মুহাম্মাদ ইসমাঈল আবরার - মিরপুর, ঢাকা

১৭১৪. প্রশ্ন

খতম তারাবীর ইমামতি করে বিনিময় বা হাদিয়া নেওয়া জায়েয কি না? এক মাসের জন্য নিয়োগ দিয়ে বেতন দিলে জায়েয হবে কি না? কেউ কেউ বলেন, ফরয নামাযের ইমামতির বিনিময় যখন জায়েয তখন খতম তারাবীর বিনিময় গ্রহণও জায়েয হবে। এছাড়া হাফেজ সাহেবকে যদি দু’এক ওয়াক্ত ফরয নামাযের দায়িত্ব দেওয়া হয় তবে তো নাজায়েয হওয়ার প্রশ্নই আসে না। তাদের একথা ঠিক কি না? ইমামতির হীলা হোক বা অন্য কোনো উপায়ে তারাবীর বিনিময় বৈধ কি না?

উত্তর

খতম তারাবীর বিনিময় দেওয়া-নেওয়া দুটোই নাজায়েয। হাদিয়ার নামে দিলেও জায়েয হবে না। এক মাসের জন্য নিয়োগ দিয়ে বেতন হিসাবে দিলেও জায়েয নয়। কারণ এক্ষেত্রেও প্রদেয় বেতন তারাবীহ এবং খতমের বিনিময় হওয়া স্বীকৃত। মোটকথা, খতম তারাবীর বিনিময় গ্রহণের জন্য হিলা অবলম্বন করলেও তা জায়েয হবে না। কারণ খতমে তারাবীহ খালেস একটি ইবাদত, যা নামায ও রোযার মতো ‘ইবাদতে মাকসূদা’-এর অন্তর্ভুক্ত। আর এ ধরনের ইবাদতের বিনিময় বা বেতন দেওয়া-নেওয়া উম্মতে মুসলিমার ঐকমত্যের ভিত্তিতে নাজায়েয। এতে না কোনো মাযহাবের মতপার্থক্য আছে, না পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ফকীহগণের মাঝে কোনো মতভেদ আছে।

ইমামতির বেতন ঠিক করা এবং তা আদায় করা যদিও পরবর্তী ফকীহগণের দৃষ্টিতে জায়েয, কিন্তু খতম তারাবীর বিনিময়টা ইমামতির জন্য হয় না; বরং তা মূলত খতমের বিনিময়ে হয়ে থাকে। আর তেলাওয়াতের বিনিময় গ্রহণ করা সকল ফকীহ্র নিকট হারাম। অধিকন্তু পরবর্তী ফকীহ্গণ যে ইমামতির বেতন জায়েয বলেছেন সেটা হল ফরযের ইমামতি। সুন্নাত জামাতের ইমামতি এর অন-র্ভুক্ত নয়।

আর হাফেযদের দেওয়া বিনিময়কে জায়েয করার জন্য এই হিলা অবলম্বন করা যে, শুধু রমযান মাসের জন্য তার উপর দু-এক ওয়াক্ত নামাযের দায়িত্ব দেওয়া হবে-এটা একটা বাহানামাত্র; যা পরিহার করা জরুরি। কারণ এই হিলার যে বিমিনয়টা তাকে ফরযের ইমাতির জন্য দেওয়া হচ্ছে আর তারাবীর খতম সে বিনিময়হীনভাবেই করে দিচ্ছে। কিন' আপনার মনকে একটু প্রশ্ন করে দেখুন, যদি ওই হাফেয সাহেব তার দায়িত্বে অর্পিত ফরয নামাযের ইমামতি যথাযথ গুরুত্বের সাথেও আদায় করেন আর খতম তারাবীতে অংশগ্রহণ না করেন তবে কি তাঁকে ওই বিনিময় দেওয়া হবে, যা খতম তারাবী পড়ালে দেওয়া হত? এ কথা সুস্পষ্ট যে, কখনো তা দেওয়া হবে না। বোঝা গেল, বিনিময়টা মূলত খতম তারাবীর, ফরযের ইমামতির নয়। এ জন্যই আকাবিরের অনেকে এই হিলা প্রত্যাখ্যান করেছেন। আর দলীলের ভিত্তিতেও তাঁদের ফতওয়াই সহীহ। দেখুন : ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৩২২; ইমদাদুল আহকাম ১/৬৬৪

সারকথা হল, কুরআন তেলাওয়াত, বিশেষত যখন তা নামাযে পড়া হয়, একটি খালেস ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার সন'ষ্টির জন্যই হওয়া চাই। তাতে কোনো দুনিয়াবী উদ্দেশ্য শামিল করা গুনাহ। নিচে এ বিষয়ে কিছু হাদীস, আছারের অনুবাদ ও ফিকহের উদ্ধৃতি পেশ করা হল।

  • ১. হযরত আবদুর রহমান ইবনে শিবল রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, তোমরা কুরআন পড় তবে তাতে বাড়াবাড়ি করো না এবং তার প্রতি বিরূপ হয়ো না। কুরআনের বিনিময় ভক্ষণ করো না এবং এর দ্বারা সম্পদ কামনা করো না।’-মুসনাদে আহমদ ৩/৪২৮; মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৫/২৪০; কিতাবুত তারাবীহ
  • ২. ‘ইমরান ইবনে হোসাইন রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, তোমরা কুরআন পড় এবং আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা কর। তোমাদের পরে এমন জাতি আসবে, যারা কুরআন পড়ে মানুষের কাছে প্রার্থনা করবে।’-মুসনাদে আহমদ ৪/৪৩৭; জামে তিরমিযী ২/১১৯
  • ৩. ‘হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মা’কিল রা. থেকে বর্ণিত, তিনি এক রমযান মাসে লোকদের নিয়ে তারাবীহ পড়লেন। এরপর ঈদের দিন উবাইদুল্লাহ ইবনে যিয়াদ রাহ. তাঁর কাছে এক জোড়া কাপড় এবং পাঁচশ দিরহাম পাঠালেন। তখন তিনি কাপড় জোড়া ও দিরহামগুলো এই বলে ফেরত দিলেন যে, আমরা কুরআনের বিনিময় গ্রহণ করি না।’-মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৫/২৩৭

আরো দেখুন : ফাতাওয়া শামী ৬/৫৭; তানকীহুল ফাতাওয়া হামীদিয়া ২/১৩৭-১৩৮; আলইখতিয়ার লিতা’লীলিল মুখতার ২/৬২; শিফাউল আলীল ওয়াবাল্লুল গালীল (রাসায়েলে ইবনে ইবনে আবেদীন) ১/১৫৪-১৫৫; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৩১৫-৩১৯ ও ৩২২; রাফেউল ইশকালাত আনহুরমাতিল ইসি-জার আলাত্তাআত, মুফতিয়ে আযম হযরত মাওলানা মুফতী ফয়যুল্লাহ রাহ.।

শেয়ার লিংক

হাসিনা আক্তার - আরামবাগ, ঢাকা

১৭১৫. প্রশ্ন

একজন বলল, রমযান মাসে রোযা অবস'ায় মাসিক শুরু হলে বাকি দিন অনাহার থাকা জরুরি। একথা কি ঠিক?

উত্তর

না, ঐ কথা ঠিক নয়। রোযা অবস'ায় মাসিক শুরু হলে বাকি দিন পানাহার করতে পারবে। তদ্রূপ যতদিন মাসিক চলবে ততদিন রমযানের দিনের বেলায় পানাহার করা জায়েয। তবে অন্যদের সামনে খাবে না। অবশ্য রমযান মাসে দিনের বেলায় মাসিক বন্ধ হলে বাকি দিন পানাহার থেকে বিরত থাকা জরুরি।

মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৬/২২০; আলজাওয়াহারা ১/১৮৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২১৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৫

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুর রাযযাক - ত্রিশাল, ময়মনসিংহ

১৭১৬. প্রশ্ন

এক ব্যক্তি রমযানের শেষ দশদিন ইতিকাফে বসেছিলেন। কয়েকদিন পর তিনি অসুস' হয়ে পড়লেন এবং রোযা ভেঙে ফেললেন। জানতে চাই যে, রোযা ভেঙে ফেলার কারণে তার ইতিকাফ নষ্ট হয়ে গেছে কি না?

উত্তর

রমযানের শেষ দশদিনের সুন্নত ইতিকাফের জন্য রোযা শর্ত। রোযা ব্যতীত সুন্নত ইতিকাফ আদায় হয় না। তাই উক্ত ব্যক্তি রোযা ভেঙে ফেলার কারণে তার সুন্নত ইতিকাফ নষ্ট হয়ে গেছে। অবশ্য তিনি যেহেতু মসজিদ থেকে বের হয়ে যাননি তাই তার ইতিকাফ নফল হিসাবে গণ্য হবে। নফল ইতিকাফের জন্য রোযা শর্ত নয়।

মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/৩৫৪; হিদায়া ১/২২৯; ফাতাওয়া সিরাজিয়া পৃ. ৩১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৪১০,৪১৩; আলবাহরুল রায়েক ২/২৯৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৪২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আনাস - ঢাকা

১৭১৭. প্রশ্ন

আমার পিতা বার্ধক্যের দরুণ রোযা রাখার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেছেন। জানতে চাই, এক রোযার ফিদয়া একাধিক ব্যক্তিকে দেওয়া জায়েয হবে কি না?

উত্তর

হ্যাঁ, এক রোযার ফিদয়া একাধিক ব্যক্তিকেও দেওয়া জায়েয। তবে একজনকে পুরো একটি ফিদয়া দেওয়া উত্তম।

আলবাহরুর রায়েক ২/২৮৭; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪২৭

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ইকবাল হুসাইন - চাঁদপুর

১৭১৮. প্রশ্ন

রমযান মাসে অনেক সময় কোনো কোনো রোযাদারকে ভুলে পানাহার করতে দেখা যায়। পানাহারের সময় তাদেরকে বারণ করা বা না করা সম্পর্কে করণীয় কী জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

রমযান মাসে কোনো সুস' সবল লোককে ভুলে পানাহার করতে দেখলে তাকে রোযার কথা স্মরণ করিয়ে দিবে। তবে কোনো দুর্বল বা বৃদ্ধকে ভুলে পানাহার করতে দেখলে রোযার কথা স্মরণ না করানোই উত্তম।

আলবাহরুর রায়েক ২/২৭১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৩৮৪; ফাতহুল কাদীর ২/২৫৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২০৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩২২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৯৫

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - ঢাকা

১৭১৯. প্রশ্ন

এক ব্যক্তি রমযানের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছিলেন। তিন দিন পর তিনি অযু-ইসে-ঞ্জার প্রয়োজন ছাড়া শুধূ সাধারণ গোসলের জন্য মসজিদ থেকে বের হলেন এবং মসজিদের অযুখানায় গোসল করলেন। জানার বিষয় হল, ইতিকাফ অবস'ায় সাধারণ গোসলের জন্য মসজিদ থেকে বের হওয়া জায়েয আছে কি না? বের হলে ইতিকাফ নষ্ট হবে কি না?

উত্তর

রমযান মাসের শেষ দশকের ইতিকাফ অবস'ায় সাধারণ গোসলের জন্য মসজিদ থেকে বের হওয়া জায়েয নেই। বের হলে ইতিকাফ নষ্ট হয়ে যাবে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ব্যক্তি সাধারণ গোসলের জন্য বের হওয়ার কারণে তার সুন্নত ইতিকাফ নষ্ট হয়ে গেছে। যেদিন গোসলের জন্য বের হয়েছে ঐ দিনের ইতিকাফ কাযা করে নেওয়া জরুরি। আর এই ইতিকাফটি নফল ইতিকাফ হিসাবে গণ্য হবে।

মারাকিল ফালাহ পৃ. ৩৮৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২২৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬৮; আলবাহরুর রায়েক ২/৩০১; আননাহরুল ফায়েক ২/৪৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৪৫

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবু তাহের - ঢাকা

১৭২০. প্রশ্ন

আমি ঈদগাহে গিয়ে দেখি, ইমাম সাহেব প্রথম রাকাতে কেরাত পড়ছেন। এ অবস'ায় আমি নামাযে শরিক হয়েছি। আমার জানার বিষয় হল, ঈদের নামাযের তাকবীরগুলো আমি কখন আদায় করব?

উত্তর

উক্ত অবস'ায় আপনি তাকবীরে তাহরীমা বলে নামায শুরু করার পরপরই অতিরিক্ত তাকবীরগুলো ধারাবাহিকভাবে আদায় করে নিবেন।

আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৯২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৯২-৯৩; আলবাহরুর রায়েক ২/১৬১; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৭৩

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ কামাল বিন ইউসুফ - কুমিল্লা

১৭২১. প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি যাকাত গ্রহণের যোগ্য হওয়ার ব্যাপারে আমার সন্দেহ হয়েছিল, পরবর্তীতে প্রবল ধারণা হয়েছিল যে, সে আর্থিক দিক থেকে যাকাত গ্রহণের যোগ্য তাই আমি তাকে যাকাত দিয়েছি। কিন' পরে প্রকাশ পেল যে, আসলে সে যাকাত গ্রহণের যোগ্য ছিল না। এখন জানার বিষয় হল, আমার এই যাকাত আদায় হবে কি না, নাকি পুনরায় এই যাকাত দিতে হবে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

আপনি যেহেতু প্রবল ধারণা অনুযায়ী যাকাত গ্রহণের যোগ্য মনে করেই তাকে যাকাত দিয়েছেন তাই আপনার যাকাত আদায় হয়ে গিয়েছে। পরবর্তীতে ভুল বুঝা গেলেও তা পুনরায় আদায় করতে হবে না। সামনে থেকে যাকাত দেওয়ার পূর্বে যথাসম্ভব ভালোভাবে যাচাই করে নিবেন।

সহীহ বুখারী ১/১৯১; আলবাহরুর রায়েক ২/২৪৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮৯-১৯০; হিদায়া (ফাতহুল কাদীর) ২/২১৪-২১৫; হাশিয়া তহতাবী আলালমারাকী পৃ. ৩৯৩

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আলইমরান - মিরপুর-১৪, ঢাকা

১৭২২. প্রশ্ন

আমার কাছে এ পরিমাণ টাকা আছে, যার উপর যাকাত ফরয হয়। অপর দিকে যাকাত গ্রহণের যোগ্য এক ব্যক্তির কাছে অনেক টাকা ঋণ পাই। তার কাছে টাকা চাইলে বলে, আজ নয় কাল দেব, কাল নয় পরশু। আমার জানার বিষয় হল, আমার কাছে বিদ্যমান টাকার উপর যে পরিমাণ যাকাত ফরয হয়েছে তা যদি আমি যাকাত আদায়ের নিয়তে ঐ ঋণের টাকা হতে মাফ করে দেই তবে আমার যাকাত আদায় হবে কি? অথবা ঐ ঋণের টাকার উপর যে পরিমাণ যাকাত ফরয হয়েছে তা যদি আমি ঐ ঋণের টাকা হতে যাকাতের নিয়তে মাফ করে দেই তবে আমার যাকাত আদায় হবে কি?

উত্তর

ঋণ মাফ করে দেওয়ার দ্বারা যাকাত আদায় হয় না। তাই ঋণের পুরোটা বা আংশিক যাকাতের নিয়তে ছেড়ে দিলে যাকাত আদায় হবে না। তবে ঋণ গ্রহীতাকে যাকাতের টাকা নগদ দান করার পর তার থেকে আপনার পাওনা উসূল করে নিতে পারেন। এতে আপনার যাকাতও আদায় হবে এবং তার ঋণমুক্তির ব্যাপারে সহযোগিতাও করা হবে।

বাদায়েউস সানায়ে ২/১৪৯; আলবাহরুর রায়েক ২/২১১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৬৩; হাশিয়া শালবী ১/২৫৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৪৪; রদ্দুল মুহতার ৩/১৯০

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম - শরীয়তপুর

১৭২৩. প্রশ্ন

আমার এক প্রতিবেশী যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত। আমি তাকে যাকাত দিতে চাই। কিন' যাকাত বলে দিতে লজ্জা হয়। এখন আমি যদি যাকাতের টাকা যাকাতের কথা উল্লেখ না করে যাকাতের নিয়তে তাকে প্রদান করি তবে আমার যাকাত আদায় হবে কি?

উত্তর

হ্যাঁ, এভাবেও যাকাত আদায় হয়ে যাবে। যাকাত আদায়ের জন্য গ্রহীতাকে যাকাত দেওয়া হচ্ছে একথা বলা জরুরি নয়। যাকাত গ্রহণের যোগ্য ব্যক্তিকে যাকাতের কথা উল্লেখ না করেও যাকাতের টাকা দেওয়া যায়।

আলবাহরুর রায়েক ২/২১২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২৬৬; হাশিয়া তহতাবী আলালমারাকী পৃ. ৩৯০; মাজমাউল আনহুর ১/২৯০; আননাহরুল ফায়েক ১/৪১৮

শেয়ার লিংক

নূরুল আমীন - বরিশাল

১৭২৪. প্রশ্ন

এক ব্যক্তি রমযান মাসে সফর করার কারণে কয়েক দিনের রোযা রাখতে পারেনি। রমযানের শেষ দিকে সে অসুস' হয়ে পড়ে এবং অনেক দিন অসুস' থাকার পর মারা যায়। প্রশ্ন এই যে, উক্ত ব্যক্তির এই রোযার উপর কি কোনো ধরনের কাফফারা দেওয়া ওয়াজিব?

উত্তর

ঐ রোযাগুলোর কাফফারা দিতে হবে না। কারণ সফর শেষে লাগাতার অসুস'তার দরুণ সে কাযা আদায়ের সুযোগ পায়নি। আর কাযা আদায়ের মতো সুস'তা ফিরে না পেলে ফিদয়া বা কাফফারা কোনোটি ওয়াজিব হয় না।

মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৪/২৩৭; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৬৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৮৩; হাশিয়াতু তহতাবী আলালমারাকী পৃ. ৩৭৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৬০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪২৩-৪২৪

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ সালমান - উত্তরা, ঢাকা

১৭২৫. প্রশ্ন

বাচ্চা দুধ পান করা অবস'ায় অনেক সময় মায়ের কোলে বমি করে দেয়। আবার কখনো দুধ পান করার পর বমি করে দেয়। বমির পরিমাণ কখনো বেশি হয় কখনো কম। প্রশ্ন এই যে, এই কাপড় পরিধান করে নামায পড়া যাবে কি?

উত্তর

দুধের শিশুর বমিও বড়দের মতো একই হুকুমের অন-র্ভুক্ত। অর্থাৎ মুখ ভর্তি বমি হলে তা নাপাক। আর মুখ ভর্তি না হলে নাপাক নয়। উল্লেখ্য, দুধ পান করার পরক্ষণে বমি করলেও উপরোক্ত হুকুম প্রযোজ্য হবে। হ্যাঁ, খাবার গিলে ফেলার আগেই মুখ থেকে বের করে দিলে এর কারণে কাপড় বা শরীর নাপাক হবে না।

হাশিয়াতু তহতাবী আলালমারাকী পৃ. ৪৯; ফাতহুল কাদীর ১/১৭৯; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৪; আসসিয়াআহ ১/২১৯; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৩৭

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আনোয়ার - বরিশাল

১৭২৬. প্রশ্ন

আমাদের প্রতিষ্ঠানে প্রচলন আছে যে, কাউকে তার পক্ষ থেকে ডাকতে হলে বলে দেয় যে, তাকে গিয়ে আমার সালাম বলবে। এরূপ বললে তিনি বুঝতে পারেন যে, তাকে ডাকা হচ্ছে তখন তিনি চলে আসেন। আবার কখনো সাধারণভাবে কাউকে ডাকতে পাঠালেও সে গিয়ে বলে, অমুকে সালাম জানিয়েছেন। আমার প্রশ্ন এই যে, সালামের এরূপ ব্যবহার জায়েয আছে কি না? এক্ষেত্রে সালামের জবাব দেওয়া জরুরি কি না? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

কাউকে ডাকার জন্য ‘অমুক আপনাকে সালাম জানিয়েছেন’ এভাবে বলা জায়েয হলেও তা ঠিক নয়। কারণ ‘সালাম’ শরীয়তের একটি বিশেষ পরিভাষা। শরীয়তের নির্ধারিত ক্ষেত্র ছাড়া অন্য কোথাও তা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত। অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কাউকে ডাকার জন্য এভাবে সালাম শব্দ ব্যবহার না করে অন্য কোনো শব্দ ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়। আর এক্ষেত্রে যেহেতু সালাম দেওয়া বা পাঠানো উদ্দেশ্য থাকে না তাই এর জবাব দেওয়াও জরুরি হবে না।

মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা ১৩/২২১; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/১১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩২৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৩২; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৪১২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ - ঢাকা

১৭২৭. প্রশ্ন

আমার দাদী খুবই অসুস'। বসেও নামায পড়তে পারেন না। এখন তিনি কীভাবে নামায পড়বেন শায়িত অবস'ায় কি নামায পড়া যায়, পড়া গেলে এর নিয়ম কী? সবিস-রে জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস'ায় আপনার দাদী শুয়ে মাথা ঝুঁকিয়ে আদায় করবেন। তবে রুকুর তুলনায় সিজদার জন্য মাথা বেশি ঝুঁকাতে হবে। শায়িত অবস'ায় নামায পড়ার কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে। ১. পা পশ্চিম দিকে, মাথা পূর্ব দিক দিয়ে চিত হয়ে শয়ন করবে। সম্ভব হলে পিঠ ও মাথার নিচে বালিশ ইত্যাদি কিছু দিয়ে উঁচু করে নিবে যেন সিনা ও চেহারা কিবলামুখী হয়ে থাকে। পা পশ্চিম দিকে বিছিয়েও দিতে পারে তবে সম্ভব হলে হাঁটু ভাজ করে রাখবে। শায়িত অবস'ায় নামায আদায়ের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিই অগ্রগণ্য। ২. মাথা উত্তর দিকে এবং পা দক্ষিণ দিকে রেখে শুবে। এভাবে ডান কাতে শুয়ে সিনা ও চেহারা কিবলার দিক করে রাখবে। ৩. মাথা দক্ষিণ দিকে এবং পা উত্তর দিকে করে শুবে। এভাবে বাম কাত হয়ে শুয়ে চেহারা ও সিনা কিবলার দিকে রাখবে। উল্লেখ্য, এ সকল পদ্ধতির কোনোটি সম্ভব না হলে যেভাবে শোয়া সম্ভব সেভাবে শুয়ে মাথা নেড়ে রুকু-সিজদা করবে। এসকল ক্ষেত্রে সিজদার জন্য রুকুর চেয়ে মাথা কিছুটা বেশি ঝুকাবে। মাথা নাড়ার ক্ষমতা থাকা পর্যন- নামায আদায় করতে হবে।

হবে।-মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২/৪৭৪; আলবাহরুর রায়েক ২/১১৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৭; হিদায়া ১/১৬১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১২৩; মাবসূত সারাখসী ১/২১৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২০১; হাশিয়াতু তহতাবী আলাদ্দুর ১/৩১৯

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ওমর ফারূক - মোমেনশাহী

১৭২৮. প্রশ্ন

আমি দীর্ঘ দশ/বার দিন অসুস' ছিলাম। মাথা দ্বারা ইশারা করেও নামায আদায় করতে সক্ষম ছিলাম না। কিন' আমার হুঁশ বাকি ছিল। আমার জানার বিষয় হল, উক্ত দিনগুলোতে ছুটে যাওয়া নামাযের কাযা করতে হবে কি না? উল্লেখ্য, হিদায়া গ্রনে'র প্রথম খণ্ডের ১৬১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে যে, এ অবস'ায় ছুটে যাওয়া নামায কাযা করতে হবে।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ছুটে যাওয়া নামাযগুলোর কাযা জরুরি নয়। তবে কাযা করে নেওয়া ভালো। হেদায়া গ্রনে'র ঐ উক্তিটি গ্রহণযোগ্য মত নয়। কেননা, ফাতাওয়ার প্রসিদ্ধ কিতাবাদির পাশাপাশি স্বয়ং হিদায়ার লেখকও তার কিতাব ‘আততাজনীস ওয়াল মাযীদ’-এ কাযা জরুরি না হওয়ার ফতোয়া প্রদান করেছেন। নিম্নে এ সংক্রান- হাওয়ালাসমূহ পেশ করা হল।

আলমু’জামুল আওসাত তবরানী ৫/১১; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ২/১৭৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২০১; ইলাউস সুনান ৭/২০০; হাশিয়াতু তহতাবী আলাল মারাকী পৃ. ২৩৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৭২; আলবাহরুর রায়েক ২/১১৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/১২৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯৫; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ২৬৫; রদ্দুল মুহতার ২/৯৯

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আমীর হামজা - চাদপুর

১৭২৯. প্রশ্ন

আমি একদিন আমাদের মসজিদে একাকী নামায পড়ছিলাম। কিছুক্ষণ পর এক ব্যক্তি আমার পার্শ্বে বসে উচ্চ স্বরে কুরআন মজীদ তেলাওয়াত শুরু করে এবং একপর্যায়ে সে আয়াতে সিজদা তিলাওয়াত করে যা আমি নামাযরত অবস'ায় শুনতে পাই। কিন' আমি সিজদা না করে নামায শেষ করি। জানার বিষয় হল, উক্ত আয়াতে সিজদা শ্রবণ করার কারণে আমার উপর কি সিজদা ওয়াজিব হয়েছে? ওয়াজিব হলে কখন আদায় করব। নামাযের মধ্যে আদায় করা কি কর্তব্য ছিল?

উত্তর

আপনি নামাযের মধ্যে ঐ সিজদা না করে ঠিকই করেছেন। নামাযরত অবস'ায় অন্য ব্যক্তি থেকে আয়াতে সিজদা শুনলেও সিজদা ওয়াজিব হয়। তবে তা আদায় করতে হয় নামাযের পর। নামাযের মধ্যে আদায় করা যায় না। কেউ আদায় করলেও তা আদায় হবে না। সিজদাটি পরবর্তীতে আদায় করে নিতে হবে।

তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/২০৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৩; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ৫০০; আলবাহরুর রায়েক ২/১২১; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৪৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৮৫; হাশিয়া তহতাবী আলাদ্দুর ১/৩২৬

শেয়ার লিংক

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক -

১৭৩০. প্রশ্ন

আমি এবং আমার স্ত্রীর মাঝে বিয়ের পর থেকেই ঝগড়া লেগে থাকত। এর মধ্যে আমাদের একটি পুত্র সন-ান জন্ম লাভ করে। ছেলে জন্মের পর থেকে আমাদের ঝগড়া আরো বেড়ে যায়। তার সাথে বনিবনা না হওয়ায় তাকে তালাক না দিয়ে আমার শ্যালিকা তার ছোট বোনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। তারপর আমরা ঢাকায় এসে বাসা নিয়ে থাকি। ঢাকা যাওয়ার ১৫দিন পর আমার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে মোহরানা পরিশোধ করে বিদায় করে দিয়েছি। এখন আমার (প্রথম স্ত্রীর বোন) ২য় স্ত্রীকে নিয়ে ঘর-সংসার করছি। জানতে চাই, এতে শরীয়তের দৃষ্টিতে কোনো সমস্যা আছে কি না?

উত্তর

কোনো মহিলার সাথে বিবাহ বহাল থাকা অবস'ায় তার আপন বোনকে বিবাহ করা হারাম। বিবাহ করলে তা শুদ্ধ হয় না। তাই প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী শ্যালিকার সাথে আপনার বিবাহ শুদ্ধ হয়নি। তার সাথে দাম্পত্য মেলামেশা সম্পূর্ণ হারাম। এখনই পৃথক হয়ে যাওয়া জরুরি। শ্যালিকার সাথে বৈধভাবে সংসার করতে চাইলে স্ত্রীর ইদ্দত শেষ হওয়ার পর শ্যালিকাকে নতুনভাবে মহর ধার্য করে যথা নিয়মে বিবাহ করতে হবে। আর এতদিনের হারাম কার্যকলাপের জন্য আল্লাহর দরবারে তওবা-ইসি-গফার করতে হবে।

আহকামুল কুরআন জাসসাস ২/১৩২; বাদায়েউস সানায়ে ২/৫৩৮; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩৬৪; মাজমাউল আনহুর ১/৪৭৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১; মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা ৯/২১৭; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫০৩

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ সালমান - সিলেট

১৭৩১. প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি তাহাজ্জুদের সময় আছে মনে করে তাহাজ্জুদের নিয়তে দুই রাকাত নামায শুরু করে। নামায শেষে সময় দেখলে বুঝতে পারে যে, তার নামায শুরু করার আগেই তাহাজ্জুদের সময় শেষ হয়ে গেছে। তার এই দুই রাকাত নামায তাহাজ্জুদ হবে, নাকি ফযরের সুন্নত হিসেবে গণ্য হবে? ফযরের সুন্নত কি নতুন করে পড়তে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস'ায় ঐ দুই রাকাত নামায ফযরের সুন্নত হিসেবে গণ্য হবে। নতুন করে সুন্নত পড়তে হবে না।

আলবাহরুর রায়েক ১/২৭৮; আসসিয়াআহ ২/১০২; আদ্দুররুল মুখতার ১/৪১৭; হাশিয়া তহতাবী আলাদ্দুর ১/১৯৪

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ উছামা - ঢাকা

১৭৩২. প্রশ্ন

আমি অযু বা গোসল করে নামাযের প্রস'তি নিয়ে কোনো এক নির্দিষ্ট নামাযের উদ্দেশ্যে মুছল্লায় বা মসজিদে যাই। কিন' অনেক সময় চিন-ামগ্নতা বশত ঠিক তাকবীরে তাহরীমার মুহূর্তে নতুন করে নিয়ত না করেই নামায শুরু করে দেই এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে নামায শেষ করি। এখন জানতে চাই, আমার এই নামাযের কী হুকুম? অর্থাৎ আগের নিয়তই এই নামাযের জন্য যথেষ্ট হবে কি না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে নিয়ত ও তাকবীরে তাহরীমার মাঝে নামায পরিপন'ী কোনো কাজে লিপ্ত না হয়ে থাকলে পূর্বের নিয়তই যথেষ্ট। তবে এ ক্ষেত্রেও তাকবীরে তাহরীমা বলার সময় পুনরায় নিয়ত করে নেওয়া উত্তম।

আলবাহরুর রায়েক ১/২৭৭; মাবসূত সারাখসী ১/১০; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৮১; আসসিয়াআহ ২/৯৮; ফাতহুল কাদীর ১/২৩১; আদ্দুররুল মুখতার ১/৪১৬-৪১৭

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ সাঈদ আহমদ - মুহাম্মাদপুর, ঢাকা

১৭৩৩. প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় এক লোক হজ্ব ফরয হওয়ার পর তা আদায়ের আগেই ইনে-কাল করেন। এখন তার ওয়ারিশগণ তার পক্ষ থেকে হজ্ব আদায় করতে চাচ্ছেন। জানতে চাই : ক) ঐ ব্যক্তি হজ্ব আদায়ের অসিয়ত করে গেলে তার এলাকা থেকেই লোক পাঠিয়ে হজ্ব করানো জরুরি, নাকি মক্কায় অবস'ানরত কাউকে দিয়ে হজ্ব করালেও তা আদায় হয়ে যাবে? খ) অসিয়ত না করলে ওয়ারিশগণ স্বেচ্ছায় তার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে হজ্ব করাতে চাইলে হজ্ব করাতে পারবে কি না এবং এর জন্য তার এলাকা থেকে কাউকে পাঠানো জরুরি, নাকি অন্য এলাকা থেকেও কারো মাধ্যমে হজ্ব করাতে পারবে?

উত্তর

(ক) প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির অনাদায়ী ঋণ থাকলে প্রথমে তার সম্পদ থেকে তা আদায় করতে হবে। এরপর অবশিষ্ট সম্পদের এক তৃতীয়াংশ থেকে বদলী হজ্বের ঐ অসিয়তটি পূর্ণ করতে হবে। এক তৃতীয়াংশ সম্পদ দ্বারা মৃতের এলাকা থেকে হজ্বের জন্য প্রেরণ করা সম্ভব হলে তার এলাকা থেকেই প্রেরণ করা জরুরি। এক্ষেত্রে মক্কা কিংবা সৌদী আরবে অবস'ানরত কাউকে দিয়ে হজ্ব করালে অসিয়ত আদায় হবে না। কিন' এক তৃতীয়াংশ সম্পদ দ্বারা যদি তার এলাকা থেকে হজ্ব করানো সম্ভব না হয় তাহলে ঐ টাকা দিয়ে যেখান থেকে হজ্ব করানো যায় সেখান থেকেই করাবে। অবশ্য ওয়ারিশগণ চাইলে এক্ষেত্রে নিজ সম্পদ থেকে কিছু দিয়ে মৃতের এলাকা থেকে প্রেরণের ব্যবস'া করতে পারবে। উত্তর : (খ) মৃত ব্যক্তি হজ্বের অসিয়ত না করে থাকলেও ওয়ারিশগণ তার পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করাতে পারবে। এক্ষেত্রে মৃতের অবন্টিত পরিত্যক্ত সম্পদ দ্বারা বদলী হজ্ব করাতে চাইলে দু’টি শর্ত জরুরিভাবে লক্ষণীয়। ১. সকল ওয়ারিশদের স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি থাকতে হবে। ২. ওয়ারিশদের কেউ নাবালেগ থাকলে কিংবা কারো সম্মতি না থাকলে তার অংশ থেকে নেওয়া যাবে না। আর অসিয়ত না করলেও মৃতের এলাকা থেকেই বদলী হজ্ব করানো উত্তম। তবে এক্ষেত্রে অন্য কোনো দেশ থেকে যেমন সৌদি আরবের কোনো এলাকা থেকেও হজ্ব করানোর সুযোগ আছে।

আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৮০; মানাসিক মোল্লা আলী কারী পৃ. ৪৪০; মাবসূত সারাখসী ৪/১৫৪; আততাজরীদ ৪/১৬৪১; আলবাহরুর রায়েক ৩/৬৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫৫৬; বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৬০; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩০৭; গুনইয়াতুন নাসিক পৃ. ৩২৯; আলমুগনী ইবনে কুদামা ৫/৩৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/৬০৫

শেয়ার লিংক

আদিবা আফরীন - মিরপুর, ঢাকা

১৭৩৬. প্রশ্ন

আমরা জানি, মা-বাবা, ছেলে-মেয়ে এদের কাউকে যাকাত দেওয়া যায় না। প্রশ্ন হল, সৎ মাকে যাকাত দেওয়া যাবে কি না?

উত্তর

হ্যাঁ, সৎ মা আর্থিকভাবে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হলে তাকে যাকাত দেওয়া যাবে।

ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২৭৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/১৬২; ফাতহুল কাদীর ২/২০৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৪৬

শেয়ার লিংক

উম্মে মুসলিমা - মতলব, চাদপুর

১৭৩৭. প্রশ্ন

এক প্রতিবেশী আমার কাছ থেকে এক কেজি পোলাওয়ের চাল ধার নিয়েছে, যা নব্বই টাকায় কেনা হয়েছিল। কয়েকদিন পর ঐ প্রতিবেশী আমাকে বললেন, আমাদের তো বাজার থেকে চাল আনার লোক নেই। আপনারাই তা নিয়ে আসুন। আমি টাকা দিয়ে দিব। বর্তমানে ঐ চালের মূল্য একশ টাকা। প্রশ্ন হল, আমার পাওনা চালের পরিবর্তে টাকা নিতে পারব কি না এবং ক্রয়মূল্য থেকে অতিরিক্ত নেওয়া যাবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নো্ক্ত ক্ষেত্রে চাল নিলে এক কেজিই নিতে হবে। বেশি নিতে পারবেন না। আর মূল্য নিলে ১ কেজির বর্তমান মূল্য হিসাবে নিতে পারবেন। বর্তমান মূল্য পূর্বের মূল্য থেকে বেশি হলেও বর্তমান মূল্য নিতে পারবেন। তবে বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া জায়েয হবে না।

ফাতাওয়া খানিয়া ২/২৫৪; বাদায়েউস সানায়ে ৬/৫১৭-৫১৮; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যা মুআছিরাহ ১/১৭৪-১৭৮; আদ্দুররুল মুখতার ৫/১৬১

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ সায়ফুদ্দীন - মাগুরা

১৭৩৮. প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে বিছানায় বীর্যের ভেজা দাগ দেখতে পেল। কিন' ঘুমের মধ্যে স্বপ্নদোষ হয়েছে কি না বলতে পারে না। এই ব্যক্তির জন্য গোসল করা আবশ্যক হবে কি?

উত্তর

হ্যাঁ, ঐ ব্যক্তির উপর গোসল ফরয।

ফাতাওয়া খানিয়া ১/৪৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/১৫৭; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/১৫৭; আলইখতিয়ার লিতা’লীলিল মুখতার ১/১৫; মাজমাউল আনহুর ১/৩৯

শেয়ার লিংক