রজব ১৪৩৯ || এপ্রিল ২০১৮

মুহাম্মাদ মুজিবুল্লাহ - বারদোনা, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম

৪৪১৬. প্রশ্ন

বাবা মারা যাওয়ার পর আমরা ওয়ারিশসূত্রে ১৮০০০/-টাকা ও ১৯ শতাংশ জমি পাই। সকল টাকা-পয়সা জায়গা-জমি ঠিক পেয়েছি। তবে একটি জমি নিয়ে আমাদের সমস্যায় পড়তে হয়, আব্বু আমাদেরকে এ ব্যাপারে কিছু বলে যাননি। তবে আমাদের এক চাচা থেকে এ ব্যাপারে জানতে পারি।

আব্বু জীবিত থাকতেই জমিটি একজনের কাছে বন্ধক দিয়ে কিছু ঋণ নিয়েছিলেন। পরে এক উপযুক্ত খরিদ্দার পেয়ে ঋণদাতার সাথে এভাবে কথা হয় যে, ‘আমি অমুক তারিখের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করে দেব। আমাকে জমিটি এখনি বিক্রি করার জন্য দখলমুক্ত করে দেন।’ সে এতে রাজি হয় এবং আব্বু জমিটি বিক্রি করে দেন। কিন্তু আব্বু মৃত্যুর পূর্বে ঐ ঋণ পরিশোধ করেননি। আব্বু এ ব্যাপারে কোনো অসিয়তও করে যাননি। এখন মুফতী সাহেবের কাছে আমাদের কয়েকটি বিষয় জানার আছে-

* আব্বুর এ ঋণ পরিশোধ করা আমাদের জন্য জরুরি কি না?

* ঋণ আদায় করলে আমরা জমিটির মালিক হব কি না?

* অন্যের কাছে বন্ধক রাখা অবস্থায় জমিটি বিক্রি করা আব্বুর জন্য ঠিক হয়েছে কি? এভাবে বিক্রি করা জায়েয আছে কি?

দয়া করে দ্রুত উত্তর জানাবেন। এ সমস্যার কারণে আমরা সম্পত্তি ভাগ করতে পারছি না।

উত্তর

কারো মৃত্যু হলে কাফন-দাফনের পর মিরাসি সম্পত্তি বণ্টনের পূর্বেই ওয়ারিসদের কর্তব্য হল, মৃতের ঋণ থাকলে তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে আগে তা আদায় করা। এরপর বৈধ কোনো অসিয়ত থাকলে বাকি সম্পদের এক তৃতীয়াংশ থেকে তা পূরণ করা। ঋণ আদায় ও অসিয়ত পূরণের পরেই অবশিষ্ট সম্পদ ওয়ারিসদের মাঝে বণ্টন করতে হয়।

অতএব, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের পিতা মৃত্যুর পূর্বে বন্ধকী জমি সংক্রান্ত উক্ত ঋণ আদায়ের জন্য কোনো অসিয়ত না করলেও এ ব্যাপারে অবগত হওয়ার পর সকল ওয়ারিসের কর্তব্য হয়ে গেছে এজমালী সম্পদ থেকে এ ঋণ আদায় করে দেওয়া।

আর আপনাদের পিতা বন্ধকী জমিটি ঋণদাতার সম্মতিতেই যেহেতু অন্যের কাছে বিক্রি করেছেন তাই তার ঐ বিক্রি সহীহ হয়েছে এবং ক্রেতা ঐ জমির মালিক হয়ে গেছে। এই জমিতে আপনাদের কোনো মালিকানা ও অধিকার নেই। পিতার ঋণ আদায় করে দেওয়া আপনাদের কর্তব্য। তবে এ কারণে আপনারা এই জমির মালিক হবেন না।

-মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যা, মাদ্দা ৭৪৭, ৭৩৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/১৮০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৫০৮, ৭৫৯; শরহুল মাজাল্লাহ, আতাসী ৩/১৮৯

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন