শাবান-রমযান ১৪৩৭ || মে-জুন ২০১৬

মুহিব্বুল্লাহ - নীলফামারী

৩৭৩৩. প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় কিছু লোক নিম্নোক্ত হাদীসটির ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। তাই জনাবের সমীপে আকুল আবেদন যে, নিম্নোক্ত হাদীসটি তাহকীক করে তা আমলযোগ্য কি না তা জানানোর জন্য সুমর্জি কামনা করছি। হাদীসটি হল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী রা.কে বলেছেন, হে আলী! প্রত্যেক রাতে পাঁচ কাজ করে ঘুমাও। যথা : ১. চার হাজার দিনার সদকা করে ঘুমাও ২. এক খতম কুরআন পড়ে ঘুমাও ৩. জান্নাতের মূল্য আদায় করে ঘুমাও। ৪. দুজনের মাঝে বিবাদ মিটিয়ে ঘুমাও ও ৫. একটি হজ্ব আদায় করে ঘুমাও। আলী রা. বললেন, এটা তো অসম্ভব। কীভাবে আমি তা আদায় করব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, চার বার সূরা ফাতিহা পড়ে ঘুমাও তাহলে চার হাজার দিনার সদকার সওয়াব পাবে। তিন মর্তবা সূরা ইখলাস পড়ে ঘুমাও তাহলে একবার কুরআন খতম করার সওয়াব পাবে। তিন বার দুরূদ পড়ে ঘুমাও তাহলে জান্নাতের মূল্য আদায় হয়ে যাবে। দশবার ইস্তেগফার পড়ে ঘুমাও তাহলে দুজনের বিবাদ মিটানোর সওয়াব পাবে। চারবার কালিমায়ে তামজীদ পড়ে ঘুমাও তাহলে একটি হজ্বের সওয়াব পাবে। হযরত আলী রা. বলেন, আমি প্রত্যহ রাতে এ আমল করে ঘুমাব।

 

 


উত্তর

প্রশ্নোক্ত বর্ণনাটি ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। হাদীসের নির্ভরযোগ্য কোনো কিতাবে উক্ত বর্ণনা নেই। এ ধরনের জাল ও ভিত্তিহীন কথা বর্ণনা করা এবং মানুষের মাঝে তা প্রচার করা মারাত্মক গুনাহ। আর রাসূলের হাদীস হিসেবে প্রচার করার গুনাহ তো আরো ভয়াবহ। হাদীস শরীফে এসেছেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,নিঃসন্দেহে আমার উপর মিথ্যারোপ করা (এর ভয়াবহতা) অন্যের উপর মিথ্যারোপ করার মতো নয়। যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত আমার উপর মিথ্যারোপ করল সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামকে বানিয়ে নেয়। Ñসহীহ বুখারীহাদীস ১২২৯

তাই মুসলমানের কর্তব্য হলএ ধরনের বর্ণনা প্রচার করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকা এবং আল্লাহ তাআলার দরবারে তওবা-ইস্তিগফার করা।

প্রকাশ থাকে যেসূরা ফাতিহাসূরা ইখলাসদরূদইস্তেগফার ও কালিমার বিভিন্ন ফযীলত সহীহ হাদীস দ্বার প্রমাণিত আছে। সেসব ফযীলতসমূহই মানুষের মাঝে প্রচার করা কর্তব্য।

Ñফাতাওয়া লাজনায়ে দায়েমা ৩৭৮৯১; শায়েখ সালেহ আল উসাইমিন

এই সংখ্যার অন্যান্য প্রশ্ন-উত্তর পড়ুন