রবিউল আউয়াল ১৪৪০ || ডিসেম্বর ২০১৮

মাওলানা আবদুল জাব্বার - দেবিদ্বার, কুমিল্লা

৪৬৪৭. প্রশ্ন

আমার এক আত্মীয় কিছুদিন আগে স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করল যে, হুযুর আমি ব্যাংকে ৫ লক্ষ টাকা রেখেছি। এখন তা বেড়ে ৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা হয়েছে। আমি এখন এইসব টাকা কীভাবে উঠাতে পারি? উদ্দেশ্য ছিল বৈধ কোনো পথ বলে দেওয়া। উত্তরে সে আলেম তাকে বললেন, আপনি ব্যাংক থেকে ৪ লক্ষ টাকা উঠাবেন। আর বাকি ১ লক্ষ টাকার পরিবর্তে ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার যে ডলার হয় তা উঠাবেন তাহলে জায়েয হয়ে যাবে। অতপর সে আলেম তার কথার পক্ষে দলিল হিসেবে বললেন, টাকা এবং ডলারের মাঝে কমবেশ করা জায়েয। যেমন সোনা-রূপার মাঝে কমবেশ করা জায়েয।

এখন আমার প্রশ্ন হল, উক্ত আলেমের কথা ঠিক কি না? এবং এভাবে টাকার পরিবর্তে ডলার উঠালে বৈধ হবে কি না?

উত্তর

প্রশ্নের বিবরণ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, উক্ত পদ্ধতিটি অবলম্বন করা হয়েছে জমা টাকার উপর অতিরিক্ত যে ৮০ হাজার টাকা সুদ এসেছে তা বৈধ হিসাবে গ্রহণ করার জন্য। এক্ষেত্রে ডলারদাতা এবং গ্রহীতা উভয়ে ভালো করেই জানে যে, প্রদত্ত ডলার ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার পরিবর্তে। শুধু ১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নয়। সুতরাং যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটেও থাকে, তবে ১ লক্ষ টাকার  সমপরিমাণ ডলার আপনার আত্মীয়ের জন্য হালাল আর ৮০ হাজার টাকার সমপরিমাণ ডলার হারাম। জমা টাকার অতিরিক্ত গ্রহণ করাই সুদ। চাই অতিরিক্ত অংশের টাকা সরাসরি গ্রহণ করা হোক বা ডলারের মাধ্যমে গ্রহণ করা হোক।

প্রকাশ থাকে যে, ‘সুদ’ হল নিকৃষ্টতম হারাম। আর এর চেয়ে আরো মারাত্মক ও জঘন্যতম অপরাধ হল, হীলাবাহানা ও ছুতার মাধ্যমে এ নিকৃষ্টতম হারামকে বৈধ মনে করে গ্রহণ করা। অতএব সুদকে হারাম জেনে সর্বাবস্থায় তা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

উল্লেখ্য যে, প্রশ্নের বর্ণনায় মনে হচ্ছে ঐ মাসআলাদাতা ব্যক্তির সাধারণ জ্ঞানও নাই। কারণ সাধারণত ব্যাংকগুলোতে এভাবে নিজ একাউন্টের টাকার বদলে ডলার গ্রহণ করার নিয়ম নেই।

-ইলাউস সুনান ১৪/৫১২; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৬৭

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন