উম্মে আব্দুল্লাহ - ঢাকা

১৪২৮. প্রশ্ন

কেউ যদি পুরো নামাযে বায়ু চেপে নামায পড়ে তাহলে নামায হবে কি? কারণ কখনও কখনও তার এক ওয়াক্ত নামাযে তিন/চারবার ওযু করার পরও নামায পড়তে কষ্ট হয়।

উত্তর

বায়ু চেপে রেখে নামায পড়া মাকরূহ। তবে কেউ এভাবে নামায পড়ে নিলে নামায হয়ে যাবে। আর আপনার যেহেতু গ্যাসের সমস্যা তাই বায়ু চেপে রেখে নামায পড়া আপনার জন্য মাকরূহ হবে না।

-মারাকিল ফালাহ ১৯৭-৮০; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৩; রদ্দুল মুহতার ১/৩০৭, ৬৪১

শেয়ার লিংক

উম্মে আব্দুল্লাহ - ঢাকা

১৪২৯. প্রশ্ন

আমাদের গ্রামে কেউ মারা গেলে কুরআন খতম করিয়ে বিনিময়ে টাকা দেওয়া হয়। এভাবে দেওয়া তো নাজায়েয, এখন এরূপ না করে ঐ টাকা মসজিদ বা মাদরাসায় দেওয়া ছওয়াবের কাজ কি না? জানিয়ে উপকৃত  করবেন।

উত্তর

হাঁ, মৃতের ছওয়াবের উদ্দেশ্যে মাদরাসা-মসজিদে টাকা দেওয়া জায়েয হবে।

-হেদায়া ১/২৯৬; ফাতহুল কাদীর ৩/৬৫; আলবাহরুর রায়েক ৩/৫৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৪৩

শেয়ার লিংক

আবদুল কাদীর - সিরাজগঞ্জ

১৪৩০. প্রশ্ন

আমার বাড়ি সিলেট শহরে। সেটিই আমার স্থায়ী বাসস্থান। আমি ঢাকায় পড়াশুনা করি। এটা আমার ওয়াতনে ইকামত, অস্থায়ী অবস্থানস্থল। ঢাকার মিরপুর এলাকায় থাকি। এখন এই দুই স্থানেই আমি মুকীম। কিন্তু সফর করার সময় উভয় ক্ষেত্রেই কি শহর ত্যাগ করার পর থেকে মুসাফির গণ্য হব? নাকি ওয়াতনে ইকামতের ক্ষেত্রে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর থেকেই মুসাফির হয়ে  যাব। অর্থাৎ  মিরপুর থেকে বের হলেই মুসাফির হয়ে যাব? নাকি ঢাকা শহর ত্যাগ করতে হবে?

উত্তর

আপনি ঢাকা শহর ত্যাগ করার পর থেকে মুসাফির গণ্য হবেন। ওয়াতনে ইকামতের ক্ষেত্রেও শহর ত্যাগ করার পর থেকেই মুসাফিরের হুকুম প্রযোজ্য হবে।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২১

শেয়ার লিংক

আরমান - উত্তরা, ঢাকা

১৪৩১. প্রশ্ন

আমার দাদির চোখের জটিল রোগ আছে। ডাক্তার নিয়মিত এক ঘন্টা অন্তর ড্রপ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। এখন তিনি রোযা অবস্থায় চোখে ড্রপ ব্যবহার করতে পারবেন কি না?

উত্তর

চোখে ড্রপ ব্যবহার করলে রোযা ভাঙ্গে না। তাই আপনার দাদি রোযা অবস্থায় চোখে ড্রপ ব্যবহার করতে পারবেন। এতে রোযার কোনো ক্ষতি হবে না।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৩; সুনানে আবু দাউদ ৩২৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৫৩

শেয়ার লিংক

খায়রুল ইসলাম - ময়মনসিংহ

১৪৩২. প্রশ্ন

কাকরাইল থেকে আমাদের জামাত রাজশাহী জেলা শহরে পাঠায়। সিটিতে আমরা ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত করে মুকীমের ন্যায় নামায শুরু করি। ৯-১০ দিন পর জরুরি তাকাযা সামনে নিয়ে জামাত শহরের বাইরে চলে যায়। যে এলাকায় গেছে তা সফরের দূরত্ব হয় না। এখন ঐ এলাকায় আমরা মুকীম না মুসাফির?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ এলাকায় আপনারা মুকীম গণ্য হবেন। কারণ রাজশাহী শহরে আপনারা মুকীম ছিলেন। সেখান থেকে বর্তমান অবস্থান স্থল সফরসম দূরত্বে নয়।

-ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২০; রদ্দুল মুহতার ২/১৩২

শেয়ার লিংক

মাওলানা এনায়েতুল্লাহ - মদীনা মুনাওয়ারা

১৪৩৩. প্রশ্ন

জনৈক বাংলাদেশী ব্যক্তি উমরা করে মদীনা মুনাওয়ারা গেছে। ফেরার পথে ইহরাম না বেঁধে মক্কায় ঢুকে গেছে। পরে ভুল বুঝতে পেরে মসজিদে আয়শা থেকে পুনরায় উমরার ইহরাম করেছে। এখন যদি সে এই ইহরামে উমরা করে নেয় তাহলে উক্ত ভুলের ক্ষতি পূরণ হবে কি? নাহলে কী করতে হবে? দম আদায় করতে হবে কি না? দম দিতে হলে কোথায় দিবে? দেশে এসে দিতে পারবে কি না?

উত্তর

ঐ ব্যক্তি যদি মীকাতে ফিরে না যায়; বরং এ ইহরাম দ্বারাই উমরা আদায় করে নেয় তাহলে তার উপর দম দেওয়া জরুরি হয়ে যাবে। এই দম হেরেমের ভিতরই যবেহ করতে হবে। হেরেমের এলাকার বাইরে বা দেশে দম দিলে আদায় হবে না। অবশ্য লোকটি যদি মসজিদে আয়শা থেকে যে ইহরাম করেছে এরপর উমরা না করে থাকে; বরং মীকাতে ফিরে যায় এবং সেখানে তালবিয়া পড়ে আসে তাহলে দম দিতে হবে না। 

-মানাসিক মোল্লা আলী কারী ৮৪-৮৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৫৩; আলবাহরুর রায়েক ৩/৪৮,১৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪৭৫; ফাতহুল কাদীর ২/৪৫২

শেয়ার লিংক

মাসউদুর রহমান - সাতক্ষীরা

১৪৩৪. প্রশ্ন

আবদুল আলীম মাতবর আমার প্রতিবেশী। সে নিতান্তই গরীব। আগে রিক্সা চালাত। এখন সে বার্ধক্যের কারণে রোযা রাখতে সক্ষম নয়। আমরা মাসআলা জেনেছি যে, এ অবস্থায় নাকি ফিদয়া দেওয়া জরুরি। কিন্তু যেহেতু সে গরীব নিজেই যাকাত গ্রহণের যোগ্য। এখন এর জন্যও কি তার ফিদয়া দেওয়া জরুরি? যদি ফিদয়া দেওয়ার মোটেও সামর্থ্য না থাকে তাহলে কি করণীয়?

উত্তর

যে ব্যক্তি বর্তমানে রোযা রাখতে অক্ষম, পরবর্তীতেও রোযা রাখার সামর্থ্য ফিরে পাবে বলে আশা নেই এমন ব্যক্তি রোযার পরিবর্তে ফিদয়া আদায় করবে। কিন্তু ফিদয়া দেওয়ার সামর্থ্য না থাকলে আল্লাহ তাআলার নিকট ইস্তিগফার করবে। পরবর্তীতে কখনও সম্ভব হলে তা আদায় করে দিতে হবে। 

-আলবাহরুর রায়েক ২/২৮৬; আননাহরুল ফায়েক ২/৩২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪২৭

শেয়ার লিংক

কবীর আহমদ - চাঁদপুর

১৪৩৫. প্রশ্ন

আমার বাবা গত ডিসেম্বরে ইন্তেকাল করেন। আমরা তার থেকে ৫০,০০০/- টাকা করে নগদ ক্যাশ মীরাস পেয়েছি। এখন এই রমযানে কি আমি আমার অংশের যাকাত দিতে পারব? কেউ কেউ বলছে, যেহেতু যাকাতের বর্ষ এখনও শেষ হয়নি তাই যাকাত দেওয়া যাবে না। সঠিক সমাধান জানতে চাই।

উত্তর

হাঁ, এই রমযানেও আপনি ঐ টাকার অগ্রীম যাকাত আদায় করতে পারবেন।

-ফাতহুল কাদীর ২/১৫৪; আলবাহরুর রায়েক ২/২২৪; বাদায়েউস সানায়ে ২/১৬৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৯৩

শেয়ার লিংক

আরেফীন - মাগুরা

১৪৩৬. প্রশ্ন

হুজুর! আমি গার্মেন্টস পোশাক সেলাই করে দেই। পার্টি মাল কিনে সাইজ বলে দেয়। আমি লোক দিয়ে সেলাই করে দেই। এ বাবদ প্রায় ৫০ হাজার টাকা আমার পাওনা আছে।

জানতে চাই, এই টাকার যাকাত দিতে হবে কি না? বিল পরিশোধের তারিখ বিগত হয়ে গেছে।

উত্তর

পারিশ্রমিক হস্তগত হওয়ার আগে তার উপর যাকাত ফরয হয় না।  তাই ঐ ৫০ হাজার টাকা হস্তগত হওয়ার আগে তার যাকাত ফরয হবে না।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭৫; বাদায়েউস সানায়ে ২/৯০; রদ্দুল মুহতার ২/৩০৫,৩০৬

শেয়ার লিংক

হুমায়ুন কবীর - মানিকগঞ্জ

১৪৩৭. প্রশ্ন

এক ব্যক্তি দুই কোটি টাকা দিয়ে একটি বাড়ি নির্মাণ করেছে। পরে বাড়িটি ভাড়া দিয়ে দিয়েছে। তার উপর কি ঐ বাড়ির মূল্যের উপর যাকাত ফরয হবে?

উত্তর

না, বাড়িটির মূল্যের উপর যাকাত ফরয নয়। তবে বাড়িটির আয়ের যে অংশ যাকাতের বর্ষ শেষে অবশিষ্ট থাকবে তার যাকাত দিতে হবে।

-হেদায়া ২/১১৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২৪১; তাহতাবী আলাদ্দুর ১/৩৯২; রদ্দুল মুহতার ২/২৬৫

শেয়ার লিংক

সোহেল আবদুল্লাহ - মাদানী নগর

১৪৩৮. প্রশ্ন

আমার এক বন্ধু আমেরিকায় বসবাস করে। যখন সে ঢাকায় আসে তখন আমরা দুই বন্ধু একসাথে গুলশান-বনানীর মার্কেটগুলো থেকে শপিং করি। একবার সে আমেরিকায় থাকা অবস্থায় খবর দিল যে, আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে তাই আমি ১৫ দিনের জন্য এসে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করব। তুমি আমার জন্য ৫০,০০০/- টাকার মধ্যে পাঞ্জাবি, জুতা ইত্যাদি কেনাকাটা সেরে রাখবে। সে আমাকে কাপড়, জুতার কোয়ালিটি বলে দিয়েছে। এখন জানতে চাই যে, সে যে কোয়ালিটির কাপড়ের বর্ণনা দিয়েছে সে কোয়ালিটির কাপড় যদি গুলশান-বনানীর মার্কেট থেকে ক্রয় করি তাহলে ৫০,০০০/- টাকা পুরোটাই খরচ হয়ে যায়। আর যদি ঐ কোয়ালিটিরই কাপড় নিউ মার্কেট-গাউসিয়া থেকে ক্রয় করি তাহলে প্রায় ২০,০০০/- টাকা বেঁচে যায়। আমি যদি ঐ কোয়ালিটিরই কাপড় নিউ মার্কেট থেকে ক্রয় করে বাকি ২০,০০০/- টাকা রেখে দেই তাহলে কি আমার জন্য ঐ টাকাগুলো নেওয়া জায়েয হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি অন্য মার্কেট থেকে সমমানের কাপড় ক্রয় করলেও উদ্বৃত্তটা আপনার নেওয়া বৈধ হবে না। উদ্বৃত্ত টাকা বন্ধুকে ফেরত দিতে হবে।

উল্লেখ্য, এ কারবারে আপনি বন্ধুর প্রতিনিধি তথা উকিল। এ ক্ষেত্রে যার প্রতিনিধিত্ব করা হচ্ছে তিনি যেখান থেকে যে মানের বস্ত্ত ক্রয় করতে বলবেন প্রতিনিধির কর্তব্য হল, সেখান থেকেই সেই বস্ত্ত ক্রয় করা। তাই প্রশ্নোক্ত অবস্থাতেও আপনার কর্তব্য বন্ধুর নির্দেশিত স্থান থেকে শপিং করা। ​​​​​​​

-আলমাজাল্লাহ মাদ্দাহ নং ১৪৬৩,১৪৭৯; শরহুল মাজাল্লা খালিদ আতাসী ৪/৪৩২,৪৫৭; বাদায়েউস সানায়ে ৫/৩৮,৩০; শরহুল মুহাযযাব ১৪/২৯৭

শেয়ার লিংক