মুহাম্মাদ মহিউদ্দিন - সোনাইমুড়ি, নোয়াখালী
৪২৩৫. প্রশ্ন
কোনো মসজিদ কমিটির নিকট মসজিদের কিছু টাকা আছে। এখন কমিটির লোকজন চাচ্ছে, সেগুলো কোনো কাজে খাটিয়ে মুনাফা অর্জন করতে। তাই তারা একটি দোকান/ঘর এভাবে বন্ধক নিল যে, এক লক্ষ টাকা দোকান মালিককে দিয়ে তার থেকে দোকান বুঝে নিবে। অতপর সে দোকানটিকে দোকানের মালিক বা অন্য কারো নিকট ভাড়া দিয়ে দোকানের মাসিক ভাড়া মসজিদের ক্যাশে রাখবে। অতপর যখন মালিক এক লক্ষ টাকা দিয়ে দিবে তখন কমিটি তার দোকান তাকে বুঝিয়ে দিবে।
এখন প্রশ্ন হল, ১. মসজিদের টাকা মুনাফার আশায় খাটানো অথবা কাউকেও ঋণ দেওয়া যাবে কি না?
২. উপরোক্ত সুরতকে বন্ধক বলা যাবে কি না?
উত্তর
দোকান মালিকের সাথে প্রশ্নোক্ত চুক্তি নাজায়েয হয়েছে। তা মূলত সুদি চুক্তির অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া মসজিদের টাকা মসজিদ কর্তৃপক্ষের নিকট আমানত হিসেবে থাকে। এ টাকা মসজিদের প্রয়োজনে ব্যয় করার জন্য সর্বোচ্চ সচেতনতার সাথে হেফাজত করতে হবে। কাউকে ঋণ দেওয়া যাবে না এবং মসজিদের খরচের বাইরে অন্য খাতে ব্যয় করা যাবে না। মসজিদের সাধারণ খরচাদি নির্বাহের পর যদি আরো টাকা জমা থাকে তবে তা দ্বারা যথাসম্ভব ইমাম, মুআজ্জিন ও খাদেমগণের সুবিধাদি বাড়ানোর চেষ্টা করবে এবং মুসল্লিদের নামায ও ইবাদতে আরাম হয় সে ব্যবস্থা নিবে। এরপরও টাকা জমা থাকলে তা ভবিষ্যতের জন্য রেখে দিবে।
অবশ্য মসজিদের উন্নয়নের জন্য যদি আলাদা ফান্ড তৈরী করা হয় তাহলে সে টাকা দ্বারা মসজিদের জন্য লাভজনক স্থায়ী কোনো আয়ের ব্যবস্থা করা জায়েয হবে। যেমন, দোকান, মার্কেট ইত্যাদি ক্রয় বা নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া যাবে। কিন্তু নাজায়েয কারবার অবলম্বন করা যাবে না। বর্তমানে ব্যবসায় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেহেতু লোকসানের, এমনকি কোনো কোনো সময় মূলধন খোয়া যাওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে তাই সাধারণ দানের টাকা দিয়ে মসজিদের জন্যও ব্যবসা করা যাবে না।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মসজিদের এক লক্ষ টাকা যেভাবে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তা ঋণ হিসাবে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে দোকানটি বন্ধক হিসেবে গণ্য। আর বন্ধকী বস্তু থেকে উপকৃত হওয়া সুদের অন্তর্ভুক্ত। মুসলমানদের এ ধরনের কারবার থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকা আবশ্যক। তাই মসজিদ কমিটির দায়িত্ব হল, চুক্তিটি বাতিল করে দেওয়া এবং দোকান ফেরত দিয়ে মসজিদের যে টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে তা ফেরত নিয়ে নেওয়া।
Ñখুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪২৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১৬৫; রদ্দুল মুহতার ৬/৪৮১-১৮৩