আবদুল্লাহ মানসুর - খুলনা

৫০৬১. প্রশ্ন

কয়েকদিন আগে আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমাকে স্যালাইন দেওয়ার প্রয়োজন হয়েছিল। ডাক্তার আমার শরীরে স্যালাইন দেওয়ার আগে আমি অযু করে নিয়েছিলাম, যেন সময়মত নামায পড়ে নিতে পারি। তবে আমার হাতে সুচ ঢুকানোর পর স্যালাইন ছাড়তে কিছুটা বিলম্ব হয়। এ কারণে নলের ভেতর কিছুদূর পর্যন্ত রক্ত বেরিয়ে আসে। এরপর স্যালাইন ছাড়লে আবার তা শরীরের ভেতর চলে যায়। জানার বিষয় হল, ঐ দিন স্যালাইন চলা অবস্থায় উক্ত অযু দ্বারা আমি দুই ওয়াক্ত নামায পড়েছিলাম। ঐ নামাযের কী হুকুম?

উত্তর

শরীর থেকে গড়িয়ে পড়া পরিমাণ রক্ত বের হলে অযু নষ্ট হয়ে যায়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সুচ ঢুকানোর পর নলে কিছুদূর পর্যন্ত রক্ত বেরিয়ে আসার কারণে আপনার অযু ভেঙ্গে গিয়েছে। তখন অযু না করে যেই দুই ওয়াক্ত নামায আপনি পড়েছেন তা আদায় হয়নি। উক্ত নামায পুনরায় পড়ে নিতে হবে। ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনÑ

إذَا سَالَ الدّمُ نُقِضَ الْوُضُوءُ.

রক্ত বেরিয়ে তা গড়িয়ে পড়লে অযু নষ্ট হয়ে যায়। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, আসার ১৪৬৭)

Ñআলজামেউস সাগীর পৃ. ৬২; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/২৪৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৫; হালবাতুল মুজাল্লী ১/৩৭০; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/৪৭

শেয়ার লিংক

মুনিবুর রহমান সাঈদ - যশোর

৫০৬২. প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় অনেকেই পাট চাষ করেন। পাটগাছ কাটার পর তা থেকে আঁশ বের করার জন্য খালে বা পুকুরে এগুলো জাগ দিয়ে রাখা হয়। কিছুদিন পর পাটের জাগ পঁচে পানির রং পরিবর্তন হয়ে যায় এবং পানিতে কিছুটা দুর্গন্ধও সৃষ্টি হয়। প্রশ্ন হল, এই পানি দ্বারা  কি অযু-গোসল করা যাবে? এছাড়া পাট ধোয়ার সময় শরীরে বা কাপড়ে এই পানি লেগে থাকলে সে অবস্থায় নামায পড়া যাবে কি না?

উত্তর

খালে বা পুকুরে যদি পর্যাপ্ত পানি থাকে এবং পাট পঁচানোর পরও পানির তারল্য বহাল থাকে তাহলে পাট পঁচানোর কারণে পানির রং ও গন্ধ পরিবর্তন হয়ে গেলেও তা দ্বারা অযু-গোসল করা সহীহ হবে। এই পানি শরীর বা কাপড়ে লাগলে তা নিয়ে নামায পড়া সহীহ হবে। এ নিয়ে সংশয়ের দরকার নেই।

Ñফাতাওয়া খানিয়া ১/১৭; ফাতহুল কাদীর ১/৬৫; হালবাতুল মুজাল্লী ১/২৭৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৩৪১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৭৭; রদ্দুল মুহতার ১/১৮১

শেয়ার লিংক

আরমান হুসাইন - ফেনী

৫০৬৩. প্রশ্ন

আমি একজন রাজমিস্ত্রি। কয়েকদিন আগে নির্মাণ কাজ করার সময় ইটের চাপ লেগে আমার বাম হাতে গুরুতর জখম হয়। ডাক্তার ক্ষতস্থানে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিয়েছেন। আমি ব্যান্ডেজের উপর মাসাহ করে নামায পড়ি। তবে ডাক্তার বলেছেন, এক সপ্তাহ পর থেকে দিনে দুইবার ড্রেসিং করে নতুন ব্যান্ডেজ লাগাতে হবে। জানার বিষয় হল, ড্রেসিং করে নতুন ব্যান্ডেজ লাগালে কি অযু নষ্ট হয়ে যাবে?

উত্তর

ব্যান্ডেজের উপর মাসাহ করার পর তা খুলে নতুন ব্যান্ডেজ লাগানোর কারণে অযু বা মাসাহ নষ্ট হয় না। অবশ্য এই নতুন ব্যান্ডেজের উপর মাসাহ করে নেওয়া উত্তম। তবে যদি ড্রেসিং করার সময় ক্ষতস্থান থেকে গড়িয়ে পড়া পরিমাণ রক্ত বা পুঁজ বের হয় তাহলে অযু ভেঙে যাবে। আর ক্ষত ভাল হওয়ার পর ব্যান্ডেজ খোলা হলে মাসাহ বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু অযু নষ্ট হয় না। এক্ষেত্রে শুধু মাসাহের স্থান ধুয়ে নিলেই পূর্বের অযু বহাল থাকবে।

Ñআলফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশাইখ, আবুল লায়েস সামারকান্দী, পৃ. ৪০; বাদায়েউস সানায়ে ১/৯১; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩৬১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৫১; আলবাহরুর রায়েক ১/১৮৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৫; রদ্দুল মুহতার ১/২৮০

শেয়ার লিংক

তাবাসসুম সুলতানা - সিলেট

৫০৬৪. প্রশ্ন

আমার সন্তানের বয়স ছয় মাস। দুধপান করার পর সে মাঝে মাঝেই বমি করে। আমার কাপড়ে লেগে যায়, যা প্রতি ওয়াক্তে পরিষ্কার করা কষ্টকর। আবার অনেক সময় মনেও থাকে না। প্রশ্ন হল, এভাবে দুধের শিশুরা বমি করলে সে কাপড়ে নামায পড়ার কী হুকুম?

উত্তর

দুধের শিশুরা সাধারণত মুখে জমা করা দুধ ফেলে দেয় বা সামান্য বমি করে। এগুলো নাপাক নয়। এই বমি কাপড়ে লেগে গেলে কাপড় নাপাক হবে না। তা না ধুয়েও নামায পড়া যাবে। তবে মুখভরে বমি করলে তা নাপাক। এই বমি কাপড়ে বা শরীরে লাগলে নাপাক হয়ে যাবে। তাই তা ধুয়ে নামায পড়তে হবে। অবশ্য কাপড়ে বা শরীরে এজাতীয় বমি খুব সামান্য পরিমাণ লাগলে (এক দিরহাম পরিমাণ অর্থাৎ হাতের তালুর গভীরতা সমপরিমাণ বা এর চেয়ে কম) সে কাপড়ে নামায পড়ার সুযোগ রয়েছে। যদিও তা ধুয়ে নেওয়া উত্তম।

Ñআলজামেউস সাগীর পৃ. ৬২; জামেউস সাদরিশ শাহীদ পৃ. ১১৬; আলমাবসূত, সারাখসী ১/৭৪; শরহুল মুনয়া পৃ. ১৩০; আলবাহরুর রায়েক ১/২২৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৩৭

শেয়ার লিংক

রাকিব হাসান - শেরপুর

৫০৬৫. প্রশ্ন

গত রোযার ঈদে মাঠে যেতে দেরি হওয়ায় আমার ও আমার ছোট ভাইয়ের ঈদের নামায এক রাকাত ছুটে যায়। তারপর ইমাম সাহেবের সালাম ফেরানোর পর আমরা আমাদের ছুটে যাওয়া নামায পূর্ণ করি। আমি দাঁড়িয়ে প্রথমে অতিরিক্ত তাকবীর বলেছি, তারপর কেরাত পড়েছি। কিন্তু আমার ছোট ভাই কেরাত পড়ার পর অতিরিক্ত তাকবীর বলেছে। নামাযের পর তাকে জিজ্ঞেস করলে সে বলেছে, ঈদের নামাযে মাসবুক হলে ছুটে যাওয়া নামায আদায় করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তাকবীর কেরাতের পর বলতে হয়। জানার বিষয় হল, আমার ভাইয়ের কথাটি কি ঠিক?

উত্তর

হাঁ, আপনার ভাইয়ের কথাটি সঠিক। ঈদের নামাযে মাসবুক হলে ছুটে যাওয়া রাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে উত্তম হল, প্রথমে কেরাত পড়া তারপর অতিরিক্ত তাকবীরসমূহ বলা। তবে আগে তাকবীর বললেও নামায হয়ে যায়। তাই আপনার নামাযও আদায় হয়ে গেছে।

Ñকিতাবুল আছল ১/৩২২; আলমাবসূত, সারাখসী ২/৪০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৯৪; শরহুয যিয়াদাত ১/২২৯; আলবাহরুর রায়েক ২/১৬১; ফাতহুল কাদীর ২/৪৬

শেয়ার লিংক

হাসান মাসুদ - রামপুরা, ঢাকা

৫০৬৬. প্রশ্ন

রমযান মাসে একদিন খতম তারাবীর ২০ রাকাত শেষ হওয়ার পর আমি ইস্তিনজায় যাই। অযু করে এসে ইমামের সাথে বিতিরের দুই রাকাত পাই। কিন্তু ভুলবশত অবশিষ্ট এক রাকাত পড়ার সময় দুআয়ে কুনূত না পড়েই নামায শেষ করে ফেলি। ইমাম সাহেবকে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, নামায হয়ে গেছে। জানার বিষয় হল, তিনি কি সঠিক বলেছেন? ইমামের সাথে যে রাকাতে আমি দুআয়ে কুনূত পড়েছি সেটা আমার দ্বিতীয় রাকাত ছিল। এমতাবস্থায় কি আমার নাযায সহীহ হয়েছে?

উত্তর

ইমাম সাহেব ঠিকই বলেছেন। ইমামের সাথে দুআ কুনূত পড়ার কারণে আপনার দুআ কুনূত ঐ সময়ই আদায় হয়ে গেছে। তাই ছুটে যাওয়া রাকাত আদায়ের সময় তা আবার না পড়া ঠিক হয়েছে।

Ñআলমুহীতুল বুরহানী ৩/১১৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১০৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৭১; শরহুল মুনয়া পৃ. ৪২১; ফাতহুল কাদীর ১/৩৮০; আলবাহরুর রায়েক ২/৪১

শেয়ার লিংক

আরিফ - বরিশাল

৫০৬৭. প্রশ্ন

জুমার পূর্বের চার রাকাত সুন্নত পড়া অবস্থায় অনেকসময় খতীব সাহেব খুতবা শুরু করে দেন। এক আলেম থেকে শুনেছি খুতবার সময় নামায পড়া নিষেধ। জানার বিষয় হল, এমন পরিস্থিতিতে আমার জন্য করণীয় কী? বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত অবস্থায় দুই রাকাতের পর সালাম ফিরিয়ে দেবেন। আর যদি তৃতীয় রাকাতে দাঁড়িয়ে যান তাহলে তৃতীয় রাকাতের সিজদা না করে থাকলে বসে যাবেন এবং সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করবেন। উভয় অবস্থায় জুমার পর উক্ত চার রাকাত সুন্নত পড়ে নেওয়া উত্তম। আর যদি তৃতীয় রাকাতের সিজদা করে ফেলেন, তাহলে চার রাকাতই পূর্ণ করবেন।

Ñআলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৬৪; যাদুল ফাকীর পৃ. ১৬৪; হালবাতুল মুজাল্লী ১/৬৫৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫৭৭; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী পৃ. ২৪৫

শেয়ার লিংক

আবদুস সালাম - লালবাগ, ঢাকা

৫০৬৮. প্রশ্ন

ইমাম সাহেব নামায পড়ানোর সময় মসজিদের অংশে না দাঁড়িয়ে কেবলমাত্র মেহরাবের ভেতরে দাঁড়িয়ে নামায পড়ালে নামায হবে কি? শুনেছি ইমাম সাহেব নামায পড়ানোর সময় মসজিদের অংশেই দাঁড়াতে হয়। এক্ষেত্রে সঠিক বিষয়টি জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

ইমামের জন্য জামাতের সময় মেহরাবের ভেতরে না ঢুকে গিয়ে কিছুটা বাহিরে দাঁড়ানোই উত্তম। এক্ষেত্রে শুধু উভয় কদম মেহরাবের বাহিরে রাখাই যথেষ্ট। তবে ওযরবশত (যেমন, জায়গার সংকীর্ণতা) মেহরাবের ভেতরে দাঁড়ালেও কোনো অসুবিধা নেই।

জেনে রাখা দরকার যে, মেহরাব মসজিদেরই অংশ। এটিকে মসজিদের বাইরের মনে করা ঠিক নয়।

Ñআলফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশাইখ, আবুল লায়েস সামারকান্দী, পৃ. ৬৯; ফাতহুল কাদীর ১/৩৫৯; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৩০০; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ১/৫২০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৮

শেয়ার লিংক

মুস্তাফিজুর রহমান - বুয়েট, ঢাকা

৫০৬৯. প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমাদের সুযোগ হয়েছিল দশ দিনের জন্য তাবলীগের সফরে বের হওয়ার। আমাদের রোখ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থানায় ছিল। সেখানে গিয়ে আমরা একাকী নামায পড়লে কসর করতাম এবং নামাযের আগে-পরের সুন্নাতগুলোও গুরুত্বের সাথে আদায় করছিলাম। আমাদের জামাতের এক সাথী ফরয নামায কসর পড়লেও নামাযের আগে-পরের সুন্নাতগুলো পড়তেন না এবং অন্যদেরকেও পড়তে নিষেধ করতেন। বলতেন যে, সফরে সুন্নাত পড়তে হয় না। আমরা যারা আগে থেকেই এই ধরনের সফরে সুন্নাত পড়ে আসছি তার এই কথা শুনে বেশ সংশয়ে পড়ে যাই এবং আমাদের অনেক সাথীই সুন্নাত পড়া বন্ধ করে দেয়।

এখন মুফতী সাহেবের কাছে আমি বিষয়টির সঠিক সমাধান জানতে চাচ্ছি যে, সফরে নামাযের আগে-পরের সুন্নাত আদায়ের বিধান কী?

উত্তর

সফরের পথিমধ্যে যখন গন্তব্যে পৌঁছার ব্যস্ততা ও তাড়াহুড়া থাকে তখন সুন্নাত না পড়াই উত্তম। আর গন্তব্যে পৌঁছার পর মসজিদে অবস্থানের সময় বা কাছাকাছি স্থানে এক মসজিদ থেকে অন্য মসজিদে যাতয়াতের সময় কোনো তাড়াহুড়া বা কষ্ট-ক্লেশ না থাকলে যথাসম্ভব নামাযের আগে-পরের সুন্নত আদায় করে নেওয়া উত্তম।

উল্লেখ্য, ফজরের পূর্বের সুন্নাতের গুরুত্ব অন্যান্য সুন্নাতের চেয়ে বেশি। তাই যথাসম্ভব সর্বাবস্থায় তা আদায়ের চেষ্টা করা উচিত।

Ñজামে তিরমিযী, বর্ণনা ৫৫০; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৩৮৪৮; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৬০; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ২/১৭০; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩০; আদ্দুররুল মুখতার ২/১৩১; ইলাউস সুনান ৭/৩২৯

শেয়ার লিংক

হাসান - কুষ্টিয়া

৫০৭০. প্রশ্ন

আমি সেদিন বিতির নামাযে তৃতীয় রাকাতে ভুলে কুনূত না পড়ে রুকুতে চলে যাই। পরে রুকুতে স্মরণ হয়Ñ আমি কুনূত পড়িনি। তাই দাঁড়িয়ে যাই এবং দাঁড়িয়ে কুনূত আদায় করি। জানার বিষয় হল, আমি কি দ্বিতীয়বার রুকু করব? এভাবে রুকু থেকে দাঁড়িয়ে যাওয়া কি ঠিক হল?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকে দ্বিতীয়বার রুকু করতে হবে না।

উল্লেখ্য যে, রুকুতে কুনূতের কথা স্মরণ হওয়ার পর দাঁড়িয়ে যাওয়া উচিত হয়নি; বরং অবশিষ্ট নামায শেষ করে সাহু সিজদা করে নিলেই তা নিয়মসম্মত হত।

Ñবাদায়েউস সানায়ে ১/৬১৫; ফাতাওয়া সিরাজিয়া পৃ. ১৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১০৬; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৪৪৮

শেয়ার লিংক

রাফিউল ইসলাম - বনানী, ঢাকা

৫০৭১. প্রশ্ন

গত রমযানে একদিন আমাদের মসজিদের হাফেজ সাহেব হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যান। অসুস্থতার কারণে তিনি বসেবসেই রুকু-সিজদার সাথে তারাবীহ্র ইমামতি করেন। এবং আমাদেরকে উনার পিছনে দাঁড়িয়েই ইক্তিদা করতে বলেন। উনার কথা মত আমরা দাঁড়িয়েই ইক্তিদা করি। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আমার বেশ সংশয় হচ্ছে। তাই জানতে চাচ্ছি যে, এভাবে বসে ইমামতি করা ও তার পিছনে ইক্তিদা করা কি জায়েয আছে? এবং আমাদের ঐ দিনের তারাবীহ কি সহীহ হয়েছে?

উত্তর

ইমাম যমিনে বসে সমতলে সিজদা করে নামায পড়লে তার পেছনে সুস্থ ব্যক্তিদের দাঁড়িয়ে ইক্তেদা করা সহীহ। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাদের ঐ দিনের তারাবীহ সহীহ হয়েছে। অবশ্য ইশারায় সিজদাকারীর পেছনে সুস্থ ব্যক্তিদের ইক্তেদা সহীহ নয়।

Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ৬৮৯; উমদাতুল কারী ৫/২১৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৪৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৬৫; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৩৬৯; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ১/৩০

শেয়ার লিংক

আবদুন নূর বিন রফীক - মুহাম্মাদপুর, ঢাকা

৫০৭২. প্রশ্ন

গত রমযানে একদিন এশার পরবর্তী দুই রাকাত সুন্নাত আদায় করার পর রমযানের কথা স্মরণ না থাকায় গতানুগতিকভাবে আমি ভুলে বিতিরও পরে ফেলি। বিতির শেষ হওয়ার পর তারাবীহ শুরু হলে আমার রমযানের কথা স্মরণ হয়। কিন্তু তখন আমার সংশয় হতে থাকে যে, তারাবীহ তো বিতিরের আগে পড়তে হয়। আমি তো বিতির পড়ে ফেলেছি, এখন কি আমার তারাবীহ হবে? এই দোদুল্যমান অবস্থা নিয়েই আমি তারাবীহ আদায় করি।

মুফতী সাহেবের কাছে আমার জানার বিষয় হল, আমার উক্ত তারাবীহ কি শুদ্ধ হয়েছে? না হলে এখন আমার করণীয় কি?

উত্তর

উত্তম হল বিতিরের নামায তারাবীহের পর আদায় করা। তবে তারাবীহের আগে বিতির পড়ে ফেললেও পরে তারাবীহ আদায় করা যায়। কারণ, তারাবীহর সময় সুবহে সাদিক পর্যন্ত থাকে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার তারাবীহ আদায় করা সহীহ হয়েছে।

Ñফাতাওয়া খানিয়া ১/২৩৫; আলহাবিল কুদসী ১/২৪৮; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/৩৩৮; আলইখতিয়ার ১/২৩৯; আলবাহরুর রায়েক ২/৬৭

শেয়ার লিংক

আবুল কালাম আজাদ - কোটালিপাড়া, গোপালগঞ্জ

৫০৭৩. প্রশ্ন

গত রমযানে একদিন তারাবীহ আদায় করার জন্য মসজিদে গেলাম। এশার নামায শেষ হওয়ার পর যখন তারাবীহ শুরু হল তখন আমার একজন পরিচিত ব্যক্তিকে দেখলাম, তিনি বসে বসে তারাবীহ পড়ছেন। ভাবলাম, হয়ত কোনো অসুস্থতার কারণে বসে নামায পড়ছেন। নামায শেষ হওয়ার পর আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, কী অসুস্থতার কারণে তিনি বসে নামায পড়ছিলেন? তিনি বললেন, না কোনো সমস্যা নেই। এমনিতেই বসে বসে তারাবীহ পড়ছিলাম। তারাবীহ তো বসে পড়া জায়েয আছে। পরবর্তীতে আমি আরো বেশ কয়েকদিন তাকে কোনো কারণ ছাড়াই বসে তারাবীহ আদায় করতে দেখেছি।

মুফতী সাহেবের কাছে আমি জানতে চাচ্ছি যে, তার এ কথা কতটুকু সঠিক? কোনো সমস্যা বা অসুস্থতা ছাড়াই কি তারাবীহ বসে পড়া জায়েয আছে?

উত্তর

কোনো ওযর ছাড়া তারাবীহ যমিনে বসে সমতলে সিজদা করে পড়লেও আদায় হয়ে যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে নামায আদায়কারী ব্যক্তির চেয়ে অর্ধেক সওয়াব পাবে। হাদীস শরীফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনÑ

إِنْ صَلّى قَائِمًا فَهُوَ أَفْضَلُ وَمَنْ صَلّى قَاعِدًا، فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِ القَائِمِ.

দাঁড়িয়ে নামায আদায় করাই সর্বোত্তম। যদি কেউ বসে নামায আদায় করে তাহলে সে দাঁড়িয়ে নামায আদায়কারী ব্যক্তির অর্ধেক সওয়াব পাবে। (সহীহ বুখারী, হাদীস ১১১৫)

Ñবাদায়েউস সানায়ে ১/৬৪৭; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/৩৪০; মাজমাউল আনহুর ১/২০০; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ১/৩০; শরহুল মুনয়া পৃ. ৪১০

শেয়ার লিংক

হাম্মাদ - পল্লবী, ঢাকা

৫০৭৪. প্রশ্ন

আমি গত কয়েকদিন আগে জামাতের সাথে মসজিদে যোহর নামায পড়ছিলাম। আমার দু-একজন পরে একজন বৃদ্ধ মুরব্বী চেয়ারে বসে নামায পড়ছেন। বৃদ্ধের পাশে আরো দু-একটি চেয়ার ছিল। ইমাম সাহেব যখন রুকুর তাকবীর বললেন তখন মুরব্বী রুকু থেকে ওঠার সময় পাশে রাখা চেয়ারে হাত লাগার কারণে একটু জোরে আওয়ায হয়। আওয়ায শুনে বৃদ্ধের বরাবর সামনের কাতারে দাঁড়ানো লোকটা সিনা না ঘুরিয়ে পেছনে মাথা ফিরিয়ে তাকিয়ে দেখলেন। পরে সাথে সাথে আবার কেবলার দিকে ফিরে গেলেন। অতঃপর বাকি নামায যথা নিয়মে আদায় করেন। জানার বিষয় হল, তার নামায কি শুদ্ধ হয়েছে?

উত্তর

বাস্তবেই যদি ঐ মুসল্লী শুধু মাথা ঘুরিয়ে থাকেন তার সিনা কেবলার দিক থেকে না ঘোরে তাহলে তার নামায আদায় হয়ে গেছে। তবে এভাবে নামাযে মাথা ঘুরানো বা এদিক-সেদিক তাকানো মাকরূহ। বিনা প্রয়োজনে এমন করা খুশু-খুযু পরিপন্থী।

Ñআলমুহীতুল বুরহানী ২/২৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৭০; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ১/৪২২; শরহুল মুনয়া পৃ. ২২৩; আলবাহরুর রায়েক ১/২৮৫

শেয়ার লিংক

মিসবাহ - শেরপুর

৫০৭৫. প্রশ্ন

আমাদের মসজিদে প্রত্যেক নামাযে কয়েকজন করে মাসবুক হতে দেখা যায়। অনেক মাসবুককে দেখি ইমাম প্রথম সালাম ফিরানোর পরই বাকি নামায আদায়ের জন্য দাঁড়িয়ে যান। আবার অনেকে দ্বিতীয় সালামের পর দাঁড়ান। জানার বিষয় হল, মাসবুক বাকি নামায আদায়ের জন্য কখন দাঁড়াবে?

 

উত্তর

ইমামের উভয় সালামের পর মাসবুক অবশিষ্ট নামাযের জন্য দাঁড়াবে। তবে প্রথম সালামের পর দাঁড়ালেও নামায হয়ে যাবে। যদিও তা নিয়মসম্মত নয়।

Ñখুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৬৮; আলহাবিল কুদসী ১/১৯৩; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৪৬৪; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৭৮; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৯৭

শেয়ার লিংক

ইমাদ - নাওগাঁ

৫০৭৬. প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমরা কয়েকজন জামাতের সাথে যোহর নামায আদায় করছিলাম। নামাযের প্রথম রাকাতে হঠাৎ দেখি ইমাম সাহেব তাকবীর বলে সিজদায় যাচ্ছেন। আমি সিজদায়ে তিলাওয়াত ভেবে ইমাম সাহেবের সাথে সিজদায় শরীক হই। পরে বুঝতে পারলাম যে, আসলেই তা সিজদায়ে তিলাওয়াত ছিল। তখন আমার পাশে যে মুসল্লী ভাই ছিলেন তিনি সিজদায় যাননি। পরে তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি তিলাওয়াতে সিজদা শুনিনি, তাই যাইনি এবং আপনার যাওয়াটাও ঠিক হয়নি। আমার না করাটাই ঠিক। জানার বিষয় হল, ইমামের সাথে আমার সিজদায় শরীক হওয়া কি ঠিক হয়েছে? আর তার কথা কি ঠিক?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার ইমামের সাথে সিজদায় শরীক হওয়া ঠিক হয়েছে। কেননা মুক্তাদি ইমামের সিজদায়ে তিলাওয়াত না শুনলেও ইমামের সাথে তার সিজদায় শরীক হওয়া ওয়াজিব। তাই উক্ত সিজদায় আপনার শরীক হওয়া নিয়মসম্মতই হয়েছে। এক্ষেত্রে আপনার পাশের মুসল্লীর কথা ঠিক হয়নি। না জেনে দ্বীনী বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক নয়।

Ñকিতাবুল আছল ১/২৭৮; আলমাবসূত, ২/১৩৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/২৮১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৩; আলবাহরুর রায়েক ২/১২০

শেয়ার লিংক

নাজমুল হাসান - নকলা, শেরপুর

৫০৭৭. প্রশ্ন

আমাদের অফিসে নামাযের জন্য ভিন্ন জায়গা আছে। নির্দিষ্ট সময়ে সেখানে জামাত হয়। কিন্তু আযান দেওয়া হয় না। বরং শুধু ইকামত দিয়ে নামায শুরু করা হয়। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এক্ষেত্রে মহল্লার আযান কি আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে? নাকি পৃথকভাবে আযান দেওয়া লাগবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মহল্লার আযান আপনাদের জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে। তবে যেহেতু এটি স্বতন্ত্র নামায ঘর তাই এক্ষেত্রে নিজেরা পৃথকভাবে আযান দিয়ে নেওয়াই উত্তম।

Ñখুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৪৮; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৭৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫৪; আলবাহরুর রায়েক ১/২৬৫; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩৯৪-৯৫

শেয়ার লিংক

তাহমিদুর রহমান - শেরপুর

৫০৭৮. প্রশ্ন

আমাদের মহল্লার মসজিদটি তিন তলা বিশিষ্ট। জুমুআর দিন পুরো মসজিদ ভরে যায়। খুতবার সময় তৃতীয় তলায় অনেকেই জায়গা না পেয়ে পেছনে দাঁড়িয়ে থাকে। ইকামতের সময় সবাই দাঁড়ালে কাতারের মাঝে জায়গা খালি হয়। তখন অনেকেই কাতারে দাঁড়াতে পারে। কখনো কখনো নামায শুরু হয়ে যাওয়ার পরও কোথাও খালি জায়গা দেখা যায়। তখন পেছন থেকে দুই-একজন নামাযীদের সামনে দিয়ে সেখানে গিয়ে দাঁড়ায়। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এক্ষেত্রে নামাযীদের সামনে দিয়ে অতিক্রম করা কি জায়েয আছে? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মুসল্লীরা নামাযে দাঁড়িয়ে গেলেও খালি স্থানের জায়গা পুরণ করার জন্য তাদের সামনে দিয়ে যাওয়া যাবে। কারণ কাতার পূূর্ণ করার হুকুম পালনের জন্য মুসল্লীদের সামনে দিয়েও যাওয়া জায়েয।

প্রকাশ থাকে যে, নামায শুরু করার পূর্বেই ডানে-বামে লক্ষ করে মিলে মিলে দাঁড়াতে হয়। হাদীস শরীফে এসেছে, জাবির ইবনে সামুরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনÑ

أَلَا تَصُفّونَ كَمَا تَصُفُّ الْمَلَائِكَةُ عِنْدَ رَبِّهَا؟ فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللهِ، وَكَيْفَ تَصُفّ الْمَلَائِكَةُ عِنْدَ رَبِّهَا؟ قَالَ: يُتِمّونَ الصّفُوفَ الْأُوَلَ وَيَتَرَاصّونَ فِي الصّفِّ.

তোমরা কি এভাবে কাতারবন্দী হয়ে দঁড়াবে না, যেভাবে ফিরিশতাগণ তাদের রবের সামনে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ায়? আমরা বলালাম, ফিরিশতাগণ তাদের রবের সামনে কীভাবে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ায়? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তারা সামনের কাতারগুলো আগে পূর্ণ করে এবং গায়ে গায়ে লেগে দাঁড়ায়। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৩০)

Ñশরহুল মুনয়া পৃ. ৩৬৯; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৩১২; আদ্দুররুল মুনতাকা ১/১৮৪; রদ্দুল মুহতার ১/৬৩৬; জামেউর রুমুয ১/২০১

শেয়ার লিংক

শহিদুল ইসলাম - শেরপুর

৫০৭৯. প্রশ্ন

আমি মকতব বিভাগের একজন শিক্ষক। আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব কখনো না থাকলে আমি নামায পড়িয়ে থাকি। আমার একটি বিষয় জানার ছিল। তা হল, কোনো কোনো মসজিদে দেখি যে, ইমাম সাহেব যোহর, মাগরিব, এশা এই ওয়াক্তগুলোতে ফরয নামাযের পর সুন্নত পড়ার জন্য মেহরাব থেকে পিছনে চলে আসেন। আবার কেউ জায়নামাযের একপাশে দাঁড়িয়ে সুন্নত পড়েন। আর কেউ নিজের জায়গায় দাঁড়িয়েই সুন্নত পড়েন। এক্ষেত্রে আসলে সঠিক নিয়ম কী?

উত্তর

ফরয নামাযের পর সম্ভব হলে ইমামের জন্য নিজের জায়গা থেকে সরে সুন্নত পড়া উত্তম। হযরত আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনÑ

إِذَا سَلّمَ الإِمَامُ لَمْ يَتَطَوّعْ حَتّى يَتَحَوّلَ مِنْ مَكَانِهِ ، أَوْ يَفْصِلَ بَيْنَهُمَا بِكَلاَمٍ.

ইমাম সালাম ফিরানোর পর নিজের জায়গা থেকে সরে সুন্নত পড়বে। ... (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, হাদীস ৬০৭৬)

হযরত ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিতÑ

أَنّهُ كَرِهَ إِذَا صَلّى الإِمَامُ أَنْ يَتَطَوّعَ فِي مَكَانِهِ ، وَلَمْ يَرَ بِهِ لِغَيْرِ الإِمَامِ بَأْسًا.

তিনি ইমামের জন্য নিজের জায়গায় সুন্নত পড়াকে অপছন্দ করতেন। ... (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, হাদীস ৬০৭৭)

তাই সুযোগ থাকলে ইমাম সাহেব ফরয নামাযের পর মেহরাব থেকে সরে দাঁড়াবেন। অন্যথায় কিছুটা ডানে-বামে সরে সুন্নত আদায় করবেন।

Ñবাদায়েউস সানায়ে ১/৩৯৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১০০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/২৩৬; ফাতহুল কাদীর ১/৩৮৪; শরহুল মুনয়া পৃ. ৩৪২; রদ্দুল মুহতার ১/৫৩১

শেয়ার লিংক

উবাইদুর রহমান - সিলেট

৫০৮০. প্রশ্ন

আমার ঠাÐার সমস্যা আছে। শীতের দিনে নাক দিয়ে পানি পড়ে। বারবার মোছার প্রয়োজন হয়। হুযুরের কাছে জানতে চাচ্ছি, নামায পড়া অবস্থায় নাক মোছার প্রয়োজন হলে আমার জন্য করণীয় কী? আমি কি পকেট থেকে রুমাল বা টিস্যু বের করে তা দিয়ে নাক মুছতে পারব বা নাক মোছার প্রয়োজনে এগুলো হাতে রেখে নামায পড়া যাবে?

উত্তর

নামায পড়া অবস্থায় নাক মোছার প্রয়োজন হলে এক হাত দ্বারা মুছতে পারবেন। প্রয়োজনে পকেট থেকে এক হাত দিয়ে রুমাল বের করে মোছাও জায়েয হবে। আর বারবার মোছার প্রয়োজন হলে ছোট রুমাল বা টিস্যু জাতীয় কিছু হাতে রেখেও নামায পড়তে পারবেন। তবে লক্ষ রাখতে হবে, যেন হাতে রুমাল রাখার কারণে রুকুতে হাঁটু ধরা এবং সিজদায় হাতের তালু মেঝেতে রাখতে কোনো অসুবিধা না হয়।

উল্লেখ্য, হাতে কিছু রাখা বা বারবার নাক মোছার বিধানটি কেবলমাত্র ওজরের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বিনা ওজরে বারবার এভাবে মোছামুছি করা যাবে না।

Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ৪১৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫০৭; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৬৩, ১৪২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৫৭, ৫২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৫রদ্দুল মুহতার ১/৬৪০

শেয়ার লিংক

হুমাইদ - বাগানবাড়ী, সিলেট

৫০৮১. প্রশ্ন

আমার গ্রামের বাড়ী সিলেট। বাংলাদেশের নাগরিক। থাকি লন্ডনে। লন্ডনের সিটিজেনশিপ আছে। সিলেটে আমাদের বাড়ী ও জায়গা-জমি আছে। বছরে আব্বা-আম্মাসহ একাধিকবার দেশে আসা হয়। সামনে আমার বিবাহ-শাদী ইত্যাদি দেশেই করার খেয়াল এবং লন্ডন ও বাংলাদেশ উভয় দেশেই থাকার খেয়াল। কিছু সময় দেশে থাকব, বাকি সময় লন্ডনে থাকবÑ এমন নিয়ত। জানার বিষয় হল, আমি দেশে আসলে কি কসর করব?

উত্তর

:  প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু লন্ডন ও সিলেট দুই জায়গাতেই আপনার বসবাসের ব্যবস্থা ও আসবাবপত্র রয়েছে এবং উভয় জায়গায় বসবাসও করেন তাই আপনি দুটি জায়গাতেই মুকীম গণ্য হবেন এবং পূর্ণ নামায পড়বেন। তবে পথিমধ্যে আপনি মুসাফির গণ্য হবেন।

Ñফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫১১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৩৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/২৮০; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪০২; আদ্দুররুল মুখতার ২/৭৩৯

শেয়ার লিংক

আদনান হুসাইন - নোয়াখালী

৫০৮২. প্রশ্ন

গত সপ্তাহে জুমার নামাযে মসজিদে যেতে আমার দেরি হয়ে যায়। একারণে নামাযের শুরুতে কাতারে জায়গা না পেয়ে আমরা কয়েকজন মুসল্লি কাতারের পাশে সিঁড়ির সামনে দাঁড়াই এবং জায়গা-সংকীর্ণতার কারণে প্রথম সিঁড়ির উপর সিজদা করে নামায পড়ি। আমাদের উক্ত নামায কি সহীহ হয়েছে?

উত্তর

হাঁ, আপনাদের উক্ত নামায সহীহ হয়েছে। কারণ, জায়গা-সংকীর্ণতার কারণে কোনো উঁচু স্থানে এমনকি অন্য মুসল্লির পিঠের উপর সিজদা করলেও নামায হয়ে যায়। হযরত উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনÑ

إذَا لَمْ يَقْدِرْ أَحَدُكُمْ عَلَى السّجُودِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ ، فَلْيَسْجُدْ عَلَى ظَهْرِ أَخِيهِ.

কোনো ব্যক্তি যদি জুমার নামাযে জায়গা-সংকীর্ণতার কারণে মাটিতে সিজদা করার জায়গা না পায় সে যেন অন্য মুসল্লির পিঠের উপর সিজদা করে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, আসার ২৭৩৫)

Ñকিতাবুল আছল ১/১৭৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১২১; খিযানাতুল আকমাল ১/৫৩; ফাতহুল কাদীর ১/২৬৪; শরহুল মুনয়া পৃ. ২৮৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৭০

শেয়ার লিংক

সালমান হোসেন - খুলনা

৫০৮৩. প্রশ্ন

আমাদের মসজিদে প্রতি শুক্রবার ফজরের নামাযে ইমাম সাহেব সূরা আলিফ-লাম-মিম সাজদা তিলাওয়াত করেন। গত শুক্রবার ফজরের নামায শুরু হলে আমি মসজিদের এক কোণে সুন্নত পড়ছিলাম। এ সময় ইমাম সাহেব সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে সিজদা করেন। আমি শরীক হতে পারিনি। এরপর আমার সুন্নত পড়া শেষ হলে উক্ত রাকাতে রুকুর আগে আমি ইমামের সাথে শরীক হই। জানার বিষয় হল, আমার কি পরবর্তিতে তিলাওয়াতে সিজদা আদায় করতে হবে?

উত্তর

উক্ত রাকাতের রুকু পাওয়ার কারণে ঐ রাকাত এবং এর সব আমলই পেয়ে গেছেন বলে ধর্তব্য হবে। তাই এক্ষেত্রে আপনার সিজদায়ে তিলাওয়াতও আদায় হয়ে গেছে। আপনাকে পুনরায় তা আদায় করতে হবে না। কারণ, রুকু পেলে ওই রাকাতের কেরাত, দুআয়ে কুনুত, সিজদায়ে তিলাওয়াত সবকিছু পেয়েছে বলে ধর্তব্য হয়।

Ñকিতাবুল আছল ১/২৭৯; জামেউস সাদরিশ শাহীদ পৃ. ১৭২; ফাতহুল কাদীর ১/৪৬৯; শরহুর মুনয়া পৃ. ৫০১; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী পৃ. ২৬৮

শেয়ার লিংক

লাবিবা - নিলফামারী

৫০৮৪. প্রশ্ন

রমযান মাসে একদিন দুপুরে তীব্র গরমের কারণে আমি অস্বস্তি বোধ করছিলাম। তখন আমি এক গøাস পানি ও শরবত খেয়ে রোযা ভেঙে ফেলি। অবশ্য আমার রোযার কথা স্মরণ ছিল, আর না ভাঙলেও তেমন অসুবিধা হত না। এরপর বিকাল থেকে আমার ঋতু¯্রাব শুরু হয়। বিষয়টি আমাদের তালীমের আপাকে জানালে তিনি বলেছেন, ‘কাফফারা ওয়াজিব হয়নি, তবে রোযাটি কাযা করতে হবে।হুযূরের কাছে জানার বিষয় হল, আমার উক্ত রোযার কী হুকুম? আমাদের তালিমের আপা কি সঠিক বলেছেন?

উত্তর

আপনার জন্য এত সামান্য ওজরে রোযাটি ভেঙে ফেলা নাজায়েয হয়েছে। এজন্য আল্লাহ তাআলার দরবারে তওবা-ইস্তেগফার করতে হবে। এবং আপনাকে রোযাটি কাযা করে নিতে হবে। আর যেহেতু উক্ত দিনেই আপনার ঋতু¯্রাব শুরু হয়েছে তাই এক্ষেত্রে কাফ্ফারা আদায় করতে হবে না। কিন্তু পরবর্তীতে যদি ঋতু¯্রাব না আসত তাহলে কাফ্ফারাও জরুরি ছিল।

Ñকিতাবুল আছল ২/১৫৩; আলমাবসূত, সারাখসী ৩/৭৫; আততাজরীদ, কুদূরী ৩/১৫৬৯; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/২২৪; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; রদ্দুল মুহতার ২/৪০৯

শেয়ার লিংক

নজরুল ইসলাম - ময়মনসিংহ

৫০৮৫. প্রশ্ন

গত রমযানে আমি মহল্লার মসজিদে সুন্নত ইতিকাফ করেছিলাম। পঁচিশ রোযার দিন এক ভাইয়ের সাথে কথা বলতে বলতে বেখেয়ালে মসজিদের বাইরে চলে যাই। পরে ইমাম সাহেব হুযূরকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, আপনার ইতিকাফ ভেঙে গেছে। আপনাকে এখন পূর্ণ দশ দিনের ইতিকাফ কাযা করতে হবে। জানার বিষয় হল, ইমাম সাহেবের কথা কি সঠিক? সুন্নত ইতিকাফ ভেঙে গেলে কি পূর্ণ দশ দিনের ইতিকাফই কাযা করতে হয়?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মসজিদ থেকে বের হওয়ার কারণে আপনার সুন্নত ইতিকাফ ভেঙে গেছে এবং তা নফল হয়ে গেছে। এখন আপনাকে শুধু এক দিনের ইতিকাফ কাযা করতে হবে। অর্থাৎ কোনো এক দিন সূর্যাস্তের পূর্ব থেকে পর দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত মসজিদে ইতিকাফের নিয়তে অবস্থান করবেন এবং দিনের বেলায় রোযা রাখবেন। দশ দিন ইতিকাফ করার কথা সহীহ নয়।

Ñবাদায়েউস সানায়ে ২/২৮২; ফাতহুল কাদীর ২/৩০৮; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪৪

শেয়ার লিংক

আয়েশা - চাঁদপুর

৫০৮৬. প্রশ্ন

আলহাদু লিল্লাহ, আমি ফরয, ওয়াজিব পালনের পাশাপাশি কিছু নফল আমলও করার চেষ্টা করি। চেষ্টা করি কিছু নফল নামায ও কিছু নফল রোযা রাখার। এ বছর আমি আশুরার দিন রোযা রাখি। হঠাৎ দিনের বেলায় আমার মাসিক এসে যায়। পরে আমি কী করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। তাই সেভাবেই রোযা অবস্থায় কিছু না খেয়ে কাটিয়ে দিলাম। বাকি আমি জানি যে, ফরয রোযা অবস্থায় মাসিক এসে গেলে কাযা করতে হয়। তাই হুযূরের নিকট জানতে চাচ্ছি, নফল রোযা অবস্থায় মাসিক এসে গেলে কাযা করা লাগবে কি?

উত্তর

হাঁ, নফল রোযা অবস্থায় মাসিক ¯্রাব এসে গেলে পরবর্তীতে তার কাযা করে নিতে হবে। কেননা নফল রোযা শুরু করার পর তা পূর্ণ করা আবশ্যক হয়ে যায়।

Ñআলমাবসূত, সারাখসী ৩/৭০; খিযানাতুল আকমাল ১/৩০০; ফাতাওয়া সিরাজিয়া পৃ. ৩০; ফাতহুল কাদীর ২/২৮০; আলবাহরুর রায়েক ২/২৮৭

শেয়ার লিংক

ইবনে বতুতা - ঢাকা

৫০৮৭. প্রশ্ন

আমার এক বন্ধুকে আমি ২ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছি প্রায় দুই বছর হয়ে যায়। সে দেবে বলে বিভিন্ন সমস্যার কারণে এখনো দিতে পারেনি। এ বছর আমি যাকাত দেওয়ার সময় আমার বড় ভাইজান, যিনি দ্বীনী বিষয়ে জ্ঞান রাখেন, বললেন, তোমাকে সে ঋণ দেওয়া টাকার যাকাত দিতে হবে। হুযূরের নিকট জানতে চাচ্ছি, আমার উক্ত বন্ধুকে দেওয়া ঐ ঋণের উপর যাকাত আসবে কি না?

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত ঋণের যাকাত দিতে হবে। তবে আপনি চাইলে ঐ টাকা পাওয়ার পর তার যাকাত আদায় করতে পারেন। সেক্ষেত্রে যে কয় বছর পিছনে অতিবাহিত হয়েছে তার যাকাতও দিতে হবে। আর চাইলে টাকা পাওয়ার আগেও প্রতি বছরেরটা নগদে আদায় করে দিতে পারেন।

Ñকিতাবুল হুজ্জাহ আলা আহলিল মাদীনাহ ১/২৯৭; আলমাবসূত, সারাখসী ২/১৯৪; আলহাবিল কুদসী ১/২৭০; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২৮

শেয়ার লিংক

নাসির - বনানী, ঢাকা

৫০৮৮. প্রশ্ন

আমি ব্যবসায়ী। প্রতি বছর নিয়মিত আমার মালের যাকাত আদায় করে থাকি। এ বছরও আদায় করেছি। এবার যাকাত আদায়ের দিনগুলোতে আমার এক বন্ধু আমার বাসায় এসে দেখে যে, আমি যাকাতের হিসাব নিয়ে ব্যস্ত। তখন সে আমার বাসার দামি দামি সামান পত্র যেমন ৩/৪ রঙের সোফা, দু-তিন কালারের ফার্নিচার, একাধিক কাঠের আলমারী, ১০/১৫ ডিনার সেট, ওভেন, এসি, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদি। সে আমাকে জিজ্ঞেস করে এসব সরঞ্জামাদির দাম কত? আমি বললাম; ১০/১২ লাখ টাকা হবে। সে বলল, এগুলির যাকাত আদায় করেছিস? কত দিন হয় এগুলি নিলি? আমি বললাম, দেড় বছরের মতো হবে। সে বলল, এগুলোর যাকাত দিতে হবে। আমি বললাম, কেন? আমার প্রয়োজনীয় সামানের কেন যাকাত দিব? আমি তো শুধু ব্যবসায়ী পণ্যের যাকাত আদায় করে থাকি। হুযূরের নিকট জানার বিষয় হল, আমার ব্যবসার মালের যাকাত আদায়ের সময় কি আমার ঘরের এ পণ্যগুলোরও যাকাত দিতে হবে? তার কথা কি ঠিক?

উত্তর

আপনার বন্ধুর কথা ঠিক নয়। ঘরের আসবাব-পত্র ও ব্যবহার সামগ্রীর উপর যাকাত আসে না। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকে উল্লেখিত পণ্যগুলোর যাকাত দিতে হবে না। তবে মুসলমানদের উচিত যাকাতের পাশাপাশি সাধ্যানুযায়ী নফল দান-সদকা করা।

Ñকিতাবুল আছল ২/৯৭; আলমাবসূত, সারাখসী ২/১৯৮; আলহাবিল কুদসী ১/২৬৯; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১৭৩

শেয়ার লিংক

আকরাম হোসেন - বরিশাল

৫০৮৯. প্রশ্ন

আমি সিজনের সময় আলু-পেঁয়াজ, আদা-রসুন ইত্যাদি মালামাল কিনে রাখি। এরপর সুবিধামত বিক্রয় করি। এ বছর আমার বাৎসরিক যাকাত আদায়ের সময় আলু-পেঁয়াজ গোডাউনে থাকতেই এগুলোর বাজার-মূল্য কয়েকগুণ বেড়ে যায়। জানার বিষয় হল, এসময় আমি উক্ত মালের ক্রয়-মূল্য হিসাবে যাকাত আদায় করব, নাকি বিক্রয়-মূল্য হিসাবে যাকাত দিতে হবে?

উত্তর

ব্যবসা-পণ্যের মূল্যের যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে যেদিন যাকাতবর্ষ পূর্ণ হয় সেদিনের বাজার-দর ধর্তব্য হবে। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি উক্ত মালের বর্তমান পাইকারী বিক্রয়-মূল্য হিসাব করে যাকাত প্রদান করবেন।

Ñমুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ১০৫৫৯; কিতাবুল আমওয়াল, আবু উবাইদ পৃ. ৫২১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১৭০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৭৯; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী পৃ. ৩৯১; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৮৬

শেয়ার লিংক

নাজমুল হুদা - রাজশাহী

৫০৯০. প্রশ্ন

আমি একটি মসজিদের ইমাম। এক মুসল্লি তার বাবার বদলি হজে¦র জন্য আমাকে নির্বাচন করেন। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন যে, স্বাভাবিকভাবে হজ¦ করতে এখন কত খরচ হয়? আমি একজন ট্রাভেলস মালিকের কাছ থেকে খরচের পরিমাণ জানার পর উক্ত মুসল্লিকে তা জানিয়ে দিই। তিনি আমাকে সে পরিমাণ টাকা দিয়ে দেন। আল্লাহ্র রহমতে আমি হজ্বে গিয়ে স্বাভাবিকভাবে সব খরচ করার পর তার দেওয়া কিছু টাকা আমার কাছে থেকে গিয়েছে। জানার বিষয় হল, আমি এই উদ্বৃত্ত টাকাগুলো কি আমার প্রয়োজনে খরচ করতে পরব? নাকি তার কাছে ফেরত দিতে হবে?

উত্তর

বদলি হজ্ব করার পর উদ্বৃত্ত টাকাগুলোর মালিক প্রেরক। তাই আপনার কাছে যে টাকা বেঁচে গেছে তা তাকে ফেরত দিয়ে দিবেন। তবে তিনি যদি তা ফেরত নিতে না চান তাহলে আপনি তা খরচ করতে পারবেন। এছাড়া অর্থ প্রদানের সময়ও যদি তিনি এমন কথা বলে থাকেন যে, সবই আপনার খরচের জন্য দিলাম। কোনো হিসাব দেওয়া লাগবে না বা ফেরত দেওয়া লাগবে না তাহলে আপনি সেটার মালিক হয়ে যাবেন। এবং অতিরিক্ত ব্যক্তিগত প্রয়োজনে তা খরচও করতে পারবেন।

Ñমুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ১৪৯৭১; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ২/৪৯৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩০৭; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/২৮৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৪২৯; আলবাহরুর রায়েক ৩/৬৮

শেয়ার লিংক