মাসরুর আদনান - লালমনিরহাট
৪২৭৭. প্রশ্ন
আমাদের এলাকায় ধানের উপর টাকা নেওয়ার প্রচলন রয়েছে। অর্থাৎ ধানের মৌসুমের শুরুতে চাষিরা নগদ টাকার প্রয়োজনে অগ্রিম ধান বিক্রি করে নগদ টাকা নেয়। আর ধান কাটার পর তা পরিশোধ করে। এলাকায় আমাদের একটি সমিতি রয়েছে। সে সমিতির টাকা থেকে আমরাও একজন হতে ৫০০ টাকা দরে ২০ মন ধান কিনেছিলাম। ধান কাটার পর তিনি আমাদেরকে ১০মন ধান দিয়ে বললেন, এবার ধান কম হয়েছে তাই পুরোটা পরিশোধ করতে পারবো না।
আমরা চাপ প্রয়োগ করলে সে বাকি ধানের পরিবর্তে একটি বকরীর বাচ্চা দিতে চাচ্ছে। যার আনুমনিক মূল্য ৬-৭ হাজার টাকা। আমাদের সমিতির সবাই বিষয়টিতে সম্মত রয়েছে।
জানার বিষয় হল, এভাবে ধানের পরিবর্তে বকরীর বাচ্চা নেওয়া জায়েয হবে কি না?
উত্তর
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে অবশিষ্ট ধানের পরিবর্তে বকরীর বাচ্চা নেওয়া জায়েয হবে না। হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
مَنْ أَسْلَفَ فِي شَيْءٍ فَلَا يَصْرِفْهُ إِلَى غَيْرِهِ.
যদি কেউ কোনো পণ্য অগ্রিম মূল্য দিয়ে ক্রয় করে তাহলে সে যেন ক্রয়কৃত পণ্যের পরিবর্তে অন্যকিছু গ্রহণ না করে। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৪৬৮
আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন,
إِذَا سَلّفْتَ فِي شَيْءٍ فَلَا تَأْخُذْ إِلّا رَأْسَ مَالِكَ أَوِ الّذِي سَلّفْتَ فِيهِ.
যদি তুমি অগ্রিম মূল্যে কোনো পণ্য ক্রয় কর তাহলে সে বস্তুটিই গ্রহণ কর অথবা (ঐ বস্তু দিতে সক্ষম না হলে) যে পরিমাণ অর্থ দিয়েছিলে তা নিয়ে নাও। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ১৪১০৬)
অতএব, ধানের পরিবর্তে বকরী নেওয়া যাবে না। নিয়ে থাকলে তা ফেরত দিয়ে পূর্ব চুক্তি অনুযায়ী ধানই নিতে পারবে। বিক্রেতা চাইলে বাজার থেকেও নির্ধারিত পরিমাণ ধান কিনে দিতে পারবে। আর ধান না নিলে মূল টাকাই ফেরত নিবে। এর বিনিময়ে অন্য কিছু নেওয়া বা অতিরিক্ত টাকা নেওয়া জায়েয হবে না।
-কিতাবুল আছল ২/৩৮১; আলমাবসূত, সারাখসী ১২/১৪৯; বাদায়েউস সনায়ে ৪/৪৩৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/১৮৬; আদ্দুররুল মুখাতার ৫/২১৯