জুমার খুতবা নামাযের পূর্বে হওয়া এবং ঈদের খুতবা পরে হওয়ার বিষয়টি শরীয়তের বহু দলীল দ্বারা প্রমাণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরবর্তীতে খুলাফায়ে রাশেদীন, সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, তাবে-তাবেয়ীন সকলেই জুমার খুতবা নামাযের পূর্বে এবং ঈদের খুতবা নামাযের পরে প্রদান করতেন। তাদের অবিচ্ছিন্ন কর্মধারা এবং এ সম্পর্কিত হাদীস ও আছারের আলোকে জুমার খুতবা আগে হওয়া এবং ঈদের খুতবা পরে হওয়া প্রমাণিত। ঈদের খুতবা নামাযের পর : সহীহ বুখারী ১/১৩১; সহীহ মুসলিম ১/১৩১; জামে তিরমিযী ১/৭০; ফাতহুল বারী ২/৫২৬, জুমআর খুতবা নামাযের পূর্বে : সহীহ বুখারী ১/১২৮; সহীহ মুসলিম ১/২৮৩; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৪/১০৯
উল্লেখ্য, প্রশ্নে যে ঘটনাটির কথা বলা হয়েছে তা সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমসহ হাদীসের অন্যান্য কিতাবে রয়েছে, যার সারমর্ম হল, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাড়িয়ে জুমার খুতবা দিচ্ছিলেন ইতিমধ্যে হযরত দিহয়া রা.-এর ব্যবসায়ী কাফেলার আগমনের সংবাদ পেয়ে কিছু সংখ্যক সাহাবী ছাড়া সকলেই ঐ ব্যবসায়ী কাফেলার দিকে ছুটে গেলেন যার প্রেক্ষিতে এই আয়াত অবতীর্ণ হয়, (তরজমা) যখন তারা ব্যবসা ও কৌতুক দেখল তখন তারা আপনাকে দাঁড়ান অবস্থায় রেখে তার দিকে ছুটে গেল। বলুন, আল্লাহর নিকট যা আছে তা ক্রীড়া-কৌতুক ও ব্যবসা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা।-সূরা জুমআ : ১১
ঘটনা এ পর্যন্ত-ই। কিন্তু মারাসিলে আবু দাউদ (পৃ.৪৭) এ মুকাতিল ইবনে হাইয়ান এর বক্তব্যে রয়েছে যে, উক্ত ঘটনার পর রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমার খুতবা নামাযের আগে নিয়ে আসেন।
কিন্তু হাফেয ইবনে হাজার রাহ., আল্লামা আইনী রাহ. প্রমুখ মুহাদ্দিসগণ মুকাতিলের এ বক্তব্য প্রমাণিত নয় বলে উল্লেখ করেছেন। তাফসীরে রুহুল মাআনীর গ্রন্থকার আল্লামা আলুসী রাহ. বলেন, (তরজমা) আমি এই বক্তব্যের সত্যতা পাইনি। প্রকাশ্য তো এটাই যে, জুমার খুতবা শুরু থেকেই রাসূলুল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযের আগেই প্রদান করতেন।-রুহুল মাআনী ২৮/১০৫; ফাতহুল বারী ২/৪৯৩; উমদাতুল কারী ৬/২৪৭শেয়ার লিংক
আলকামিল ৪/৪৭; কিতাবুল মাজরূহীন ১/৩৬৪; আল মাওযূআত ইবনুল জাওযী ১/১৪৩; আললাআলিল মাসনূআ ১/১৭১; মাজমাউয যাওয়াইদ ৫/২৭১ হা.: ৮৭২৭শেয়ার লিংক
জানাযায় অংশগ্রহণ সম্পর্কিত হাদীসে কীরাত দ্বারা কি উদ্দেশ্য তা মুসলিম শরীফের হাদীসেই উল্লেখ আছে।
এক হাদীসে আছে-‘কীরাত দু’টি বড় পাহাড় সমতুল্য।’ অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘কীরাত হল উহুদ পাহাড় সমান।’-সহীহ মুসলিম ১/৩০৭ আর কুকুর লালনের ক্ষেত্রে এক কীরাত ছওয়াব কমে যায় এখানে কীরাত দ্বারা উদ্দেশ্য আমলের এক অংশ। ইমাম নববী রাহ. বলেন, এখানে কীরাত একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ যা আল্লাহ তাআলা জানেন। উদ্দেশ্য আমলের একটি অংশ।শরহে মুসলিম নববী ১০/২৩৯; উমদাতুল কারী ৫/১৫৮; মাজমাউ বিহারিল আনওয়ার ৪/২৫৫; ইকমালুল মুলিম ৫/২৪৬ #শেয়ার লিংক