মিদলাজ উনাইস - মহাখালী, ঢাকা

৬৬১০. প্রশ্ন

আমার দাদা কয়েকদিন যাবৎ অসুস্থ। তাই তিনি তায়াম্মুম করেই নামায আদায় করছেন। আব্বু আজকে দাদাকে বললেন, তায়াম্মুম করার সময় আঙুল খিলাল করতে হবে। কারণ তায়াম্মুমে আঙুল খিলাল করা জরুরি। হুজুরের নিকট জানতে চাই, আসলেই কি তায়াম্মুমে আঙুল খিলাল করা জরুরি?

উত্তর

হাঁ, তায়াম্মুমে আঙুল খিলাল করা জরুরি। কেননা আঙুল খিলাল করা না হলে দুই আঙুলের ফাঁকে মাঝের অংশগুলো মাসেহ থেকে বাদ থেকে যাবে। আর তায়াম্মুম সহীহ হওয়ার জন্য আঙুলের অগ্রভাগ থেকে কনুই পর্যন্ত পুরো অংশ মাসেহ করা জরুরি। এর কোনো অংশ মাসেহ থেকে বাদ পড়ে গেলে তায়াম্মুম সহীহ হয় না।

* >المبسوط< للسرخسي ১/১০৭ : ولهذا شرطنا الاستيعاب في التيمم، حتى إذا ترك شيئا من ذلك لم يجزه. ... ولهذا قالوا: لا بد من نزع الخاتم في التيمم، ولا بد من تخليل الأصابع، ليتم به المسح.

বাদায়েউস সানায়ে ১/১৬৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৩৫; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ৪৫; আলমুহীতুর রাযাবী ১/১৬০; গুনইয়াতুল মুতামাল্লী, পৃ. ৬৩; রদ্দুল মুহতার ১/২৩৯

শেয়ার লিংক

জহিরুল ইসলাম - মোহনগঞ্জ, নেত্রকোনা

৬৬১১. প্রশ্ন

আমি আমার এক সাথীকে দেখলাম, সে ওযুহীন অবস্থায় কুরআন শরীফের মলাট স্পর্শ করছে এবং চারপাশের সাদা অংশ ধরে পৃষ্ঠা উল্টাচ্ছে। আমি তাকে এ ব্যাপারে সতর্ক করলে সে বলে, কুরআন শরীফের মলাট এবং যে অংশে আয়াত লেখা নেই, তা স্পর্শ করা জায়েয।

মুহতারামের কাছে জানার বিষয় হল, আমার এই সাথীর কথা কি ঠিক? কুরআন শরীফের মলাট এবং চারপাশের সাদা অংশ কি ওযুহীন অবস্থায় স্পর্শ করা যাবে?

 

উত্তর

না, ঐ কথা ঠিক নয়। মুসহাফ (কুরআন মাজীদের কপি)-এর মলাট এবং চারপাশের লেখাবিহীন সাদা অংশও ওযু ছাড়া স্পর্শ করা জায়েয নয়। সুতরাং তার জন্য ওযুবিহীন অবস্থায় মুসহাফের মলাট এবং লেখাবিহীন অংশ স্পর্শ করা নাজায়েয হয়েছে। এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

* >المحيط البرهاني< ১/২১৯ : وكما لا يحل له مس الكتابة لا يحل له مس البياض أيضا.

* >الفتاوى الهندية< ১/৩৮ : لا يجوز لهما وللجنب والمحدث مس المصحف إلا بغلاف متجاف عنه، كالخريطة والجلد الغير المشرز، لا بما هو متصل به، هو الصحيح. هكذا في الهداية. وعليه الفتوى، كذا في الجوهرة النيرة.

তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/১৬৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/২৯১; আলজাওহারাতুন নাইয়িরা ১/৩৯; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৯৩

শেয়ার লিংক

মুহাম্মদ খলীলুর রাহমান - মাদারীপুর

৬৬১২. প্রশ্ন

জামাতে নামায পড়তে গিয়ে চার রাকাত ফরয নামাযের শেষের এক রাকাত জামাতে পড়েছি। বাকি তিন রাকাত কীভাবে পড়ব? আর যদি শুধু শেষ বৈঠক পেয়ে থাকি তবেই বা কীভাবে বাকি নামায পড়ব?

 

উত্তর

চার রাকাত বিশিষ্ট নামাযে ইমামের সাথে শুধু এক রাকাত পেলে বাকি তিন রাকাত আদায়ের নিয়ম হল

ইমাম সালাম ফেরানোর পর দাঁড়িয়ে প্রথম রাকাতে সূরা ফাতেহা পড়বেন এবং এর সাথে সূরা মেলাবেন। এরপর রুকু-সিজদা করে বৈঠক করবেন এবং তাশাহহুদ পড়বেন। অতঃপর দাঁড়িয়ে এ রাকাতেও সূরা ফাতেহা পড়বেন এবং এর সাথে সূরা মেলাবেন। এরপর রুকু-সিজদা করে বৈঠক না করে তৃতীয় রাকাতের (নামাযের শেষ রাকাত) জন্য দাঁড়িয়ে যাবেন। এবং এ রাকাতে শুধু সূরা ফাতেহা পাঠ করবেন; এর সাথে সূরা মেলাবেন না। এরপর স্বাভাবিক নিয়মে নামায শেষ করবেন।

আর যদি আপনি শেষ বৈঠকে এসে জামাতে শরীক হন, অর্থাৎ ইমামের সাথে কোনো রাকাতই না পেয়ে থাকেন, তাহলে সেক্ষেত্রে ইমামের সালামের পর দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক নিয়মেই চার রাকাত আদায় করবেন। প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতেহার সাথে সূরা মেলাবেন এবং দ্বিতীয় রাকাতের পর বৈঠক করবেন। আর শেষ দুই রাকাতে শুধু সূরা ফাতেহা পড়বেন এবং শেষ বৈঠক করে যথানিয়মে নামায শেষ করবেন।

* كتاب >الأصل< ১/২১৫ : قلت: فإن سبقه بثلاث ركعات؟ قال: يقرأ في الركعتين الأوليين فيما يقضي بفاتحة الكتاب وسورة في كل ركعة، ويقرأ في الأخيرة بفاتحة الكتاب.

* >خلاصة الفتاوى< ১/১৬৬: فعليه أن يقضي ركعة، ويقرأ فيها بالفاتحة وسورة، ويتشهد؛ لأنه يقضي آخر الصلاة في حق التشهد.

কিতাবুল আছল ১/২১৪; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫৬৭; ফাতহুল কাদীর ১/৩৪০; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৯২

শেয়ার লিংক

খাব্বাব আহমদ - মাহতাবপুর, সিলেট

৬৬১৩. প্রশ্ন

গত কয়েকদিন আগে আমাদের সবার ফজরের নামায কাযা হয়ে যায়। পরে আমরা জামাতের সাথে ফজরের নামাযের কাযা আদায় করি। এবং নামাযে কেরাত জোরে পড়ি। পরে মনের মধ্যে খটকা লাগল যে, নামাযে কেরাত জোরে পড়া ঠিক হল কি না? বিষয়টির সঠিক সমাধান জানাবেন।

আরেকটি বিষয়, কাযা নামাযের নিয়ত কীভাবে করতে হয়। কাযা শব্দ উল্লেখ না করে নামায পড়ে নিলে নামায আদায় হয়ে যাবে কি না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সশব্দে কেরাত পড়া নিয়মসম্মতই হয়েছে। কেননা ফজর, মাগরিব ও এশার নামাযের কাযা জামাতে আদায় করলে কেরাত শব্দ করে পড়াই আবশ্যক। তা দিনের বেলায় আদায় করলেও কেরাত শব্দ করেই পড়তে হবে। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে

عَنْ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ: عَرَّسَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْلَةً فَقَالَ: مَنْ يَحْرُسُنَا اللَّيْلَةَ؟ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ شَابٌّ: أَنَا يَا رَسُولَ اللهِ أَحْرُسُكُمْ، فَحَرَسَهُمْ حَتَّى إِذَا كَانَ مَعَ الصُّبْحِ غَلَبَتْهُ عَيْنُهُ، فَمَا اسْتَيْقَظُوا إِلَّا بِحَرِّ الشَّمْسِ، فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَتَوَضَّأَ وَتَوَضَّأَ أَصْحَابُهُ، وَأَمَرَ الْمُؤَذِّنَ فَأَذَّنَ، فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ، ثُمَّ أُقِيمَتِ الصَّلَاةُ فَصَلَّى الْفَجْرَ بِأَصْحَابِهِ، وَجَهَرَ فِيهَا بِالْقِرَاءَةِ كَمَا كَانَ يُصَلِّي بِهَا فِي وَقْتِهَا.

قَالَ مُحَمَّدٌ: وَبِهِ نَأْخُذُ، وَهُوَ قَوْلُ أَبِي حَنِيفَةَ رحمه الله تعالى.

অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও কয়েকজন সাহাবী সফরে ছিলেন। অধিক রাত্রে ঘুমাতে যাওয়ায় তাঁদের ঘুম থেকে জাগতে দেরি হয়ে যায়। ততক্ষণে সূর্যোদয় হয়ে যায়। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে জামাতের সঙ্গে ফজরের নামায কাযা করেন। এবং অন্য সময়ের মতো শব্দ করে কেরাত পড়েন। (কিতাবুল আছার, ইমাম মুহাম্মাদ, বর্ণনা ১৬৮)

আর নামাযের নিয়ত মুখে উচ্চারণ করাই জরুরি নয়। কেননা নিয়ত হচ্ছে অন্তরের সংকল্পের নাম। সুতরাং কোন্ নামায পড়ছে, বর্তমান ওয়াক্তিয়া নামায, না পেছনের অনাদায়ী নামায তা মনের মধ্যে নির্ধারিত থাকলেই নামায আদায় হয়ে যায়। উপরন্তু কেউ যদি মুখে উচ্চারণ করতে চায়, তাহলেও কাযা শব্দ উল্লেখ করা জরুরি নয়; বরং আমি অমুক দিনের নামায/অনাদায়ী নামায/আমার যিম্মায় থেকে যাওয়া নামায আদায় করছি এভাবে বললেও হবে।

* >المبسوط< للسرخسي ১/১০ : والتكلم بالنية لا معتبر به، فإن فعله ليجتمع عزيمة قلبه فهو حسن.

* >جواهر الفتاوى< للكرماني، ص ১০৩ : ولا عبرة بنية الأداء والقضاء، فإنه إذا كان في وقتها يكون أداء، وإن نوى القضاء، وإن لم يكن في وقتها يكون قضاء، وإن نوى الأداء.

আলজামিউস সাগীর, পৃ. ৭২; ফাতহুল কাদীর ১/২৮৫আলমুহীতুর রাযাবী ১/২৩৩, ২২০; আযযিয়াউল মানাবী ২/১১২, ১১৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২৬২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৬৬, ১২১

শেয়ার লিংক

মাহবুবুর রহমান - চান্দিনা, কুমিল্লা

৬৬১৪. প্রশ্ন

আমি একটি মসজিদের মুআযযিন। একদিন ফজরের সময় ঘুম থেকে জাগতে দেরি হয়ে যায়। তখন আমি গোসল ফরয অবস্থায় ছিলাম। কিন্তু আযানের সময় হয়ে যাওয়ার কারণে গোসল করার পূর্বেই আযান দিই। এরপর পুনরায় আযান দোহরাইনি। হুজুরের কাছে জানতে চাই, আমার উক্ত আযান কি সহীহ হয়েছে, নাকি পুনরায় দোহরানো উচিত ছিল?

উত্তর

আপনার উক্ত আযান সহীহ হয়ে গেছে। তবে গোসল ফরয অবস্থায় আযান দেওয়া মাকরূহে তাহরীমী। তাই এমনটি করা থেকে বিরত থাকা উচিত। এক্ষেত্রে পবিত্রতা অর্জনের পর পুনরায় আযান দোহরানো উত্তম। তবে তা মাইকে দেওয়া জরুরি নয়। মাইক ছাড়া শুধু মুখে দিলেও হবে।

প্রকাশ থাকে যে, আযানের ব্যবস্থা যদি মসজিদের ভেতরে হয়, যেমনটি বর্তমানে অধিকাংশ মসজিদে হয়ে থাকে, আর মুআযযিনের থাকার জায়গা হয় মসজিদের বাইরে, তাহলে গোসল ফরয হওয়ার পর আযান দেওয়ার জন্যও মসজিদে প্রবেশ করা যাবে না। কেননা, এ অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করাই নাজায়েয।

* >الجامع الصغير< ص ৬৭ : مؤذن أذن على غير وضوء وأقام : لا يعيد، والجنب أحب إلي أن يعيد، وإن لم يعد أجزأه.

শরহু মুখতাসারিল কারখী, কুদূরী ১/৩১৪; শরহুল জামিইস সাগীর, কাযীখান ১/৯৫; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৯৪, ১/২৩৪; আলবাহরুর রায়েক ১/২৬৩; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩৯২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা

৬৬১৫. প্রশ্ন

আমাদের গ্রামের মসজিদের ইমাম সাহেব একদিন এশার নামাযের তৃতীয় রাকাতে ভুলে সূরা ফাতেহা শেষ পর্যন্ত উচ্চৈঃস্বরে পড়ে ফেলেন এবং এ কারণে সাহু সিজদা আদায় করেন। জানার বিষয় হল, এ কারণে কি সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়েছিল? এক্ষেত্রে নামায শেষে সাহু সিজদা করা কি ঠিক হয়েছে?

 

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়েছিল। কেননা ফরয নামাযের শেষ দুই রাকাতে কেরাত নিম্নস্বরে পড়া জরুরি। প্রথম দুই রাকাতের মতো উচ্চৈঃস্বরে পড়া যাবে না। এক্ষেত্রে কেউ যদি সূরা ফাতেহার তিন আয়াত বা তার বেশি উচ্চৈঃস্বরে পড়ে ফেলে, তাহলে সাহু সিজদা করতে হবে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইমাম সাহেবের সাহু সিজদা করা ঠিক হয়েছে।

* كتاب >الأصل< للشيباني ১/১৯৫ : قلت: فإن كان إماماً وكانت العشاء، فقرأ في الأخريين وجهر بالقراءة، أو كانت الظهر والعصر، فقرأ فيهما وجهر بالقراءة، كان عليه سجدتا السهو؟ قال: نعم.

আলমাবসূত, সারাখসী ১/১৮, ২২২; আলমুহীতুর রাযাবী ১/৩২০; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/৯৯; ফাতহুল কাদীর ১/৪৪১

শেয়ার লিংক

জামিল মাহমুদ - হাটহাজারী, চট্টগ্রাম

৬৬১৬. প্রশ্ন

আমি একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসার কাজে আমাকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সফর করতে হয়। চার রাকাত বিশিষ্ট ফরয নামাযে তো আমি কসর করে থাকি। এখন জানার বিষয় হল, ফরয নামাযের আগ-পরের সুন্নতের ক্ষেত্রে আমার কী করণীয়? এগুলো না পড়লে কি কোনো সমস্যা হবে?

উত্তর

সাধারণ অবস্থার তুলনায় সফর অবস্থায় সুন্নতের হুকুম কিছুটা শিথিল হয়ে যায়। তাই সফর চলা অবস্থায় এবং তাড়াহুড়া, ব্যস্ততা ও ক্লান্তির সময় সুন্নত না পড়ার সুযোগ আছে। বিশেষ করে সহযাত্রীদের অপেক্ষমাণ অবস্থায় সুন্নত না পড়াই উত্তম। তবে মুসাফির যখন কোনো জায়গায় অবস্থান করে এবং স্থীর অবস্থায় থাকে; তার মধ্যে অসুস্থতা বা ক্লান্তি ইত্যাদির ওযর না থাকে, তখন যথাসম্ভব সুন্নতে মুআক্কাদা পড়ে নেওয়াই উত্তম।

তবে ফজরের সুন্নতের হুকুম এর থেকে ভিন্ন। বিশেষ কোনো সমস্যার আশঙ্কা না থাকলে যথাসম্ভব সর্বাবস্থায় তা আদায় করা উচিত। হাদীস শরীফে এসেছে, আয়েশা রা. বলেন

أَمَّا مَا لَمْ يَدَعْ صَحِيحًا، وَلاَ مَرِيضًا فِي سَفَرٍ، وَلاَ حَضَرٍ غَائِبًا، وَلاَ شَاهِدًا، تَعْنِي النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم، فَرَكْعَتَانِ قَبْلَ الْفَجْرِ.

অর্থাৎ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্থ, অসুস্থ এবং আবাসে ও সফরে কখনো ফজরের আগের দুই রাকাত সুন্নত ছাড়তেন না। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৯৫০)

* >المحيط البرهاني< ২/৩৮৪ : وتكلموا فى الأفضل في السنن، فقيل: هو الترك ترخصا، وقيل: هو الفعل تقربا. وكان الشيخ الإمام الفقيه أبو جعفر رحمه الله تعالى يقول: بالفعل في حالة النزول، والترك فى حالة السير.

* >التجنيس والمزيد< ২/১৭০ : والمختار أنه إن كان حال أمن وقرار يأتي بها.

আলমাবসূত, সারাখসী ১/২৪৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২০৪; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫৪৫; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩০; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৩১

শেয়ার লিংক

সোবহান চৌধুরী - গুলশান, ঢাকা

৬৬১৭. প্রশ্ন

হুজুর, বিতির নামাযে আমি প্রায় সময়ই সন্দেহে পড়ে যাই যে, নামায দুই রাকাত হয়েছে, না তিন রাকাত। পরে দুই রাকাত ধরে নিয়েই নামায শেষ করি এবং শেষে সাহু সিজদা করি। সেদিন এ ব্যাপারে একজন আলেমকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন যে, বিতির নামাযে এরকম সন্দেহে পড়লে দ্বিতীয় রাকাত এবং তৃতীয় রাকাত উভয় রাকাতেই কুনুত পড়তে হবে।

হুজুরের কাছে জানতে চাই, উক্ত আলেম কি ঠিক বলেছেন? বিতির নামাযে এরকম সন্দেহ হলে আমার কী করা উচিত?

উত্তর

জ্বী, উক্ত আলেম ঠিকই বলেছেন। কারো যদি বিতির নামাযে দ্বিতীয় রাকাত না তৃতীয় রাকাত এ নিয়ে সন্দেহ হয় এবং কোনো এক দিক স্থীর করতে না পারে তাহলে নিয়ম হল, শেষ দুই রাকাতেই সে দুআয়ে কুনূত পড়বে এবং নামায শেষে সাহু সিজদা করবে।

উল্লেখ্য, নামাযে প্রায়শই রাকাত সংখ্যা নিয়ে সন্দেহে পড়া উদাসীনতার লক্ষণ। তাই নামাযে আরো মনোযোগী হওয়া কাম্য।

* >التجنيس والمزيد< ২/৯১ : رجل شك في الوتر وهو في حالة القيام أنه في الثانية أو الثالثة، يتم الركعة ويقنت فيها لجواز أنها الثالثة، ثم يقعد ويقوم فيضيف إليها ركعة أخرى ويقنت فيها أيضا، وهو المختار.

আলমুহীতুর রাযাবী ১/২৮৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৩৪৫; আলবাহরুর রায়েক ২/৪১; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৪২১

শেয়ার লিংক

ইমরান জামিল - মুহাম্মদপুর, ঢাকা

৬৬১৮. প্রশ্ন

গতকাল আমি মসজিদে এশার নামায পড়ে বাসায় এসে বিতির আদায় করি। পরদিন ফজর নামায পড়তে মসজিদে যাওয়ার পর জানতে পারি যে, ইমাম সাহেব এশার নামায ভুলে ওযুহীন অবস্থায় পড়িয়েছিলেন। স্মরণ হওয়ার পর আবার সবাইকে নিয়ে নামায কাযা করে নিয়েছেন। একথা শুনে আমি আমার এশার নামায কাযা করে নিই। তবে বিতির যেহেতু ওযু অবস্থায়ই পড়েছি, তাই তা কাযা করিনি। জানার বিষয় হল, আমার এ কাজ কি সঠিক হয়েছে? এক্ষেত্রে আমার জন্য কি এশার নামাযের সাথে বিতিরও কাযা করা জরুরি?

উত্তর

না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকে বিতির নামায কাযা করতে হবে না। কেননা, এশার নামাযের পর বিতির আদায়ের পরে যদি এশার নামায ফাসেদ বলে সাব্যস্ত হয় আর বিতির নামায সহীহভাবে আদায় করা হয়ে থাকে, তাহলে সেক্ষেত্রে এশার নামাযের সাথে বিতিরও পুনরায় পড়া জরুরি নয়; বরং ঐ বিতির নামায সহীহ হিসেবেই বহাল থাকবে। ওয়াক্তের ভেতরই এশার নামাযটি আদায় করে নিলে এর সাথে শুধু এশার নামায পরবর্তী সুন্নত পুনরায় আদায় করতে হবে।

* كتاب >الأصل< ১/১২৫ : قلت: أرأيت رجلاً صلى العشاء وهو على غير وضوء فنام، ثم استيقظ سَحَراً فأوتر وهو لا يعلم أنه حيث صلى العشاء كان على غير وضوء، فقام وأوتر، فلما فرغ من الوتر وسلم ذكر أنه صلى العشاء وهو على غير وضوء، فقام وصلى العشاء، أيجزيه وتره ذلك أم يعيد؟ قال: يجزيه، ولا يعيد في قول أبي حنيفة.

মিরাজুদ দেরায়া ১/৪৯০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৫০; ইমদাদুল ফাত্তাহ, পৃ. ১৮১; রদ্দুল মুহতার ১/৩৬১

শেয়ার লিংক

মিকদাদ উমায়ের - মহাখালী, ঢাকা

৬৬১৯. প্রশ্ন

মুহতারাম, আমাদের এলাকার এক শ্রদ্ধেয় মুরুব্বি ইন্তেকাল করেছেন। আমি তার জানাযায় শরীক হওয়ার জন্য যাই। কিন্তু আমি দূরে থাকতেই নামায শুরু হয়ে যায়। আমি দ্রুত গিয়ে যখন নামাযে শরীক হই তখন ইমাম দ্বিতীয় তাকবীর বলে ফেলেন। আমিও তাকবীর বলে হাত বাঁধি এবং দ্বিতীয় তাকবীরের দুআ অর্থাৎ দরূদ শরীফ পড়ি। এরপর স্বাভাবিকভাবে নামায পড়ে ইমামের সাথেই সালাম ফেরাই।

আমার এই নামায কি সহীহ হয়েছে? কেননা আমার তো তিন তাকবীর আদায় হয়েছে, চার তাকবীর আদায় হয়নি। এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী ছিল, তাও জানতে চাচ্ছি।

উত্তর

না, আপনার উক্ত জানাযা নামায আদায় হয়নি। কেননা জানাযার চার তাকবীরের প্রত্যেক তাকবীর ফরয। এর একটি বলা না হলেও জানাযা নামায সহীহ হয় না।

এক্ষেত্রে আপনার করণীয় ছিল, ইমামের সাথে সালাম না ফিরিয়ে তখনই ছুটে যাওয়া তাকবীরটি আদায় করা, এরপর সালাম ফেরানো। এক্ষেত্রে এটিই নিয়ম। জানাযার নামাযে মাসবূক ইমামের সালামের পর সালাম না ফিরিয়ে খাটিয়া উঠিয়ে নেওয়ার আগে আগেই শুধু ছুটে যাওয়া তাকবীরগুলো বলে নেবে।

ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন

إذَا فَاتَتْك تَكْبِيرَةٌ، أَوْ تَكْبِيرَتَانِ عَلَى الْجِنَازَةِ فَبَادِرْ فَكَبِّرْ مَا فَاتَكَ قَبْلَ أَنْ تُرْفَعَ.

জানাযার নামাযে যদি তোমার এক তাকবীর বা দুই তাকবীর ছুটে যায়, তাহলে জানাযা উঠিয়ে নেওয়ার আগেই তুমি দ্রুত তোমার ছুটে যাওয়া তাকবীর আদায় করে নাও। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, বর্ণনা ১১৬০১)

তবে জানাযার নামাযের কোনো কাযা নেই। তাই আপনার উক্ত জানাযা নামায আদায় না হলেও এ বিষয়ে এখন আর করণীয় কিছু নেই। ভবিষ্যতে সতর্ক থাকবেন।

* >بدائع الصنائع< ২/৫৩ : ثم إذا سلم الإمام قضى ما عليه قبل أن ترفع الجنازة، ... ولأن كل تكبيرة من هذه الصلاة قائمة مقام ركعة، بدليل أنه لو ترك تكبيرة منها تفسد صلاته.

আলমাবসূত, সারাখসী ২/৬৬; আলহাবিল কুদসী ১/২৬২; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৭৮,৭৯; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫৭৬; ফাতহুল কাদীর ২/৮৮; রদ্দুল মুহতার ২/২১৬

শেয়ার লিংক

খলীল আহমদ - খুলনা

৬৬২০. প্রশ্ন

আমার আম্মার কাছে দুই ভরি সোনা এবং দুই ভরি রুপা আছে। এছাড়া নগদ টাকা পয়সা নেই। তাহলে এখন কি তার ওপর যাকাত ফরয? জানালে উপকৃত হব?

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার আম্মার ওপর ঐ স্বর্ণ-রুপার যাকাত আদায় করা আবশ্যক। কেননা ঐ স্বর্ণ-রুপার কোনোটি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ (অর্থাৎ স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত ভরি আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন ভরি) না হলেও উভয়টির মূল্য যেহেতু সমষ্টিগতভাবে রুপার নেসাব (সাড়ে বায়ান্ন ভরি)-এর সমমূল্য বা তার বেশি হয়ে যায়, তাই এগুলোর যাকাত আদায় করা জরুরি।

মামার রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন

عَنِ الْحَسَنِ، وَقَتَادَةَ فِي رَجُلٍ لَهُ مِائَةُ دِرْهَمٍ وَعَشْرَةُ دَنَانِيرَ، قَالَا: عَلَيْهِ فِي الدَّنَانِيرٍ، وَالدَّرَاهِمِ صَدَقَةٌ.

অর্থাৎ এক ব্যক্তির এক শ দিরহাম এবং দশ দীনার আছে, তার সম্পর্কে হাসান ও কাতাদাহ রাহ. বলেন, তাকে এই দিরহাম ও দীনারের যাকাত দিতে হবে। (মুসান্নাফে আবদুর রায্যাক, বর্ণনা ৭০৮১)

শরহু মুখতাসারিত তাহাবী, জাস্সাস ২/৩০৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/১০৬; ১০৮; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৫০; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/১৫৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭৯

শেয়ার লিংক

শহীদুল ইসলাম - বরিশাল

৬৬২১. প্রশ্ন

মুহতারাম, আমি একটি মসজিদে ইমামতি করি। সাধারণত আমি ছুটিতে গেলে কিংবা অনুপস্থিত থাকলে গ্রামের একটি ছেলেকে নামাযের দায়িত্ব দিয়ে যাই। সে কোনো বিনিময় ছাড়াই আগ্রহের সাথে নামায পড়ায়। তার সাথে কখনো কোনো বিনিময়ের কথা হয়নি। তবে ছেলেটি দরিদ্র হওয়ায় আমি সময়ে সময়ে তাকে বিভিন্ন কিছু হাদিয়া হিসেবে কিংবা যাকাতের নিয়তে দিয়ে থাকি। জানার বিষয় হল, আমি কি তাকে যাকাত দিতে পারব? এর দ্বারা যাকাত আদায় হবে কি?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বিষয়টি যদি এমন হয় যে, আপনি তাকে হাদিয়া না দিলেও সে আপনার জায়গায় নামায পড়াচ্ছে এবং এতে তার কোনো দাবি বা আপত্তি থাকে না, তাহলে সেক্ষেত্রে আপনি তাকে যাকাতের টাকাও দিতে পারবেন। এর দ্বারা আপনার যাকাত আদায় হয়ে যাবে।

তবে এক্ষেত্রে সে যেন কখনো এটাকে নামায পড়ানোর হাদিয়া হিসেবে মনে না করে এজন্য তাকে স্পষ্টই বলে দেওয়া উচিত যে, এটি নামায পড়ানোর হাদিয়া হিসেবে নয়; বরং এমনিতেই তাকে সহায়তা করা হচ্ছে। যাতে করে সে একে বিনিময় ভেবে ইমামতির দায়িত্ব পালন না করে। কেননা কাউকে বিনিময় হিসেবে যাকাতের টাকা দিলে তা দ্বারা যাকাত আদায় হয় না। তাই আপনি যদি আপনার স্থলে নামায পড়ানোর জন্য তাকে আলাদা কিছু হাদিয়া দিয়ে দেন, তাহলে সেটিই হবে নিরাপদ। সেক্ষেত্রে তাকে যাকাতের অর্থ দেওয়ার সময় বলে দিলেই হবে যে, এটি নামায পড়ানোর জন্য নয়। ইমামতির জন্য পৃথকভাবে যা দেওয়া হয়েছে, এটি তার থেকে আলাদা।

* >جواهر الفتاوى< للكرماني، ص ১৪১ : معلم له خليفة في المكتب، ولم يستأجره بشيء، ولم يشترط له شيئا، وهو يعلم الصبيان ويكتب أحوالهم، فإنه يجوز للمعلم دفع الزكاة إليه، إلا أن يكون بحيث لو لم يعطه لم يعمل له في مكتبه ذلك؛ لأنه حينئذ يكون في مقابلة العمل، فلا يقع عن الزكاة.

খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৪৩; আলজাওহারাতুন নাইয়িরা ১/১৬৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪৬৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৫৬; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/৪৩২

শেয়ার লিংক

শামছুল হক - সিলেট

৬৬২২. প্রশ্ন

আমি ঘর নির্মাণের জন্য টাকার প্রয়োজনে একজন থেকে ৫ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। ঋণ পরিশোধের জন্য ঋণদাতা আমাকে ৩ বছর সময় দেয়। কিন্তু এ বছর আলহামদু লিল্লাহ আমার ব্যবসায় এ পরিমাণ লাভ হয় যে, চাইলে আমি হজ্ব করতে পারব। তবে এ থেকে ঋণের টাকা বাদ দিলে হজ্বে যাওয়া সম্ভব নয়।

আমার প্রশ্ন হল, ঋণ পরিশোধের জন্য যেহেতু হজ্বের পরেও পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ থাকবে, তাই এ অবস্থায় আমার ওপর হজ্ব ফরয কি না?

উত্তর

পরে পরিশোধ করার সুযোগ থাকলেও বর্তমানে এই ঋণ বাদ দিলে যদি হজ্বে যাওয়া মত প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পদ আপনার কাছে না থাকে, তাহলে আপনার ওপর এ অবস্থায় হজ্ব ফরয নয়।

অবশ্য আপনার যদি মনে হয় যে, এখন হজ্বে চলে গেলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধে কোনো অসুবিধা হবে না, তাহলে আপনি এ বছরও হজ্বে চলে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার ফরয হজ্ব আদায় হয়ে যাবে। হজ্ব থেকে ফিরে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ আদায়ে সচেষ্ট হবেন।

* >رد المحتار< ২/৪৬১ : من الحوائج الأصلية، كفرسه وسلاحه وثيابه وعبيد خدمته وآلات حرفته وأثاثه، وقضاء ديونه ولو مؤجلة، كما في اللباب وغيره.

বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৭; আলমানাসিক, মোল্লা আলী আলকারী, পৃ. ৪৩; মিনহাতুল খালিক ২/৩২২

শেয়ার লিংক

সাইফুর রশীদ - যশোর

৬৬২৩. প্রশ্ন

আমি সৌদি প্রবাসী। চাকরির সুবাদে মক্কায় অবস্থান করি। সে হিসেবে আমি সেখানে মুকীম। আমার প্রশ্ন হল, মক্কায় এ ধরনের মুকীম ব্যক্তি হজ্বের মাসগুলোতে নফল উমরার ইহরাম করতে পারবে কি? এবং তানঈম ছাড়া অন্য কোনো হিল-এ গিয়ে ইহরাম করতে পারবে কি? দয়া করে দ্রুত জানালে ভালো হয়।

উত্তর

মক্কায় অবস্থানকারীর জন্য হজ্বের মাসগুলোতেও (হজ্বের পাঁচ দিন ছাড়া) উমরা আদায় করা জায়েয আছে। তবে এরপর তার জন্য এ বছর হজ্ব করা জায়েয হবে না। কেননা মক্কায় অবস্থানকারীর জন্য একই বছর হজ্বের মাসসমূহে হজ্ব-উমরা যে কোনো একটি আদায় করা জায়েয আছে। কিন্তু উভয়টি আদায় করা জায়েয নয়।

অতএব মক্কায় অবস্থানকারীর যে বছর হজ্ব করার নিয়ত থাকবে, সেই বছর হজ্বের মাসসমূহে সে উমরা করতে পারবে না; বরং শুধু হজ্ব আদায় করবে। আর তাদের জন্য উমরার ইহরাম হিল-এর যে কোনো এলাকা থেকেই করা জায়েয। তবে তানঈম থেকে করা উত্তম।

* >شرح مختصر الطحاوي< للإسبيجابي ২/৬৭২: ثم حاضروا المسجد الحرام ليس لهم التمتع والقران، وإنما لهم أن يفردوا الحج أو يفردوا العمرة.

আলমাসালিক ফিল মানাসিক ১/৬৮২; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৬৬; আলমানাসিক, মোল্লা আলী আলকারী, পৃ. ২৭৪, ২৮৩; আলবাহরুল আমীক ৪/২০৩১

শেয়ার লিংক

নিজামুদ্দীন - নোয়াখালী

৬৬২৪. প্রশ্ন

আমাদের এলাকার জনৈক মহিলার সাথে এক লোকের বিয়ে হয়। ঐ লোকের বাড়িতে ব্যবস্থাপনাগত কিছু সমস্যার কারণে সে তার স্ত্রীকে কখনো নিজ বাড়িতে আনতে পারেনি। তাই তার স্ত্রী যথারীতি পিত্রালয়েই অবস্থান করছে।

জানার বিষয় হল, এমতাবস্থায় উক্ত মহিলার ভরণ-পোষণ কি তার স্বামীর ওপর ওয়াজিব?

উত্তর

হাঁ, ঐ মহিলা তার পিত্রালয়ে থাকলেও স্বামীর ওপর তার ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব। কেননা এক্ষেত্রে স্বামীর বাড়িতে তার থাকার ব্যবস্থা না থাকার কারণে স্বামী নিজেই তাকে সেখানে রাখছে। স্বামী নিজ বাড়িতে রাখতে চাচ্ছে আর স্ত্রী তার হুকুম অমান্য করে সেখানে থাকছে বিষয়টি এমন নয়।

* >الاختيار لتعليل المختار< ৩/২৭৮ : وإذا طالبته بالنفقة قبل أن يحولها إلى منزله وهي بالغة، فلها النفقة إذا لم يطالبها بالنقلة؛ لأن النقلة حقه والنفقة حقها، فلا يسقط حقها بتركه حقه، فإن طالبها بالنقلة فامتنعت فلا نفقة لها، إلا أن يكون بحق على ما بينا.

আলমাবসূত, সারাখসী ৫/১৮৭; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ২/১৯১; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/২৭৪; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৭৯; রদ্দুল মুহতার ৩/৫৭৫

শেয়ার লিংক

আবু হুরায়রা - চাটখিল, নোয়াখালী

৬৬২৫. প্রশ্ন

বিবাহ পড়ানোর সময় দেখা যায়, কাজী বা যিনি বিবাহ পড়ান তিনি বিভিন্নভাবে মেয়ের নাম উল্লেখ করে থাকেন। কখনো মেয়ের নামের সাথে মেয়ের পিতার নাম উল্লেখ করেন। আবার কখনো মেয়ের পিতার সাথে দাদার নামও উল্লেখ করেন। আবার কোনো সময় শুধু মেয়ের মূল নাম ও ডাক নাম উল্লেখ করেন। পিতার নাম উল্লেখ করেন না।

মুহতারামের কাছে এ ক্ষেত্রে নাম নেওয়ার সঠিক নিয়মটি জানতে চাই।

উত্তর

বিবাহের আকদের ক্ষেত্রে মূল বিষয় হল, পাত্র-পাত্রীর পরিচয় সাক্ষীদের কাছে সুস্পষ্ট থাকা। সুতরাং আকদের মজলিসে পাত্রী যদি উপস্থিত না থাকে, আর পাত্রীকে সাক্ষীরা সরাসরি তার নামেই চিনতে পারে, তাহলে আকদের সময় শুধু পাত্রীর নাম নিলেও আকদ সহীহ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে পিতার নাম বলা জরুরি নয়।

আর যদি পাত্রীকে শুধু তার নাম দ্বারা সাক্ষীরা চিনতে না পারে, তাহলে সেক্ষেত্রে পাত্রী শনাক্ত করণের জন্য পাত্রীর নামের পাশাপাশি পিতার নাম, প্রয়োজনে দাদার নামও বলতে হবে।

* >مختارات النوازل< ২/২০ : وأما الغائبة لا يصح نكاحها إلا بتعريف اسمها واسم أبيها، وإن ذكر اسمها لا غير، إن كان الشهود يعرفونها جاز؛ لأن المقصود من ذكر اسم أبيها التعريف، وقد حصلت المعرفة باسمها.

আলমুহীতুল বুরহানী ৪/২৪; ফাতহুল কাদীর ৩/১৯৬; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৩৭; রদ্দুল মুহতার ৩/২২

শেয়ার লিংক

রাকীবুল ইসলাম - শিবচর, মাদারীপুর

৬৬২৬. প্রশ্ন

আমাদের এলাকার বিবাহিতা এক হিন্দু মেয়ে তার হিন্দু স্বামীর কাছ থেকে চলে এসেছে। এর তিন চার দিন পর সে ইসলাম গ্রহণ করেছে।

জানার বিষয় হল, ঐ মেয়েকে কি এখনই কোনো মুসলিম বিবাহ করতে পারবে, নাকি এক্ষেত্রে ঐ মেয়েকে কোনো ইদ্দত পালন করতে হবে?

উত্তর

ঐ নওমুসলিম মেয়েটির এখনই কোনো মুসলিম ছেলের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বৈধ হবে না; বরং ইসলাম গ্রহণের পর তিনটি ঋতুস্রাব আর অন্তঃসত্ত্বা হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়া পর্যন্ত তাকে অপেক্ষা করতে হবে। এর ভেতর যদি তার স্বামীও ইসলাম গ্রহণ করে নেয়, তবে তাদের আগের বিবাহই বহাল থাকবে এবং তারা নতুন বিবাহ ছাড়াই স্বামী-স্ত্রী হিসেবে ঘর-সংসার করতে পারবে। আর যদি মেয়েটি ইসলাম গ্রহণের পর তিনটি মাসিক ঋতুস্রাব অতিক্রান্ত হয়ে যায় এবং এর ভেতর তার স্বামী ইসলাম গ্রহণ না করে, তবে তৃতীয় মাসিক শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অমুসলিম ছেলেটির সাথে তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। এরপর চাইলে সে কোনো মুসলিম পুরুষের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।

উল্লেখ্য, কোনো দেশে ইসলামী বিচারব্যবস্থা থাকলে সেক্ষেত্রে মাসআলা ভিন্ন। তখন আগের স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য শুধু তিনটি ঋতুস্রাব অতিবাহিত হওয়াই যথেষ্ট নয়; বরং ইসলাম গ্রহণের পর নওমুসলিম মেয়েটি আদালতে আরজি দায়ের করবে। এরপর আদালত যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘোষণা করবে।

* >النهر الفائق< ২/২৮৮ : (ولو أسلم أحدهما ثمة) أي: في دار الحرب (لم تبن) زوجته منه إن لم يسلم الآخر (حتى تحيض ثلاثاً) أو يمضي عليها ثلاثة أشهر لو كانت آيسة أو صغيرة، لأنه لا بد من الفرقة تخليصه للمسلمة عن ذل الكافر، والإسلام لا يصلح أن يكون سببا لها، والعرض متعذر لعدم الولاية، فأقمنا شروطها وهو مضي الحيض مقام السبب كما في حفر البئر، ... أقول: وينبغي أن يكون ما ليس بدار حرب ولا إسلام ملحقة بدار الحرب هنا.

কিতাবুল আছল ১০/২২৪; আলমাবসূত, সারাখসী ৫/৫৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/৬৫৬; আদ্দুররুল মুখতার ৩/১৮৮, ১৯১

শেয়ার লিংক

আবদুল্লাহ - যাত্রাবাড়ি

৬৬২৭. প্রশ্ন

মুহতারাম, আমি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। আমার ব্যবসাটি ভাড়া দোকানে এবং তাতে দুজন কর্মচারী রয়েছে। বর্তমানে আমি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি বড় করার কথা ভাবছি। তাই আমি এক ব্যক্তি থেকে দশ লক্ষ টাকা মুযারাবা হিসেবে ব্যবসায় খাটানোর জন্য নিয়েছি। তার সাথে আমার এভাবে চুক্তি হয় যে, এই টাকার লভ্যাংশের ৭০% আমার, ৩০% তার।

এখন আমার জানার বিষয় হল, ব্যবসায় যে সমস্ত খরচাদি রয়েছে, যেমন দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন, কনভেন্স (দৈনিক নাস্তা বাবদ নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা) বিদ্যুৎ বিল, সার্ভিস চার্জ, ভ্যাট, কাস্টমারকে চা-নাস্তা খাওয়ানোর খরচ ইত্যাদি খরচগুলোর মধ্যে কোন্ কোন্ খরচ মাইনাস করে লভ্যাংশ হিসাব করতে হবে।

উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে বিনিয়োগের গৃহীত টাকা দিয়ে যদি নতুন আরেকটি দোকান ভাড়া নিয়ে পূর্বের ব্যবসা সম্প্রসারণ করা হয় বা যদি পূর্বের দোকানেই খাটানো হয়, তাহলে উভয় ক্ষেত্রে উল্লিখিত খরচ মাইনাসের ক্ষেত্রে কোনো ব্যবধান হবে কি না?

উত্তর

মুযারাবা ব্যবসার ক্ষেত্রে যেসব কাজ মুযারিবের (ব্যবসা পরিচালনাকারীর) নিজেই আঞ্জাম দেওয়া সম্ভব সেসব কাজের জন্য কর্মচারী নিয়োগ দিলে এর বেতন-ভাতা মুযারাবা ব্যবসা থেকে নেওয়া যাবে না; বরং এমন ক্ষেত্রে ওই কর্মচারীর বেতন-ভাতা মুযারিবের নিজেকেই বহন করতে হবে। কিন্তু যেসব কাজ মুযারিবের একাকী আঞ্জাম দেওয়া সম্ভব নয়, যেমন পণ্য বাজারজাত করা, মালামাল ক্রয়-বিক্রয় ইত্যাদি, এমন কাজের জন্য অতিরিক্ত লোকের প্রয়োজন হলে এবং সেগুলো সম্পাদনের জন্য কর্মচারী নিয়োগ দিলে এর বেতন-ভাতা মুযারাবা সম্পদ থেকে নেওয়া যাবে। তাদের যাতায়াত ভাড়া ও নাস্তা ইত্যাদিও এ থেকে নেওয়া যাবে। এমনিভাবে মুযারাবা ব্যবসার মালামাল হেফাজত-সংরক্ষণ ও ব্যবসা পরিচালনার জন্য দোকান-গোডাউন ভাড়া নেওয়ার প্রয়োজন হলে উক্ত দোকানের ভাড়া এবং পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য গাড়ি ভাড়া প্রয়োজন হলে তাও মুযারাবার সম্পদ থেকে নেওয়া যাবে।

মোটকথা, মুযারাবা ব্যবসা পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট সরাসরি প্রয়োজনীয় খরচাদি মুযারাবা সম্পদ থেকে নেওয়া যাবে।

অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি ওই ব্যক্তি থেকে মুযারাবার ভিত্তিতে যে দশ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ নিয়েছেন তা যেহেতু কর্মচারী ও দোকান-ঘর ছাড়া পরিচালনা করা সম্ভব নয়, তাই উক্ত মুযারাবা সম্পদ থেকে কর্মচারীর বেতন এবং দোকান ভাড়া নিতে পারবেন। এবং এর সাথে উক্ত দোকানের বিদ্যুৎ বিল, সার্ভিস চার্জ, এমনিভাবে কাস্টমারের চা-নাস্তাসহ উক্ত ব্যবসা পরিচালনার সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আবশ্যকীয় খরচাদিও মুযারাবার টাকা থেকে নেওয়া যাবে। এক্ষেত্রে আপনার আগের দোকানেই পূর্বের ব্যবসার সাথে এই ব্যবসাটি পরিচালনা করলেও মুযারাবার অংশ অনুপাতে এ থেকে এসব খরচাদি নিতে পারবেন। অর্থাৎ যত টাকা আপনার নিজের বিনিয়োগ থাকবে, সে পরিমাণ টাকার খরচ আপনি বহন করবেন। অবশিষ্ট খরচ মুযারাবার সম্পদ থেকে নিতে পারবেন। তবে আপনার নিজের জন্য কোনো বেতন-ভাতা বা খাবার ইত্যাদি নিতে পারবেন না। আপনি মেয়াদান্তে চুক্তি অনুযায়ী লভ্যাংশ পাবেন।

* >المبسوط< للسرخسي ২২/৬৬: وإذا دفع الرجل إلى رجل ألف درهم مضاربة، فخرج المضارب فيها، وفي عشرة آلاف من مال نفسه إلى مصر، ليشتري بها ويبيع، فإن نفقته على أحد عشر سهما، جزء منها في مال المضاربة، وعشرة أجزاء في مال نفسه.

وفيه أيضا ২২/৩৮: وله أن يستأجر معه الأجراء، ويستأجر البيوت، والدواب لأمتعته التي يشتريها؛ لأن ذلك من صنع التجار. فالمضارب لا يستغني عن ذلك في تحصيل الربح.

মুখতাসারু ইখতিলাফিল উলামা, জাস্সাস ৪/৪৪; বাদায়েউস সানায়ে ৫/১২৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৩১৩

শেয়ার লিংক

আবদুল্লাহ - ঢাকা

৬৬২৮. প্রশ্ন

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) আশা-এর মূল কাজ হল গ্রাহকদের সুদে লোন দেওয়া। তারা তাদের লোন গ্রহীতাদের সেবা দেওয়ার জন্য ডাক্তার নিয়োগ দেবে।

প্রশ্ন হল, তাদের ওখানে ডাক্তার হিসেবে চাকরি করা কি বৈধ হবে?

উত্তর

না, ঐ এনজিওতে চিকিৎসক পদেও চাকরি করা শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েয হবে না। কেননা এনজিওটির মূল আয় হল সুদ। সংস্থাটি গ্রাহককে ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির আওতায়  প্রাথমিক লোন, বিশেষ লোন ও এসএমই লোন দিয়ে থাকে এবং এর ওপর নির্ধারিত হারে সুদ নিয়ে থাকে। আর সুদি আয় থেকেই এর কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বেতন ভাতা দিয়ে থাকে।

সুতরাং সংস্থাটিতে আপনার কাজটি যদিও সুদি লেনদেনের সাথে সম্পৃক্ত নয়; কিন্তু আপনার বেতন ভাতা ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদত্ত হবে সুদি আয় থেকে। আর জেনেশুনে সুদের টাকা চাকরির বেতন বাবদ নেওয়াও বৈধ নয়।

* >غمز عيون البصائر في شرح الأشباه والنظائر< ১/৩৪৫ : لرجل مال حلال، اختلطه مال من الربا أو الرشاة، أو الغلول أو السحت، أو من مال الغصب أو السرقة أو الخيانة أو من مال يتيم، فصار ماله كله شبهة، ليس لأحد أن يشاركه أو يبايعه، أو يستقرض منه أو يقبل هديته أو يأكل في بيته.

আলজামিউস সাগীর, পৃ. ৪৮০; আলমুলতাকাত, পৃ. ২৬৮; আলবাহরুর রায়েক ৮/২০১; রদ্দুল মুহতার ৫/৯৮; তাকমিলা ফাতহুল মুলহিম ১/৬১৯

শেয়ার লিংক

নূর হোসাইন - যশোর

৬৬২৯. প্রশ্ন

আমি এক প্রতিষ্ঠানের দারোয়ান। প্রতিষ্ঠানের এলাকাতেই আমার বাড়ি। প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ গাছের আম-কাঁঠাল এলাকার লোকদের কাছে বিক্রি করার জন্য আমাকে দেয়। তারা একটা দাম নির্দিষ্ট করে দিয়ে বলে যে, এগুলো বিক্রি করে আমাদের এত টাকা দিতে হবে। এর বেশি যে দামে বিক্রি করতে পারবে, সেটা তোমার।

জানার বিষয় হল, কর্তৃপক্ষ এভাবে বলার পর আম-কাঁঠাল বিক্রি করে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া কি আমার জন্য বৈধ হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিটি শরীয়তের পরিভাষায় এক ধরনের ইজারা। আর ইসলামের ইজারা নীতির এটা কোনো সহীহ পন্থা নয়। একে তো এতে পারিশ্রমিক সুনির্ধারিত হয় না। লোকটি কত টাকায় বিক্রি করতে পারবে তা আগে থেকে জানা যায় না। এছাড়াও তাতে আরো সমস্যা রয়েছে। তা হল, কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ধার্যকৃত বিক্রয়মূল্যের বেশিতে বিক্রি করতে না পারলে অথবা আরো কমে বিক্রি হলে বিক্রয়কারীর কোনো পারিশ্রমিকই থাকছে না। এক্ষেত্রে তার শ্রম বিফলে যাবে। অপরদিকে বিক্রয়কারী অধিক লাভের আশায় চড়া দামে পণ্য বিক্রির চেষ্টা করবে। ফলে ক্রেতাসাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এ পদ্ধতি পরিহার করা উচিত।

ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. থেকে বর্ণিত

أَنَّهُ كَرِهَ أَنْ يَقُولَ: بِعْ هَذا بِكَذَا فَمَا زَادَ فَلَكَ.

অর্থাৎ কেউ কাউকে বলল, এত টাকায় আমাকে এটি বিক্রি করে দাও। এর বেশি যততে বিক্রি করতে পারবে তা তোমার এ ধরনের চুক্তি করা তিনি অপছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক, বর্ণনা ১৫০২১)

এক্ষেত্রে উৎকৃষ্ট পদ্ধতি হল, পণ্য বিক্রয়কারীর জন্য তার কাজের বিনিময়স্বরূপ পারিশ্রমিক ধার্য করে দেবে। যেমন, আম-কাঁঠাল দিয়ে এ কথা বলা যে, এগুলো সব তুমি বিক্রি করে দেবে। তোমাকে ৫০০ টাকা দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে শ্রমদাতা তার শ্রমের বিনিময় পেয়ে যাবে। আর বিক্রিত মূল্যের সমুদয় অর্থ মালিকের হবে।

* >المحيط البرهاني< ১১/২১৬: دفع إلى رجل ثوبا ليبيعه على أن ما زاد على كذا فهو له، قال: هذا على جهة الإجارة، وهذا إجارة فاسدة.

মুখতারাতুন নাওয়াযিল ৩/৩৮৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/১২৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪১০; শরহুল মাজাল্লাহ, আতাসী ২/৬৭৭

শেয়ার লিংক

আলীমুর রহমান - যশোর

৬৬৩০. প্রশ্ন

গোশতের দোকানে গরু-ছাগলের পায়ার অনেক চাহিদা থাকে। সবসময় এগুলো পাওয়া যায় না। দোকানে গেলে অনেক সময় দোকানদার পাশে বাঁধা গরু বা ছাগল দেখিয়ে বলে, আপনি চাইলে এইটার পায়া নিতে পারেন। দাম এত টাকা। তখন আমি টাকা দিয়ে আসি। জবাইয়ের পর প্রস্তুত করে সে আমাকে সেগুলো দেয়।

জানার বিষয় হল, এভাবে আমার জন্য পশুর পায়া কেনা কি বৈধ হবে? আমরা তো জানি, পশু জবাইয়ের আগে এর গোশত, চামড়া ইত্যাদির ক্রয়-বিক্রয় নাজায়েয। কিন্তু এক্ষেত্রে তো পশু জবাইয়ের আগেই এর পায়া কেনার জন্য আমি তাকে টাকা দিয়ে দিয়েছি। এতে কি কোনো সমস্যা আছে?

 

উত্তর

গোশত বিক্রেতার সাথে জবাইয়ের আগে পশুর পায়ার দরদাম করা এবং জবাইয়ের পর ওগুলো আপনার কাছে ঐ দামে বিক্রি করবে এটা নিশ্চিত করে অগ্রীম টাকা প্রদান করা জায়েয আছে। এটি ক্রয়-বিক্রয়ের কথাবার্তা বা ওয়াদা হিসাবে ধর্তব্য; চূড়ান্ত ক্রয়-বিক্রয় নয়।

এক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন হবে জবাইয়ের পর পায়াগুলো আপনাকে হস্তান্তরের মাধ্যমে। তাই প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিটি পশু জবাইয়ের আগে এর গোশত ইত্যাদি বিক্রির অন্তর্ভুক্ত নয়।

* >الفتاوى الولوالجية< ৩/১৪৯: دفع دراهم إلى خباز فقال: اشتريت منك مائة مَنّ من خبز، وجعل يأخذ كل يوم خمسة أمنان، فالبيع فاسد، وما أكل فهو مكروه؛ لأنه اشترى خبزا غير مشار إليه، فكان المبيع مجهولا. ولو أعطاه الدراهم، وجعل يأخذ منه كل يوم خمسة أمنان، ولم يقل في الابتداء : اشتريت منك، يجوز، وهذا حلال، وإن كان نيته وقت الدفع الشراء؛ لأنه بمجرد النية لا ينعقد البيع، وإنما ينعقد البيع الآن بالتعاطي، والآن المبيع معلوم، فينعقد البيع صحيحا.

ফাতাওয়া খানিয়া ২/১১৬; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৭৪; রদ্দুল মুহতার ৪/৫১৬; শরহুল মাজাল্লাহ, আতাসী ২/৪০

শেয়ার লিংক

আবূ হানীফা - নিরালা, খুলনা

৬৬৩১. প্রশ্ন

বাজারে যে সাধারণ পদ্ধতিতে মুরগি ড্রেসিং করা হয়, তখন মুরগিকে রক্তমিশ্রিত ফুটন্ত পানিতে ডুবিয়ে তারপর মেশিনে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, উক্ত লাল পানি মুরগির চামড়ার ভেতর ঢুকে।

প্রশ্ন হল, এর কারণে ঐ মুরগি খাওয়া কি জায়েয হবে? এবং উক্ত পানি কি নাপাক পানির হুকুমে হবে? দলীল প্রমাণসহ জানালে বাধিত হব।

উত্তর

বাজারে ড্রেসিংয়ের জন্য মুরগিকে যে পানিতে ভেজানো হয় তা সাধারণত প্রবাহিত রক্ত মিশ্রিত হওয়ার কারণে নাপাক থাকে। তাই বাড়িতে এনে ঐ মুরগির চামড়া ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

তবে রক্তমিশ্রিত গরম পানিতে যেহেতু সামান্য সময়ই মুরগি রাখা হয়, তাই ঐ নাপাক পানির কারণে মুরগিটির গোশত হারাম হয়ে যায় না। শরীয়তসম্মতভাবে জবাই হয়ে থাকলে এ ধরনের মুরগির গোশত খাওয়া নিঃসন্দেহে হালাল।

উল্লেখ্য, যদি কারো দ্বারা নিজ বাড়িতে এনে মুরগি জবাই, ড্রেসিং ইত্যাদি করা সম্ভব হয়, তবে তা করাই উত্তম হবে।

* >فتح القدير< ১/১৮৬ : ولو ألقيت دجاجة حالة الغليان في الماء قبل أن يشق بطنها لتنتف أو كرش قبل الغسل لا يطهر أبدا، لكن على قول أبي يوسف يجب أن تطهر على قانون ما تقدم في اللحم.

قلت: ـ وهو سبحانه أعلم ـ هو معلل بتشربهما النجاسة المتحللة في اللحم بواسطة الغليان، وعلى هذا اشتهر أن اللحم السميط بمصر نجس لا يطهر، لكن العلة المذكورة لا تثبت حتى يصل الماء إلى حد الغليان، ويمكث فيه اللحم بعد ذلك زمانا يقع في مثله للتشرب والدخول في باطن اللحم، وكل من الأمرين غير متحقق في السميط الواقع؛ حيث لا يصل الماء إلى حد الغليان، ولا يترك فيه إلا مقدار ما تصل الحرارة إلى سطح الجلد، فتنحل مسام السطح عن الصوف، بل ذلك الترك يمنع من جودة انقلاع الشعر، فالأولى في السميط أن يطهر بالغسل ثلاثا لتنجس سطح الجلد بذلك الماء، فإنهم لا يحترسون فيه عن المنجس.

আলবাহরুর রায়েক ১/২৩৯; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ৮৬, রদ্দুল মুহতার ১/২১১, ৩৩৪ 

শেয়ার লিংক