রবিউল আউয়াল ১৪৪০ || ডিসেম্বর ২০১৮

গোলাম রব্বানী - ময়নামতি, কুমিল্লা

৪৬৪১. প্রশ্ন

আমাদের গ্রামে ঈদগাহ সংলগ্ন সরকারি জায়গার উপর প্রায় ১৪-১৫ বছর আগে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয় এবং এতে দীর্ঘ ১৪-১৫ বছর যাবৎ জামাতের সাথে নামায পড়া হচ্ছে এবং জুমার নামাযসহ মসজিদ কেন্দ্রিক সব ধরনের কার্যক্রমও পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু ইদানিং একটি মহল (নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে) একথা প্রচার করছে যে, ঐ জায়গাটি যেহেতু সরকারি তাই এটা মসজিদ হিসাবে গণ্য হবে না এবং এতে ইতেকাফ ও অন্যান্য আহকাম (যা মসজিদে করা জরুরি) এতে সহীহ হবে না। কারণ হিসাবে তারা বলছে, মসজিদ হওয়ার জন্য তার জায়গা ওয়াকফ করা জরুরি। আর এ জায়গা ওয়াকফ করা হয়নি।

এখন মুফতী সাহেবের কাছে আমাদের জানার বিষয় হল, এ সকল লোকদের কথা কি ঠিক? এবং মসিজদ হওয়ার জন্য ওয়াকফ করা জরুরি কি না? সর্বোপরি আমাদের মসজিদটি ‘শরয়ী মসজিদ’ কি না? বরাতসহ জানালে উপকৃত হব। আল্লাহ তাআলা আপনাদের উত্তম প্রতিদান দান করুন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত মসজিদটি যদি সরকারি কর্তৃপক্ষ থেকে যথাযথ অনুমোদন নিয়ে নির্মাণ করা হয়ে থাকে, তাহলে তা ‘শরয়ী মসজিদ’ হওয়ার ব্যাপারে সংশয়ের কোনো অবকাশ নেই। আর যদি সরকারি কর্তৃপক্ষের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া মসজিদটি নির্মাণ করা হয়ে থাকে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষ অবগত হওয়ার পরও নির্মাণাধীন সময়ে বা নির্মাণ পরবর্তী এ দীর্ঘ ১৪-১৫ বছরের মধ্যে কোনো বাধা প্রদান না করে থাকে, তাহলে এ দীর্ঘ সময় তাদের চুপ থাকা ও বাধা না দেওয়া মৌনসম্মতি ও অনুমোদন বলে ধর্তব্য হবে। সেক্ষেত্রে এ ধরনের মসজিদে নিয়মিত জামাতের সাথে নামায পড়া হতে থাকলে তাও ‘শরয়ী মসজিদ’ বলে গণ্য হয়। এবং তাতে ইতিকাফসহ মসজিদ সংক্রান্ত সব ধরনের বিধি-বিধান কার্যকর হবে।

তবে লক্ষণীয় যে, সরকারী কর্তৃপক্ষ থেকে যথাসম্ভব লিখিতভাবে মসজিদের স্থায়ী অনুমোদন নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা কর্তব্য। যেন ভবিষ্যতে এ নিয়ে কোনো সমস্যায় পড়তে না হয়। কিংবা অন্য কোনো মহল কোনো সুযোগ গ্রহণ করতে না পারে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৯০; ফাতহুল কাদীর ২/৪৪৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৪৫৫; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৪৮; ইসলাম কা নেযামে আরাযী, মুফতী মুহাম্মাদ শাফী রাহ. পৃ. ১৫৮

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন