২. কোনো নবীর নামে নাম রাখা, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

تَسَمّوْا بِأَسْمَاءِ الْأَنْبِيَاءِ.

তোমরা নবীদের নামে নাম রাখ। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৯০৩২, আরো দ্রষ্টব্য আল আদাবুল মুফরাদ, হাদীস ৮৩৬-৮৪০)

 ৩. সাহাবী-তাবেয়ী কিংবা কোনো নেককার বুযুর্গের নামের সাথে মিলিয়ে নাম রাখা। এক হাদীসে এসেছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি তাদের (হাসান, হুসাইন ও মুহাসসিনের) নাম রেখেছি হযরত হারূন আলাইহিস সালামের সন্তানদের নামের সাথে মিলিয়ে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৯৫৩)

আর নামের প্রভাব ব্যক্তির মাঝে প্রতিফলিত হওয়ার বিষয়টিও সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। (দ্র. সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯১৭)

আর হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন যে-

إِنّكُمْ تُدْعَوْنَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِأَسْمَائِكُمْ، وَأَسْمَاءِ آبَائِكُمْ، فَأَحْسِنُوا أَسْمَاءَكُمْ.

কিয়ামতের দিন প্রত্যেককে তার নিজের নাম ও পিতার নামসহ ডাকা হবে। সুতরাং তোমরা সুন্দর নাম রাখ। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯০৯)

এগুলো হচ্ছে উত্তম নাম রাখার কিছু মূলনীতি। এছাড়াও যে কোনো ভালো অর্থের নামও রাখা জায়েয এবং তা আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় (যেমন বাংলা)ও হতে পারে। আর প্রশ্নে উল্লেখিত শান্ত, সজিব ও নীরব নামগুলো রাখার সুযোগ আছে। তবে ইমন সাধারণ অর্থ হিসেবে খুব বেশি সুন্দর নয়।

-ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৩/৩৭০; তুহফাতুল মাওদূদ পৃ. ৯৯, ১০৬; আসসেআয়া ২/১৬৪

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন