সুলাইমান হাবীব - বেলটিয়াবাড়ী, টাংগাইল
৪১৩৪. প্রশ্ন
মুহতারাম সবিনয় নিবেদন এই যে, আমার কিছু প্রশ্ন রয়েছে। অনুগ্রহপূর্বক শরয়ী দলীল প্রমাণের আলোকে নিম্ন লিখিত প্রশ্নাবলীর সঠিক সমাধান প্রদান করে বাধিত করবেন। প্রশ্নগুলো নিম্নরূপ :
১. চলন্ত লঞ্চ, জাহাজ, বিমান, বাস, ট্রেনে নামায আদায় করার বিধান কী ও তার পন্থা কী?
২. অনেকে বলেন, নামাযে ছানা পড়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা, আবার কেউ কেউ বলেন যে, সুন্নাতে যায়েদা। কোনটা সঠিক?
উত্তর
১. চলন্ত লঞ্চ, জাহাজ, ট্রেন ও বিমানে ফরয নামায সম্ভব হলে কেবলামূখী হয়ে দাঁড়িয়ে রুকু সিজদাসহ আদায় করবে। দাঁড়ানো যদি কষ্টকর হয় তাহলে বসে স্বাভাবিক রুকু-সিজদা করে নামায আদায় করবে। এভাবে নামায আদায় করতে পারলে পরবর্তীতে তা পুনরায় পড়তে হবে না। আর যদি কেবলামুখী হয়ে রুকু-সিজদার সাথে নামায আদায় করা সম্ভব না হয় তাহলে যেভাবে সম্ভব বসে বা ইশারায় নামায পড়ে নিবে। এক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে সতর্কতামূলক ঐ ফরয নামায পরবর্তীতে আবার পড়ে নিবে।
আর বাসে যেহেতু সাধারণত দাঁড়িয়ে স্বাভাবিকভাবে নামায পড়া যায় না তাই কাছাকাছি যাতায়াতের ক্ষেত্রে ওয়াক্ত শেষ হওয়ার পূর্বে গন্তব্যে পৌঁছে নামায আদায় করা সম্ভব হবে না বলে মনে হলে এবং নেমে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ অথবা অসুবিধাজনক না হলে পথিমধ্যে নেমে ফরয নামায পড়ে নিবে। আর দূরের যাত্রা হলে অথবা যে ক্ষেত্রে নেমে গেলে ঝুঁকি অথবা সমস্যায় পড়ার আশংকা থাকে সেক্ষেত্রে বাস না থামলে সিটেই যেভাবে সম্ভব বসে বা ইশারায় নামায আদায় করে নিবে এবং সতর্কতামূলক পরবর্তীতে এর কাযা করে নিবে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘযাত্রায় বাস চালকগণের উচিত, ফরয নামায আদায়ের সুবিধার্থে কোনো মসজিদে যাত্রা বিরতি করা। এ বিষয়ে বাস মালিকদেরও ইতিবাচক নির্দেশনা দিয়ে রাখা উচিত। এক্ষেত্রে মালিক সমিতি ও শ্রমিক সমিতিগুলো যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারে। আর যাত্রীগণের কর্তব্য হল, বাসের একজন মুসল্লি নামায পড়তে চাইলেও তার জন্য বাস থামাতে চালককে নির্দেশনা দিয়ে রাখা। -ইলাউস সুনান ৭/২১২; মাআরিফুস সুনান ৩/৩৯৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/১০১
২. নামাযে ছানা পড়া সুন্নতে মুআক্কাদাহ। -আলমাউসূআতুল ফিকহিয়্যা আলকুওয়াইতিয়্যা ২৭/৮৩; ফাতাওয়া উসমানী ১/৪০৮