একদিন অযু করার সময় মাথা মাসেহ করতে ভুলে যাই। নামায শেষে মনে হয়েছে মাসাহ করিনি। এখন ঐ নামায কি পুনরায় পড়তে হবে?
একদিন অযু করার সময় মাথা মাসেহ করতে ভুলে যাই। নামায শেষে মনে হয়েছে মাসাহ করিনি। এখন ঐ নামায কি পুনরায় পড়তে হবে?
হ্যাঁ, ঐ নামায পুনরায় পড়তে হবে। মাথা মাসেহ করা ফরয তাই মাথা মাসেহ না করার কারণে তার অযুই হয়নি। বিখ্যাত তাবেয়ী আতা রাহ. বলেন, তুমি যদি ভুলে মাথা মাসেহ করা ছাড়াই নামায পড়ে ফেল অতপর নামায শেষে স্মরণ হয় তাহলে মাথা মাসাহ করে ঐ নামায পুনরায় পড়ে নাও।
মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ১/১৫; রদ্দুল মুহতার ১/১৫৫শেয়ার লিংক
আমি ইশার নামায পড়ার জন্য অযু করেছি। মসজিদে যাব। ইতিমধ্যে আমার বাবা বললেন, তোমার রক্তের গ্রুপ কী? আমি বললাম, জানি না। তিনি বললেন, এখনি রক্ত পরীক্ষা কর। আমি বাসা থেকে বের হয়ে গ্রুপ পরীক্ষা করার জন্য রক্ত দিয়েছি। অতপর মসজিদে গিয়ে নতুন করে অযু করা ছাড়াই ইশার নামায আদায় করেছি। নামাযের পর আমার এক বন্ধুর সাথে আলাপ হলে সে বলল, তোমার নামায হয়নি। কারণ ইনজেকশন দিয়ে রক্ত নিলে অযু ভেঙ্গে যায়। জানার বিষয় হল, তার কথা কি ঠিক?
হ্যাঁ, আপনার ওই বন্ধুর কথা ঠিক। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে রক্ত বের করলেও অযু ভেঙ্গে যায়। গড়িয়ে পড়তে পারে এতটুকু পরিমাণ রক্ত বের হলে বা বের করলে অযু থাকে না। অতএব আপনাকে ঐ দিনের ইশা ও বিতর নামাযগুলোর কাযা পড়ে নিতে হবে।
মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ১/১৪৩; আলমাবসূত, সারাখসী ১/৭৬; বাদায়েউস সানায়ে ১/১২২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১১; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৩৫শেয়ার লিংক
কাবলাল জুমআ চার রাকাত সুন্নত কি হাদীস দ্বারা প্রমাণিত? যদি প্রমাণিত হয় তাহলে এই সুন্নতের হুকুম কী? অনুগ্রহ করে জানিয়ে বাধিত করবেন।
জুমআর নামাযের আগে চার রাকাত নামায সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। হাদীস, আছার ও সাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারা এটি প্রমাণিত।
হযরত আবু আইয়ুব আনসারী রা. বর্ণনা করেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্য হেলে যাওয়ার পর চার রাকাত নামায পড়তেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কিসের নামায, যা আপনি নিয়মিত পড়েন? তিনি বললেন, এটি এমন একটি সময়, যখন আসমানের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। আর আমি পছন্দ করি, যেন এ সময় আমার কোনো নেক আমল উপরে ওঠে। তখন আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এর প্রতি রাকাতে কি সূরা মিলাতে হবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলাম, এই নামায কি এক সালামে না দুই সালামে? তিনি উত্তর দিলেন, এক সালামে। (তিরমিযী ১/৭৭; আবু দাউদ ১/১৮০)
ইমাম তিরমিযী রাহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। এই হাদীসে উক্ত চার রাকাত নামায নিয়মিত পড়ার কথা আছে। জুমআর দিনসহ সপ্তাহের সকল দিন এই হাদীসের আওতাভুক্ত।
অন্যত্র সহীহ সনদে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি জুমআর নামাযের আগে চার রাকাত নামায পড়তেন। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৩/২৪৭; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৪/১১৪)
এভাবে হযরত আবদুর রহমান আসসালামী রাহ. থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. আমাদেরকে জুমআর আগে চার রাকাত নামায পড়তে দিতেন। (মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৩/২৪৭; আলআওসাত ৪/১০৫)
আল্লামা যফর আহমদ উসমানী রাহ. ‘‘ইলাউস সুনানে’’ বলেছেন, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর অন্যদেরকে এই নামাযের আদেশ করা ও শিক্ষা দেওয়া প্রমাণ করে যে, এটি সাধারণ সুন্নত নয়; বরং সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। এজন্যই সাহাবায়ে কেরাম এর উপর নিয়মিত আমল করতেন। যেমন হযরত ইবরাহীম নাখাঈ রাহ. থেকে বর্ণিত আছে যে, সাহাবায়ে কেরাম জুমআর নামাযের আগে চার রাকাত নামায পড়তেন। (তহাবী ১/২৩৩; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৪/১১৪; মুসনাদে আহমদ ৩/৪১১)
এছাড়া সুনানে ইবনে মাজায় হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. থেকে আরেকটি হাদীস বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমআর নামাযের আগে এক সালামে চার রাকাত নামায পড়তেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ পৃ. ৭৯)
এই বর্ণনার সনদে দুর্বলতা থাকলেও এর বক্তব্য পূর্বে বর্ণিত সহীহ রেওয়ায়েতগুলোর দ্বারা সমর্থিত।
এ সকল হাদীস ও আছার দ্বারা প্রমাণ হয় যে, অন্যান্য দিনের যোহরের নামাযের মতো জুমআর নামাযের আগেও চার রাকাত নামায রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম আদায় করতেন। এ সকল দলিলের ভিত্তিতেই ফকীহগণ এ নামাযকে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ বলেছেন।তিরমিযী ১/৭৭; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৩/৩৪৭; সুনানে ইবনে মাজাহ ১/৪৩০; ইলাউস সুনান ৭/১২; আদ্দুররুল মুখতার ২/১২; নসবুর রায়াহ ২/২০৬; ফাতহুল কাদীর ২/৩৯শেয়ার লিংক
আমি ঢাকায় চাকরি করি। আমার বাড়ি সিলেট। এক মাস পর পর ৪/৫ দিনের ছুটিতে বাড়ি যাই। ছুটির মধ্যে কখনো ১/২ দিনের জন্য জরুরি কাজে চাকুরিস্থলে আসতে হয়। জানার বিষয় হল, দু’ একদিনের জন্য চাকরিস্থলে এলে আমি মুকিমের নামায পড়ব না মুসাফিরের?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে চাকরিস্থল ঢাকায় দু’ একদিনের জন্য এলেও আপনি মুকিম গণ্য হবেন। তাই কসর নয়, পুরা নামাযই পড়তে হবে।
শরহুল মুনইয়া ৫৪৪; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৬; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৭২৩শেয়ার লিংক
আযানের মতো ইকামতেরও কি জবাব দিতে হয়? এ বিষয়ে কোনো হাদীস আছে কি? জানালে উপকৃত হব।
হ্যাঁ, ইকামতেরও মৌখিক জবাব দেওয়া সুন্নত। সাহাবী আবু উমামা রা. বলেন, বিলাল রা. ইকামত শুরু করলেন। যখন তিনি ‘কাদ কামাতিস সালাহ’ উচ্চারণ করলেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাবে বললেন-‘আকামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহা।’ আর বাকি শব্দগুলোতে আযানের মতোই বললেন।
সুনানে আবু দাউদ ১/৭৮; বযলুল মাজহূদ ৪/৯৩; ইলাউস সুনান ২/১২৭; রদ্দুল মুহতার ১/৪০০; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ২/৮৭; শরহুল মুহাযযাব ৩/১৩০শেয়ার লিংক
আমরা আলেমদের নিকট শুনেছি যে, মাগরিবের নামাযে কিসারে মুফাসসাল থেকে পড়া সুন্নত। কিন্তু আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব এর বাইরে থেকে অনেক লম্বা কিরাত পড়েন। মাগরিবে এমন লম্বা কিরাত পড়া কি ঠিক?
ইমামের জন্য মাগরিব নামাযে ছোট কিরাত পড়া হাদীস ও আছার দ্বারা প্রমাণিত। হযরত আবু হুরাইরা রা. বলেন, ‘রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিব নামাযে কিসারে
মুফাসসাল পড়তেন।’ (শরহু মাআনিল আছার ১/১৫৭; ইলাউস সুনান ৪/৩৫)
অন্য রেওয়ায়েতে হযরত উমর রা. আবু মুসা আশআরী রা.কে মাগরিবের নামাযে কিসারে মুফাসসাল থেকে পড়তে বলেছেন। (শরহু মাআনিল আসার ১/১৫৭; ইলাউস সুনান ৪/৩২)
অন্য রেওয়ায়েতে আছে, হযরত আবু আবদুল্লাহ মুনাবিহী রাহ. বলেন, আমি আবু বকর রা.-এর খেলাফতকালে একবার মদীনায় এলাম। তাঁর পিছনে মাগরিব আদায় করলাম। তিনি মাগরিবের প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহা ও কিসারে
মুফাসসাল থেকে একটি করে সূরা পড়লেন। (মুয়াত্তা, ইমাম মালেক পৃ. ২৭; ইলাউস সুনান ৪/৩৯)
যাহহাক ইবনে উসমান রাহ. বলেন, আমি উমর ইবনে আবদুল আযীয রাহ.কে মাগরিবে কিসারে মুফাসসাল পড়তে দেখেছি। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৩/২৩৪)
সূরা বাইয়িনাহ থেকে নাস পর্যন্ত সূরাসমূহকে কিসারে মুফাসসাল বলে।
সুতরাং মাগরিব নামাযে কেসারে মুফাসসাল থেকে পড়া উত্তম। অবশ্য রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো কখনো মাগরিব নামাযে সূরা তুর, সূরা মুরসালাত ও এ জাতীয় বড় সূরা পড়েছেন এ কথাও সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। তাই মাঝেমধ্যে কিসারে মুফাসসালের বাইরে এবং কিসারে মুফাসসালের পরিমাণের চেয়ে বেশি পড়লে তা সুন্নতের খেলাফ হবে না। তবে ইমামের উচিত মুফাসসালাতের বাইরে পড়লে মুসল্লীদের অবস্থার প্রতি লক্ষ্য রেখে পড়া এবং কেরাত বেশি লম্বা না করা। হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে আছে, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ নামাযে ইমামতি করবে তখন সে যেন সংক্ষিপ্ত করে। কারণ তাদের (মুক্তাদীদের) মধ্যে দুর্বল, অসুস্থ ও বৃদ্ধ লোকও থাকে। আর যখন একাকী নামায পড়ে তখন যত ইচ্ছা দীর্ঘ করতে পারে।’ (সহীহ বুখারী ১/৯৭)
তাই সাধারণ অবস্থায় ইমামের জন্য কেরাতের মাসনূন পরিমাণের চেয়ে দীর্ঘ করা উচিত নয়।শরহু মাআনিল আছার ১/৫৭; মুয়াত্তা ইমাম মালেক পৃ. ২৭; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৩/২৩৪; নাসবুর রায়াহ ২/৫; আসসিআয়াহ ২/২৮৪; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৪১; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৮১; ফাতহুল কাদীর ১/২৯২শেয়ার লিংক
জনৈক মুয়াযযিন সাহেব ঘড়ি দেখে সূর্য ডোবার সময় হয়েছে মনে করে মাগরিবের আযান দিয়েছেন। তার আযান শুনে মহল্লার অনেক লোক ইফতার করে ফেলেছেন। পরে মহল্লার অন্যান্য মসজিদের আযান, রেডিওর আযান ও রোযার চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে দেখা গেল যে, বাস্তবে তারা সূর্য ডোবার আগেই ইফতার করেছিলেন। জানতে চাই, যারা ইফতার করে ফেলেছেন তাদের রোযা কি ভেঙ্গে গেছে? যদি ভেঙ্গে যায় তাহলে কাযা করলেই যথেষ্ট হবে নাকি কাফফারাও দিতে হবে?
প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী যারা সূর্যাস্তের আগেই ইফতার করেছেন তাদের রোযা নষ্ট হয়ে গেছে। তারা রোযাটি কাযা করবেন, কাফফারা দেওয়া লাগবে না। হাদীস শরীফে আছে, হযরত আসমা রা. বলেন, ‘রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যমানায় এক মেঘলা দিনে আমরা সূর্য ডুবে গেছে নিশ্চিত জেনে ইফতার করলাম। পরক্ষণেই মেঘ সরে গিয়ে সূর্য প্রকাশিত হল।’ হাদীসের রাবী হিশামকে জিজ্ঞাসা করা হল, তাদেরকে কি রোযা কাযা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল? তিনি বললেন, অবশ্যই রোযা কাযা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
হযরত বিশর ইবনে কায়েস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি এক রমযানে বিকেল বেলা উমর রা.-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। উমর রা. সূর্য ডুবে গেছে মনে করে নিজেও পানি পান করলেন এবং আমাকেও পান করালেন। পরক্ষণেই সূর্য দেখা গেল। উমর রা. বললেন, ‘সমস্যা নেই। এর পরিবর্তে একটি রোযা কাযা করাই যথেষ্ট হবে।’-সুনানে কুবরা ৪/৫৬৬; মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৯১৩৮
হযরত ইবনে জুরাইজ রা. বলেন, আমি আতা রাহ.কে জিজ্ঞাসা করলাম, রমযানের এক মেঘাচ্ছন্ন দিনে সময় হয়েছে মনে করে ইফতার করেছি। এরপর সূর্য দেখা গেল। এখন আমি কি শুধু ঐ দিনের রোযার কাযা করব, না আমাকে কাফফারাও আদায় করতে হবে? আতা রাহ. বললেন, হ্যাঁ, (শুধু কাযা করবে)। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৯১৪৭)বাদায়েউস সানায়ে ২/২৫৭; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯১; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪০৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৩৬; হাশিয়াতুত তহতাবী আলামারাকী ৩৬৯শেয়ার লিংক
এক ব্যক্তি রমযানের শেষ দশকে ইতিকাফ করছিলেন। মসজিদের পার্শ্ববর্তী মাঠে জানাযার নামায হচ্ছিল। তিনি তাতে শরিক হয়েছেন এবং নামায শেষ হওয়ামাত্রই মসজিদে ফিরে এসেছেন। একথা জানতে পেরে মসজিদের ইমাম সাহেব বলেছেন, তার ইতিকাফ ভেঙ্গে গেছে। ইমাম সাহেবের কথা কি ঠিক?
হ্যাঁ, ইমাম সাহেব ঠিকই বলেছেন। ইতিকাফরত অবস্থায় জানাযার নামাযের উদ্দেশ্যে মসজিদ থেকে বের হওয়ার কারণে তার সুন্নত ইতিকাফ ভেঙ্গে গেছে। হযরত হিশাম ইবনে ওরওয়াহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, ইতিকাফকারী কোনো দাওয়াতে যাবে না, অসুস্থ কাউকে দেখতে যাবে না, কারো জানাযায় শরিক হবে না। (মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/৩৫৭-৩৫৮)
সুতরাং এ ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তিকে রোযাসহ একদিনের ইতিকাফ কাযা করতে হবে।
প্রকাশ থাকে যে, যদি কোনো ব্যক্তি প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণের উদ্দেশ্যে (যেমন অযু-ইস্তিঞ্জা) বা জুমআর নামায আদায়ের উদ্দশ্যে মসজিদ থেকে বের হয়ে পথিমধ্যে জানাযায় শরিক হয় এবং নামায শেষে সেখানে বিলম্ব না করে মসজিদে ফিরে আসে তাহলে তার ইতিকাফ ভাঙ্গবে না।বাদায়েউস সানায়ে ২/২৮৩, ২৮৪; মাবসূত, সারাখসী ৩/১১৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২১; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৪; ২৪৫শেয়ার লিংক
রোযা অবস্থায় ছিলাম। হাই তোলার সময় একটি মশা গলায় চলে গেছে। এতে কি আমার রোযার কোনো ক্ষতি হয়েছে?
না। এতে রোযার কোনো ক্ষতি হয় না। আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. এক লোকের কণ্ঠনালিতে মাছি ঢুকে গেলে তাকে বললেন, এতে তোমার রোযা ভঙ্গ হয়নি।
মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৬/৩৪৯; ফাতহুল কাদীর ২/২৫৮শেয়ার লিংক
কিছুদিন হল আমার বড় বোনের বিয়ে হয়েছে। সে বাবার বাড়িতে ছিল এবং শাওয়ালের নফল রোযা রাখছিল। ইত্যবসরে তার শ্বশুর-শাশুড়ি সকাল বেলা তাকে দেখতে এল। আপ্যায়নের সময় তারা বলল, বউকে তাদের সাথে খেতে হবে নতুবা তারা মনে কষ্ট পাবে। তাদের পীড়াপীড়িতে আমার বোন রোযা ভেঙ্গে তাদের সাথে দস্তরখানে শরীক হয়েছে। জানার বিষয় হল, শ্বশুর-শাশুড়ির মন রক্ষার্থে রোযা ভাঙ্গা কি তার ঠিক হয়েছে? তাকে কি এ রোযা কাযা করতে হবে?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে রোযা ভঙ্গ করা অন্যায় হয়নি। মেহমানের মন রক্ষার্থে নফল রোযা ভাঙ্গার অনুমতি আছে। অবশ্য তাকে এ রোযা কাযা করতে হবে।
আবু জুহাইফা তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালমান রা. ও আবুদ দারদা রা.-এর মাঝে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন করেছিলেন। একদিন সালমান রা. আবুদ দারদা রা.-এর সাথে সাক্ষাত করতে গেলেন। আবুদ দারদা রা. সালমান রা.-এর জন্য খাবার প্রস্ত্তত করলেন। সালমান রা. তাকেও খাবারে শামিল হতে বললেন। উত্তরে তিনি বললেন, আমি রোযা রেখেছি। এ কথা শুনে সালমান রা. বললেন, আপনি না খেলে আমি খাব না। তখন আবুদ দারদা রা. (রোযা ভেঙ্গে) তার সাথে খাবার খেয়েছেন।সহীহ বুখারী ১/২৬৪; ফাতহুল কাদীর ২/২৮০, ২৮১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৮শেয়ার লিংক
একজন ব্যক্তি রোযা অবস্থায় ভুলবশত পানি পান করেছিল। এরপর রোযা ভেঙ্গে গেছে মনে করে পানাহার করেছে। জানার বিষয় হল, এখন তাকে কী করতে হবে?
রোযা রেখে ভুলবশত (অর্থাৎ রোযার কথা স্মরণ না থাকায়) পানাহার করলে রোযা ভঙ্গ হয় না। হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ভুলে আহার করল বা পান করল সে যেন তার রোযা পূর্ণ করে। কারণ আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন। (সহীহ মুসলিম ১/৩৬৪)
এক্ষেত্রে নিয়ম হল, রোযার কথা স্মরণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানাহার বন্ধ করবে এবং সারাদিন আর কিছু খাবে না। কিন্তু প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সে যেহেতু ভুলবশত পানি পান করার পর ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করেছে তাই তার রোযা ভেঙ্গে গেছে। অতএব তাকে ঐ রোযাটি কাযা করতে হবে। কাফফারা দিতে হবে না। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করে সে গুনাহ করেছে। এজন্য তাকে ইস্তিগফার করতে হবে।ফাতাওয়া খানিয়া ১/২০৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৫৩; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/১০১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৬; রদ্দুল মুহতার ২/৪০১, ৪০২; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলামারাকী ৩৬৮শেয়ার লিংক
রমযানে দিনের বেলা কারো যদি স্বপ্নদোষ হয় তাহলে কি রোযা ভেঙ্গে যাবে?
না। স্বপ্নদোষের কারণে রোযা ভাঙ্গে না। হাদীসে আছে, আবু সাঈদ খুদরী রা. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তিনটি বস্ত্ত রোযা ভঙ্গের কারণ নয়, বমি, শিঙ্গা লাগানো ও স্বপ্নদোষ।
সুনানে কুবরা, বাইহাকী ৪/২৬৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৯৬শেয়ার লিংক
আমি হজ্বে যাওয়ার জন্য ব্যাংকে ৩ লক্ষ টাকা জমা করেছি। ভিসার কাগজপত্রে সমস্যার কারণে এ বছর হজ্বে যাওয়া হয়নি। আগামী বছর যাওয়ার নিয়ত করেছি। আমার জানার বিষয় হল, বছর অতিবাহিত হলে হজ্বে যাওয়ার জন্য ব্যাংকে জমাকৃত টাকার যাকাত আদায় করতে হবে কি? জানালে উপকৃত হব।
হ্যাঁ, বছর অতিবাহিত হলে উক্ত টাকার যাকাত আদায় করা ফরয হবে। হজ্বের উদ্দেশ্যে জমা করা হলেও যেহেতু তা খরচ হয়নি এবং পুরো বছর জমা ছিল তাই ঐ টাকার যাকাত দিতে হবে।
উল্লেখ্য, যদি টাকাগুলো কোনো হজ্ব এজেন্সিকে খরচ বাবদ অগ্রিম দিয়ে দেওয়া হত সেক্ষেত্রে এ টাকার যাকাত দিতে হত না।সুনানে আবু দাউদ ১/২২১; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৮৪; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৪০; আলবাহরুর রায়েক ২/২০৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬১-২৬২শেয়ার লিংক
আমার এক আত্মীয়া জানতে চান, ঋতুমতী মহিলার কি ইহরাম বাঁধার আগে গোসল করা মুস্তাহাব?
হ্যাঁ, ঋতুমতী মহিলারও ইহরামের আগে গোসল করা মুস্তাহাব। আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো নারী হায়েয বা নেফাস অবস্থায় মীকাতে পৌঁছলে গোসল করবে। এরপর ইহরাম গ্রহণ করবে। অতপর হজ্বের যাবতীয় কাজ করতে থাকবে শুধু বাইতুল্লাহর তাওয়াফ ছাড়া।
সুনানে আবু দাউদ ১/২৪৩; গুনইয়াতুন নাসিক পৃ. ৬৯শেয়ার লিংক
আমরা জানি, ইহরাম অবস্থায় সেলাই করা কাপড় পরা নিষেধ। কিন্তু সেলাইযুক্ত বেল্ট পরাও কি নিষেধ?
না, সেলাইযুক্ত বেল্ট বাঁধা নিষেধ নয়। তাউস রাহ. বলেন, ‘মুহরিম কোমরবন্দ ব্যবহার করতে পারবে।’
মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৫৬৮৯শেয়ার লিংক
আমি তামাত্তু হজ্বের নিয়ত করেছি। আমি যদি মক্কায় ওমরা করার পর হজ্বের আগে মদীনায় যাই তাহলে মদীনা থেকে ফেরার সময় শুধু হজ্বের ইহরাম করতে পারব নাকি তামাত্তু হজ্বের জন্য আবার ওমরার ইহরাম করতে হবে?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি মদীনা মুনাওয়ারা থেকে ফেরার সময় শুধু হজ্বের ইহরাম করতে পারবেন, নতুন করে ওমরার ইহরাম করা জরুরি নয়। এক্ষেত্রে পূর্বের ওমরাসহ আপনি তামাত্তুকারীর অন্তর্ভুক্ত হবেন। একটি বর্ণনায় এসেছে, কূফার অধিবাসী কিছু লোক তামাত্তু করল (ওমরা করে হালাল হল)। এরপর তারা মদীনায় গেল। ফেরার সময় হজ্বের ইহরাম করল। এ বিষয়ে আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা.কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি তাদেরকে বললেন, ‘তোমরা তামাত্তুকারী বলে গণ্য হবে।’
আহকামুল কুরআন, তহাবী ২/২৩০; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ১/২৮৮; আলজামিউস সগীর পৃ. ১২৮; ফাতহুল কাদীর ২/৪৩৭; মুখতাসারু ইখতিলাফিল উলামা ২/১৬৭; আততাজরীদ ৪/১৭২৮; আলবাহরুল আমীক ২/৭৭৩; ইলাউস সুনান ১০/৩১৮শেয়ার লিংক
ইহরাম অবস্থায় মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য সুগন্ধিযুক্ত তেল ব্যবহার করা যাবে কি?
ইহরাম অবস্থায় সুগন্ধি ব্যবহার নিষেধ। তাই সুগন্ধিযুক্ত তেল ব্যবহার করা যাবে না। বিখ্যাত তাবেয়ী আতা রাহ. বলেন, ‘ইহরাম গ্রহণকারী তার শরীরে কিংবা কাপড়ে সুগন্ধিযুক্ত তেল লাগালে তার উপর কাফফারা ওয়াজিব হবে।’
-মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৪৮৩৩শেয়ার লিংক
কিরান বা তামাত্তু হজ্ব আদায়কারীর ওপর দমে শোকর ওয়াজিব। তার ওপর কি ঈদুল আযহার কুরবানীও ওয়াজিব হবে নাকি দমে শোকরের কুরবানীই যথেষ্ট হবে?
ঈদুল আযহার কুরবানী ও হজ্বের দমে শোকর দুটি আলাদা বিষয়। একটির দ্বারা অপরটি আদায় হয় না। ঈদুল আযহার কুরবানী ওয়াজিব হয় নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন বালেগ মুসলমানের উপর যদি তিনি মুকিম হন। আর দমে শোকর ওয়াজিব হয় কিরান ও তামাত্তু হজ্ব আদায়কারীর ওপর। হাজীগণ হজ্ব অবস্থায় সাধারণত মুসাফির থাকেন বলে তাদের ওপর ঈদুল আযহার কুরবানী ওয়াজিব হয় না। ইবরাহীম নাখাঈ রাহ. বলেন, ‘ওমর রা. হজ্ব করতেন এবং ফিরে যাওয়া পর্যন্ত কোনো কুরবানী করতেন না।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৪৩৯৪)
অবশ্য কোনো হাজ্বী যদি ঈদুল আযহার সময় মুকীম থাকেন তবে তার ওপরও কুরবানী ওয়াজিব হবে। এ কুরবানী তিনি সেখানেও আদায় করতে পারেন অথবা নিজ বাড়িতে অন্যের মাধ্যমেও করাতে পারেন।পারেন।-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৫; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৪৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৩১৫; গুনইয়াতুন নাসিক, পৃ. ১৭২শেয়ার লিংক
আমি আমার মাহরামের সাথে হজ্বে গিয়েছি। দশ তারিখে ইহরাম থেকে হালাল হওয়ার জন্য মাথার চুল একত্র করে এক ইঞ্চি পরিমাণ কেটেছি। বাড়িতে আসার পর বড় ভাই বললেন, ‘মহিলারা ইহরাম থেকে হালাল হওয়ার জন্য কমপক্ষে তিন ইঞ্চি পরিমাণ চুল কাটতে হয়।’ জানতে চাই, তার কথা কি ঠিক?
আপনার ভাইয়ের কথা ঠিক নয়। সঠিক মাসআলা হল, মাথার অন্তত এক চতুর্থাংশ থেকে হাতের আঙ্গুলের এক কর (প্রায় এক ইঞ্চি) পরিমাণ চুল কাটার দ্বারা ইহরাম থেকে হালাল হওয়া যায়। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বলেন, ‘মহিলাগণ ইহরাম অবস্থায় চুল একত্র করে তা থেকে আঙ্গুলের এক কর পরিমাণ ছোট করবে।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৩০৬৫)
ইবরাহীম নাখাঈ রাহ. বলেন, ‘মহিলাগণ আঙ্গুলের এক কর পরিমাণ চুল ছোট করবে।’ (প্রাগুক্ত, হাদীস : ১৩০৭৩)
অতএব আপনি যে নিয়মে হালাল হয়েছেন তা ঠিক আছে।
শেয়ার লিংক
আমাদের এলাকায় এক ছেলে এ শর্তে বিয়ে করেছে যে, মেয়ে পক্ষ তাকে বিদেশ পাঠাবে। বিবাহের মধ্যে এ ধরনের শর্ত করা কি জায়েয?
না। এ ধরনের শর্ত করা জায়েয নয়। কেননা, মেয়ে বা মেয়েপক্ষ থেকে শর্ত করে বা চাপ প্রয়োগ করে কোনো অর্থ, সম্পদ বা সেবা গ্রহণ করা সম্পূর্ণ হারাম। এটা পরিষ্কার ঘুষ। আর সহীহ হাদীসে আছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুষদাতা ও ঘুষগ্রহিতা উভয়ের প্রতি অভিশাপ করেছেন।’ (সুনানে আবু দাউদ ৪/২১০; জামে তিরমিযী ১/১৫৯; ইবনে মাজাহ ২/৩২৩; সুনানে বায়হাকী ১০/২৬৫; মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৮/১৪৮)
সুতরাং আকদের সময় এ ধরনের শর্ত করা হলেও তা বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য। আর এই শর্তের সুবাদে স্ত্রীর পক্ষ থেকে কোনো কিছু নেওয়া হলে তা ফেরত দেওয়া অপরিহার্য।আলফাতাওয়াল খাইরিয়্যাহ ১/৪৮; রদ্দুল মুহতার ৫/৭০১; আলবাহরুর রায়েক ৬/২৬২শেয়ার লিংক
সাত বছর বয়সের একটি মেয়েকে তার খালাত ভাইয়ের সাথে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে দাম্পত্যসুলভ কোনো আচরণ তাদের মাঝে হয়নি। মেয়েটির বয়স এখন আট বছর। এক সপ্তাহ পূর্বে সড়ক দুর্ঘটনায় তার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। এখন কি তাকে ইদ্দত পালন করতে হবে?
হ্যাঁ, তাকে চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করতে হবে। স্বামীর মৃত্যুতে স্ত্রীর জন্য ইদ্দত পালন করা ওয়াজিব। আল্লাহ তাআলা বলেন-(তরজমা) আর তোমাদের মধ্য থেকে যারা মৃত্যুবরণ করে এবং স্ত্রী রেখে যায় তাদের স্ত্রীগণ চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করবে। (সূরা বাকারা (২) : ২৩৪)
এই হুকুম প্রাপ্তবয়স্কা ও অপ্রাপ্তবয়স্কা সব ধরনের স্ত্রীর জন্য প্রযোজ্য, তাদের মাঝে দাম্পত্যসুলভ আচরণ হোক বা না হোক। হযরত আতা রাহ. বলেন, ‘যে নারীর স্বামী মৃত্যুবরণ করেছে সে চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করবে। যদিও স্বামীর সাথে তার সহবাস না হয় এবং সে দুগ্ধপোষ্য বা সদ্য দুগ্ধছাড়ানো শিশুও হয়।’
হযরত মামার বলেন, আমাকে এক লোক সংবাদ দিয়েছেন যে, তিনি হযরত হাসান বসরী রাহ.কেও অনুরূপ বলতে শুনেছেন।মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক, হাদীস : ১২০৪৯শেয়ার লিংক
আমার এক চাচাতো বোন বলেছে যে, ঘরে মাহরামের সামনে নাকি ওড়না পরতে হয় না। তার এ কথা কি ঠিক? মাহরামের সামনে কোন অঙ্গগুলো খোলা রাখা যায়?
মাহরাম পুরুষের জন্য মহিলার মাথা, চেহারা, হাত, গলদেশ ও হাঁটুর নিচের অংশ সতর নয়। তবে তাদের সামনেও যতটুকু সম্ভব আবৃত থাকাই উত্তম। বিশিষ্ট তাবেয়ী হাসান বসরী বলেছেন, ‘নিজ ভাইয়ের সামনেও নারীর ওড়না ছাড়া থাকা উচিত নয়।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ৯/৩৭৩)
প্রখ্যাত তাবেয়ী আতা ইবনে আবী রাবাহ রাহ. বলেছেন, ‘মাহরাম পুরুষের সামনে মেয়েদের মাথা ঢেকে রাখাই আমার কাছে অধিক পছন্দনীয়। অবশ্য মাহরাম তা দেখে ফেললে গুনাহ হবে না।’প্রাগুক্ত, কিতাবুল আসল ৩/৪৮; বাদায়েউস সানায়ে ৪/২৯১শেয়ার লিংক
আমি যায়েদের কাছে একটি মোবাইল বিক্রি করেছি। বিক্রির সময় তাকে বলেছিলাম, এখন ভালোভাবে দেখে নাও। কেনার পর কোনো সমস্যা দেখা দিলে ফেরত দিতে পারবে না। সব ধরনের সমস্যা থেকে আমি দায়মুক্ত। আমার কথামতো সে ভালোভাবে দেখে মোবাইলটি নিয়েছে। কিন্তু এখন কিছু সমস্যার কথা বলে তা ফেরত দিতে চায়। জানার বিষয় হল আমার জন্য কি মোবাইলটি ফেরত নেওয়া আবশ্যক?
প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী মোবাইলটি ফেরত নেওয়া আপনার জন্য আবশ্যক নয়। কেননা আপনি মোবাইলটির যাবতীয় সমস্যা থেকে দায়মুক্ত হওয়ার শর্তে বিক্রি করেছেন। ক্রেতা যেহেতু এ শর্ত মেনে নিয়েই ক্রয় করেছে তাই এখন কোনো সমস্যার কারণে তা ফেরত নিতে বাধ্য করতে পারবে না। হযরত যায়েদ ইবনে ছাবিত রা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি দায়মুক্ত হওয়ার শর্তে কোনো গোলাম বিক্রি করবে সে যাবতীয় দোষ থেকে দায়মুক্ত হয়ে যাবে।’
মুয়াত্তা মুহাম্মাদ পৃ. ৩৩৭; আলমুহীতুল বুরহানী ১০/১৫৬; রদ্দুল মুহতার ৫/৪২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/৬৯; ইতরে হিদায়া, পৃ. ১০২শেয়ার লিংক
এক প্রতিবেশী আমার কাছে ৫ লক্ষ টাকা ঋণ চেয়েছে। তার একটি চার তলা বাড়ি আছে, যার ছাদ ও দেয়ালের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। তবে বাসোপযোগী হতে আরও কাজ বাকি আছে। আমি তাকে বলেছি, তোমার নির্মাণাধীন ভবনের একটি ফ্ল্যাট পাঁচ বছরের জন্য ৫ লক্ষ টাকায় ভাড়া দাও। এতে সে সম্মত হয়েছে। এখন আমি কি এই ফ্ল্যাটটি অন্য কারো কাছে ভাড়া দিতে পারব? আমি যে মূল্যে ভাড়া নিয়েছি তার চেয়ে বেশি মূল্যে ভাড়া দিতে পারব কি?
ভবনের নির্মাণাধীন ঐ ফ্ল্যাটটি আপনি নিজে যেমন ব্যবহার করতে পারবেন তেমনি মালিকের অনুমতি থাকলে অন্য কারো কাছে ভাড়াও দিতে পারবেন। তবে আপনি যে মূল্যে ভাড়া নিয়েছেন তার চেয়ে বেশিতে তখনই ভাড়া দিতে পারবেন যদি আপনি ফ্ল্যাটটিতে কোনো সংস্কার বা সংযোজনমূলক কাজ করেন কিংবা তা মেরামত করেন। যেমন দরজা, জানালা লাগানো, দেয়ালের প্লাস্টার বা ডেকোরেশন ইত্যাদি। আশআছ রাহ. বলেন, ‘আমি শাবী ও হাকামকে জিজ্ঞাসা করলাম, এক ব্যক্তি একটি উট ভাড়া নিয়ে যে মূল্যে ভাড়া নিয়েছে তার চেয়ে বেশি মূল্যে অন্যত্র ভাড়া দেয়-এটা কি বৈধ? জবাবে তারা বললেন, সে যদি তাতে নিজে শ্রম দেয় বা কোনো মজুর রাখে তাহলে অসুবিধা নেই।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২৩৭৬৩)
অন্য বর্ণনায় আছে, ‘আমের রাহ. ভাড়া মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে অন্যত্র ভাড়া প্রদানকে অপছন্দ করতেন। তবে তাতে কোনো সংস্কার করা হলে অপছন্দ করতেন না।’ (প্রাগুক্ত, হাদীস : ২৩৭৬৮)
ভাড়া নেওয়ার পর ভবনটিতে কোনো কাজ না করে অধিক মূল্যে ভাড়া দিলে যা বাড়তি নেওয়া হল তা সদকা করে দিতে হবে। ইবরাহীম নাখাঈ রাহ. থেকে বর্ণিত আছে যে, যে মূল্যে ভাড়া নেওয়া হয়েছে তার চেয়ে অতিরিক্ত সুদ। (প্রাগুক্ত, হাদীস : ২৩৭৫৪)
শেয়ার লিংক
ব্যাংকে আমার ১০ লক্ষ টাকা ছিল। এগুলো দিয়ে একটি জমি কিনেছিলাম। কিছুদিন পর জমিটি ৫ বছরের মেয়াদে বাকিতে ১৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছি, যা বর্তমান বাজারদরের চেয়ে বেশি। এই লেনদেন সম্পর্কে জানতে পেরে একজন বলল যে, এটি বৈধ হয়নি। কেননা তা সুদি কারবারের অন্তর্ভুক্ত। এখন আমি জানতে চাই, ঐ ব্যক্তির কথা কি সঠিক?
কারবারটি বৈধ হয়েছে। বাকি লেনদেনে নগদ মূল্যের চেয়ে কিছু বেশি দাম রাখা জায়েয। তবে মেয়াদ ও মূল্য নির্ধারিত হতে হবে। প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী উক্ত ক্রয়-বিক্রয়ের সময় যেহেতু জমির মূল্য ও বাকির মেয়াদ চূড়ান্ত করা হয়েছে তাই লেনদেনটি জায়েয হয়েছে। এটি সুদি কারবার নয়। হযরত শুবা ইবনুল হাজ্জাজ রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হাকাম ইবনে ওতাইবা এবং হাম্মাদ রাহ.কে জিজ্ঞাসা করেছি, একজন ব্যবসায়ী পণ্য বিক্রয়ের সময় ক্রেতাকে বলে-নগদ মূল্যে কিনলে এত টাকা আর বাকিতে কিনলে এত টাকা (বেশি)-এটা কি বৈধ? তারা উভয়ে বলেছেন, ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে যদি মজলিস ত্যাগ করার আগে কোনো একটিকে চূড়ান্ত করে নেয় তাহলে এতে কোনো অসুবিধা নেই।
মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১০/৫৯৪; রদ্দুল মুহতার ৪/৪৪০, ৫/১৪২; আলবাহরুর রায়েক ৬/১১৪; ফাতহুল কাদীর ৬/১৩৩; বুহুছ ফী কাযায়া ফিকহিয়্যা মুআছিরা ১/১২শেয়ার লিংক
আমার বন্ধু আমাকে মুদারাবা চুক্তিতে ৩ লক্ষ টাকা দিয়েছে। আমাদের উভয়ের বাড়ি চট্টগ্রামে। ব্যবসার প্রয়োজনে আমাকে কখনো কখনো ঢাকা যেতে হয়। চুক্তিপত্রে শর্ত করা হয়েছে যে, প্রয়োজনে কখনো ঢাকা গেলে পানাহার খরচ নিজেকে বহন করতে হবে। তবে যাতায়াত খরচ ব্যবসার মূলধন থেকে নিতে পারবে। এই শর্ত কি ঠিক হয়েছে?
প্রশ্নোক্ত চুক্তিতে সফরে খাবার খরচ ব্যবসায়ীকে দিতে হবে-এ শর্ত করা সহীহ হয়নি। কারণ মুদারাবা কারবারে ব্যবসার উদ্দেশ্যে ব্যবসায়ী দূরে কোথাও গেলে তার যাতায়াত ও থাকা-খাওয়া সংক্রান্ত খরচ ব্যবসার খরচ হিসেবে ধর্তব্য হবে। এ খরচগুলো ব্যবসায়ীর উপর চাপানো জায়েয নয়। তবে এ কারণে চুক্তি বাতিল হবে না; শুধু শর্তটা বাতিল গণ্য হবে। বিশিষ্ট তাবেয়ী খালিদ ইবনে আবু ইমরান রাহ. বলেন, ‘আমি কাসিম ইবনে মুহাম্মাদ ও সালেম ইবনে আবদুল্লাহকে জিজ্ঞাসা করেছি যে, মুদারিব (ব্যবসার মাল থেকে) ন্যায়সঙ্গতভাবে পানাহার, পরিধেয় বস্ত্র ও যাতায়াত খরচ নিতে পারবে কি না? উত্তরে তারা উভয়ে বলেছেন, হ্যাঁ, ব্যবসা সংক্রান্ত খরচ নিতে কোনো অসুবিধা নেই।’
মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১১/১৪২; মাবসূত, সারাখসী ২২/৬২; আলইখতিয়ার লিতালীলিল মুখতার ৩/২৪; আননুতাফ ফিলফাতাওয়া পৃ. ৩৩০; শরহুল মাজাল্লাহ ৪/৩৫৩, মাদ্দাহ : ১৪১৯; রদ্দুল মুহতার ৫/৬৫৭শেয়ার লিংক
আমি প্রতি সপ্তাহে শহর থেকে বিভিন্ন প্লাস্টিক সামগ্রী যেমন জগ, বদনা, বাটি ইত্যাদি কিনে গ্রামে নিয়ে যাই এবং কয়েকজন ছেলেকে দিয়ে তা মানুষের বাড়িতে ফেরি করে বিক্রি করতে পাঠাই। তাদেরকে মাল বুঝিয়ে দেওয়ার সময় পণ্যের দামও নির্দিষ্ট করে দেই। তাদের সাথে এ মর্মে চুক্তি হয় যে, নির্দিষ্ট দামের অতিরিক্ত যত টাকায় বিক্রি করতে পারবে তা তাদের। এ চুক্তিতে তারা সম্মত থাকে। জানার বিষয় হল, এভাবে চুক্তি করা বৈধ হয়েছে কি না?
এভাবে চুক্তি করা বৈধ নয়। কারণ এক্ষেত্রে পারিশ্রমিক নির্দিষ্ট হয় না। অথচ চুক্তি সহীহ হওয়ার জন্য তা নির্দিষ্ট হওয়া জরুরি। বিশিষ্ট সাহাবী আবু সায়ীদ খুদরী রা. বলেন, ‘যখন তুমি কাউকে মজুর হিসেবে নিয়োগ কর তখন তার মজুরি নির্দিষ্ট করে দাও।’ (সুনানে নাসাঈ ৭/৩১-৩২)
এক্ষেত্রে সহীহ পদ্ধতিতে কারবার করতে চাইলে বিক্রয় মূল্যের কত অংশ বিক্রেতাগণ কমিশন হিসেবে পাবে তা সুনির্দিষ্ট করে দিতে হবে। যেমন এভাবে বলবে যে, পণ্যটি যত টাকা বিক্রি হবে তুমি এর ৫% (বা অন্য কোনো হার) পাবে। এক্ষেত্রে একটি সর্বনিম্ন মূল্যও ঠিক করে দিতে পারবে।আলমুহীতুল বুরহানী ১১/২১৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪৫১; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়াহ, মাদ্দাহ : ৪৫০; রদ্দুল মুহতার ৬/৬৩শেয়ার লিংক
আমাদের এলাকার এক ব্যক্তি, যার সুদের কারবার ছাড়াও আরো কিছু ব্যবসা আছে সে যখন মসজিদ বা মাদরাসার উন্নয়নকল্পে দান করে তখন বলে এটা আমার সুদের টাকা না। এই ব্যক্তির টাকা মসজিদ বা মাদরাসার কাজে ব্যবহার করা যাবে কি না?
প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী যেহেতু লোকটির সুদের কারবার ছাড়াও অন্যান্য হালাল ব্যবসা আছে এবং সে মসজিদ-মাদরাসায় দান করার সময় তা সুদের টাকা নয়-বলে উল্লেখ করছে তাই এক্ষেত্রে তার অনুদান গ্রহণ করা এবং তা মসজিদ-মাদরাসার কাজে ব্যবহার করা জায়েয হবে। আর মসজিদ-মাদরাসা কর্তৃপক্ষ এবং এলাকাবাসীর দ্বীনী দায়িত্ব হল, লোকটিকে সুদের ভয়াবহতা বোঝানো এবং সুদী কারবার থেকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করা।
সহীহ বুখারী ১/১৮৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৭৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৪৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৪৩; রদ্দুল মুহতার ১/৬৫৮শেয়ার লিংক
হাজী মুহাম্মাদ ইয়াছীন সাহেব ১৩৩৮ সালে মসজিদের জন্য নিজ বাড়িতে ১০ শতাংশ জমি ওয়াকফ করে গেছেন। এরপর ১৩৪৪ সালে মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রায় আধা মাইল দূরে জামুর মৌজায় ২২৩ শতাংশ ফসলী জমি ওয়াকফ করেন। ওয়াকফনামায় তিনি লিখেছেন, মুতাওয়াল্লীর ওয়াকফকৃত সম্পত্তি হস্তান্তর বা রূপান্তর করিবার কোনো ক্ষমতা রহিল না। বর্তমানে মসজিদের ৫ তলা ইমারত নির্মাণের জন্য নগদ টাকার প্রয়োজন। আবার ঐ এলাকায় দাওয়াত-তাবলীগের শবগুজারির জন্য একটি মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের তাকাযা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ওয়াকফকৃত ২২৩ শতাংশ জমির ১০০ শতাংশ জমিতে যদি তাবলীগের শবগুজারির জন্য মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের সুযোগ দেওয়া হয় এবং এর বিনিময়ে ২ কোটি টাকা গ্রহণ করা হয় তবে তা বৈধ হবে কি? মুতাওয়াল্লী এ ধরনের হস্তান্তর বা রূপান্তর করতে পারবে কি?
ওয়াকফের ভবন নির্মাণ বা অন্য কোনো দ্বীনী প্রতিষ্ঠান নির্মাণের লক্ষ্যেও ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রি করা, এওয়াজ-বদল করা জায়েয নয়। বিশেষত ওয়াকফকারী যদি বিক্রি না করার কথা উল্লেখ করেন তখন তা বিক্রি করার কোনো সুযোগ থাকে না। হাদীস শরীফে আছে, আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বলেন, উমর রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, আল্লাহর রাসূল! আমি একটি উত্তম সম্পদের মালিক হয়েছি (একটি খেজুর বাগান)। আমি তা সদকা (ওয়াকফ) করতে চাই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি মূল সম্পত্তিটি এভাবে সদকা (ওয়াকফ) কর যে, তা বিক্রি করা যাবে না, কাউকে দান করা যাবে না এবং এতে উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। এর থেকে উৎপন্ন ফলফলাদি (নির্ধারিত খাতে) ব্যয় হবে। এরপর উমর রা. তা ঐভাবে সদকা (ওয়াকফ) করলেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস : ২৭২৪)
অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু ওয়াকফকারী ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর বা রূপান্তর করতে নিষেধ করেছেন তাই মসজিদ-ভবন নির্মাণ কিংবা তাবলীগের শবগুজারির জন্য মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের উদ্দেশ্যে তা বিক্রি করা জায়েয হবে না; বরং যে উদ্দেশ্যে জমিটি ওয়াকফ করা হয়েছে সেজন্যই তা ব্যবহার করতে হবে। আর মসজিদের ইমারত নির্মাণ কিংবা তাবলীগের শবগুজারির জন্য মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনা তৈরির প্রয়োজন দেখা দিলে মুসলমানদের স্বতঃস্ফূর্ত অনুদান থেকে তা করতে হবে।খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৪২৫; মুখতাসারুল কুদুরী ২৮৭; ফাতহুল কাদীর ৫/৪৩২; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৫২; আলইনসাফ ৭/১০০; আলমুদাওয়ানাতুল কুবরা ৪/৩৪২; আলবায়ান ৮/৫৯, ৭৫; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৪৫শেয়ার লিংক
আমার এক বন্ধু মান্নত করেছে, তার অমুক কাজ সমাধা হলে সে মাযারে একটি ছাগল দিবে। পরে কাজটি সমাধা হওয়ার পর সে জানতে চাচ্ছে, ঐ মান্নত আদায় করা তার জন্য জরুরি কি না? আর ছাগলটি মাযারে না দিয়ে অন্য কোথাও দেওয়া যাবে কি না?
মাযারের নামে মান্নত করলে মান্নত হয় না। মান্নত একটি ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহর নামেই করা যায়। আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কারো নামে, যেমন পীরের নামে, মাযারের নামে মান্নত করা সম্পূর্ণ নাজায়েয। অতএব প্রশ্নোক্ত মান্নত পুরা তো করা যাবেই না; বরং অবৈধ মান্নত করার কারণে তাওবা-ইস্তিগফার করতে হবে।
মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১২৫৭৫; সুনানে আবু দাউদ ২/৪৬৯; আহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/৪৮৫; আলবাহরুর রায়েক ২/২৯৮; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ১৩/৬৪৩; রদ্দুল মুহতার ২/৪৩৯; ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া ২৭/৭৭, ২৬/৩০৭শেয়ার লিংক