আমার নানার একজন বৈমাত্রেয় বোন আছে, যিনি বয়সে আমার মায়ের মতই। তিনি আমাদের বাসার কাছেই থাকেন এবং মাঝে মাঝেই আমাদের এখানে বেড়াতে আসেন। আমার প্রশ্ন হল, তার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করা আমার জন্য জায়েয হবে কি?
আমার নানার একজন বৈমাত্রেয় বোন আছে, যিনি বয়সে আমার মায়ের মতই। তিনি আমাদের বাসার কাছেই থাকেন এবং মাঝে মাঝেই আমাদের এখানে বেড়াতে আসেন। আমার প্রশ্ন হল, তার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করা আমার জন্য জায়েয হবে কি?
নানার বৈমাত্রেয় বোন আপনার জন্য মাহরাম। সুতরাং তার সাথে আপনার দেখা-সাক্ষাৎ করা জায়েয।
শেয়ার লিংক-আহকামুল কুরআন, জাস্সাস ২/১২৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩০; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৬০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৭৩
আমরা জানি ইসলামী শরীয়তে সব ধরনের তাছবীর (ছবি) বানানো বা যান্ত্রিক উপায়ে তোলা নিষিদ্ধ। কিন্তু বর্তমান সমাজে কেউ কেউ ছবি ছাপানোকে জায়েয বলেন এবং যেই ছবিকে সম্মান প্রদর্শন করা হয় না, সেই সব ছবিকে জায়েয বলে দাবি করছে।
এ বিষয়ে হযরতের নিকট হাওয়ালাসহ বিস্তারিত জানতে চাই।
প্রচারপত্রে ছবি ছাপানো নাজায়েয। ছবির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা না হলেও একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ছবি প্রিন্ট করা নাজায়েয।
প্রকাশ থাকে যে, হাদীসে ব্যাপকভাবে যে কোনো প্রাণীর ছবি বানানো ও নির্মাণ করতে নিষেধ করা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে কঠোর ধমকি এসেছে। চাই তার সম্মান করা হোক বা না হোক।
সহীহ বুখারীতে আছে, আবদুল্লাহ বিন মাসউদ রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,
إِنّ أَشَدّ النّاسِ عَذَابًا عِنْدَ اللهِ يَوْمَ القِيَامَةِ المُصَوِّرُونَ.
কিয়ামত দিবসে সবচেয়ে কঠিন আযাবের সম্মুখীন হবে ছবি অঙ্কনকারীরা। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৯৫০)
হাদীসের কিতাবাদিতে ছবি বানানো ও নির্মাণের শাস্তির ব্যাপারে এজাতীয় আরো অনেক হাদীস বর্ণিত আছে। তদ্রƒপ প্রাণীর যে কোনো ধরনের ছবি ব্যবহারকেও হাদীসে নিষেধ করা হয়েছে। চাই তার সম্মান করা হোক বা না হোক। সহীহ বুখারীর এক হাদীসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরে থাকা অবস্থায় আয়েশা রা. তাঁর ঘরে ছবিবিশিষ্ট একটি পর্দা ঝুলিয়েছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর থেকে ফিরে এসে তা ছিঁড়ে ফেলেন এবং ছবি সম্পর্কে ভয়াবহ শাস্তির কথা শোনান। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৯৫৪)
এজাতীয় হাদীস ও আছারের ব্যাপকতাকে সামনে রেখে ইমাম নববী, ইবনে হাজার আসকালানী, বদরুদ্দীন আইনী ও মোল্লা আলী আলকারী প্রমুখ মুহাদ্দিসগণ বলেছেন, প্রাণীর যে কোনো ধরনের ছবি বানানো ও তার ব্যবাহর নাজায়েয ও হারাম; চাই তার সম্মান করা হোক বা না হোক। হাঁ, সাম¥ান করা হলে তার ভয়াবহতা তো আরো বেশি হবে এবং তা একধরনের শিরকতুল্য গোনাহ হবে।
আর ডিজিটাল ছবি উক্ত নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ব্যাপারে উলামায়ে কেরামের দুই ধরনের মত থাকলেও প্রিন্ট করা ও ছাপানো ছবি যে উক্ত নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত- এ ব্যাপারে আরব অনারবের প্রায় সকল নির্ভরযোগ্য আলেম একমত। তবে পাসপোর্ট, আইডি কার্ড ইত্যাদি আইনগত প্রয়োজনে প্রিন্ট করা জায়েয হবে।
উল্লেখ্য, ডিজিটাল ছবির ব্যাপারে দুই ধরনের মত থাকলেও অনেক আলেমের দৃষ্টিতে অধিক নির্ভরযোগ্য মত হল এ প্রকারের ছবিও নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত। তাই এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন জরুরি।
শেয়ার লিংক-শরহুন নববী ১৪/৮১; উমদাতুল কারী ২২/৭০; রদ্দুল মুহতার ১/৬৪৭; মিরকাতুল মাফাতীহ ৮/৩২৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭
আমার স্ত্রীর ছোট বোন তার একটি ছোট মেয়ে রেখে মারা যায়। এরপর মেয়েটিকে আমার স্ত্রী নিয়ে আসে এবং দুধ পান করায়। মেয়েটি আমাদের ঘরেই বড় হয়েছে। কিছুদিন আগে তার বিবাহ হয়। মেয়েটি মাঝে মাঝে তার স্বামীকে নিয়ে আমাদের বাসায় আসে। বাসায় আসলে আমার স্ত্রী মেয়েটির স্বামীর সামনে চলে যায়। বিষয়টি আমার নিকট একটু দৃষ্টিকটু মনে হয়। কারণ মেয়েটি তো আমার স্ত্রীর আপন মেয়ে নয়।
এখন হুযূরের কাছে জানতে চাই, আমার স্ত্রী কি মেয়েটির স্বামীর সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারবে?
দুধ মেয়ের স্বামী মাহরামের অন্তর্ভুক্ত। তার সাথে দেখা দেয়া জায়েয। অতএব আপনার স্ত্রীর জন্য তার দুধমেয়ের স্বামীর সাথে দেখা করা নাজায়েয হয়নি।
শেয়ার লিংক-সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০৯৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩৮; আলমাবসূত, সারাখসী ৫/১৪১
ক. আমরা জানি, দাড়ি একমুষ্ঠির বেশি হলে অতিরিক্তি অংশ কাটার অনুমতি আছে। এখন চাপদাড়িবিশিষ্ট কারো যদি চোয়ালের দাড়ি একমুষ্ঠির কম থাকে কিন্তু থুতনির দাড়ি একমুষ্ঠি পরিমাণ হয়ে যায় তাহলে সে কি থুতনির অংশের একমুষ্ঠির অতিরিক্ত দাড়ি কাটতে পারবে? কারণ সাধারণত চোয়ালের দাড়ির তুলনায় থুতনির দাড়ি দ্রুত বাড়ে।
খ. একমুষ্ঠির চেয়ে ছোট দাড়ি যদি কোনো পাশে অন্য পাশের তুলনায় অস্বাভাবিক বেড়ে অসুন্দর হয়ে যায় তাহলে সুন্দর করার জন্য সবদিকে সমান করে ছেটে ফেলার অনুমতি আছে কি?
ক. চোয়ালের দাড়ি ছোট থাকলেও থুতনির দাড়ি যদি একমুষ্ঠির বেশি হয় তাহলে সেখান থেকে অতিরিক্ত অংশ কাটা যাবে। একমুষ্ঠির বেশি দাড়ি কাটার নিয়ম হল, থুতনির নিচে মুষ্ঠি করে ধরার পর অতিরিক্ত অংশ কেটে নেওয়া।
খ. একমুষ্ঠির কম দাড়ি কাটা বৈধ নয়। সবদিকে সমান ও সুন্দর করার নিয়তেও একমুষ্ঠির কম দাড়ি কাটা যাবে না। পরিপাটি করে রাখার জন্য তেল, চিরুনী ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে।
শেয়ার লিংক-কিতাবুল আছার, ইমাম মুহাম্মদ ২/৭৬৬; ফাতহুল বারী ১০/৩৬৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৫৮; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪০৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/২১১; রদ্দুল মুহতার ২/৪১৮, ৬/৪০৭
একটা মাসআলা জানতে চাচ্ছি, তা হল, স্ত্রীর দুধ মায়ের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করা যাবে কি?
স্ত্রীর দুধ মা স্বামীর জন্য মাহরাম। তাই তার সাথে দেখা করা জায়েয।
শেয়ার লিংক-বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩৭; আলমাবসূত, সারাখসী ৫/১৪১