আরীফ - ভোলা

৫৭২৪. প্রশ্ন

আমি কখনো কখনো ওযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়তে ভুলে যাই। আমরা জানি, খাবারের শুরুতে দুআ পড়তে ভুলে গেলে খাবারের মাঝখানে দুআ পড়ে নেওয়া যায়। তাহলে ওযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়তে ভুলে গেলে ওযুর মাঝখানে পড়ে নেওয়ার দ্বারা কি সুন্নত আদায় হবে না? একজন মাওলানা সাহেবকে বলতে শুনেছি, ওযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ না পড়লে মাঝখানে পড়ার দ্বারা নাকি সুন্নত আদায় হবে না। জানতে চাই, উক্ত মাওলানা সাহেবের কথা কি ঠিক?

উত্তর

হাদীসে ওযুর শুরুতেই বিসমিল্লাহ বলার কথা এসেছে। তাই ওযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া না হলে উক্ত সুন্নত আদায় হবে না। তবে ওযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়তে ভুলে গেলে স্মরণ হওয়ার পর মাঝে বিসমিল্লাহ পড়া যাবে না- এমনটাও নয়; বরং ওযুর মাঝে বিসমিল্লাহর কথা স্মরণ হলেও কোনো কোনো ফকীহ তখন তা পড়ে নিতে বলেছেন। এছাড়া কোনো কোনো ফকীহ ওযুর প্রত্যেক অঙ্গ ধোয়ার সময়ও বিসমিল্লাহ পড়ার কথা বলেছেন। তাই ওযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়তে ভুলে গেলেও মাঝখানে পড়ে নেবে।

-মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদীস ১৪, ১৭; মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদীস ৪৬৬৮; নুখাবুল আফকার ১/১৩৯; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩৪; ফাতহুল কাদীর ১/২১; আলবাহরুর রায়েক ১/২০; ইমদাদুল ফাত্তাহ পৃ. ৮২; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ১/১৪৬

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ রাহীব - আখাউড়া, বি.বাড়িয়া

৫৭২৫. প্রশ্ন

আমার বাসা রেল স্টেশনের পাশে অবস্থিত। এই স্টেশন থেকে রেলগাড়ীর ট্যাংকিতে পানি নেওয়া হয়। একদিন দেখি, একটা ছেলে রেলগাড়ীর ট্যাংকিতে পেশাব করছে। এরপর থেকে আমি রেলের পানি ব্যবহার করি না। আমার সন্দেহ হয় যে, পানিগুলো নাপাক। অথচ পানির রং ও স্বাদ সব ঠিক আছে। সাধারণ যাত্রীগণ বিনা সন্দেহে এসব পানি ব্যবহার করে। এখন প্রশ্ন হল, রেলগাড়ীর পানি কি নাপাক? এসব কারণে কি তায়াম্মুম করা যাবে?

উত্তর

সাধারণত ট্রেনে পবিত্র পানিই সরবরাহ করা হয়ে থাকে। সুতরাং আপনি যেবার ঐ ঘটনা দেখেছেন সেবার ওই পানি ব্যবহার না করা ঠিক হয়েছে। কিন্তু উক্ত ঘটনার কারণে পরবর্তীতেও ট্রেনের পানি নিয়ে সন্দেহ পোষণ করা ঠিক নয়; বরং ট্রেনের পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করতে কোনো অসুবিধা নেই। আর ট্রেনে পানি থাকা অবস্থায় শুধু সন্দেহের কারণে তায়াম্মুম করা জায়েয হবে না।

উল্লেখ্য, রেল কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হল, প্রশ্নে বর্ণিত অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

-কিতাবুল আছল ১/৩৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/২৬৯; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৫১

শেয়ার লিংক

মুহিউদ্দীন - কুমিল্লা

৫৭২৬. প্রশ্ন

আমি কয়েকদিন আগে ওয়াজ শুনতে এক মাহফিলে যাই। সেখানে সবার সঙ্গে এশার নামায জামাতে আদায় করি। সবাই যখন এশার সুন্নত ও বিতির পড়ে পুনরায় ওয়াজ শুনতে বসে তখন এক ব্যক্তি এলান করে, এশার নামাযটি কোনো কারণবশত সঠিকভাবে আদায় হয়নি; পুনরায় পড়তে হবে। তাই দ্বিতীয়বার জামাত হবে। ঐ ব্যক্তি এলানে এটাও বলে, আমরা যারা এশার সুন্নত ও বিতির পড়ে ফেলেছি তারা শুধু সুন্নত পুনরায় পড়ে নিলে চলবে। বিতির পুনরায় পড়তে হবে না। মুহতারামের নিকট জানতে চাই, ঐ ব্যক্তির কথা কি সঠিক যে, যারা বিতির পড়ে ফেলেছেন তারা পুনরায় বিতির পড়তে হবে না?

উত্তর

হাঁ, ঐ ব্যক্তি ঠিকই বলেছে। এশা ও বিতির নামায আদায়ের পর এশার নামায ফাসেদ হয়ে গেছে জানা গেলে শুধু এশার ফরয ও সুন্নত পড়ে নিলেই হবে। বিতির পুনরায় পড়তে হবে না।

-কিতাবুল আছল ১/১২৫; খিযানাতুল আকমাল ১/৪৪; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/৩২৮; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৫৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১১০; রদ্দুল মুহতার ২/৬৮

শেয়ার লিংক

সুলতান মাহমুদ - মিডফোর্ট, ঢাকা

৫৭২৭. প্রশ্ন

আমার চাচার পিঠে বড় অপারেশন হয়েছে। সে স্থানে রক্ত-পানি বের হওয়ার জন্য পাইপ লাগিয়ে দিয়েছে। এভাবে ৭২ ঘণ্টা থাকতে হবে। উক্ত পাইপ দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর রক্ত-পানি গড়িয়ে পড়ছে। এখন আমার চাচা নামাযের জন্য কীভাবে পবিত্রতা অর্জন করবে?

উত্তর

আপনার চাচার অপারেশনের স্থান থেকে যেহেতু অনবরত রক্ত-পানি বের হচ্ছে, তাই এ অবস্থায় তিনি মাযুর গণ্য হবেন। তিনি প্রতি ওয়াক্তে ওযু করবেন। উক্ত ওযু দিয়ে ওয়াক্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত ফরয, নফলসহ যে কোনো নামায আদায় করতে পারবেন। প্রতি ওয়াক্তে একবার ওযু করার পর উক্ত ক্ষত থেকে রক্ত-পানি বের হলেও ওযু নষ্ট হবে না। তবে এই সময়ের ভেতর ওযু ভঙ্গের অন্য কোনো কারণ পাওয়া গেলে এর কারণে ওযু ভেঙ্গে যাবে। আর যতক্ষণ পর্যন্ত রক্তপানি বের হবে উক্ত মাযুরের বিধান বহাল থাকবে। যখন থেকে পূর্ণ এক ওয়াক্ত সময়ের মধ্যে একবারও রক্তপানি বের হবে না তখন মাযুরের হুকুম থাকবে না।

-কিতাবুল আছল ১/৫১; আলফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশায়িখ, পৃ. ৪০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৬; আলবাহরুর রায়েক ১/২১৫

শেয়ার লিংক

রাফি - খুলনা

৫৭২৮. প্রশ্ন

আমার মামার দুই পরিবার। এক পরিবার ঢাকায় থাকে। আরেক পরিবার বরিশালে। উভয় পরিবারের সন্তানদের খরচ তিনিই বহন করেন। তবে মামা বছরের অধিকাংশ সময় ঢাকায়ই থাকেন। বছরে এক-দুইবার বরিশালে আসেন। তাও দু-একদিন থেকে চলে যান। কয়েকদিন আগে তিনি বরিশাল এসে আসরের নামাযের ইমামতি করেন। নামায শেষে কেউ আপত্তি তুলল যে, তার পেছনে আমাদের আসরের নামায চার রাকাত পড়া সঠিক হয়নি। কারণ, তিনি তো মুসাফির। দুয়েকদিন থেকে আবার ঢাকায় চলে যাবেন! মামা উত্তরে বললেন, আমি মুসাফির হব কেন? এটাও তো আমার বাড়ি। এখানে এক দিনের জন্য এলেও আমি মুকীম হিসাবেই গণ্য হব।

এখন মুফতী সাহেবের নিকট জানতে চাই, এভাবে তিনি বছরে এক-দুই দিনের জন্য এই পরিবারের কাছে বেড়াতে এলে কি তিনি মুসাফির হিসাবে গণ্য হবেন, নাকি মুকীম হিসাবে গণ্য হবেন?

উত্তর

আপনার মামার এক পরিবার যেহেতু বরিশালে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন, তাই সেটাও তার আসল বাড়ি হিসেবে গণ্য হবে। সুতরাং সেই এলকায় প্রবেশ করা মাত্রই তিনি মুকীম গণ্য হবেন। এমনকি দুয়েকদিন অবস্থান করলেও তিনি মুকীম হবেন। সুতরাং আপনার মামা আসরের নামায চার রাকাত পড়িয়ে ঠিকই করেছেন।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪০২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫১৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫১১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪২; শরহুল মুনইয়া পৃ. ৫৪৪

শেয়ার লিংক

হাসান জামীল - ভোলা

৫৭২৯. প্রশ্ন

আমি অনেক সময় শেষ বৈঠকে তাশাহহুদের পর সাহু সিজদা করতে ভুলে যাই। কখনো দরূদ শরীফ পাঠ করার পর আবার কখনো দুআয়ে মাসুরা পড়ার পর সালাম ফেরানোর সময় মনে হয় যে আমার উপর তো সাহু সিজদা ওয়াজিব ছিল! তখন সাথে সাথে সাহু সিজদা আদায় করে স্বাভাবিকভাবে নামায শেষ করি।

এখন আমি জানতে চাচ্ছি, এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী? আমি যা করে থাকি তা কি সঠিক? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

সাহু সিজদা করতে ভুলে গেলে সালাম ফেরানোর আগে স্মরণ হলে সাথে সাথে এক দিকে সালাম ফিরিয়ে সাহু সিজদা করে নেবে। আর সালামের পর স্মরণ হলে নামায-পরিপন্থী কোনো কাজ না করে থাকলে সরাসরি সাহু সিজদা করে নেবে। এক্ষেত্রে ভিন্ন করে সালাম ফেরাতে হবে না।

প্রকাশ থাকে যে, নামাযে প্রায় ভুল হওয়া উদাসীনতার লক্ষণ। আর নামাযে উদাসীনতা খুবই অপছন্দনীয়। তাই সামনে থেকে মনোযোগের সাথে নামায আদায় করার চেষ্টা করবেন।

-মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, বর্ণনা ৪৫১৪; কিতাবুল আছল ১/২০০; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪২০; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৪৫৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৯১

শেয়ার লিংক

আলআমীন - মৌলভীবাজার

৫৭৩০. প্রশ্ন

নামাযের শেষ বৈঠকে কেউ ভুলে দুইবার তাশাহহুদ পড়ে ফেললে তার উপর সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে কি?

উত্তর

না, শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ দুইবার পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না। তবে তাশাহহুদ একবার পড়াই নিয়ম। তাই ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটি করবে না। ভুলে হলে অসুবিধা নেই।

-আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ২/১৪৪; আযযাখীরাতুল বুরহানিয়া ২/২৫৬; ফাতহুল কাদীর ১/৪৩৯; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৪৬০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২৭

শেয়ার লিংক

আবদুর রহমান - কুমিল্লা

৫৭৩১. প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমার কয়েক ওয়াক্ত নামায ছুটে যায়। ওই কাযা নামাযগুলো আদায় করার পূর্বেই অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ি। যার দরুন তায়াম্মুম করে ইশারায় নামায আদায় করছিলাম। এই অবস্থাতেই তায়াম্মুম দ্বারা ইশারায় উক্ত কাযা নামাযগুলো আদায় করেছি। কিছুদিন পর আল্লাহর রহমতে পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে যাই। মুহতারামের কাছে জানতে চাই, অসুস্থ অবস্থায় তায়াম্মুম করে ইশারায় যেই কাযা নামাযগুলো আদায় করেছি তা কি আদায় হয়েছে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে অসুস্থ অবস্থায় তায়াম্মুম করে ইশারার সাথে সুস্থ অবস্থার ছুটে যাওয়া যে নামাযগুলোর কাযা আদায় করেছেন তা সহীহ হয়েছে। পুনরায় পড়তে হবে না।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/৫৬৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৭৬

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - হযরতপুর, কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা

৫৭৩২. প্রশ্ন

আমি হযরতপুর ইউনিয়নের বৌনাকান্দি গ্রামের একটি মসজিদের মুআযযিন। প্রতি দুই মাস পর পর আমার দেশের বাড়ি কুমিল্লা যাই। বাড়িতে কয়েক দিন থেকে আবার চলে আসি। আমি জানতে চাই, সফরে বের হওয়ার পর আমি কোন্ জায়গা থেকে মুসাফির গণ্য হব? একজন আলেম আমাকে বলেন, আমি ওই ইউনিয়নের বৌনাকান্দি গ্রামের পাশের গ্রাম ইটাভাড়া থেকেই মুসাফির গণ্য হব এবং ইটাভাড়া থেকে নামাযের কসর করতে পারব। তাঁর কথা কি ঠিক?

উত্তর

হাঁ, ঐ আলেম ঠিকই বলেছেন, আপনি বৌনাকান্দি গ্রামের সীমানা অতিক্রম করে গেলেই মুসাফিরের নামায পড়তে পারবেন। কেননা, ৭৮ কিলোমিটার (৪৮ মাইল) বা তার বেশি অতিক্রম করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে নিজ গ্রাম বা শহর অতিক্রম করার পর থেকেই মুসফিরের বিধান আরোপিত হয়। তাই ইটাভাড়া থেকে আপনি মুসাফির গণ্য হবেন।

-মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ৪৩২৩; কিতাবুল আছল ১/২৩১; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৬৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯৮ফাতহুল কাদীর ২/৮; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫২৩

শেয়ার লিংক

রায়হান - টাঙ্গাইল

৫৭৩৩. প্রশ্ন

কুরবানীর ঈদের দুদিন আগে অর্থাৎ যিলহজ্বের আট তারিখ রাতে আমি এশার নামাযের কথা ভুলে ঘুমিয়ে যাই। ঘুম থেকে উঠতে উঠতে ফজরের নামাযও কাযা হয়ে যায়। সকাল সাতটার দিকে আমি এশা ও ফজর একসাথে কাযা করি এবং প্রত্যেকটির পর তাকবীরে তাশরীক পড়ি। এখন জানার বিষয় হল, এই দুই কাযা নামাযের প্রত্যেকটির পর আমার উপর তাকবীরে তাশরীক পড়া কি ওয়াজিব হয়েছিল?

উত্তর

আপনার উপর শুধু ফজর নামাযের কাযা পড়ার পর তাকবীরে তাশরীক পড়া ওয়াজিব হয়েছিল; এশার কাযা পড়ার পর নয়। কেননা তাকবীরে তাশরীক পড়ার সময় হল, যিলহজ্বের নয় তারিখের ফজর থেকে তের তারিখের আসর পর্যন্ত। এ সময়ের ভেতর কোনো নামায কাযা হলে এবং এ সময়ের ভেতরেই তা আদায় করলে তাকবীরে তাশরীক পড়া ওয়াজিব হয়। কিন্তু এ সময়ের পূর্বে কাযা হওয়া কোনো নামায এ সময়ের ভেতর আদায় করলে তাকবীরে তাশরীক পড়া ওয়াজিব হয় না। তাই আপনার এশা যেহেতু এ সময়ের পূর্বে আট তারিখে কাযা হয়েছিল তাই তা আদায়ের পর তাকবীরে তাশরীক পড়া ওয়াজিব ছিল না।

-মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/৩৯৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৬৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫৪৪; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ১১২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৬৪২

শেয়ার লিংক

আহমদ জামিল - ত্রিশাল, মোমেনশাহী

৫৭৩৪. প্রশ্ন

গত এক মাস আগে আমাদের মসজিদে একজন হাফেজ সাহেবকে ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি নামাযের শুরুতে তাকবীরে তাহরীমা অর্থাৎ আল্লাহু আকবারএকটু টেনে দীর্ঘ স্বরে আদায় করে থাকেন। বিধায় কিছু মুসল্লিকে দেখা গেছে যে, তারা ইমাম সাহেবের সাথেই হাত উঠিয়েছেন এবং আল্লাহু আকবারবলা শুরু করেছেন। কিন্তু ইমাম সাহেবের আল্লাহু আকবারপুরো বাক্য বলা শেষ হওয়ার আগেই তাদের আল্লাহু আকবারবলা শেষ হয়ে যায়। তাই মুহতারাম মুফতী সাহেবের নিকট আমাদের জানার বিষয় হল, কেউ যদি ইমাম সাহেবের সাথেই হাত উঠায় এবং হাত বাঁধে, কিন্তু ইমাম সাহেবের আল্লাহু আকবারবলা শেষ হওয়ার আগেই তার আল্লাহু আকবারবলা শেষ হয়ে যায়। তাহলে ইমাম সাহেবের সাথে আদায় করা তার ওই নামায সহীহ হবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

মুক্তাদির তাকবীরে তাহরীমা অর্থাৎ আল্লাহু আকবারবলা ইমামের তাকবীরে তাহরীমার পর শেষ হতে হবে। ইমাম সাহেবের আল্লাহু আকবারসমাপ্ত হওয়ার আগেই যদি কোনো মুক্তাদির আল্লাহু আকবারবলা শেষ হয়ে যায় তাহলে ওই মুক্তাদির নামায সহীহ হবে না।

প্রকাশ থাকে যে, নামাযের শুরুতে হাত উঠানো এবং হাত বাঁধা সুন্নত এবং মুক্তাদির জন্য এগুলোও ইমামের পরেই হওয়া সুন্নত। সুতরাং তাকবীর সময়মতো হলে হাত উঠানো বা হাত বাঁধা ইমামের আগে হয়ে গেলেও নামায আদায় হয়ে যাবে। যদিও এমনটি করা নিয়মসম্মত নয়।

-মাবসূত, সারাখসী ১/৩৭; উয়ূনুল মাসাইল, পৃ. ২২; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/২৫৯ ফাতাওয়া খানিয়া ১/৮৭; মাজমাউল আনহুর ১/১৩৯ আদ্দুররুল মুখতার ১/৪৮০

শেয়ার লিংক

মুইনুদ্দীন - কক্সবাজার

৫৭৩৫. প্রশ্ন

আমি নফল নামাযে সূরা সাজদা তিলাওয়াত করছিলাম। এ সূরার মধ্যে যে সিজদার আয়াত আছে তা জানা ছিল। কিন্তু তখন বিষয়টি আমার স্মরণে না থাকায় আমি সূরা শেষ করে স্বাভাবিকভাবে রুকু-সিজদা আদায় করি। দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর সিজদার আয়াতের বিষয়টি মনে পড়লে সাথে সাথে আমি সিজদা আদায় করে নিই। এরপর নামায শেষে সাহু সিজদাও আদায় করি। কিন্তু এক্ষেত্রে সাহু সিজদা করতে হবে কি না তা আমার কাছে স্পষ্ট নয়। তাই মুহতারামের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট করার আশা করছি।

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সাহু সিজদা করাটা মাসআলাসম্মতই হয়েছে। কেননা, নামাযে সিজদার আয়াত তিলাওয়াতের পর যদি ভুলে দুই আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াতের পরও সিজদা আদায় না করা হয় তাহলে স্মরণ হওয়া মাত্র সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করতে হবে এবং ওয়াজিব বিলম্বিত হওয়ার কারণে নামায শেষে সাহু সিজদা দিতে হবে।

-বাদায়েউস সানায়ে ১/৪০২; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/৯৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৭৯; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫৮০; আদ্দুররুল মুখতার ২/১০৯; রদ্দুল মুহতার ২/১০৯, ১১১; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৩৬১

শেয়ার লিংক

আবদুস সামাদ - আত্রাই, নওগাঁ

৫৭৩৬. প্রশ্ন

আমার নানা তার ইনতিকালের পূর্বে অসিয়ত করেন যে, তার বড় মেয়ের ছেলে তার জানাযার নামায পড়াবে। কিন্তু ইনতিকালের সময় অসিয়তকৃত উক্ত ব্যক্তি দূরবর্তী শহরে ছিল। তাই পরিবারের লোকজন একটু দেরিতে জানাযার নামাযের সময় নির্ধারণ করেন। কিন্তু তারপরেও উক্ত ব্যক্তি নির্ধারিত সময়ের আরো তিন-চার ঘণ্টা পরে জানাযার স্থলে উপস্থিত হন। এতে উপস্থিত আত্মীয়-স্বজন ও মুসল্লীদের অনেক কষ্ট হয়। এখন মুফতী সাহেবের নিকট জানার বিষয় হল, মৃত ব্যক্তি কাউকে জানাযার নামায পড়ানোর অসিয়ত করে গেলে অভিভাবকদের জন্য তা পালন করা কি জরুরি? প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে অসিয়তকৃত ব্যক্তির জন্য দেরি করে অন্যদেরকে কষ্ট দেওয়া সহীহ হয়েছে কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

মৃতব্যক্তি কারো জন্য জানাযার নামাযের ইমামতির অসিয়ত করে গেলে অভিভাবকদের জন্য তা পালন করা আবশ্যক নয়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে অসিয়তকৃত ব্যক্তির জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে উপস্থিত মুসল্লীদেরকে কষ্ট দেওয়া ঠিক হয়নি।

প্রকাশ থাকে যে, জানাযার ইমামতির জন্য অসিয়তকৃত ব্যক্তি যদি উপস্থিত থাকেন এবং তিনি ইমামতির যোগ্য হন এবং স্থানীয় ইমাম ও মৃতের ওলী অর্থাৎ অভিভাবকগণও তাঁকে ইমামতির জন্য বলেন। তাহলে তিনি জানাযার নামাযের ইমামতি করতে পারবেন।

-উয়ূনুল মাসাইল, পৃ. ৩১; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/১১০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/২৩৭; ফাতহুল কাদীর ২/৮৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৯০; রদ্দুল মুহতার ২/২২১

শেয়ার লিংক

আবদুল কাদের - মাসনা, যশোর

৫৭৩৭. প্রশ্ন

গত দুই মাস আগে আমার চাচাতো ভাই রোড এক্সিডেন্টে আহত হন। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লেগে ক্ষত হয়ে যায় এবং হাসপাতালে এক দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সেখানেই ইনতিকাল করেন। ইনতিকালের পর তার শরীরের ব্যান্ডেজগুলো খুলে ভালোভাবে গোসল দিয়ে কাফন পরানো হলে তার শরীরের বিভিন্ন ক্ষত থেকে রক্ত বের হয়ে কাফন ভিজে যায়। এসব নাপাক রক্ত ধোয়া ছাড়াই জানাযার নামায আদায় করা হয়। এখন মুফতী সাহেবের নিকট জানার বিষয় হল, মৃতব্যক্তিকে গোসল দিয়ে কাফন পরানোর পর তার শরীর থেকে রক্ত বা অন্য কোনো নাপাকি বের হয়ে মৃতব্যক্তির কাফন ও শরীরে লাগলে তা ধোয়া ছাড়া জানাযার নামায সহীহ হবে কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

মৃতব্যক্তিকে কাফন পরানোর পর তার শরীর থেকে রক্ত অথবা অন্য কোনো নাপাকি বের হলে তা ধোয়া ছাড়াই জানাযার নামায সহীহ হয়ে যাবে। তবে ধোয়া সম্ভব হলে ধুয়ে নেওয়া ভালো। আর গোসল করানোর পর কাফন পরানোর পূর্বে কোনো নাপাকি বের হলে তা ধুয়ে ফেলবে। এক্ষেত্রে পুনরায় ওযু অথবা গোসল করানোর প্রয়োজন নেই।

-আলহাবিল কুদসী ১/২৫৭; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৮৭; মাজমাউল আনহুর ১/২৬৫; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫৯৯

শেয়ার লিংক

নাবিল মাসরুর - ফেনী

৫৭৩৮. প্রশ্ন

আমি একজন ফার্নিচার ব্যবসায়ী। আমার বাসায় প্রায় নতুন দুই সেট সোফা ছিল। সেগুলো বাসায় ব্যবহারের জন্য কেনা হয়েছিল। কয়েকদিন আগে সেখান থেকে এক সেট সোফা বিক্রির জন্য দোকানে নিয়ে আসি। সেগুলো এখনো দোকানেই আছে। আর এই মাসে আমার যাকাতবর্ষ পূর্ণ হবে।

মুহতারাম মুফতী সাহেবের নিকট জানতে চাই, এখন আমার যাকাতের হিসাবের মধ্যে কি এই সোফাগুলোও গণ্য হবে?

উত্তর

ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত জিনিস বিক্রির নিয়ত করলেও তার উপর যাকাত আসে না। বরং তা বিক্রি করার পর যাকাতবর্ষ শেষে বিক্রিলব্ধ টাকা থেকে যা থাকবে এর যাকাত দিতে হবে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার সোফাগুলোর জন্য এখন যাকাত দিতে হবে না।

-আলজামেউস সগীর, পৃ. ১২২; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ২/৩৩৯; আলহাবিল কুদসী ১/২৭৩; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ১৩৭; আননাহরুল ফায়েক ১/৪১৭; রদ্দুল মুহতার ২/২৭২

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ যাকির - হেমায়েতপুর, সাভার, ঢাকা

৫৭৩৯. প্রশ্ন

আমার একটি চামড়ার আড়ত আছে। সেখানে কাঁচা চামড়া ক্রয় করে পরিষ্কার করি এবং তা শুকানোর পর অন্যত্র বিক্রি করে দেই। আমি চামড়া পরিষ্কার ও সংরক্ষণ করার জন্য একত্রে কয়েক লক্ষ টাকার লবণ ক্রয় করে রেখে দেই। মাঝেমধ্যে পুরো বছর লবণ ব্যবহার করার পরও অনেক লবণ বেঁচে যায়। আমার জানার বিষয় হল, ব্যবসার অন্যান্য মালের মত এ লবণেরও কি যাকাত দিতে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ব্যবসার মূল পণ্য যেহেতু চামড়া। মজুদকৃত লবণ ব্যবসার পণ্যের অংশ নয়। বরং তা চামড়া প্রস্তুতকরণের মাধ্যম মাত্র। তাই উক্ত লবণের উপর যাকাত ফরয হবে না।

-মাবসূত, সারাখসী ২/১৯৮; খিযানাতুল আকমাল ১/২৮০; মুখতারাতুন নাওয়াযেল ১/৪৪৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮০; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৬৫

শেয়ার লিংক

আহমাদ আফীফ - পাবনা

৫৭৪০. প্রশ্ন

গত রমযানের শেষের দিকে আমার পুত্র সন্তান জন্ম লাভ করে। বিভিন্ন কারণে তার সদকাতুল ফিতর আদায় করতে ভুলে যাই। এতদিন পর তার পক্ষ থেকে কি সদকাতুল ফিতর আদায় করতে হবে?

উত্তর

হাঁ, আপনার পুত্র সন্তানের পক্ষ থেকে উক্ত সদকাতুল ফিতর আদায় করতে হবে। কেননা, সদকাতুল ফিতর সময়মত আদায় করা না হলে বিলম্বে হলেও তা আদায় করা আবশ্যক থাকে।

-কিতাবুল আছল ২/২০৫; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ২/৩৫০; আলফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশায়িখ, পৃ. ১৩৮; বাদায়েউস সানায়ে ২/২০৭ ফাতহুল কাদীর ২/২৩২; রদ্দুল মুহতার ২/৩৫৮

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ জাহিদুল আরিফীন - চট্টগ্রাম

৫৭৪১. প্রশ্ন

আমার চাচাত ভাই অনেক গরীব। আমি চাচ্ছি আমার যাকাতের টাকা থেকে তাকে এক বা দুই লক্ষ টাকা দিতে। যাতে সে কোনো ব্যবসা বা বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে। জানার বিষয় হল, আমার এই পুরো টাকাটা যাকাত হিসেবে গণ্য হবে, নাকি নেসাব পরিমাণ টাকা যাকাত হিসেবে গণ্য হবে। আর অতিরিক্ত টাকা দান হিসাবে গণ্য হবে? কেননা যাকাতগ্রহীতা সাধরণত ৪৮ বা ৫০ হাজার টাকায় নেসাবের মালিক হয়ে যাচ্ছে।

উত্তর

যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে নেসাবের পরিমাণের চেয়ে বেশি দিলেও পুরোটাই যাকাত হিসেবে আদায় হয়ে যায়। তাই চাচাত ভাইকে প্রশ্নোক্ত উদ্দেশ্যে দুই লক্ষ টাকা যাকাতের নিয়তে দিলে পুরো টাকাই যাকাত হিসেবে গণ্য হবে। তবে কোনো ব্যক্তিকে এই পরিমাণ যাকাতের টাকা দেওয়া মাকরূহ হবে, যা প্রয়োজনে খরচ করার পরও তার কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থেকে যায়।

প্রকাশ থাকে যে, শরীয়তের দৃষ্টিতে যাকাত হল গরিবদের আপৎকালীন প্রয়োজন পূরণের মাধ্যম। তাই এ টাকা দিয়ে কাউকে বিদেশে পাঠানো কিংবা ব্যবসার পুঁজি হিসাবে দেওয়া ঠিক নয়। অতএব উক্ত উদ্দেশ্যে চাচাত ভাইকে টাকা দিতে চাইলে নফল দান থেকে দেওয়া অধিক মুনাসিব হবে।

-কিতাবুল আছল ২/১২৫; খিযানাতুল আকমাল ১/২৭২; মুখতারাতুন নাওয়াযেল ১/৪৪১; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/২১৯; আলবাহরুর রায়েক ২/২৪৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৫৩

শেয়ার লিংক

সালমান আদীব - ফেনী

৫৭৪২. প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় একজন বয়োবৃদ্ধ মাযুর ব্যক্তি আছেন। যিনি রোযা রাখতে অক্ষম এবং খুবই দরিদ্র। ফিদইয়া আদায় করার মত সামর্থ্য তার নেই। মুহতারাম মুফতী সাহেবের নিকট তিনি জানতে চান, এখন তার করণীয় কী?

উত্তর

 প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বাস্তবেই যদি ঐ বয়োবৃদ্ধ মাযুর লোকটি রোযা রাখতে অক্ষম হন এবং দরিদ্রতার কারণে ফিদইয়া আদায় করতেও সক্ষম না হন, তাহলে তার করণীয় হল, আল্লাহ তাআলার দরবারে ইস্তিগফার করা। অবশ্য পরবর্তীতে যদি কখনও ফিদইয়া আদায় করার মত সক্ষমতা হয় তাহলে পেছনের ফিদইয়াগুলো আদায় করে দিতে হবে।

-ফাতহুল কাদীর ২/২৭৭; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ৩১; আলবাহরুর রায়েক ২/২৮৬; ইমদাদুল ফাত্তাহ, পৃ. ৭০১; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/৪৬৫

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ওয়ালিউল্লাহ - সিরাজগঞ্জ

৫৭৪৩. প্রশ্ন

গত রমযানে আমি রোযা অবস্থায় চোখে সুরমা লাগাই। তখন আমার এক বন্ধু আমাকে বলে যে, রোযা রেখে চোখে সুরমা লাগানো নিষেধ এতে রোযার ক্ষতি হয়। মুহতারামের কাছে জানতে চাই, আমার বন্ধুর কথা কি ঠিক? রোযা রেখে চোখে সুরমা লাগালে কি রোযার কোনো ক্ষতি হয়?

উত্তর

না, রোযা রেখে চোখে সুরমা লাগালে রোযার কোনো ক্ষতি হয় না। সুতরাং আপনার বন্ধুর কথা সঠিক নয়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার রোযার কোনো ক্ষতি হয়নি। তা সহীহ হয়েছে।

-কিতাবুল আছল ২/১৭১; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৪৪; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/২২১; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ৩৬১

শেয়ার লিংক

আব্দুল্লাহ - খুলনা

৫৭৪৪. প্রশ্ন

আমার আগে থেকেই মাদরাসার মসজিদে আযান দেওয়ার দায়িত্ব ছিল। মসজিদের পাশেই ইমাম সাহেব হুজুরের কামরা। সেখানে গিয়ে আযান দিতে হত। গত রমযানে ইতিকাফে বসার সুযোগ হয়। তখন আমি ছাড়া আযান দেওয়ার মতো অন্য কেউ ছিল না। প্রথমে আমি আযান দেওয়ার জন্য সেখানে যেতে রাজি হইনি। তখন মুহতামিম সাহেব হুজুর বললেন, আযান দেওয়ার জন্য মসজিদের বাইরে গেলে এতেকাফ ভাঙ্গে না। একথা শুনে আমি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত আযান দেওয়ার জন্য মসজিদের বাইরে যেতাম। কিন্তু তখন থেকেই বিষয়টা নিয়ে বেশ সন্দেহে ছিলাম।

তাই হযরতের কাছে জানতে চাই, আমার ওই রমযানের ইতিকাফটি কি সহীহ হয়েছিল? জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

হাঁ, আপনার ইতিকাফ সহীহ হয়েছে। আযানের ব্যবস্থা মসজিদের বাইরে থাকলে আযান দেওয়ার প্রয়োজনে ইতিকাফকারীর জন্য মসজিদের বাইরে যাওয়া জায়েয। এতে ইতিকাফ নষ্ট হবে না। তবে আযান শেষে বিলম্ব না করে মসজিদে ফিরে আসতে হবে।

-কিতাবুল আছল ২/১৯১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২২৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৮০; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৫

শেয়ার লিংক

সাওবান - আলফাডাঙ্গা, ফরিদপুর

৫৭৪৫. প্রশ্ন

আমি গত রমযানে আমাদের মহল্লার মসজিদে ইতিকাফ করি। এ মসজিদের পাশেই বড় একটি মুদি দোকান আছে। আমার বাসায় মুদি দোকানের কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে ফোনে আমাকে জানাতো। যেহেতু ইতিকাফে থাকার কারণে আমি নিজে দোকান থেকে কোনো কিছু ক্রয় করে নিয়ে যেতে পারতাম না, তাই ওই মুদি দোকানের মালিক যখন মসজিদে নামায পড়তে আসতো তখন আমি বাসার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তালিকা তাকে দিতাম এবং সাথে টাকাও পরিশোধ করে দিতাম। পরে ওই লোক দোকানে গিয়ে কারো মাধ্যমে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমার বাসায় পাঠিয়ে দিত।

মুহতারামের কাছে জানার বিষয় হল, ইতিকাফ অবস্থায় এভাবে বাসার প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করার কারণে ইতিকাফের কি কোনো ক্ষতি হয়েছে?

উত্তর

না, ইতিকাফ অবস্থায় এভাবে বাসার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়ের কারণে আপনার ইতিকাফের কোনো ক্ষতি হয়নি। কেননা, ইতিকাফকারীর জন্য মসজিদে পণ্য উপস্থিত না করার শর্তে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করার অনুমতি আছে।

-কিতাবুল আছল ২/১৮৫; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ২/৪৭১বাদায়েউস সানায়ে ২/২৮৭; আলইখতিয়ার ১/৪২৯; আযযাখীরাতুল বুরহানিয়া ৩/১২০; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/৪৭৬

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান - সিরাজদিখান, মুন্সিগঞ্জ

৫৭৪৬. প্রশ্ন

বাজারে আমার একটি দোকান আছে। সেই দোকানের আয় দিয়েই আমার সংসার চলে। এছাড়া আমার অন্য কোনো জমিজমা নেই। দোকানে এখন প্রায় চার লক্ষ টাকার পণ্য রয়েছে। এখান থেকে তিন অথবা সাড়ে তিন লক্ষ টাকার পণ্য বিক্রি করে যদি হজ্ব আদায় করি তাহলে আমার ব্যবসা প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে। তাই মুফতী সাহেবের নিকট জানার বিষয় হল, উক্ত দোকানের কারণে আমার উপর হজ্ব ফরয হবে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত দোকানের মালের কারণে আপনার উপর হজ্ব ফরয হবে না। কেননা, উক্ত দোকানের আয়ের উপর যেহেতু আপনার সংসার নির্ভরশীল। আর এখান থেকে হজে¦র খরচ করলে ব্যবসা প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এই দোকানের সম্পদের কারণে আপনার উপর হজ্ব ফরয হবে না।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭৭; ফাতহুল কাদীর ২/৩২২; আলবাহরুর রায়েক ২/৩১৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৮; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/৪৮৩

শেয়ার লিংক

আমাতুল্লাহ - মোমেনশাহী

৫৭৪৭. প্রশ্ন

আমি জানতে চাচ্ছি, ইহরাম অবস্থায় চোখে সুরমা লাগানোর হুকুম কী?

 

উত্তর

ইহরাম অবস্থায় চোখে সুঘ্রাণমুক্ত সুরমা লাগানো জায়েয। তবে ইহরাম অবস্থায় সাজসজ্জা করা যেহেতু মাকরূহ, তাই ঘ্রাণমুক্ত সুরমা হলেও লাগানো মাকরূহ হবে।

উল্লেখ্য, সুরমা সুঘ্রাণযুক্ত হলে ব্যবহার করা যাবে না। সুঘ্রাণযুক্ত সুরমা ১/২ বার ব্যবহার করলে সদাকাতুল ফিতর সমপরিমাণ সদকা ওয়াজিব হবে। এর বেশি হলে দম ওয়াজিব হবে।

-মাবসূত, সারাখসী ৪/১২৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৫৮৮; আলবাহরুল আমীক ২/৮২৯; মানাসিকে মোল্লা আলী কারী, পৃ. ১২২, ৩১৩

শেয়ার লিংক

আহমদ - মানিকগঞ্জ

৫৭৪৮. প্রশ্ন

আমি একজন কৃষক। আমার বিশ বিঘা জমি আছে। তন্মধ্যে দশ বিঘা জমির উৎপাদন আমার পরিবার নিয়ে চলার জন্য যথেষ্ট। বাকি দশ বিঘা জমির মূল্য হিসাব করে তার অর্ধেক দ্বারাই হজ্বের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব। জানতে চাচ্ছি, উপরোক্ত সূরতে আমার উপর কি হজ্ব ফরয হবে?

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্ত অবস্থায় উক্ত জমির কারণে আপনার উপর হজ্ব ফরয। কেননা, আপনার হজ্বের খরচ পরিমাণ প্রয়োজন অতিরিক্ত সম্পদ আছে। আর হজ্ব ফরয হওয়ার জন্য নদগ টাকা থাকা জরুরি নয়।

-উয়ূনুল মাসাইল, পৃ. ৪৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৭; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮২; আলবাহরুর রায়েক ২/৩১৩; রদ্দুল মুহতার ২/৪৬২

শেয়ার লিংক

আবু বকর - সিলেট

৫৭৪৯. প্রশ্ন

আমি বহু দিন ধরে এক মসজিদের খেদমতে নিয়োজিত। গত পাঁচ বছর আগে মসজিদের খতীব সাহেবের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে হজ্ব করে ফেলি। তখন আমার সামর্থ্য ছিল না। গত বছর আমার বড় ছেলের সরকারি চাকরি হয়। সে আমাকে প্রতি মাসে ত্রিশ হাজার টাকা দেয়। এখন আমি হজ্বের সামর্থ্য রাখি। জানতে চাচ্ছি, আমার পূর্বের হজ্ব দ্বারা কি হজ্বের ফরয আদায় হবে, নাকি পুনরায় হজ্ব করতে হবে?

উত্তর

আপনার বিগত হজ্ব দ্বারাই ফরয হজ্ব আদায় হয়ে গেছে। তাই এখন হজে¦র সামর্থ্য হলেও পুনরায় হজ্ব করা ফরয হবে না। কেননা, আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান হওয়ার আগেই ধার ইত্যাদি করে হজ্ব করে ফেললেও তা দ্বারা ফরয হজ্ব আদায় হয়ে যায়।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/২৯৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৮১; ফাতহুল কাদীর ২/২১৭; মাজমাউল আনহুর ১/৩৮৪; আলবাহরুল আমীক ১/৩৮৬; গুনইয়াতুন নাসিক, পৃ. ২২

শেয়ার লিংক

জাহিদুল কবির - শালিখা, মাগুরা

৫৭৫০. প্রশ্ন

আমি হজ্বে সাফা-মারওয়ায় সায়ী করার সময় তিনটি চক্কর দেওয়ার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ি। মাথা ঘুরতে শুরু করে। শরীর খুব দুর্বল হয়ে পড়ায় তখন আমি সায়ী করা ছেড়ে দিয়ে হোটেলরুমে চলে আসি। পরে মোটামুটি সুস্থ হই। কিন্তু পরবর্তীতে আমি আর সায়ী করতে যাইনি। এখন এ কারণে কি আমার ওপর কোনো জরিমানা আসবে?

উত্তর

আপনি যেহেতু অসুস্থতার কারণে তখন সায়ী পূর্ণ করতে পারেননি, তাই সুস্থ হওয়ার পর আপনার জন্য করণীয় ছিল সায়ী পূর্ণ করে নেওয়া। যেহেতু আপনার সায়ীর অধিকাংশ চক্কর বাকি থেকে গিয়েছে তাই এখন আপনাকে জরিমানা স্বরূপ একটি দম দিতে হবে।

-মাবসূত, সারাখসী ৪/৫১; বাদায়েউস সানায়ে ২/৩১৮; আলবাহরুর রায়েক ৩/২৩; মানাসিকে মোল্লা আলী কারী, পৃ. ৩৫৫; গুনইয়াতুন নাসিক, পৃ. ২৭৭; রদ্দুল মুহতার ২/৫৫৩

শেয়ার লিংক

মাকসূদুল আলম - লালমাটিয়া, ঢাকা

৫৭৫১. প্রশ্ন

আমার নানার ওপর অনেক আগেই হজ্ব ফরয হয়েছিল; কিন্তু তিনি তার হজ্ব আদায় করেননি। এখন তিনি বেশ বয়স্ক হয়ে গেছেন। বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। এখন আর তিনি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছেন না। এ অবস্থায় তার পক্ষে হজে¦ যাওয়া সম্ভব নয়। তাই তার অনুমতি নিয়ে এ বছর আমরা একজনকে তার পক্ষ হতে বদলী হজ্ব করাতে চাচ্ছি।

মুফতী সাহেবের নিকট জানার বিষয় হল, তার পক্ষ থেকে তার জীবদ্দশায় বদলী হজ্ব করানো সহীহ হবে কি?

উত্তর

আপনার নানা যেহেতু বার্ধক্যের কারণে তেমন চলাফেরা করতে পারছেন না এবং তার সুস্থ হওয়ারও সম্ভাবনা নেই তাই এ পরিস্থিতিতে তার পক্ষ থেকে বদলী হজ্ব করানো জায়েয হবে। এ ধরনের মাযুর ব্যক্তির জীবদ্দশায় বদলী হজ্ব করানো জায়েয। হযরত ফযল ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-

أَنّ امْرَأَةً مِنْ خَثْعَمٍ، قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللهِ، إِنَّ أَبِي أَدْرَكَتْهُ فَرِيضَةُ اللهِ فِي الحَجِّ وَهُوَ شَيْخٌ كَبِيرٌ لَا يَسْتَطِيعُ أَنْ يَسْتَوِيَ عَلَى ظَهْرِ البَعِيرِ، قَالَ: حُجِّي عَنْهُ.

খাছআম গোত্রের এক মহিলা বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতার ওপর আল্লাহ তাআলার বিধান হজ্ব ফরয হয়েছে। কিন্তু তিনি খুব বয়োবৃদ্ধ। উটের পিঠে সোজা হয়ে বসতে পারেন না। তিনি বললেন, তুমি তার পক্ষ থেকে হজ্ব আদায় করো। (জামে তিরমিযী, হাদীস ৯২৮)

-আলহাবীল কুদসী ১/৩৫৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৪২৪; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ৩৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩০৯; মাজমাউল আনহুর ১/৪৫৫

শেয়ার লিংক

সুবহান মাহমুদ - গুলিস্তান, ঢাকা

৫৭৫২. প্রশ্ন

আমার সাথে আমার স্ত্রীর একটি বিষয়ে নিয়ে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে আমি রেগে গিয়ে স্ত্রীকে বলি; ‘আমি তোমাকে তালাক দিলাম। তখন আমার স্ত্রী ভয় পেয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করে, ‘কী...! তুমি কী বললে?’ তখন আমি এর জবাবে বলি, ‘তোমাকে তালাক দিলাম। পাশে আমার মা ছিলেন, তিনি আমাকে প্রশ্ন করলেন যে, ‘এই...! তুই কী বললি?’ তখন আমি তার কথার জবাবে বলি যে, ‘তোমার বউমাকে তালাক দিলাম। এরপর ঝগড়া থেমে গেলে সবাই আমাকে বলে যে, আমাদের নাকি তিন তালাক হয়ে গেছে।

সম্মানিত মুফতী সাহেবের নিকট আমার প্রশ্ন হল, আমি তিনবার তালাক বলার দ্বারা কি তিন তালাক হয়ে গেছে? আমি কি এরপর আমার স্ত্রীর সাথে সংসার করতে পারব?

মুহতারাম, আমার এক তালাক দেওয়াই উদ্দেশ্য ছিল।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি আপনার স্ত্রীকে প্রথমবার তোমাকে তালাক দিলামবলার দ্বারা আপনার স্ত্রীর উপর এক তালাকে রজয়ী পতিত হয়েছে। এরপর স্ত্রী ও মায়ের জবাবে যা বলেছেন তা দ্বারা কোনো তালাক পতিত হয়নি। কেননা তা পূর্বের দেওয়া তালাকের বিবরণ ছিল। পৃথকভাবে তালাক প্রয়োগের জন্য বলা হয়নি। সুতরাং এক্ষেত্রে তিন তালাক হয়েছে বলা ভুল।

এখন আপনি পুনরায় সুষ্ঠুরূপে ঘর-সংসার করতে চাইলে ইদ্দতের মধ্যে রাজআত অর্থাৎ স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবেন। রাজআতের উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে, ইদ্দতের ভেতর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ব্যক্ত করা বা প্রকাশ করা যেমন, এ কথা বলবেন যে, তোমাকে স্ত্রীরূপে গ্রহণ করলাম। এর দ্বারাই আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক পুনর্বহাল হয়ে যাবে। আর যদি আপনি ইদ্দতের ভেতরে (ঋতুমতী মহিলার জন্য তিনটি হায়েয অতিক্রান্ত হওয়া পর্যন্ত, আর অন্তঃসত্তা মহিলার জন্য সন্তান প্রসব পর্যন্ত) রাজআত না করেন, তাহলে ইদ্দত শেষ হওয়ার সাথে সাথে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ঘর-সংসার করতে চাইলে নতুন মহর ধার্য করে দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে পরস্পর নতুন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে।

প্রকাশ থাকে যে, এই স্ত্রীকে ইদ্দতের ভিতরে গ্রহণ করা হোক কিংবা শেষ হওয়ার পর পুনরায় বিবাহ করা হোক পরবর্তীতে আপনি দুই তালাকের অধিকারী থাকবেন। তাই পরবর্তীতে এই স্ত্রীকে কখনো দুই তালাক দিলেই পূর্বের এক তালাকসহ তিন তালাক হয়ে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নতুন করে বিবাহ করেও একত্রিত হওয়ার সুযোগ থাকবে না। তাই সামনে থেকে তালাক বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে তালাক দেওয়া অন্যায়, বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে তালাক স্ত্রী-সন্তানের উপর এবং নিজের উপরও জুলুমের কারণ হয়, তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা কর্তব্য।

-কিতাবুল আছল ৪/৪৭২; বাদায়েউস সানায়ে ৩/১৬৩ ও ৩/২৮৮; আলআজনাস, নাতিফী ১/২৭২; আলমুহীতুল বুরহানী ৪/৩৯৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৫৫; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৩৯৭

শেয়ার লিংক

ফাহিমা আখতার - বসুন্ধরা, ঢাকা

৫৭৫৩. প্রশ্ন

আমি একটি কাপড়ের দোকান থেকে দুটি থ্রি-পিছ ক্রয় করি। ক্রয় করার সময় দোকানদার আমাকে এ কথা বলে, যা দেখার এখনই দেখে নিন, পরে কোনো সমস্যার কারণে ফেরত দিতে পারবেন না।

পরবর্তীতে আমি তার থেকে কেনা থ্রি-পিছে কিছু ত্রæটি দেখতে পাই। ফলে দোকানদারকে সেটা ফেরত দিতে চাই; কিন্তু সে ফেরত নিতে অস্বীকার করে এবং বলে, আমি আগেই বলেছিলাম, কোনো সমস্যার কারণে ফেরত দিতে পারবেন না, যা দেখার এখনই দেখে নিন।

আমার প্রশ্ন হল, বিক্রেতা ঐ কথাটি বলার পর যদি পণ্যের মধ্যে কোনো ধরনের ত্রæটি ধরা পড়ে, তাহলে কি ক্রেতার জন্য তা ফিরিয়ে দেয়ার অধিকার আছে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বিক্রেতা যেহেতু বিক্রির সময় বলে দিয়েছিল, ‘যা দেখার এখনই দেখে নিন, পরে কোনো সমস্যার কারণে ফেরত নেওয়া হবে না।সুতরাং এক্ষেত্রে ক্রেতা কোনো ত্রæটির কারণে পণ্যটি ফেরত দিতে পারবে না।

-কিতাবুল আছল ২/৪৮৮; মাবসূত, সারাখসী ১৩/৯১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/৬৯; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/১৫৯; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৪২

শেয়ার লিংক