মুহাম্মাদ মাহফুজুর রহমান - নান্দাইল, মোমেনশাহী
৪৮৪৭. প্রশ্ন
আমার এক বন্ধু এক মেয়েকে বিয়ে করে। সাত মাসের গর্ভবতী অবস্থায় মেয়েটি পালিয়ে গিয়ে আরেক ছেলের সাথে সংসার শুরু করে। এর এক মাস পর প্রথম স্বামী ঐ মেয়েকে তালাক প্রদান করে। পালিয়ে যাওয়ার তিন মাস পর একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। পরবর্তীতে মেয়েটি কাযী অফিসে গিয়ে ঐ ছেলেটিকে বিয়ে করে নেয়। সন্তানের লালন-পালন ঐ মেয়ে এবং তার দ্বিতীয় স্বামীই করে যাচ্ছে। প্রথম স্বামীকে লালন-পালন করা এমনকি দেখার সুযোগ দিতেও তারা রাজি না। এখন আমি জানতে চাই-
ক. ঐ কন্যা সন্তানের পিতা হিসেবে পরিচয় কে পাবে?
খ. সন্তানটির লালন-পালনের অধিকার কে রাখে?
উল্লেখ্য যে, সন্তানটির নানী জীবিত এবং সন্তানটির লালন-পালনে সে আগ্রহী। আর দ্বিতীয় স্বামী সন্তানটির মাহরাম নয়।
গ. এমন অপারগতাবস্থায় সন্তানের খোঁজ-খবর না নেওয়ার দ্বারা প্রথম স্বামী গুনাহগার হবে কি না?
ঘ. ঐ সন্তানের লালন-পালনের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্বামীর কোনো অধিকার আছে কি না?
উত্তর
ক. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে প্রথম স্বামীই ঐ শিশু মেয়েটির পিতা। তাই ঐ মেয়ের পিতা হিসাবে তার পরিচয়ই দিতে হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩৩৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/২৭৬; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৫৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৩৭
খ. সাধারণ অবস্থায় সন্তান লালন-পালনের প্রথম হকদার সন্তানের মা। তবে প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সন্তানের মাহরাম নন এমন ব্যক্তির সাথে মার বিবাহ হওয়ায় তার এ সন্তান লালন-পালনের অধিকার নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমান অবস্থায় শিশুটির নানী তার লালন-পালনের অধিকার পাবে, যদি তার বাড়ির পরিবেশ দ্বীন-শরীয়তের অনুকূলে থাকে। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২২৭৬; কিতাবুল আছল ১০/৩৫১; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৪৫৬-৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/২৭৩
গ. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পিতা যেহেতু চেষ্টা করা সত্ত্বেও সন্তানের খোঁজ-খবর নিতে পারছেন না তাই আশা করা যায়, এক্ষেত্রে তিনি গুনাহগার হবেন না।
ঘ. না, লালন-পালনের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্বামীর কোন অধিকার নেই।
উল্লেখ্য, প্রথম স্বামী তালাক দেওয়ার পর সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া দ্বারাই তার ইদ্দত শেষ হয়ে গেছে। এরপর ঐ ছেলেটির সাথে তার বিবাহ সহীহ হয়েছে। তবে এর আগ পর্যন্ত ঐ ছেলেটির সাথে একত্রে থাকা হারাম হয়েছে। এজন্য তাদেরকে আল্লাহ তাআলার কাছে তওবা-ইস্তেগফার করতে হবে।