নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক - মুহাম্মাদপুর, ঢাকা
৪১৬৮. প্রশ্ন
হুযুর! আমার একটি টেইলার্স আছে। এবং দর্জি হিসেবে মানুষের মাঝে আমার বেশ সুনাম-সুখ্যাতি রয়েছে। তাই মানুষ জামা-কাপড় বানানোর জন্য আমার টেইলার্সে ভীড় করে। ইদানিং আমার আশপাশে নতুন কিছু টেইলার্স হয়েছে। সেগুলোতে জামার মজুুরি কম হওয়া সত্ত্বেও মানুষ শখ করে আমার টেইলার্সে অর্ডার দেয়। ঈদের সময় আমার টেইলার্সে অনেক চাপ পড়ে যায়। প্রচুর পরিমাণে অর্ডার থাকে। কিন্তু আমি কাজ করে শেষ করতে পারি না। তাই কিছু কিছু অর্ডার কাস্টমারদের অগোচরে অন্য দর্জিদেরকে কিছু কম মজুরিতে দিয়ে দেই। যেমন, আমি কাস্টমার থেকে ৫০০ টাকা নিলে তাদেরকে দেই ৪০০ টাকা। এক্ষেত্রে কোনো কোনো অর্ডারের কাপড় আমি নিজে কেটে তাদেরকে শুধু সেলাই করতে দেই। আবার কোনো কোনো অর্ডার পুরোটাই তাদের হাতে সোপর্দ করি। তারা অপরিপক্ক হওয়ায় বাহ্যতই সে জামাগুলো একটু নি¤œমানের হয়। যা কাস্টমার সাধারণত ধরতে পারে না।
জানার বিষয় হল, আমার জন্য এমনটি করা কি জায়েয? অন্যথায় এ পরিস্থিতিতে আমি কী করতে পারি? দয়া করে জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
কোনো নির্দিষ্ট টেইলার্সে পোশাক বানাতে দিলে উক্ত টেইলার্সের মাস্টার ও সহকারীদের দিয়েই পোশাক বানানোর চুক্তি হয়। সুতরাং যে পোশাক বানাতে দিয়েছে তার অনুমতি ছাড়া অন্য টেইলার্সে দেওয়া জায়েয হবে না। এটা ধোকার শামিল। কোনো ক্ষেত্রে যদি এমনটি করা হয়ে থাকে তবে যে টেইলার্সে বানানো হয়েছে সেখানকার সমান মজুরী নিতে হবে। অতিরিক্ত নেওয়া বৈধ হবে না। এবং অনুমতি ব্যতীত অন্য জায়গা থেকে বানানোর কারণে ক্রেতাদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
উল্লেখ্য যে, আপনার টেইলার্স থেকে মানসম্মতভাবে যতটুকু কাজ করে দিতে পারবেন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডেলিভারি দিতে পারবেন ততটুকুই অর্ডার নিবেন। এর বেশি অর্ডার নেয়া অন্যায়। তবে সঠিক অনুমান করতে না পেরে কখনো বেশি নিয়ে ফেললে গ্রাহকদের অনুমতিক্রমে অন্য দর্জিকে দেওয়া বা তারা অর্ডার ফেরত নিতে চাইলে ফেরত দিয়ে দেওয়া যেতে পারে। আর এসব হতে হবে ডেলিভারি তারিখের অন্তত এতদিন আগে, যেন তারা নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর অন্যের দ্বারা কাজ করিয়ে নিতে পারে। এবং তারা কোন অসুবিধায় না পড়ে।
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২০৪২৫-২০৪২৯; মাবসূত, সারাখসী ১৫/১১৮; আলইখতিয়ার ২/১৩৬; আলমুহীতুল বুরহানী ১২/৪৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/২৯৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৬/৯১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/১৮