মুহাম্মাদ হেলালুদ্দীন - ময়মনসিংহ

১৯৯৮. প্রশ্ন

অনেকে শবে বরাতের পরদিন রোযা রাখেন। এ বিষয়ে শরীয়তের হুকুম কী জানতে চাই।

উত্তর

শা’বানের এক তারিখ থেকে সাতাইশ তারিখ পর্যন্ত রোযা রাখার বিশেষ ফযীলতের কথা হাদীস শরীফে আছে। তাছাড়া আইয়ামে বীয তথা প্রতি মাসের তেরো, চৌদ্দ ও পনেরো তারিখে রোযা রাখার ব্যাপারে হাদীস শরীফে উৎসাহিত করা হয়েছে। সেই সাথে যয়ীফ সনদে বর্ণিত একটি হাদীসে বিশেষভাবে পনেরো তারিখের রোযা রাখার নির্দেশনাও পাওয়া যায়। (তরজমা) পনেরো শা’বানের রাত (চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাত) যখন আসে তখন তোমরা তা ইবাদত-বন্দেগীতে কাটাও এবং পরদিন রোযা রাখ।’ -সুনানে ইবনে মাজাহ হাদীস : ১৩৮৪ আগেই বলা হয়েছে যে, যেহেতু বিভিন্ন সহীহ হাদীসে শা’বান মাসের রোযার সাধারণ ফযীলত এবং আইয়ামে বীযের রোযার ফযীলত উল্লেখিত হয়েছে পাশাপাশি যয়ীফ সনদে উপরোক্ত হাদীসটিও বিদ্যমান রয়েছে তাই কেউ যদি এই সকল বিষয় বিবেচনায় রেখে পনেরো শা’বানের রোযা রাখেন তাহলে তিনি ছওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ।

শেয়ার লিংক

শাব্বীর আহমদ - নারায়ণগঞ্জ

১৯৯৯. প্রশ্ন

শবে বরাত ও শবে কদর উপলক্ষে বিশেষ পদ্ধতির কোনো নামায আছে কি না-এ প্রশ্ন অনেকে করে থাকেন। এক ধরনের চটি বই পুস্তিকায় বিভিন্ন নিয়মের কথা লেখাও থাকে। বিশেষ বিশেষ সূরা দিয়ে নামায পড়া বা নির্ধারিত রাকাত নামায বিশেষ সূরা দ্বারা আদায় করা ইত্যাদি। প্রশ্ন এই যে, হাদীস শরীফে এ দুই রাতে বিশেষ পদ্ধতির কোনো নামায আছে কি? থাকলে তা জানতে চাই। তদ্রূপ কেউ কেউ এ রাতগুলোতে জামাতের সঙ্গে নফল নামায পড়তে চায়। এ ব্যাপারে শরয়ী বিধান কী?

উত্তর

এ দু’রাতের জন্য বিশেষ পদ্ধতির কোনো নামায নেই। সব সময় যেভাবে নামায পড়া হয় সেভাবেই পড়বে অর্থাৎ দুই রাকাত করে যত রাকাত সম্ভব হয় আদায় করবে এবং যে সূরা দিয়ে সম্ভব হয় পড়বে। তদ্রূপ অন্যান্য আমলেরও বিশেষ কোনো পন্থা নেই। কুরআন তেলাওয়াত, যিকির-আযকার, দুআ-ইস্তেগফার ইত্যাদি নেক আমল যে পরিমাণ সম্ভব হয় আদায় করবে। তবে নফল নামায দীর্ঘ করা এবং সিজদায় দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করা উচিত, যা কোনো কোনো হাদীস থেকে প্রতীয়মান হয়। বিভিন্ন বই-পুস্তকে নামাযের যে নির্দিষ্ট নিয়ম-কানূন লেখা আছে অর্থাৎ এত রাকাত হতে হবে, প্রতি রাকাতে এই এই সূরা এতবার পড়তে হবে-এগুলো ঠিক নয়। হাদীস শরীফে এ ধরনের কোনো নিয়ম নেই, এগুলো মানুষের মনগড়া পন্থা। বলাবাহুল্য যে, যে কোনো বই-পুস্তিকায় কোনো কিছু লিখিত থাকলেই তা বিশ্বাস করা উচিত নয়। বিজ্ঞ আলিমদের নিকট থেকে জেনে আমল করা উচিত। শবে বরাত ও শবে কদরের নফল আমলসমূহ, বিশুদ্ধ মতানুসারে একাকী করণীয়। ফরয নামায তো অবশ্যই মসজিদে জামাতের সঙ্গে আদায় করতে হবে। এরপর যা কিছু নফল পড়ার তা নিজ নিজ ঘরে একাকী পড়বে। এসব নফল আমলের জন্য দলে দলে মসজিদে এসে সমবেত হওয়ার প্রমাণ হাদীস শরীফেও১ নেই আর সাহাবায়ে কেরামের যুগেও এর রেওয়াজ ছিল না।-ইকতিযাউস সিরাতিল মুস্তাকীম ২/৬৩১-৬৪১; মারাকিল ফালাহ পৃ. ২১৯ তবে কোনো আহ্বান ও ঘোষণা ছাড়া এমনিই কিছু লোক যদি মসজিদে এসে যায় তাহলে প্রত্যেকে নিজ নিজ আমলে মশগুল থাকবে, একে অন্যের আমলে ব্যাঘাত সৃষ্টির কারণ হবে না।

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ সালমান - ফরিদাবাদ, ঢাকা

২০০০. প্রশ্ন

সামনে রমযান মাস। এ মাসের পরিপূর্ণ বরকত, রহমত ও ফযীলত কীভাবে হাসিল করা যাবে সে ব্যাপারে জানতে চাই।

উত্তর

মাহে রমযান বছরের বাকি এগারো মাস অপেক্ষা অধিক মর্যাদাশীল ও বরকতপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা কুরআন মজীদে ইরশাদ করেন, (তরজমা) রমযান মাসই হল সে মাস যাতে নাযিল করা হয়েছে কুরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়াত।-সূরা বাকারা : ১৮৫ হাদীস শরীফে এসেছে, যখন রমযানের আগমন হয় তখন জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর শয়তানদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়। -সহীহ বুখারী হাদীস : ১৮৯৯ অন্য হাদীসে এসেছে, আল্লাহ তাআলা প্রত্যহ ইফতারের সময় অসংখ্য ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।- মুসনাদে আহমদ হাদীস ২১৬৯৮ তাই এ মাস হচ্ছে হেদায়েত লাভের মাস, আল্লাহ তাআলার রহমত লাভের মাস এবং জাহান্নাম থেকে নাজাত হাসিলের মাস। সুতরাং বেশি বেশি ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা করা এবং তাওবা-ইস্তেগফারের মাধ্যমে মুক্তির সনদ লাভে সচেষ্ট হওয়া কর্তব্য। এ মাসের রোযাকে আল্লাহ তাআলা ফরয করেছেন। তাই প্রত্যেক সুস্থ ও বালিগ মুসলিম নর-নারীর জন্য রোযা রাখা অপরিহার্য। বলাবাহুল্য যে, ফরয ইবাদতের মাধ্যমেই বান্দা আল্লাহ তাআলার সর্বাধিক নৈকট্য অর্জন করে। রমযানের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে তারাবী। রমযানের বরকতময় রজনীতে বিশ রাকাত তারাবীর নামায আদায়ে যত্নবান হওয়া উচিত। রমযান মাস হচ্ছে কুরআন নাযিলের মাস। তাই কুরআন মজীদ শ্রবণের জন্য এবং এই পুণ্যময় রজনীতে আল্লাহর সান্নিধ্যে দণ্ডায়মান হওয়ার জন্য তারাবী নামাযের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া কর্তব্য। অন্য সময়ও ব্যক্তিগতভাবে অধিক পরিমাণে কুরআন মজীদ তেলাওয়াত করা উচিত। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে তাহাজ্জুদ নামায। এ মাসে যেহেতু সাহরী খাওয়ার সুবাদে সুবহে সাদিকের পূর্বেই সবাইকে উঠতে হয় তাই এ সুযোগে তাহাজ্জুদের ইহতিমাম করা সহজ। হাদীস শরীফে তাহাজ্জুদের অনেক ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। তদ্রূপ সাধ্যমতো দান-সদকা করা উচিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাসে অনেক বেশি দান-সদকা করতেন। এসব নেক আমলের পাশাপাশি গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করাও অপরিহার্য। রমযান মাস হচ্ছে তাকওয়া ও পরহেযগারী অর্জনের মাস। আল্লাহ তাআলা রোযাকে ফরয করেছেন তাকওয়া অর্জনের জন্য। হাদীস শরীফ থেকে জানা যায় যে, গুনাহ থেকে সর্বোতভাবে বেঁচে থাকা ছাড়া রোযা পূর্ণাঙ্গ হয় না। তাই রোযাকে নিখুঁতভাবে আদায়ের উদ্দেশ্যে মুমিন যখন গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে তখন আল্লাহ তাআলা নিজ অনুগ্রহে তাকে তাকওয়া ও পরহেযগারীর শক্তি দান করেন। এজন্য সকল গুনাহ থেকে, বিশেষ করে গীবত, শেকায়েত, কুদৃষ্টি, কুচিন্তা, হারাম পানাহার ইত্যাদি থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলিমের একান্ত কর্তব্য।

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ইসমাঈল আবরার - মিরপুর, ঢাকা

২০০১. প্রশ্ন

খতম তারাবীর ইমামতি করে বিনিময় বা হাদিয়া নেওয়া জায়েয কি না? এক মাসের জন্য নিয়োগ দিয়ে বেতন দিলে জায়েয হবে কি না? কেউ কেউ বলেন, ফরয নামাযের ইমামতির বিনিময় যখন জায়েয তখন খতম তারাবীর বিনিময় গ্রহণও জায়েয হবে। এছাড়া হাফেজ সাহেবকে যদি দু’এক ওয়াক্ত ফরয নামাযের দায়িত্ব দেওয়া হয় তবে তো নাজায়েয হওয়ার প্রশ্নই আসে না। তাদের একথা ঠিক কি না? ইমামতির হীলা হোক বা অন্য কোনো উপায়ে তারাবীর বিনিময় বৈধ কি না?

উত্তর

খতম তারাবীর বিনিময় দেওয়া-নেওয়া দুটোই নাজায়েয। হাদিয়ার নামে দিলেও জায়েয হবে না। এক মাসের জন্য নিয়োগ দিয়ে বেতন হিসাবে দিলেও জায়েয নয়। কারণ এক্ষেত্রেও প্রদেয় বেতন খতমের বিনিময় হওয়া স্বীকৃত। মোটকথা, খতম তারাবীর বিনিময় গ্রহণের জন্য হিলা অবলম্বন করলেও তা জায়েয হবে না। কারণ খতমে তারাবীহ খালেস একটি ইবাদত, যা নামায ও রোযার মতো ইবাদতে মাকসূদা’-এর অন্তর্ভুক্ত। আর এ ধরনের ইবাদতের বিনিময় বা বেতন দেওয়া-নেওয়া উম্মতে মুসলিমার ঐকমত্যের ভিত্তিতে নাজায়েয। এতে না কোনো মাযহাবের মতপার্থক্য আছে, না পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ফকীহগণের মাঝে কোনো মতভেদ আছে। ইমামতির বেতন ঠিক করা এবং তা আদায় করা যদিও পরবর্তী ফকীহগণের দৃষ্টিতে জায়েয, কিন্তু খতম তারাবীর বিনিময়টা ইমামতির জন্য হয় না; বরং তা মূলত খতমের বিনিময়ে হয়ে থাকে। আর তেলাওয়াতের বিনিময় গ্রহণ করা সকল ফকীহ্‌র নিকট হারাম। অধিকন্তু পরবর্তী ফকীহ্‌গণ যে ইমামতির বেতন জায়েয বলেছেন সেটা হল ফরযের ইমামতি। সুন্নাত জামাতের ইমামতি এর অন্তর্ভুক্ত নয়। আর হাফেযদের দেওয়া বিনিময়কে জায়েয করার জন্য এই হিলা অবলম্বন করা যে, শুধু রমযান মাসের জন্য তার উপর দু-এক ওয়াক্ত নামাযের দায়িত্ব দেওয়া হবে-এটা একটা বাহানামাত্র; যা পরিহার করা জরুরি। কারণ এই হিলার যে বিমিনয়টা তাকে ফরযের ইমাতির জন্য দেওয়া হচ্ছে আর তারাবীর খতম সে বিনিময়হীনভাবেই করে দিচ্ছে। কিন' আপনার মনকে একটু প্রশ্ন করে দেখুন, যদি ওই হাফেয সাহেব তার দায়িত্বে অর্পিত ফরয নামাযের ইমামতি যথাযথ গুরুত্বের সাথেও আদায় করেন আর খতম তারাবীতে অংশগ্রহণ না করেন তবে কি তাঁকে ওই বিনিময় দেওয়া হবে, যা খতম তারাবী পড়ালে দেওয়া হত? এ কথা সুস্পষ্ট যে, কখনো তা দেওয়া হবে না। বোঝা গেল, বিনিময়টা মূলত খতম তারাবীর, ফরযের ইমামতির নয়। এ জন্যই আকাবিরের অনেকে এই হিলা প্রত্যাখ্যান করেছেন। আর দলীলের ভিত্তিতেও তাঁদের ফতওয়াই সহীহ। দেখুন : ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৩২২; ইমদাদুল আহকাম ১/৬৬৪ নিচে এ বিষয়ে কিছু হাদীস, আছারের অনুবাদ ও ফিকহের উদ্ধৃতি পেশ করা হল। ১. হযরত আবদুর রহমান ইবনে শিবল রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, তোমরা কুরআন পড় তবে তাতে বাড়াবাড়ি করো না এবং তার প্রতি বিরূপ হয়ো না। কুরআনের বিনিময় ভক্ষণ করো না এবং এর দ্বারা সম্পদ কামনা করো না।’-মুসনাদে আহমদ ৩/৪২৮; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৫/২৪০; কিতাবুত তারাবীহ ২. ইমরান ইবনে হোসাইন রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, তোমরা কুরআন পড় এবং আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা কর। তোমাদের পরে এমন জাতি আসবে, যারা কুরআন পড়ে মানুষের কাছে প্রার্থনা করবে।’-মুসনাদে আহমদ ৪/৪৩৭; জামে তিরমিযী ২/১১৯ ৩. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মা’কিল থেকে বর্ণিত, তিনি এক রমযান মাসে লোকদের নিয়ে তারাবীহ পড়লেন। এরপর ঈদের দিন উবাইদুল্লাহ ইবনে যিয়াদ রাহ. তাঁর কাছে এক জোড়া কাপড় এবং পাঁচশ দিরহাম পাঠালেন। তখন তিনি কাপড় জোড়া ও দিরহামগুলো এই বলে ফেরত দিলেন যে, আমরা কুরআনের বিনিময় গ্রহণ করি না।’-মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৫/২৩৭ আরো দেখুন : ফাতাওয়া শামী ৬/৫৭; তানকীহুল ফাতাওয়া হামীদিয়া ২/১৩৭-১৩৮; আলইখতিয়ার লিতা’লীলিল মুখতার ২/৬২; শিফাউল আলীল ওয়াবাল্লুল গালীল (রাসায়েলে ইবনে ইবনে আবেদীন) ১/১৫৪-১৫৫; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৩১৫-৩১৯ ও ৩২২; রাফেউল ইশকালাত আনহুরমাতিল ইস্তিজার আলাত্তাআত, মুফতিয়ে আযম হযরত মাওলানা মুফতী ফয়যুল্লাহ রাহ.।

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল হাকীম - মুন্সিগঞ্জ, ঢাকা

২০০২. প্রশ্ন

আমরা জানি, কোনো ব্যক্তি একাকী ফরয নামায আদায়কালে অন্য কেউ তার ইকতিদা করতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন হল, জামাত শেষ হওয়ার পর কোনো মাসবুকের পেছনে ইকতিদা করা সহীহ হবে কি না?

উত্তর

না, মাসবুকের পেছনে ইকতিদা করা জায়েয নয়। অতএব তার ইকতিদা করলে ইকতিদাকারীর নামায সহীহ হবে না।-ছদহুল হামামা ফি শুরূতিল ইমামাহ, শায়খ আবদুল গনী নাবুলুসী পৃ. ৯২; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ৪৬৮; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৬১

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আলাউদ্দীন - নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা

২০০৩. প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় অনেকে ছুরি বা দা দিয়ে রাতে মাছ শিকার করে। অর্থাৎ জমির পানিতে মাছ দেখলে ছুরি দিয়ে মাছের শরীরে আঘাত করে। অনেক সময় ছুরির কোপে মাছ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। এভাবে মাছ শিকার করা এবং তা খাওয়া জায়েয আছে কি?

উত্তর

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে মাছ শিকার করা জায়েয এবং তা খাওয়া বৈধ।

সুনানে আবু দাউদ ১/১৯; মুসনাদে আহমদ ২/২৩৭; আলমুগনী ১৩/২৯৯; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৪২৮

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - নেত্রকোণা

২০০৪. প্রশ্ন

আমার নিজস্ব একটি লাইব্রেরী আছে। তাতে বই, খাতা-কলম ইত্যাদি বিক্রি করি। একদিন আমার এক বন্ধু এসে বলল, তার একটি ফটোস্ট্যাট মেশিন আছে। সেটি আমার দোকানে রাখবে। দু’জন মিলে ফটোস্ট্যাট করব। যা উপার্জন হবে তা উভয়ের মধ্যে সমানভাবে বণ্টন হবে।জানতে চাই, চুক্তিটি শরীয়তসম্মত হবে কি না?

উত্তর

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত চুক্তিটি সহীহ হয়েছে।

খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/২৯৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৩৩৪; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়াহ, মাদ্দাহ : ১৩৯৫; শরহুল মাজাল্লাহ, খালিদ আতাসী ৪/৩১৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৫/৬২৮; রদ্দুল মুহতার ৪/৩২২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল বারী - নেত্রকোণা

২০০৫. প্রশ্ন

আমার এক আত্মীয় ভীষণ অসুস' হয়ে পড়েছেন। ডাক্তার পানি ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। তাই তিনি নিজের কাছে একটি মাটির টুকরা রেখেছেন। প্রত্যেকবার এটা দিয়ে তায়াম্মুম করে নামায আদায় করেন। জানার বিষয় হল, এ পদ্ধতিতে তায়াম্মুম করা সহীহ হবে কি? প্রত্যেকবার তায়াম্মুমের জন্য নতুন মাটি নিতে হবে কি?

উত্তর

মাটির একটি টুকরা দ্বারা যতবার ইচ্ছা তায়াম্মুম করা যায়। প্রত্যেকবার তায়াম্মুমের জন্য নতুন মাটি নেওয়ার প্রয়োজন নেই।

ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩১; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩১১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৬৩; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/১৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/২৪২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ হুসাইন - শরীয়তপুর

২০০৬. প্রশ্ন

আড়তে যে সকল মালামাল বিক্রি করা হয় এর বিনিময়ে আড়তদার ক্রেতা বিক্রেতা উভয় থেকে কমিশন গ্রহণ করে থাকে। এটা বৈধ কি না জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

আড়তের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য আড়তদার কর্তৃক ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় থেকে কমিশন নেওয়া নাজায়েয নয়। কেননা তারা উভয়ই আড়ত ব্যবহার করছে। তবে কমিশনের পরিমাণ যুক্তিসঙ্গত হতে হবে।

-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/৪৫৩; আলবাহরুর রায়েক ৮/১১,২৫; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩০

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ হাদিউজ্জামান - শরীয়তপুর

২০০৭. প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় প্রচলন আছে যে, ফরয নামাযের পর সুন্নত পড়া হয় এর পর জানাযা নামায আদায় করা হয। এই পদ্ধতি কি সঠিক? সঠিক সমাধান বরাতসহ জানতে চাই।

উত্তর

আপনাদের এলাকার ঐ নিয়মটি ঠিক আছে। বিশেষত যখন জানাযার নামায পড়ার জন্য মসজিদের বাইরে যেতে হয় তখন সুন্নত পড়েই মসজিদ থেকে বের হয়ে জানাযা পড়া বাঞ্চনীয়। তবে সুন্নতের পূর্বে পড়াও জায়েয। এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে যেন জানাযার পরে সুন্নতে মুআক্কাদা পড়ে নেওয়া হয়।

-মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৬/২৩৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১৭৮; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৭৯; আলবাহরুর রায়েক ১/২৫৩; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাদ্দুর ১/৩৫২; রদ্দুল মুহতার ২/১৬৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/১০৬

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ এহতেশামুল হক - জামিয়া এজাজিয়া রেলস্টেশন যশোর

২০০৮. প্রশ্ন

আমাদের দেশে বর্তমানে শুধু পেনশনভোগী অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারি-কর্মকর্তাদের জন্য মুনাফাভিত্তিক একটা সুবিধা চালু করা হয়েছে। তা হল, অবসরপ্রাপ্তির সময় জিপি ফাণ্ড ও গ্রাচুয়িটি থেকে প্রাপ্ত টাকা দিয়ে সঞ্চয়পত্র খরিদ করতে হয়। নির্দিষ্ট মেয়াদ (৩ বা ৫ বছর)। এই সঞ্চয়কৃত টাকার বিনিময়ে প্রতি তিন মাস অন্তর নির্ধারিত একটি মুনাফা দেওয়া হয়। মেয়াদকাল শেষ হলে জমা রাখা মূল টাকা সম্পূর্ণ ফেরত দেওয়া হয়। এ সুবিধা শুধু সরকারী কর্মচারী-কর্মকর্তাদের জন্য। জানার বিষয় এই যে, এ মুনাফার সুবিধা গ্রহণ করা শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ কি না? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব। প্রকাশ থাকে যে, মাসিক মদীনায় তা বৈধ বলা হয়েছে। নিম্নে মাসিক মদীনার এ সম্পর্কিত কয়েকটি উত্তর উল্লেখ করা হল : ১। সরকার কর্তৃক জিপিফাণ্ডে যে মুনাফা দেওয়া হয় সেটাকে কর্মচারীদের কল্যাণের জন্য অনুদান হিসাবে গণ্য করত ফেকাহবিদগণ হালাল সাব্যস্ত করেছেন। ইদানীং প্রবর্তিত পেনশনের সঞ্চয়পত্রকে জিপিফাণ্ডেরই একটি বর্ধিত ছুরত রূপে গণ্য করে এটাকেও হালাল বলে গণ্য করেন ফেকাহবিদগণ। (মাসিক মদীনা, জুন ২০০৭) ২। এ যুগের বিজ্ঞ আলেমগণ এ ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেন যে, কর্মচারীগণের জন্য সরকার কর্তৃক প্রদত্ত প্রভিডেন্ট ফাণ্ড, পেনশন, প্রাচুয়িটি এবং সর্বশেষ সুযোগ পেনশনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ইত্যাদি হালাল। এসবের মুনাফা বাহ্যত সুদ বলে মনে হলেও শরীয়তের বিধান অনুযায়ী সুদের মধ্যে গণ্য হয় না। (মাসিক মদীনা, জুলাই ২০০৭) ৩। যেহেতু এটা শুধুমাত্র সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য সরকার নিয়ন্ত্রিত একটি বিশেষ স্কীম, সে কারণে সরকারী পেনশন ভোগীদের জন্য এই স্কীম থেকে প্রাপ্ত মুনাফা নাজায়েয হবে না। (মাসিক মদীনা, ডিসেম্বর ২০০৪)

উত্তর

সরকারী কর্মচারী-কর্মকর্তার জন্য যে সরকারী সঞ্চয় ফাণ্ড করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ সুদী। এটি জিপি ফাণ্ডের মতো নয়। জিপি ফাণ্ডের সাথে এর অনেক পার্থক্য রয়েছে। এখানে দুটি মৌলিক পার্থক্য উল্লেখ করা হচ্ছে। ক) জিপি ফান্ড বাধ্যতামূলক, কিন্তু সঞ্চয় ফাণ্ড বাধ্যতামূলক নয়। একজন চাকরিজীবী এই সুবিধা গ্রহণ করতেও পারে আবার নাও করতে পারে। খ) বাধ্যতামূলক জিপি ফাণ্ডের টাকা চাকরিজীবীকে দেওয়া হয় না; বরং তা সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে ঐ খাতের জন্য কেটে রাখা হয়। ফলে এই সময় এ টাকার উপর চাকরিজীবীর নিরঙ্কুশ মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয় না। অতএব এ কথা বলা যাবে না যে, অল্প জমা দিয়ে মেয়াদান্তে বেশি নিচ্ছে; বরং মূল ও অতিরিক্ত পুরোটাই সরকারের পক্ষ থেকে শ্রমের বিনিময়ে দেওয়া হচ্ছে। যা চাকরি শেষে একত্রে গ্রাচুয়িটি, জিপি ফাণ্ড ইত্যাদি নামে চাকুরেকে দিয়ে দেওয়া হয়। কেবল তখনই তার মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু সঞ্চয় ফাণ্ডের জমা এমন নয়। এ খাতে জমা টাকার উপর পূর্ব থেকেই জমাকারীর মালিকানা এসে যায়। অর্থাৎ সঞ্চয় ফাণ্ডে জমাকারী নিজ মালিকানাধীন টাকা জমা রেখে মেয়াদান্তে অতিরিক্ত নিচ্ছে, যা সুস্পষ্ট সুদ। মাসিক মদীনার এ সংক্রান্ত জবাবগুলো সহীহ নয়। সরকার কর্তৃক সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা হলেই তা আর সুদী লেনদেন হয় না-একথা ভাবা ঠিক নয়।

-আহকামুল কুরআন, জাসসাস ১/৪৬৪-৪৬৫; আলবাহরুর রায়েক ৭/৩০০; রদ্দুল মুহতার ৫/১৬৯; ইমদাদুল আহকাম ৩/৪৮০; জাদীদ মাসায়েল কে শরয়ী আহকাম, মুফতী শফী রাহ. পৃ. ৬৬-৬৭

শেয়ার লিংক

ইবনে মুহাম্মাদ - আলীনগর, সিলেট

২০০৯. প্রশ্ন

আমদের এলাকায় প্রচলন রয়েছে যে, বিয়ে উপলক্ষে কনের ইজিন নেওয়ার সময় কনের দু’জন কফিল এবং বরের দু’জন কফিল উপস্থিত থাকতে হয়। তাদের উপসি'তিতে কোনো আলেম সাহেব খুতবা পড়ে নিয়মানুযায়ী ইজিন নেন। বরপক্ষে কফিলের উপস্থিতির কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলল, সাক্ষী স্বরূপ তাদের উপস্থিতি জরুরি। জানার বিষয় এই যে, কনের ইজিন নেওয়ার সময় বরপক্ষের উকিলের সাক্ষীস্বরূপ উপসি'তি শরীয়তসম্মত কি না? ইজিন নেওয়ার সময় বরপক্ষের সাক্ষীর থাকা জরুরি কি না।

উত্তর

মেয়ে থেকে বিয়ের ইজিন তথা অনুমতি নেওয়ার জন্য সাক্ষী থাকা অপরিহার্য নয়। একজন ব্যক্তিও মেয়ে থেকে অনুমতি নিয়ে এসে তার পক্ষ থেকে বিয়ের প্রস্তাব বা কবুল করতে পারে। অবশ্য এক্ষেত্রে সাক্ষী রাখা জরুরি নয়, তবে সাক্ষী থাকা ভালো। গায়রে মাহরাম পুরুষদের জন্য সরাসরি মেয়ে থেকে অনুমতি (ইজিন) নিতে যাওয়া বৈধ হবে না। আর ইজনের জন্য পাত্র পক্ষ থাকতেই হবে এমন কোনে আবশ্যকতা নেই।

-আলবাহরুর রায়েক ৩/৮২; রদ্দুল মুহতার ৩/২১

শেয়ার লিংক

এ.কে.এম আবদুল মালেক - পল্লবী, ঢাকা

২০১০. প্রশ্ন

আমরা লক্ষ্য করে আসছি যে, শহরের বিভিন্ন এলাকায় এবং পল্লবী এলাকার প্রায় শরয়ী মসজিদে মকতবের রেকর্ড করা হচ্ছে। লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, শিক্ষকগণ বিনিময় নিয়েই ছেলে-মেয়েদেরকে মসজিদে বসে ধর্মীয় শিক্ষা দিচ্ছেন। ছাত্র-ছাত্রীরা সবকের সময়ের ভিতর মসজিদের পাখা, বাতি ইত্যাদি জিনিসপত্রও ব্যবহার করছে। শোরগোল তো আছেই। এভাবে দীর্ঘকাল ধরে মকতব চললেও স্বতন্ত্রভাবে মকতবের জন্য কোনো ঘর তৈরির ভাবনা সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের মধ্যে নেই বললেই চলে। বলতে গেলে এভাবে মসজিদগুলো সাময়িকভাবে নয়; বরং এক একটা অনুমোদিত স্থায়ী মাদরাসায় পরিণত হয়েছে। অবশ্য মুসলমানদের ছেলেমেয়েকে ধর্মীয় শিক্ষাদীক্ষা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তাবোধ প্রত্যেকের ভিতর থাকা উচিত। সেটা কীভাবে কোথায় হবে সেটাও নিরুপণ করে নেওয়া উচিত। বর্ণিত বিষয় আমাদের জিজ্ঞাস্য, এভাবে বিনিময় নিয়ে মসজিদের ভিতর কিংবা বারান্দায় বসে ছেলেমেয়েদের পড়ানো বৈধ কি না? যদি বৈধ না হয় তবে বৈধতার কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

প্রয়োজনীয় দ্বীনী ইলম শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরয। প্রত্যেক এলাকায় এ উদ্দেশ্যে পর্যাপ্ত দ্বীনী প্রতিষ্ঠান থাকা আবশ্যক। যেখানে সহীহশুদ্ধভাবে দ্বীনের জরুরি বিষয় শিক্ষা দেওয়া হবে। কিন্তু আমাদের দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে সেভাবে ভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। প্রত্যেক মসজিদের পাশে অথবা মহল্লায় মহল্লায় দ্বীনী মকতব চালু করা এজন্যই অপরিহার্য। আর সমাজের লোকজন এ বিষয়টি নিয়ে ভাবলে তা কঠিন ছিল না। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে অদ্যাবধি অনেক এলাকাতে এমন কোনো পৃথক ব্যবস্থা পড়ে উঠেনি, যার দ্বারা ঐ ফরয দায়িত্বটুকু পুরো হবে। এসব কারণেই প্রয়োজনের তাগিদেই মসজিদভিত্তিক মকতবগুলো চালু হয়ে গেছে। এছাড়া দ্বীনী তালীম মসজিদের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববীতে দ্বীনী তালীমের গোড়াপত্তন করেছেন। অবশ্য মসজিদে বেতন ও পারিশ্রমিক নিয়ে দ্বীনী শিক্ষা চালু করতে ফিকহবিদগণ নিষেধ করেছেন। অতএব স্থায়ীভাবে মসজিদে বেতনভিত্তিক দ্বীনী শিক্ষা চালু করা যাবে না। হ্যাঁ, বর্তমান প্রেক্ষাপটে যতদিন প্রত্যেক এলাকায় দ্বীনী শিক্ষার জন্য পৃথক ব্যবস্থা না হবে ততদিন অস্থায়ী ব্যবস্থা হিসাবে মসজিদে তা করা যাবে। উল্লেখ্য যে, ফকীহগণ জরুরতের সময় এবং অস্থায়ীভাবে মসজিদে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে দ্বীনী তালীমকে বৈধ বলেছেন। তবে এক্ষেত্রে লক্ষণীয় হল : ক) উস্তাদ, তালিবে ইলম সকলেই মসজিদের আদাবের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখবে। আদাব ক্ষুণ্ন হয় এমন আচরণ থেকে বিরত থাকবে। খ) এলাকার সকল মুসলমানদের কর্তব্য হল, দ্বীনী শিক্ষার প্রয়োজন পূরণ হয় এমন পৃথক মকতব মাদরাসা নিজ নিজ এলাকায় গড়ে তুলবে এবং মসজিদের মকতব সেখানে স্থানান্তর করবে। গ) একেবারে অবুঝ শিশু, যারা মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা করতে পারবে না তাদেরকে আসার সুযোগ দিবে না। তেমনিভাবে পর্দার বয়স হয়ে যায় এমন মেয়েদেরকেও মসজিদে আসতে দিবে না। তাদের জন্য নিজ বাড়িতে পর্দার সাথে শিক্ষার ব্যবস্থা করবে। ঘ) যেহেতু মসজিদভিত্তিক মকতব আমাদের দেশের বহুদিনের প্রচলন। এতে দাতা ও মুসল্লীদেরই সন্তানরা শিক্ষাগ্রহণ করে। তাই এই মকতবের জন্য মসজিদের চাটাই, বিদ্যুৎ ইত্যাদির প্রয়োজনীয় ব্যবহার দাতাদের মৌন সম্মতির দৃষ্টিতে বৈধ গণ্য হবে।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৬৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১১০, ৪/৪৫৭; ফাতহুল কাদীর ১/৩৬৯; আলবাহরুর রায়েক ২/৩৫; আননাহরুল ফায়েক ১/২৯০; রদ্দুল মুহতার ৬/৪২৮

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আরেফীন সালেহ - মুহাম্মদপর, ঢাকা

২০১১. প্রশ্ন

আমার একটি লন্ড্রি দোকান আছে। পূর্বে বেতনভুক্ত একজন কর্মচারী রেখেছিলাম। দু’জন মিলে কাজ করতাম। কোনো কারণে সে চলে যায়। এখন এক ব্যক্তি আমাকে প্রস্তাব করেছে যে, সে আমার দোকানে আসবে। দু’জন মিলে মানুষ থেকে কাপড় গ্রহণ করব, ধোলাই ও ইস্ত্রি করব। যা উপার্জন হবে তা অর্ধাঅর্ধি হারে বণ্টিত হবে। জানার বিষয় এই যে, এই পদ্ধতিতে তাকে নেওয়া বৈধ হবে কি না? চাইলে তার সঙ্গে এভাবে চুক্তি করতে পারব কি না যে, যা উপার্জন হবে তার দুই ভাগ আমার, এক ভাগ তার? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে দু’জনের মাঝে যা লাভ হবে তা নির্ধারিত হারে বণ্টনের চুক্তি করা জায়েয হবে। দু’জনের কে কত ভাগ পাবে তা আগে থেকে নির্ধারণ করে নিবে। উভয়ের সম্মতিতে একজনের এক ভাগ ও অপরজনের দুই ভাগও হতে পারে। আবার অন্য কোনো হারেও হতে পারে।

-মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়াহ পৃ. ২৬৭, মাদ্দাহ : ১৩৮৫; শরহুল মাজাল্লাহ, খালিদ আতাসী ৪/২৫৬; ফাতহুল কাদীর ৫/৪০৫; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/২৫১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৩৩১; রদ্দুল মুহতার ৪/৩২২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - ঢাকা

২০১২. প্রশ্ন

নাবালেগ ছেলের জানাযার নামাযে ইমামতি করা জায়েয কি না? যদি জায়েয না হয় আর সে ইমামতি করে ফেলে তাহলে কি নামায আবার পড়তে হবে?

উত্তর

অন্যান্য নামাযের মতো জানাযার নামাযেও নাবালেগের ইমামতি সহীহ নয়। তাই নাবালেগ জানাযার নামাযের ইমামতি করলে ঐ মাইয়্যেতের জানাযা পুনরায় আদায় করে নিতে হবে।

-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২/৩৯৮; তাকরীরাতে রাফেয়ী পৃ. ৭৫; রদ্দুল মুহতার ১/৫৭৭

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ মুশাররফ হুসাইন - ময়মনসিংহ

২০১৩. প্রশ্ন

জনৈক আহলে হাদীস আলেম বলেছেন, উমর রা. মদীনায় বসে যে ‘ইয়া সারিয়াতুল জাবাল’ বলেছেন এ ঘটনাটি সত্য নয়। কারণ এটি সত্য হলে এর দ্বারা প্রমাণ হবে যে, উমর রা. গায়েব জানেন। অথচ আল্লাহ তাআলা ছাড়া কেউ গায়েব জানেন না-এটি চির সত্য। তাই উক্ত ঘটনাটি বর্ণনাযোগ্য নয়। জানতে চাই, তার কথা কি সঠিক?

উত্তর

খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত উমর রা.-এর জুমার খুৎবা অবস'ায় পারস্যের যুদ্ধরত মুসলিম সেনাপতিকে ইয়া সারিয়াতুল জাবাল বলে সম্বোধন করার ঘটনাটি সত্য। এ সম্পর্কিত একটা বর্ণনা সম্পর্কে ইবনে হাজার রাহ. বলেছেন, তার সনদ হাসান পর্যায়ের এবং ইবনে কাছীর রাহ. বলেছেন, হাযা ইসনাদুন জাইয়্যেদুন হাসানুন। দেখুন : আলইসাবা ৩/৫-৭; আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া ১০/১৭৩ অতএব ঘটনাটি বর্ণনাযোগ্য। আর এ কথাও সত্য এবং ঈমানের অংশ যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া কেউ গায়েব জানেন না। তবে আল্লাহ তাআলা যাকে গায়েবের কোনো খবর সম্পর্কে অবগত করেন তিনি ঐ বিষয়টি জানতে পারেন। যেমন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের অনেক আলামত সম্পর্কে অবগত করেছেন। তাই রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা বর্ণনা করেছেন। এ সূত্রে আমরাও জেনেছি। এতে করে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর উম্মত গায়েব জানেন-এ কথা বলা যায় না। তদ্রূপ আল্লাহ তাআলা হযরত উমর রা.-এর অন্তরে পারস্যের সৈন্যবাহিনীর অবস্থা ঢেলে দিয়েছিলেন এবং তার আওয়াজ সুদূর পারস্যে পৌঁছে দিয়েছিলেন-এটি আল্লাহ তাআলা কুদরতের প্রকাশ। আর তার কুদরতে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। কেয়ামতের আলামতসমূহ জানার দ্বারা যেমনিভাবে গায়েব সম্পর্কে জ্ঞাত বলা যায় না তেমনি হযরত উমর রা.-এর ঐ ঘটনাও তাঁর গায়েব জানার প্রমাণ বহন করে না; বরং আল্লাহ তাআলার কুদরতেরই প্রমাণ। এ কারণে তিনি নিজেও কখনো এ দাবি করেননি যে, তিনি গায়েব জানেন এবং তার সম্পর্কে কোনো সাহাবী, তাবেয়ী, ইমাম ও মুহাদ্দিসও এমন কথা বলেননি। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ব্যক্তির ঐ কথা সঠিক নয়। খোঁড়া যুক্তি দিয়ে ইসলামের সোনালী ইতিহাসকে অস্বীকার করা অন্যায় এবং কম ইলমীর পরিচায়ক।

-আল ইসাবা ফী তাময়িযিস সাহাবা ৩/৫-৭, হাদীস : ৩০৩৬; আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া ১০/১৭৩; আলকামিল ফিততারীখ ৩/৪২; আলমুনতাযাম ফী তারীখিল মুলূক ওয়াল উমাম ৪/৩২৫-৩২৬; তারীখে তবারী পৃ. ৬৯৮; সিলসিলাতুল আহাদীসিস সহীহা ৩/১০১, হাদীস : ১১১০; তারিখে দামেশক ২০/২৪

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ - সিলেট

২০১৪. প্রশ্ন

আশরায়ে মুবাশশারা অর্থাৎ যে দশজন সাহাবীর ব্যাপারে দুনিয়াতেই জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে তাদের নাম, পরিচয় এবং কিছু বৈশিষ্ট্য জানতে চাই।

উত্তর

দুনিয়াতেই যে দশজন সাহাবীকে জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন : ১. হযরত আবু বকর রা.। তার আসল নাম আবদুল্লাহ বিন উসমান বিন আমর। তাঁর উপাধি আতীক, সিদ্দীক। তার মায়ের নাম উম্মুল খায়র। পুরুষদের মধ্যে তিনি সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণ করেন। তার হাতে হযরত উসমান বিন আফফান, হযরত যুবাইর, হযরত তালহা, হযরত আবদুর রহমান বিন আউফ প্রমুখ বড় বড় সাহাবী ইসলাম গ্রহণ করেছেন। তিনি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হিজরতের সাথী। ইসলামের প্রথম খলীফা। ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। ২. উমর বিন খাত্তাব রা. বিন নুফাইল বিন আবদুল উযযা। ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা, খলীফাতুল মুসলিমীনের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম আমীরুল মুমিনীন খেতাবে ভূষিত হন। তার খেলাফতকাল ছিল দশ বছর ছয় মাস চার দিন। আল্লাহ তাআলা তার দ্বারা ইসলামকে শক্তিশালী করেছেন। ৩. হযরত উসমান রা. বিন আফফান বিন আবিল আস। ইসলামের তৃতীয় খলীফা। তাঁর খেলাফতকাল এগার বছর এগার মাস কয়েক দিন। ৪. হযরত আলী রা. বিন আবু তালিব বিন আবদুল মুত্তালিব। সাত বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেন। তবুক ছাড়া সকল যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ইসলামের চতুর্থ খলীফা ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জামাতা। ৫. হযরত তলহা রা. বিন উবাইদুল্লাহ বিন উসমান বিন উমর। উহুদ যুদ্ধে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে অত্যন্ত মজবুতভাবে অবস্তান নিয়েছিলেন। চব্বিশ স্থানে আঘাত পেয়েছিলেন। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নাম রেখেছিলেন তলহাতুল খায়র। তিনি জামাল যুদ্ধে শাহাদত বরণ করেন। ৬. হযরত যুবাইর রা. বিন আওয়াম বিন খুয়াইলিদ। সকল যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। হাবশায় হিজরত করেছিলেন। তিনি সর্বপ্রথম আল্লাহর রাহে তরবারী চালিয়েছিলেন। তার আকৃতিতে ফেরেশতাগণ বদর যুদ্ধে অবতরণ করেছিলেন। তিনি জামাল যুদ্ধে শাহাদত বরণ করেন। ৭. হযরত আবদুর রহমান রা. বিন আউফ বিন আবদুল হারিছ। হাবশায় হিজরত করেছিলেন। সকল যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ৮. হযরত সা’দ বিন আবী ওয়াক্কাস রা.। তিনি সর্বপ্রথম আল্লাহর রাহে তীর নিক্ষেপ করেন। উহুদ যুদ্ধে তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, তোমার উপর আমার মা, বাবা কোরবান হোক, তীর নিক্ষেপ কর। তিনি সকল যুদ্ধে শরীক হয়েছেন। ৯. হযরত সাঈদ বিন যায়েদ ইবনে উমর বিন নুফাইল। বদর যুদ্ধ ছাড়া অন্য সকল যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১০. হযরত আবু উবাইদাহ আমের বিন আবদুল্লাহ বিন জাররাহ। সকল যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনিই উহুদ যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চোয়ালে বিঁধে যাওয়া লৌহবর্ম দাঁত দিয়ে বের করেছিলেন। তখন তার সামনের দুই দাঁত পড়ে গিয়েছিল।

-আলমুজতবা মিনাল মুজতবা পৃ. ৪১-৪৪; জামে তিরমিযী ২/২১৫, হাদীস : ৩৯৯৪

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ইসহাক - মিরপুর, ঢাকা

২০১৫. প্রশ্ন

মেরাজের ঘটনা কি কুরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত? মেরাজ অস্বীকার করলে কি ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে? মেরাজ স্বপ্নে হয়েছিল এমন আকীদা রাখা কেমন? হযরত আয়েশা রা. নাকি স্বশরীরে মেরাজ স্বীকার করতেন না?

উত্তর

রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মেরাজ কুরআন-হাদীস ও ইজমায়ে উম্মত-এর অকাট্য দলীল দ্বারা প্রমাণিত। মেরাজ সত্য-এই বিশ্বাস রাখা ফরয। অস্বীকার করলে ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। আর মেরাজ যে সশরীরে ও জাগ্রত অবস্থায় হয়েছিল তা যে শুধু রূহানী বিষয় ছিল না এ বিষয়টির উপরও ঈমান রাখা জরুরি। সকল সাহাবা, তাবেয়ীন ও তাবে তাবেয়ীনের বিশ্বাসও এটিই। আম্মাজান হযরত আয়েশা রা.-এর থেকে যে কথা বর্ণনা করা হয় তা ঠিক নয়। একে তো সেটির সনদ দুর্বল। আর ইমাম আবুল আব্বাস ইবনে সুরাইজ বলেছেন, এ উক্তিটি হযরত আয়েশা রা.-এর উপর আরোপ করা হয়েছে। অর্থাৎ তিনি তা বলেননি অথচ তার নামে একথা চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। (শরহুল মাওয়াহিব, যুরকানী ৮/৭) রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বায়তুল মাকদিস পর্যন্ত সফরের কথা সূরা বনী ইসরাঈলের শুরুতে এবং উর্ধ্ব জগতের সফরের কথা সূরা নাজমের ১৩ থেকে ১৮ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। কুরআন মজীদের আয়াত, সহীহ হাদীস ও উম্মতের ইজমা দ্বার প্রমাণিত বিষয়ের বিপরীত ঐ ধরনের যয়ীফ বর্ণনার কোনো স্থান নেই তা বলাই বাহুল্য। এ প্রসঙ্গে ইমাম আবুল খাত্তাব উমর ইবনে দিহইয়া বলেন, ইসরার হাদীসের উপর মুসলিমদের ইজমা রয়েছে এবং বেদ্বীন ও মুলহিদরা তা থেকে বিমুখ হয়েছে। তারা ফুঁৎকারে আল্লাহর নূর নিভিয়ে দিতে চায়। আর আল্লাহ তার নূরকে পূর্ণ করবেন। যদিও কাফেররা অপছন্দ করে। বিস্তারিত জানার জন্য আলকাউসারে (আগস্ট ’০৬) প্রকাশিত হযরত মাওলানা আবদুল মালেক ছাহেব দামাত বারাকাতুহুমের প্রবন্ধটি পড়া যেতে পারে।

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ শাহাদত হুসাইন - বগুড়া

২০১৬. প্রশ্ন

অযুতে মাথা মাসেহর সময় কান মাসেহ করার হুকুম কী? এ সম্পর্কে কোনো নির্ভরযোগ্য হাদীস আছে কি জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

অযুতে কান মাসেহ করা সুন্নত। মাথা মাসেহর পর ভেজা হাত দিয়ে কান মাসেহ করে নিবে। এজন্য নতুন পানি নিবে না। কান মাসেহ করা সম্পর্কে জামে তিরমিযীতে একটি হাদীস আছে। রুবাইয়ি বিনতে মুয়াওয়িয রা. থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অযু করতে দেখেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথার সম্মুখ ভাগ ও পিছন ভাগ এবং মাথার উভয় পার্শ্ব ও কান একবার মাসেহ করেছেন। (জামে তিরমিযী ১/৭) ইমাম তিরমিযী রাহ. হাদীসটিকে হাসানুন সহীহ বলেছেন। এছাড়া কান যে মাথার অংশ এ সম্পর্কেও হাদীস-আছার রয়েছে।

দেখুন : ইলাউস সুনান ১/৮৫; আসসিআয়াহ ১/১৩৯; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ১/২৯৫

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আসিফ - হাটহাজারী, চট্টগ্রাম

২০১৭. প্রশ্ন

গ্রামদেশে একটি কথা বেশ প্রসিদ্ধ যে, পুরো পৃথিবী একটি ষাঁড়ের শিংয়ের উপর অবসি'ত। ষাঁড় যখন শিং নাড়া দেয় তখন পৃথিবীতে ভূমিকম্প হয়। এটা নাকি হাদীস। আমাদের দেশের কোনো কোনো বক্তা খুব মুখরোচকভাবে বলে থাকেন। জানতে চাই তা সহীহ কি না?

উত্তর

এমন কথা কোনো হাদীসে নেই। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আল্লামা ইবনুল কাইয়েম রাহ. এবং আবু হাইয়ান রাহ. একে ভিত্তিহীন ও জাল বলেছেন।

-আলমানারুল মুনীফ পৃ. ৭৮; আলইসরাঈলিয়্যাত ওয়ালমাওযূআত ৩০৫

শেয়ার লিংক