আব্দুল হাকীম - যশোর

৪৯৭৭. প্রশ্ন

কুরবানীর দিন কোথাও এমন দেখা যায় যে, কুরবানীর পশুর হাত, পা, মাথা ইত্যদি যারা ধরে আছে, তাদেরকে জবাই করার সময় উচ্চস্বরে বিসমিল্লাহ বলার জন্য বলা হয় এবং সবার এমনটি করা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। কেউ না বললে তিরস্কার করা হয়। প্রশ্ন হল, যারা কুরবানীর পশু জবাই করতে বিভিন্নভাবে শরীক হয়েছে, তাদের সবার জন্যই কি বিসমিল্লাহ বলা জরুরি? এক্ষেত্রে শরীয়তের হুকুমটি জানতে চাচ্ছি।

 

উত্তর

পশু জবাইয়ের সময় শুধু জবাইকারীর জন্য বিসমিল্লাহ বলা জরুরি। আর জবাইয়ের সময় পশুকে যারা ধরবে তাদের কারো বিসমিল্লাহ বলা আবশ্যক নয়। উল্লেখ্য, অনেকসময় দেখা যায়, একজন ব্যক্তি জবাই শুরু করে, এরপর কসাই বা অন্য কোনো ব্যক্তি ছুরি দিয়ে জবাইয়ের বাকি কাজ সম্পন্ন করে। এক্ষেত্রে প্রথম ব্যক্তির জবাই সম্পন্ন হওয়ার আগেই যদি দ্বিতীয় ব্যক্তি জবাই শুরু করে থাকে তাহলে সেও জবাইকারীর অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং তাকেও বিসমিল্লাহ বলতে হবে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৪৯; আদ্দুররুল মুনতাকা ৪/১৭৬

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ নাবিল - চাঁপাইনবাবগঞ্জ

৪৯৭৮. প্রশ্ন

আমাদের অঞ্চলে বাচ্চা হওয়ার পর -চাই সেই বাচ্চা মেয়ে হোক কিংবা ছেলে- মেয়ের বাড়ির পক্ষ থেকে রুপার এক ধরনের বিশেষ চুড়ি তাকে উপহার দেওয়া হয়। বাচ্চা নিয়ে কোথাও বেড়াতে যাওয়া হলে তার হাতে সেগুলো পরিয়ে দেওয়া হয়। এধরনের চুড়ি বাচ্চাকে পরিধান করালে কোনো অসুবিধা আছে?

 

উত্তর

স্বর্ণ-রুপার অলঙ্কার কেবলমাত্র নারীদের জন্য বৈধ। তাই প্রশ্নোক্ত চুড়ি মেয়ে বাচ্চাদের জন্য ব্যবহার করা জায়েয। তাদের ক্ষেত্রে অসুবিধা নেই। আর ছেলেদের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণের রুপার আংটি ছাড়া অন্য কোনো অলঙ্কার ব্যবহার করা নাজায়েয। তাই ছেলে শিশুকে উক্ত রুপার চুড়ি পরানো যাবে না। তাছাড়া চুড়ি পরা মূলত মেয়েদের সাজ। হাদীস শরীফে ছেলেদের জন্য মেয়েদের সাজ বা বেশভূষা গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

لَعَنَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ المُتَشَبِّهِينَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ، وَالمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ.

অর্থাৎ যেসব পুরুষ নারীদের বেশভূষা অবলম্বন করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের লানত করেছেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৮৮৫)

অভিভাবকদের কর্তব্য হল, ছেলে শিশুদেরকেও ঐসকল নিষিদ্ধ পোষাক ও সাজগোজ থেকে বিরত রাখা, যা পুরুষদের জন্য নিষিদ্ধ।

-উমদাতুল কারী ২২/৪১; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪১৩; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৯০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/১০৯; ফাতাওয়া সিরাজিয়া পৃ. ৭৫

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ জাহিদ - ওয়েব থেকে প্রাপ্ত

৪৯৭৯. প্রশ্ন

আমার স্ত্রীর বয়স ২৮ বছর। এর মধ্যে দুই সন্তান হয়েছে। এক জনের বয়স ৩ বছর। ছোট জনের বয়স ১ বছর ৬ মাস। দুবারেই সিজার করতে হয়েছে। তার কিছু দিন হল সে কনসিভ করেছে। যেহেতু তার দুবার সিজার হয়েছে এবং স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও সে একটু মোটা তাই এবার তার জন্য এটা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। এক্ষেত্রে আমরা কি এব্রোশন করতে পারব? পরপর দুই সন্তান হওয়ার কারণে তার সিজারের জায়গা এখনো ভালোমতো শুকায়নি। বাচ্চার  হার্ডবিটও আসেনি।

উত্তর

সাধারণ অবস্থায় শরীয়তে গর্ভপাতের অনুমতি নেই। আপনি প্রশ্নে যে বিষয়গুলোকে ওযর হিসেবে বলেছেন, গর্ভপাতের জন্য তা যথেষ্ঠ ওযর কি না ভাবার অবকাশ আছে। আপনার দ্বিতীয় সন্তানের বয়স দেড় বছরের বেশি। যখন বর্তমান গর্ভস্থ শিশুটির প্রসবের সময় হবে তখন তার বয়স হবে প্রায় আড়াই বছর। আর এই পরিমাণ সময়ের ব্যবধানে আমাদের দেশে অহরহ সিজার হতে দেখা যায়। এরপরও যদি কোনো অভিজ্ঞ ডাক্তার আপনার স্ত্রী বা শিশুর জন্য বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ বলে থাকেন, তাহলে কোনো নির্ভরযোগ্য আলেমকে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে মাসআলা জেনে নিবেন।

-ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪১০; আলবাহরুর রায়েক ও মিনহাতুল খালিক ৩/২০০; আননাহরুল ফায়েক ২/২৭৬; রদ্দুল মুহতার ৩/১৭৬

শেয়ার লিংক