ফাহিম - চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা

৬৬৬৯. প্রশ্ন

বিশ পঁচিশ দিন আগে আমি আমার গরুর জন্য বিলে ঘাস কাটতে যাই। তখন বেখেয়ালে একটা ভাঙা শামুকে পাড়া দিয়ে পা কেটে ফেলি। প্রথমে মনে করেছিলাম সামান্য ক্ষত। কিন্তু ডায়াবেটিস থাকার কারণে সেই সামান্য ক্ষতই শুকাতে অনেক দেরি হয়। পরে ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার ব্যান্ডেজ বেঁধে দেয়, এবং ইনফেকশন যেন না হয়, সেজন্য একদিন পরপর ড্রেসিং করতে বলে। আমি এখন ওযু করার সময় পায়ে ব্যান্ডেজের ওপর মাসেহ করি, এবং একদিন পরপর ব্যান্ডেজ খুলে ড্রেসিং করে নতুন ব্যান্ডেজ লাগাই।

হুজুরের কাছে জানতে চাই, ড্রেসিং করার জন্য ব্যান্ডেজ খুললে কি ওযু ভেঙে যাবে? যদি না ভাঙে তাহলে কি ব্যান্ডেজ পরিবর্তনের পর নতুন ব্যান্ডেজের ওপর পুনরায় মাসেহ করে নিতে হবে?

 

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ড্রেসিং করার সময় ক্ষতস্থান থেকে যদি গড়িয়ে পড়া পরিমাণ রক্ত, পুঁজ, পানি বের না হয়, তাহলে শুধু ব্যান্ডেজ খোলার কারণে আপনার ওযু ভাঙবে না। তাই সেক্ষেত্রে নতুন করে ওযু করা জরুরি নয়, এবং এক্ষেত্রে ব্যান্ডেজ পরিবর্তন করার পর নতুন ব্যান্ডেজের ওপর পুনরায় মাসেহ করাও আবশ্যক নয়। তবে সম্ভব হলে পুনরায় মাসেহ করে নেওয়াই উত্তম।

* >فتاوى قاضيخان< ১/৫১ : إذا مسح على العصابة، ثم سقطت العصابة، فبدلها بالأخرى، الأولى أن يعيد المسح على الثانية، وإن لم يعد أجزأه.

কিতাবুল আছার, ইমাম আবু ইউছুফ, বর্ণনা ২৩; কিতাবুল আছল ১/৪৪; বাদায়েউস সানায়ে ১/৯১; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩৬১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদুল্লাহ - লালবাগ, ঢাকা

৬৬৭০. প্রশ্ন

আমার ছোটভাই ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। চিকিৎসার জন্য তাকে একটি হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে তার রক্তের বিশেষ এক ধরনের পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। যার ব্যবস্থা সেই হাসপাতালে ছিল না। এজন্য তার রক্তের নমুনা অন্য একটি ল্যাবরেটরিতে নিয়ে যেতে হয়। পথেই যোহর নামাযের সময় হয়ে যাওয়ায় আমি পাশের একটি মসজিদে নামায আদায় করি। রক্তভর্তি সেই শিশিটি তখন আমার পকেটেই ছিল।

হুজুরের কাছে জানতে চাই, শিশিটি পকেটে নিয়ে নামায আদায় করা কি ঠিক হয়েছে? আমার সেদিনের নামায কি আদায় হয়েছে?

উত্তর

না, আপনার ঐ নামাযটি আদায় হয়নি। তা পুনরায় পড়ে নিতে হবে। কেননা নাপাকী শিশির ভেতর থাকলেও তা সাথে নিয়ে নামায আদায় সহীহ নয়।

*

>التجنيس والمزيد< ১/২৫৯ : رجل صلى وفي كمه قارورة، وفيها بول لا تجوز الصلاة معها، سواء كانت ممتلئة أو غير ممتلئة؛ لأن هذا ليس فى معدنه و مظانه.

উয়ূনুল মাসায়িল, পৃ. ২৫; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/১৭০; আলবেনায়াহ ১/২৮৮; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ১৯৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৬২; আলবাহরুর রায়েক ১/২৬৭

শেয়ার লিংক

জারীর - সিরাজগঞ্জ

৬৬৭১. প্রশ্ন

তারাবীতে ১৩তম পারা তিলাওয়াত করছিলাম। ১০ম পৃষ্ঠায় এসে আমি সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে সিজদা দিই। কিন্তু সিজদা থেকে উঠে আমি সামনের আয়াত মনে করতে পারছিলাম না। তাই আবার পৃষ্ঠার শুরু থেকে পড়া শুরু করি এবং আবার সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করি। কিন্তু লোক-লজ্জার কারণে দ্বিতীয়বার আর সিজদা করিনি। জানতে চাই, সিজদার আয়াতটি পুনরায় পড়ার কারণে কি আমার ওপর আবার সিজদা করা ওয়াজিব ছিল? ওয়াজিব হয়ে থাকলে পুনরায় সিজদা না করার কারণে কি কোনো সমস্যা হয়েছে?

উত্তর

না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে পুনরায় সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হয়নি। কেননা সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায়ের পর দাঁড়িয়ে ওই রাকাতেই উক্ত আয়াতটি আবার পড়লে পুনরায় সিজদায়ে তিলাওয়াত ওয়াজিব হয় না। অতএব এক্ষেত্রে পুনরায় সিজদা না করা নিয়মসম্মতই হয়েছে।

* >الجامع الكبير< ص ১০ : وإن قرأ في الركعة الأولى سجدة، فسجد لها، ثم قام، فأعادها، لم يسجد.

মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৪২২৩; আলমুহীতুর রাযাবী ১/৪৩৬;

ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/১৪০; আলজাওহারাতুন নাইয়িরা ১/১০৬; মারাকিল ফালাহ, পৃ. ২৭০

শেয়ার লিংক

মাহদী হাসান - চাঁদপুর

৬৬৭২. প্রশ্ন

একদিন নফল নামাযে সিজদার আয়াত আসলে সিজদা আদায় করি। সিজদা থেকে উঠে ভুলবশত পুনরায় সূরা ফাতেহা পড়ে নিই। এজন্য নামাযের শেষে সাহু সিজদা আদায় করি। জানতে চাই, এক্ষেত্রে আমার সাহু সিজদা করা কি ঠিক হয়েছে?

উত্তর

না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার সাহু সিজদা করা ঠিক হয়নি। কেননা সূরা ফাতেহার সাথে সূরা মেলানোর পর পুনরায় সূরা ফাতেহা পড়ে ফেললে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় না। তাই আপনার সাহু সিজদা ছাড়াই নামায শেষ করা উচিত ছিল। অবশ্য এক্ষেত্রে সাহু সিজদা করা ভুল হলেও আপনার নামায আদায় হয়ে গেছে।

 

* >الفتاوى من أقاويل المشايخ (فتاوى النوازل) للسمرقندي، ص ৯৯ : سئل علي بن أحمد عن رجل قرأ يوم الجمعة، يعني في صلاة الفجر سورة السجدة، فلما سجد وقام قرأ فاتحة الكتاب، ثم قال: >تتجافى جنوبهم عن المضاجع...<، هل يجب عليه سجدتا السهو؟ قال: لا. قيل أليس قد قالوا : لو قرأ فاتحة الكتاب مرتين ساهيا يجب عليه سجدتا السهو؟ قال: يجب إذا قرأ مرتين متواليتين.

আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ২/১৩৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৭৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১২১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৪৭৩; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৯০, ৪৪৪

শেয়ার লিংক

মুসলিম উদ্দিন - দিনাজপুর

৬৬৭৩. প্রশ্ন

এক ব্যক্তি মসজিদে যোহর নামায পড়ছিল। তৃতীয় রাকাতে তার মনে পড়ল, ঐ দিনের ফজর নামায তার কাযা হয়েছে এবং তা পড়া হয়নি। এক্ষেত্রে লোকটির করণীয় কী?

উল্লেখ্য, ঐ ব্যক্তির যিম্মায় অন্য কোনো কাযা নামায নেই।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে নামাযটি পূর্ণ করে নেবে। এরপর এই ছুটে যাওয়া ফরয নামাযটি আদায় করবে। অতঃপর তাকে এই যোহর নামাযটি পুনরায় আদায় করে নিতে হবে। কেননা ওয়াক্তিয়া নামাযের মাঝে আগের ওয়াক্তের কাযার কথা স্মরণ হলে ফরয নামাযটি বাতিল হয়ে যায় এবং তা নফল হয়ে যায়। অতএব এরপর কাযা নামাযটি আদায় করে ওয়াক্তিয়া নামাযটি পুনরায় পড়া জরুরি।

আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন

مَنْ نَسِيَ صَلَاةً، فَذَكَرَهَا مَعَ الْإِمَامِ، فَلْيُصَلِّهِ مَعَهُ، ثُمَّ لِيُصَلِّ الَّتِي نَسِيَ، ثُمَّ لِيُصَلِّ الْأُخْرَى بَعْدَ ذَلِكَ.

অর্থাৎ কোনো ব্যক্তির কোনো নামায ছুটে গেল, এরপর ইমামের পেছনে (পরবর্তী নামাযে) তার ছুটে যাওয়া নামাযটির কথা মনে পড়ল, তাহলে সে ইমামের সঙ্গে নামায শেষ করবে। এরপর তার ছুটে যাওয়া নামাযটি আদায় করবে। অতঃপর (ইমামের পেছনে আদায়কৃত) নামাযটি পুনরায় পড়ে নেবে। (শরহু মাআনিল আছার, তাহাবী, হাদীস ২৬১৯)

* كتاب >الأصل< للشيباني ১/১২৯ : قلت: أرأيت إن كان في أول وقت الظهر، وقد نسي الفجر، فلم يذكرها حتى صلى الظهر، فلما فرغ من الظهر ذكر الفجر؟ قال: يصلي الفجر، وقد تمت الظهر. قلت: فإن ذكر ذلك، وقد بقيت عليه ركعة من الظهر؟ قال: الظهر فاسدة، وعليه أن يصلي الفجر، ثم يعيد الظهر.

সুনানে দারাকুতনী, বর্ণনা ৫৫৯; আলমাবসূত, সারাখসী ১/১৫৪; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৪৭, ৩৫০; আলগায়া, সারুজী ৪/৪২১; মি‘রাজুদ দিরায়া ২/১২২

শেয়ার লিংক

নূরুল্লাহ - ভোলা

৬৬৭৪. প্রশ্ন

আমার কপালে একটি ফোঁড়া উঠেছে। যার কারণে সিজদার সময় কপাল জমিনে লাগাতে খুবই কষ্ট হয়। এমতাবস্থায় কি আমার জন্য জমিনে কপাল না লাগিয়ে শুধু নাক দ্বারা সিজদা করার অবকাশ আছে?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী যেহেতু কপাল দ্বারা সিজদা করা আপনার জন্য অতি কষ্টকর, তাই এক্ষেত্রে আপনি শুধু নাক দ্বারা সিজদা করতে পারবেন। এতে আপনার সিজদা আদায় হয়ে যাবে। কেননা ওজরের কারণে জমিনে কপাল লাগাতে সক্ষম না হলে বা অধিক কষ্টকর হলে শুধু নাক দ্বারা সিজদা করাই যথেষ্ট।

তবে মনে রাখতে হবে, কোনো ওজর ছাড়া সিজদার সময় জমিনে কপাল না লাগালে সিজদা আদায় হবে না, এবং ঐ নামায সহীহ হবে না।

* كتاب >الأصل< ১/১৯১ : قلت: أرأيت رجلا في جبهته جرح ولا يستطيع أن يسجد عليه هل يجزيه أن يومئ إيماء؟ قال: لا، ولكن يسجد على أنفه. قلت: فإن أومأ ايماء؟ قال: لا يجزيه، وعليه أن يعيد الصلاة.

খিযানাতুল আকমাল ১/৫৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৭০, ১৩৬; হার্শিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ২৩৫

শেয়ার লিংক

আফজাল হোসাইন - কিশোরগঞ্জ

৬৬৭৫. প্রশ্ন

আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব তারাবীর নামাযের আগে সিজদায়ে তিলাওয়াতের কথা এলান করতে ভুলে গেছেন। তাই সিজদার আয়াত পড়েই রুকুতে চলে গেছেন এবং রুকুতেই সিজদায়ে তিলাওয়াতের নিয়ত করেছেন। এরপর স্বাভাবিক নিয়মে রুকু-সিজদা ইত্যাদি আদায় করে নামায শেষ করেছেন। বিষয়টি মুক্তাদীদের জানা ছিল না।

জানার বিষয় হল, তারা যেহেতু ইমামের সঙ্গে রুকু করেছে, তাই এর দ্বারাই কি তাদের সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হয়েছে, নাকি তাদের জন্যও রুকুতে সিজদায়ে তিলাওয়াতের নিয়ত করা জরুরি ছিল?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইমাম-মুক্তাদী সকলের নামায ও সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হয়ে গেছে।

উল্লেখ্য যে, উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে, প্রতিটি সিজদার আয়াতের জন্য পৃথকভাবে সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় করে নেওয়া। আগে ঘোষণা না দিলে সিজদা করা যাবে না এমন কথা তো নয়। সাধারণ মানুষের বুঝতে সমস্যা হবে মনে হলে ইমাম সিজদায় যাওয়ার জন্য লম্বা তাকবীর বলতে পারেন।

আর ইমাম সিজদার আয়াত পড়ার পর সাথে সাথেই কিংবা সর্বোচ্চ দুই আয়াত পড়ার পরই যদি রুকুতে চলে যান, তাহলে কোনো নিয়ত ছাড়াই ঐ রাকাতের সিজদা দ্বারা ইমাম-মুক্তাদী সকলের সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হয়ে যায়।

অবশ্য এক্ষেত্রে ইমাম যদি রুকুতেই সিজদা আদায়ের নিয়ত করে নেন, কিন্তু মুক্তাদী নিয়ত না করে, সেক্ষেত্রে ঐ মুক্তাদীর সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হবে কি না এ বিষয়ে ফকীহগণ থেকে সিজদা আদায় হয়ে যাওয়া ও আদায় না হওয়া, উভয় মত বর্ণিত রয়েছে। তাছাড়া অনেক ফকীহের মতে এক্ষেত্রে নিয়ত করা ছাড়াই রুকু করার দ্বারা (ইমাম, মুক্তাদী, একাকী নামায আদায়কারী সকলের) সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হয়ে যায়।

তাই ইমামের জন্য এক্ষেত্রে রুকুতে সিজদায়ে তিলাওয়াতের নিয়ত না করাই সহজ ও নিরাপদ পদ্ধতি। যেন সকল ফকীহের মত অনুযায়ী সকলের সিজদায়ে তিলাওয়াত আদায় হয়ে যায়।

* >إعلاء السنن< ৭/২৫৪ : ثم إذا ركع قبل أن يطول القراءة، هل تشترط النية لقيام الركوع مقام سجدة التلاوة؟ فالذي رجحه صاحب >البدائع< عدم اشتراطها، قال: ومن مشايخنا من قال : يحتاج ههنا إلى النية، ثم ذكر دليله ورد عليه، كما فيه. والله تعالى أعلم.

>حاشية الطحطاوي على الدر< ১/৩২৬ : (ولو نواها في ركوعه) أي عقيب التلاوة (لم يجزه) أي لم ينب سجود المؤتم عنها، ... وقيل: يجزيه، كما في القستاني.

বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৪৬; জামিউর রুমুয ১/২৪২; আলবাহরুর রায়েক ২/১২৩; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৬০; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫৯২; মুখতাসারু গুনইয়াতুল মুতামাল্লী, পৃ. ৩৭১, ৩৭৩; আদ্দুররুল মুখতার ১/১১২

শেয়ার লিংক

আবদুস সাত্তার - রংপুর

৬৬৭৬. প্রশ্ন

গত রমযানের ১০ তারিখে আমি পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী জমি থেকে ধান কেটে আনি। সেদিন অনেক গরম পড়েছিল। ফলে দুপুর ২টার দিকে আমি প্রচণ্ড পিপাসায় কাতর হয়ে পড়ি। আমার পক্ষে আর স্থির থাকা সম্ভব হয়নি। একপর্যায়ে আমি পানি পান করে ফেলি।

মুহতারামের নিকট আমার জানার বিষয় হল, আমাকে কি এখন সে রোযার কাযা করলে চলবে, নাকি এর কাফফারাও আদায় করতে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত বর্ণনা মতে বাস্তবেই যদি আপনি পিপাসায় এত বেশি কাতর হয়ে পড়েছিলেন যে, তখন নিজেকে ধরে রাখা বেশ কঠিন হয়ে উঠেছিল, তাহলে সেক্ষেত্রে আপনাকে রোযাটির শুধু কাযা আদায় করলেই হবে। কাফফারা আদায় করা জরুরি নয়।

উল্লেখ্য, খুব বেশি ওজর না হলে রমযানে রোযা অবস্থায় এত কঠিন কাজ করা ঠিক নয়, যার দরুন রোযাদার ব্যক্তি অধিক ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।

* >المجتبى شرح مختصر القدوري< ২/২৮৩ : أتعب نفسه في عمل حتى أجهده العطش فأفطر، لزمته الكفارة، وقيل لا، وبه أفتى البقالي.

বাদায়েউস সানায়ে ২/২৫২; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/১৮৯; শরহু মানযুমাতি ইবনে ওহবান   ১/৯৯; আলবাহরুর রায়েক ২/২৮২; রদ্দুল মুহতার ২/৪২০

শেয়ার লিংক

তানভীর হাসান - সিরাজগঞ্জ

৬৬৭৭. প্রশ্ন

রমযানে রোযা অবস্থায় মসজিদে বসে কুরআন কারীম তিলাওয়াত করছিলাম। তখন গলার ভেতর একটা মশা চলে যায়। অনেক চেষ্টা করেও আর বের করতে পারিনি। এ কারণে কি আমার রোযা ভেঙে গেছে? আমার জন্য কি সেদিনের রোযা কাযা করা আবশ্যক?

উত্তর

না, প্রশ্নোক্ত কারণে আপনার রোযা ভাঙেনি। তাই তা কাযা করতে হবে না। কেননা গলার ভেতর মশা চলে গেলে রোযা ভাঙে না।

মুজাহিদ রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، فِي الرَّجُلِ يَدْخُلُ حَلْقَهُ الذُّبَابُ، قَالَ : لاَ يُفْطِرُ.

(রোযা অবস্থায়) গলার ভেতর মাছি চলে গেলে এ সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, এ কারণে রোযা ভাঙবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৯৮৮৬)

* >خلاصة الفتاوى< ১/২৫৩ : لو دخل الذباب جوفه لم يضره.

কিতাবুল আছল ২/২১৩; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৩৮; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ২৯; আলজাওহারাতুন নাইয়িরা ১/১৭৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৯৫ 

শেয়ার লিংক

মুকাররম হোসেন - নোয়াখালী

৬৬৭৮. প্রশ্ন

রমযানে রোযা অবস্থায় পুকুরে গোসল করছিলাম। তখন কানের ভেতর পানি চলে যায়। এ কারণে কি আমার রোযা ভেঙে গেছে? আমার জন্য কি সেদিনের রোযা কাযা করা আবশ্যক?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার রোযা ভাঙেনি। তাই তা কাযা করতে হবে না। কেননা কানে পানি প্রবেশ করলে রোযা ভাঙে না।

অবশ্য কারো কানের পর্দা যদি ফাটা থাকে এবং তাতে তেল, পানি বা ঔষধ প্রবেশ করে এবং তা গলায় চলে যায়, তাহলে রোযা ভেঙে যাবে।

* >التجنيس والمزيد< ২/৩৭৮ : صائم اغتسل فدخل الماء أذنه، لا شيء عليه، وإن صب فيه متعمداً قالوا : عليه قضاء يومه. ... والمختار أنه لا شيء عليه في الوجهين.

আলহাবিল কুদসী ১/৩১৩; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৪৭; মি‘রাজুদ দিরায়া ২/৯২৮; মাজাল্লাতু মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী ১০/২/৪৫৪ 

শেয়ার লিংক

মাহবুবুর রহমান - সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ

৬৬৭৯. প্রশ্ন

রমযানে আমি একদিন রোযা অবস্থায় সফর শুরু করি। সফরে যেহেতু রোযা ভেঙে ফেলার সুযোগ আছে, তাই কোনো ওযর ছাড়াই আমি রোযাটি ভেঙে ফেলি।

হুজুরের কাছে জানতে চাই, আমার এ কাজটি কি ঠিক হয়েছে? আমার ওপর কি এর কাফফারা ওয়াজিব হবে?

উত্তর

সফরের অজুহাতে রোযাটি ভেঙে ফেলা আপনার জন্য জায়েয হয়নি। কেননা সফর অবস্থায় দিনের শুরু থেকে রোযা না রাখার সুযোগ থাকলেও এ অবস্থায় রোযা রেখে ফেললে শরীয়তসম্মত কোনো ওযর ছাড়া শুধু সফরের অজুহাতে তা ভেঙে ফেলা জায়েয নয়। কাজেই আপনার ঐ দিনের রোযাটি ভেঙে ফেলা গুনাহের কাজ হয়েছে। আপনাকে এর জন্য তাওবা-ইস্তিগফার করতে হবে। অবশ্য আপনার ওপর এ কারণে কাফফারা ওয়াজিব হবে না।

* >المبسوط< للسرخسي ৩/৬৮ : رجل أصبح في أهله صائما ثم سافر لم يفطر؛ لأنه حين أصبح مقيما وجب عليه أداء الصوم في هذا اليوم حقا لله تعالى، وإنما أنشأ السفر باختياره، فلا يسقط به ما تقرر وجوبه عليه، وإن أفطر فلا كفارة عليه.

বাদায়েউস সানায়ে ২/২৪৬; আযযাখিরাতুল বুরহানিয়া ৩/৯০; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২০৫; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৩১; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/৪৬৩

শেয়ার লিংক

ইয়ামিন - হোমনা, কুমিল্লা

৬৬৮০. প্রশ্ন

আমি গ্রামে গিয়ে প্রতি বছর কম-বেশি যাকাত আদায় করি। আমার ভাতিজা এলাকার গরিবদের একটা তালিকা প্রস্তুত রাখে। আমি সে অনুযায়ী যাকাত দিই। এ বছরও তার প্রস্তুতকৃত তালিকা অনুযায়ী যাকাত আদায় করেছি। পরে জানতে পেরেছি যে, তালিকাতে এমন দুয়েকজন লোকও ছিল, যাদেরকে বাহ্যত গরিব মনে হলেও তারা যাকাত গ্রহণের অনুপযুক্ত।

হুজুরের কাছে জানতে চাই, এক্ষেত্রে আমার ওপর কি পুনরায় ঐ যাকাত আদায় করা জরুরি? গরিব মনে করে যাকাত গ্রহণের অনুপযুক্ত কাউকে যাকাত দিলে সেক্ষেত্রে কী করণীয়?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে তাদেরকে যেহেতু আপনি দরিদ্র জেনেই যাকাত দিয়েছেন, তাই আপনার যাকাত আদায় হয়ে গেছে। তা পুনরায় আদায় করতে হবে না। কেননা কাউকে বাহ্যিক আলামতের ভিত্তিতে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত মনে করে যদি যাকাত প্রদান করা হয়, আর পরবর্তীতে জানা যায় যে, সে আসলে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত নয়, তাহলেও যাকাত আদায় হয়ে যায়। এক্ষেত্রে ঐ যাকাত পুনরায় আদায় করা জরুরি নয়।

আশআছ রাহ. বর্ণনা করেন

عَنِ الْحَسَنِ، فِي الرَّجُلِ يُعْطِي زَكَاتَهُ إلَى فَقِيرٍ، ثُمَّ يَتَبَيَّنُ لَهُ أَنَّهُ غَنِيٌّ، قَالَ : أَجْزَأَ عَنْهُ.

গরিব মনে করে কাউকে যাকাত দেওয়ার পর জানতে পারল যে, সে আসলে ধনী ছিল, এ ব্যাপারে হাসান বসরী রাহ. বলেন, তার যাকাত আদায় হয়ে গেছে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, বর্ণনা ১০৬৪৬)

তবে এমন ব্যক্তি যদি জানতে পারে যে, তা যাকাত ছিল, তাহলে সেক্ষেত্রে তার জন্য তা ভোগ করা জায়েয হবে না; বরং সম্ভব হলে তা যাকাতদাতার কাছে ফিরিয়ে দেবে। তখন যাকাতদাতা উপযুক্ত খাতে পুনরায় এ যাকাত আদায় করে দেবে। আর যদি তার জন্য যাকাতদাতার কাছে তা ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে যাকাতদাতার পক্ষ থেকে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে দিয়ে দেবে।

* >المبسوط< للسرخسي ৩/১২ : إن أعطاه غنيا، وهو لا يعلم بحاله، فإنه يجزئ إن وقع عنده أنه فقير، أو سأله فأعطاه، أو كان جالسا مع الفقراء، أو كان عليه زي الفقراء، ثم تبين أنه غني، جاز عند أبي حنيفة ومحمد رحمهما الله تعالى.

>فتح القدير< ২/২১৪ :  وهل يطيب للقابض إذا ظهر الحال، ولا رواية فيه، واختلف فيه، وعلى القول بأنه لا يطيب يتصدق به. وقيل: يرده على المعطي على وجه التمليك منه ليعيد الأداء.

শরহু মুখতাসারিত তাহাবী, জাস্সাস ২/৩৯৬; তুহফাতুল ফুকাহা ১/৩০৫আলমুজতাবা, যাহেদী ২/২২১, ২২৩; মি‘রাজুদ দিরায়া ২/৭৭৫; রদ্দুল মুহতার ২/৩৫২

শেয়ার লিংক

সাজ্জাদুর রহমান - শেরপুর

৬৬৮১. প্রশ্ন

আমার কিছু জমিজমা আছে। নিজেই সেগুলোতে চাষাবাদ করি। গত বছর হালচাষের প্রয়োজনে দুইটা গরু ক্রয় করেছিলাম। ক্রয়ের সময়ই মনে মনে নিয়ত ছিল, ভালো দাম পেলে কুরবানীর সময় বিক্রি করে দেব। কিন্তু কুরবানীর সময় বিক্রি করতে পারিনি।

জানার বিষয় হল, পরবর্তীতে বিক্রি করার নিয়ত থাকার কারণে কি গরুগুলো ব্যবসায়িক সম্পদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে? আমাকে কি এখন এগুলোর যাকাত আদায় করতে হবে?  

উত্তর

না, আপনাকে এ গরুগুলোর যাকাত আদায় করতে হবে না। কেননা আপনি সেগুলো কিনেছেন চাষাবাদের জন্য। চাষাবাদ বা অন্য কোনো প্রয়োজনে খরিদকৃত পশু/বস্তু ভবিষ্যতে দাম বাড়লে বিক্রি করে দেওয়া উদ্দেশ্য থাকলেও তা ব্যবসায়িক সম্পদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায় না।

* >عيون المسائل< ص ৩৩ : قال هشام : سألت محمدا عن رجل اشترى خادما للخدمة، وهو ينوي أن أصاب ربحا باع، هل فيها الزكاة؟ قال: لا، هكذا شراء للناس، إذا أصابوا ربحا باعوه.

আলমুহীতুল বুরহানী ৩/১৬৭; আলমুলতাকাত, পৃ. ৭৩; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/১৮৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২২৮; আদ্দুররুল মুখতার ২/২৭৪

শেয়ার লিংক

সুমাইয়া তাহেরা - পিরোজপুর

৬৬৮২. প্রশ্ন

আমাদের সমাজের প্রচলন এরকম যে, স্বামীরাই সাধারণত স্ত্রীদের সদাকাতুল ফিতর আদায় করে দেয়। তাই আমার স্বামীও আমার সদাকাতুল ফিতর আদায় করে থাকেন। বেশির ভাগ সময়ই আদায় করার আগে আমাকে তিনি সেটা জানান না।

উল্লেখ্য, আমার নিজেরও নেসাব পরিমাণ সম্পদ আছে এবং আমি যাকাতও আদায় করি। তাই আমার মনে খটকা লাগে যে, এভাবে আমার সদাকাতুল ফিতর আদায় হয় কি না?

হুজুরের নিকট জানতে চাই, এক্ষেত্রে স্বামী কি স্ত্রীর পক্ষ থেকে সদাকাতুল ফিতর আদায় করতে পারবে? স্ত্রীর অজান্তেই যদি স্বামী তার সদাকাতুল ফিতর আদায় করে দেয়, সেটা কি স্ত্রীর পক্ষ থেকে আদায় হবে?

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার সদাকাতুল ফিতর আদায় হয়ে যাবে। কেননা স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামী সদাকাতুল ফিতর আদায় করার ক্ষেত্রে তার জন্য স্ত্রীর অনুমতি নেওয়া জরুরি নয়; বরং স্ত্রীকে জানিয়ে আদায় করুক বা না জানিয়ে, সর্বাবস্থায় স্ত্রীর সদাকাতুল ফিতর আদায় হয়ে যাবে।

* >فتاوى قاضيخان< ১/২২৮ : وعن أبي يوسف رحمه الله تعالى إذا أدى عن زوجته أو عن أولاده جاز، وإن لم يؤمر بذلك؛ لأنه بمنزلة المأذون عنهم، وعليه الفتوى.

আলমাবসূত, সারাখসী ৩/১০৫; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/৪৫০আলইখতিয়ার ১/৩৮৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৯৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/৩৬৩

শেয়ার লিংক

আলী আকবর চৌধুরী - মাইজদি, নোয়াখালী

৬৬৮৩. প্রশ্ন

আমার ছেলে বিদেশে থাকতে তার জন্য আমার স্ত্রী এক পাত্রী দেখে রাখে। ছেলে দেশে আসার পর প্রস্তাব দেব তখন শুনি, মেয়ে পক্ষের অন্য এক পরিবারের সাথে কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়েছে। তবে এখনো আকদ হয়নি। এখন আমার পরিবারের সবাই বলছে, আমরা যেহেতু পাত্রী আগে দেখে রেখেছি এবং আমাদের বংশও উচ্চমানের, তাই এলাকার গণ্যমান্য কয়েকজনসহ গিয়ে প্রস্তাব দিলে তারা আমাদের প্রস্তাবে সাড়া দিতে পারে।

জানতে চাচ্ছি, এক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তাব দিতে কোনো অসুবিধা আছে?

উত্তর

আপনারা যেহেতু এখনো পর্যন্ত পাত্রীপক্ষের কাছে প্রস্তাব দেননি; বরং শুধু মনে মনে পছন্দ করে রেখেছেন, আর আপনাদের আগেই অন্য পরিবার প্রস্তাব দিয়ে পাত্রীপক্ষের সাথে কথা-বার্তাও চূড়ান্ত করে ফেলেছে, তাই এখন আপনাদের জন্য সেখানে প্রস্তাব দেওয়া জায়েয হবে না। অবশ্য কোনো কারণে তারা যদি প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে তখন প্রস্তাব দিতে পারবেন।

হাদীস শরীফে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন

وَلاَ يَخْطُبَ الرَّجُلُ عَلَى خِطْبَةِ أَخِيهِ، حَتَّى يَتْرُكَ الخَاطِبُ قَبْلَهُ أَوْ يَأْذَنَ لَهُ الخَاطِبُ.

কোনো (মুসলিম) ভাইয়ের বিবাহের প্রস্তাবের ওপর অন্য কেউ যেন প্রস্তাব না দেয়, যতক্ষণ না ওই প্রস্তাবকারী তার প্রস্তাব উঠিয়ে নেয় বা তাকে প্রস্তাবের অনুমতি দেয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৫১৪২)

অন্য হাদীসে এসেছে, উকবা ইবনে আমের রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন

لَا يَحِلُّ لِامْرِئٍ مُسْلِمٍ يَخْطُبُ عَلَى خِطْبَةِ أَخِيهِ حَتَّى يَتْرُكَ.

কোনো মুসলিমের জন্য অপর (মুসলিম) ভাইয়ের বিবাহের প্রস্তাবের ওপর প্রস্তাব দেওয়া বৈধ নয়, যতক্ষণ না সে তার প্রস্তাব উঠিয়ে নেয়। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৭৩২৮)

* >الذخيرة البرهانية< ৭/৩৯৪ : إن النبي ‘ كما نهى عن الاستيام على سوم الغير، نهى عن الخطبة على خطبة الغير، والمراد من ذلك : أن يركن قلب المرأة إلى الخاطب الأول.

উমদাতুল কারী ২০/১৩২; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী, জাস্সাস ৪/৩৩৯; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৫১; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫৩৩

শেয়ার লিংক

জুনায়েদ - নাঙলকোট

৬৬৮৪. প্রশ্ন

আমার ছোট ফুফুর বিবাহের দুই বছর পর তার স্বামী তালাক দিয়ে দেয়। বিচ্ছেদের সময় তার এক বছরের একটি ছেলে সন্তান ছিল। তালাকের ইদ্দতের শেষে আরেকজনের সাথে তার বিবাহ হয় এবং এখনো তার সাথে ঘর সংসার করছে। তবে তার বিবাহের পরপরই আমার বড় ফুফু গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তার নয় মাসের এক দুগ্ধপোষ্য মেয়েকে ছোট ফুফু সপ্তাহখানেক দুধ পান করান।

এখন মুহতারামের কাছে জানার বিষয় হল, আমার বড় ফুফুর ঐ মেয়ের সাথে ছোট ফুফুর দ্বিতীয় এই স্বামীর দুধ সম্পর্ক সাব্যস্ত হয়েছে কি?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ছোট ফুফুর বর্তমান স্বামীর সাথে শিশুটির দুধ সম্পর্ক স্থাপিত হয়নি। কেননা আপনার ছোট ফুফুর বুকের দুধ আগের স্বামীর সূত্রে এসেছে। বর্তমান স্বামীর সূত্রে নয়। তাই আপনার ফুফুর তালাকদাতা পূর্বের স্বামীর সাথেই তার দুধ সম্পর্ক সাব্যস্ত হয়েছে। সে-ই তার দুধ-পিতা।

অবশ্য আপনার ফুফুর যেহেতু বর্তমান স্বামীর সাথে ঘর-সংসার হয়েছে, তাই তিনি মেয়েটির দুধ-পিতা না হলেও দুধ মায়ের স্বামী হিসেবে মাহরামের অন্তর্ভুক্ত।

* كتاب >الأصل< ৪/৩৬৯ : ولو أن امرأة طلقها زوجها أو مات عنها، فأرضعت صبيا بعد موت الرجل أو بعدما انقضت عدتها، فأسقت بذلك اللبن الذي كان من ذلك الرجل، فإنه يقوم في التحريم مقام لو لم يمت عنها ولا طلق حتى ينقطع ذلك اللبن. فإن تزوجت رجلا آخر بعدما مات عنها الأول أو طلقها، فأرضعت صبيا، كان اللبن من الأول.

* >شرح مختصر الكرخي< للقدوري ৪/২০৪ : ولا يحل له أن يتزوج بنت امرأته من الرضاع إن كان دخل بها.

শরহু মুখতাসারিত তাহাবী, জাস্সাস ৫/২৭৪; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৪০৯; আলহাবিল কুদসী ১/৩৭৬; আলবাহরুর রায়েক ৩/২২৬; আলজাওহারাতুন নাইয়িরা ২/৩৪

শেয়ার লিংক

আবদুল্লাহ - যশোর

৬৬৮৫. প্রশ্ন

এক বছর আগে আমার ছেলের শ্বশুর ইন্তেকাল করেছেন। আর আমার স্ত্রীর ইন্তেকাল হয়ে গেছে আরো তিন বছর আগে। এখন অনেকে আমাকে ছেলের শাশুড়িকে বিয়ে করার পরামর্শ দিচ্ছে।

জানার বিষয় হল, তাকে বিয়ে করতে শরীয়তে কি কোনো সমস্যা আছে?

উত্তর

না, এতে কোনো সমস্যা নেই। আপনি আপনার ছেলের বিধবা শাশুড়িকে বিবাহ করতে পারবেন।

* >شرح مختصر الكرخي< للقدوري ৩/৩৮৫: فحليلة الرجل حرام على أبيه دخل الابن بها أو لم يدخل؛ لأنها مبهمة، فيختص التحريم بها دون غيرها، فيجوز للأب أن يتزوج بأمهاتها وبناتها.

আলগায়া, সারুজী ১০/১৭৬; ফাতহুল কাদীর ৩/১২০; রদ্দুল মুহতার ৩/৩১

শেয়ার লিংক

আব্দুর রাকীব - যশোর

৬৬৮৬. প্রশ্ন

আমার বাড়ির পাশে এক প্রবাসীর জমি আছে। দীর্ঘদিন তা খালি পড়ে আছে। আমি তার সাথে এভাবে চুক্তি করতে চাচ্ছি যে, সেখানে আমি কিছু কাঠগাছ লাগাব। গাছগুলো বড় হলে আমরা তা বিক্রি করে এর মূল্য অর্ধেক হারে ভাগ করে নেব। জানার বিষয় হল, এভাবে চুক্তি করা কি জায়েয আছে?

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্ত চুক্তিটি সহীহ আছে। এভাবে একজনের জমিতে আরেকজন গাছ লাগিয়ে নির্ধারিত সময়ের পর পূর্ব চুক্তি অনুযায়ী গাছ বা গাছ বিক্রি করে তার মূল্য হারাহারিভাবে ভাগ করে নেওয়ার চুক্তি বৈধ আছে। তবে এক্ষেত্রে চুক্তির মেয়াদ তথা গাছ কাটার সময় নির্ধারণ করা জরুরি। মেয়াদ নির্ধারণ না করলে চুক্তি সহীহ হবে না।

* >خزانة الأكمل< ৩/২৭৫ : ولو دفع أرضه معاملة عشرين سنة، على أن يغرس فيها ما بدا له من نخل وكرم وشجر من عند العامل، فهذا على أربعة أوجه، أحدها: اشترطا الأشجار وثمارها بينهما نصفان، جاز.

আলবাহরুর রায়েক ৮/১৬৫; জামিউর রুমুয ৩/২৭৬; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৪৮; রদ্দুল মুহতার ৬/২৮৯; শরহুল মাজাল্লা, আতাসী ৪/৩৯৭; দুরারুল হুক্কাম ৩/৪৮১

শেয়ার লিংক

আলমগীর - যশোর

৬৬৮৭. প্রশ্ন

আমার মুদি দোকান আছে। এলাকার এক কৃষক আমার থেকে বাকিতে পণ্য নেয়। একবার সে বিশ হাজার টাকা বাকি করে ফেলে। তার হাতে টাকা না থাকায় সে পরিশোধ করতে পারছিল না। এক পর্যায়ে ঐ টাকার বিনিময়ে আমি তার থেকে এভাবে ধান কেনার চুক্তি করি যে, তিনমাস পর এ মৌসুমের ধান উঠলে সে আমাকে বিশ মন আটাশ জাতের ধান দিবে। এতে সে সম্মতি জানায়।

প্রশ্ন হল, তার থেকে এভাবে ধান কেনা কি সহীহ হয়েছে?

উত্তর

না, তার নিকট আপনার পাওনা টাকার বিনিময়ে তিনমাস পর তার থেকে ধান নেওয়ার ক্রয় চুক্তিটি সহীহ হয়নি। কেননা এটি শরীয়তের দৃষ্টিতে বাইয়ে সালামের মতো হয়েছে। আর বাইয়ে সালাম সহীহ হওয়ার জন্য চুক্তির সময় মূল্য নগদে পরিশোধ করা শর্ত। কারো নিকট পাওনা টাকার বিনিময়ে তার সাথে বাইয়ে সালাম করা সহীহ নয়। কেননা এতে পণ্য ও মূল্য দুটোই دين তথা বকেয়া থেকে যায়। যা শরীয়তে নিষিদ্ধ। অতএব আপনাদের প্রশ্নোক্ত চুক্তিটি বাতিল করে দিতে হবে।

এক্ষেত্রে পাওনা টাকার পরিবর্তে তার থেকে অন্য কিছু নিতে চাইলে সেটি তার থেকে নগদ পণ্যে ক্রয়-বিক্রয়ের চুক্তির মাধ্যমে হতে হবে। যদি তার নিকট সেই পণ্য তখন না থাকে, তাহলে যখন সে পণ্য নগদে দিতে পারবে সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

* >المحيط الرضوي< ২/৩২২ : ولو أسلم إلى رجل دينا له عليه لم يجز؛ لأنه دين بدين، وهو منهي عنه.

আলজামিউস সাগীর, পৃ. ৩২৩; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৪৩৫; আলমুহীতুল বুরহানী ১০/২৯৪; ফাতাওয়া খানিয়া ২/১২০; ফাতহুল কাদীর ৬/২২৯; আলবাহরুর রায়েক ৬/১৬৪

শেয়ার লিংক

খালিদ হাসান - যশোর

৬৬৮৮. প্রশ্ন

আমার বাসায় মার্বেল পাথর লাগিয়ে দেওয়ার জন্য মিস্ত্রির সাথে এভাবে চুক্তি করেছি, তাকে প্রতি স্কয়ার ফিটে নির্দিষ্ট পরিমাণ পারিশ্রমিক দেওয়া হবে। এরপর সে কাজ করতে গিয়ে একটা পাথর ভেঙে ফেলে। তার কাছে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হলে সে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তার দাবি হল, এক্ষেত্রে তার কোনো ত্রুটি ছিল না। তাই সে এর জরিমানা দেবে না। কিন্তু মার্বেলটি তার হাতেই ভেঙেছে।

প্রশ্ন হল, এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান কী? মিস্ত্রি কি ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য নয়?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি ঐ মিস্ত্রি থেকে তার হাতে ভাঙা পাথরটির ক্ষতিপূরণ নিতে পারবেন।

অবশ্য পাথরটি ভেঙে যাওয়ার পেছনে বাস্তবে যদি তার কোনো ত্রুটি না থাকে, তাহলে নৈতিকতার দাবি হল তার থেকে ক্ষতিপূরণ না নেওয়া।

* >مجلة الأحكام العدلية< (المادة ৬১১) : الأجير المشترك يضمن الضرر والخسائر التي تولدت عن فعله ووصفه، إن كان بتعديه وتقصيره أو لم يكن.

মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২১৪৫৭; আলমাবসূত, সারাখসী ১৬/২৪; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৭৪; আলজাওহারাতুন নাইয়িরা ১/৩৪৫; আদ্দুররুল মুখতার ৬/৬৪

শেয়ার লিংক

আবদুল আহাদ - বেগমগঞ্জ, নোয়াখালী

৬৬৮৯. প্রশ্ন

আমার আম্মা এলাকার এক মহিলা থেকে বিশেষ প্রয়োজনে পঞ্চাশ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছেন এবং তার কাছে কিছু স্বর্ণালংকার বন্ধক রেখেছেন। কিন্তু তিনি কোথাও বেড়াতে গেলে বা কোনো অনুষ্ঠানে গেলে স্বর্ণালংকারগুলো ঐ মহিলা থেকে নিয়ে ব্যবহার করেন।

এখন জানার বিষয় হল, আমার আম্মার জন্য কি বন্ধকি অলংকার বন্ধকগ্রহীতা থেকে নিয়ে ব্যবহার করা জায়েয হবে? এতে কি শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো সমস্যা আছে? আর এ বন্ধকি জিনিস ব্যবহারের সময় হারিয়ে গেলে এর দায়ভার কার ওপর থাকবে?

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার আম্মা বন্ধকগ্রহীতার অনুমতিক্রমে তার থেকে বন্ধকি অলংকারগুলো এনে ব্যবহার করতে পারবেন। এতে অসুবিধা নেই। তবে বন্ধকি অলংকারগুলো ব্যবহারের জন্য আনার পর পুনরায় বন্ধকগ্রহীতার নিকট ফেরত দেওয়া পর্যন্ত অলংকারগুলোর দায়ভার আপনার আম্মার ওপর থাকবে। সুতরাং মাঝের এ সময়ে আপনার আম্মার নিকট অলংকারগুলো থাকাবস্থায় তা হারিয়ে গেলে কিংবা এর কোনো ক্ষতি হলে এর দায় ও ক্ষতি বন্ধকগ্রহীতার ওপর বর্তাবে না। তাই এ কারণে তার ঋণ থেকে কোনো কিছুই কর্তন করা যাবে না; বরং সে পূর্ণ ঋণই ফেরত পাবে।

* >الفتاوى الولوالجية< ৫/৬৯ : ولو أعار الراهن من المرتهن أو المرتهن من الراهن لا يبطل الرهن؛ لأن حق المرتهن حق لازم، فلا يبطل إلا بإبطاله، وإذا أعار الرهن من الراهن خرج من ضمانه؛ لأن يد الراهن على الرهن يد نفسه.

আলমাবসূত, সারাখসী ২১/১০৬, ১০৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৭/১৮৭; রদ্দুল মুহতার ৬/৫১১; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়া, মাদ্দাহ ৭৪৯; শরহুল মাজাল্লাহ, আতাসী ৩/১৯৩

শেয়ার লিংক

সাহেব আলী - যশোর

৬৬৯০. প্রশ্ন

আমার বন্ধু রাশেদ টাইলসের দোকানে দীর্ঘদিন কর্মচারী হিসেবে কাজ করেছে। এখন আমরা দুইজন প্রত্যেকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে মোট দশ লক্ষ টাকা দিয়ে টাইলসের দোকান দিতে চাচ্ছি। দুজনই সমানভাবে ব্যবসায় শ্রম দিব। রাশেদের যেহেতু এ ব্যবসায় পরিচিতি ও অভিজ্ঞতা বেশি, তাই সে লাভের ৬৫% নিতে চাচ্ছে, আর আমাকে দিবে ৩৫%।

প্রশ্ন হল, উভয়ের পুঁজি তো সমান। শ্রমও দুজনই দিব। সেক্ষেত্রে কেবল পরিচিতি ও অভিজ্ঞতা বেশি থাকার কারণে কি তার জন্য মূলধন থেকে বেশি হারে লভ্যাংশ নির্ধারণ করা শরীয়তসম্মত হবে?

উত্তর

হাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার বন্ধু রাশেদের জন্য মুনাফার অনুপাত বেশি ধার্য করা সহীহ হবে। কেননা যৌথ মূলধনী কারবারে শরীকদের সবাই শ্রম দিলেও এবং তাদের পুঁজি সমান হলেও মুনাফা সমান হওয়া আবশ্যক নয়; বরং অংশীদারগণ সমঝোতার মাধ্যমে তাতে তারতম্য করে চুক্তি করতে পারে।

তাই এক্ষেত্রে আপনাদের এভাবে মুনাফা বণ্টনের চুক্তি বৈধ হবে। তবে কোনো কারণে ব্যবসায় লোকসান হলে তা উভয়কে নিজেদের মূলধনের অনুপাতে বহন করতে হবে। এক্ষেত্রে পুঁজির অনুপাত থেকে কম-বেশি করে লোকসান বহন করার চুক্তি করলেও তা ধর্তব্য হবে না।

* >المبسوط< للسرخسي ১১/১৫৬ : إذا تساويا في رأس المال واشترطا أن يكون الربح بينهما ثلاثا، أو تفاوتا في رأس المال، فكان لأحدهما ألف وللآخر ألفان، واشترطا أن يكون الربح بينهما نصفين: يجوز عندنا.

মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ২০৩৩৬; কিতাবুল আছল ৪/৬২; বাদায়েউস সানায়ে ৫/৮৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/২৪৪; আলবাহরুর রায়েক ৫/১৭৪; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়া, মাদ্দাহ ১৩৪৫

শেয়ার লিংক

মনীরুল ইসলাম - নোয়াখালী

৬৬৯১. প্রশ্ন

আমার আম্মার ওপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। কেননা তার নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই। কিন্তু তার পরও তিনি একটি বিশেষ কারণে মান্নত করেছেন যে, এ বছর কুরবানী দেবেন।

জানার বিষয় হল, তার মান্নতের কুরবানীর জন্য কি আলাদা একটি ছাগল কিনতে হবে, নাকি আমরা ভাইয়েরা মিলে কুরবানীর জন্য যে গরু কিনব তাতে এক অংশ নেওয়ার দ্বারাও তাঁর মান্নত পুরা করা যাবে?

উত্তর

আপনার মায়ের উক্ত মান্নত আদায়ের জন্য আলাদা ছাগল কুরবানী করা জরুরি নয়। বরং কুরবানীর গরুর এক অংশ দ্বারাও তা আদায় করা যাবে। কুরবানীর গরুতে মান্নতের অংশ নেওয়াও জায়েয আছে।

তবে এক্ষেত্রে লক্ষণীয় যে, উক্ত মান্নতের অংশের গোশত আপনার আম্মা এবং আপনাদের জন্য খাওয়া জায়েয হবে না; বরং তা যথাযথভাবে মেপে পৃথক করে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত দরীদ্রদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে।

আলমাবসূত, সারাখসী ৪/১৪৪, ১৪৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩২০; আলমুহীতুর রাযাবী ৬/৫৯, ৬৩; মাজমাউল আনহুর ৪/১৭০; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬

শেয়ার লিংক

সুহাইল - মালিবাগ

৬৬৯২. প্রশ্ন

আমাদের বাড়িতে তিন সপ্তাহ আগে জিইয়ে রেখে খাওয়ার জন্য ছোট সাইজের পাঁচ কেজি শোল মাছ কেনা হয়। পরে এগুলোকে একটি ড্রামের ভেতরে পানিতে জিইয়ে রাখা হয়। কয়েকদিন আগে আমাদের ঘরের একজন সদস্য বেখেয়ালীতে ড্রামের মুখ একেবারে আটকে দেয়, যার ফলে সবগুলো মাছ অক্সিজেনের অভাবে মারা যায়। এই মরা মাছগুলো খাওয়া হালাল হবে কি না এ নিয়ে আমরা সংশয়ে পড়ি। পরে তা ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়। মুহতারাম এখন আমাদেরকে এ বিষয়ে শরীয়তের সঠিক সমাধান জানিয়ে উপকৃত করবেন।

উত্তর

হাঁ, অক্সিজেনের অভাবে মৃত মাছগুলো খাওয়া জায়েয হবে। তা খেতে কোনো সমস্যা নেই। কেননা কোনো দুর্যোগ, আঘাত, অক্সিজেন-ঘাটতি, তীব্র উষ্ণতা, ঠান্ডা ইত্যাদি কোনো কারণ ছাড়া এমনিতেই যদি মাছ মরে যায়, তবে সেটি খাওয়া নিষেধ। কিন্তু কোনো কারণবশত মরে গেলে তা খাওয়া জায়েয আছে।

* >المجتبى شرح مختصر القدوري< ৫/৩৮ : ثم الأصل في السمك عندنا أنه إذا مات بآفة يحل كالمأخوذ، والميت بالحر أو البرد أو الانخناق تحت الجمد أو إبانة بعضه أو اصطياد غيره إياه ونحوها، وإذا مات من غير آفة لا يحل، كالطافي.

ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৩৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/৪৮৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৪২৯; রদ্দুল মুহতার ৬/৩০৭

শেয়ার লিংক

আবু বকর - সেনবাগ, নোয়াখালী

৬৬৯৩. প্রশ্ন

আমার আব্বু শখ করে একটি বিড়াল পালা শুরু করেন। দুই মাস আগে বিড়ালটি চারটি বাচ্চা দেয়। এগুলো এখন আমাদের ঘরেই থাকে। কিন্তু বাচ্চাগুলোর উৎপাত ঘরের লোকজনের সহ্যের বাইরে চলে গেছে। বিছানাপত্র, খাবার-দাবার কিছুই এখন এগুলোর অনিষ্টতা থেকে নিরাপদ নয়; বরং এগুলোর কারণে আমাদেরকে প্রতিবেশীদের কথাও শুনতে হচ্ছে। তারা বলছেন, এগুলো যেন মেরে ফেলা হয়।

জানার বিষয় হল, এমতাবস্থায় আমাদের জন্য বিড়ালগুলো মেরে ফেলার সুযোগ আছে কি? যদি থাকে তাহলে এর জন্য কোন্ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে?

উত্তর

হাঁ, বিড়ালগুলো যদি মানুষের জন্য ক্ষতিকর ও অনিষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে এগুলোকে মেরে ফেলা জায়েয হবে। তবে এক্ষেত্রে বিড়ালগুলোকে অতিরিক্ত কষ্ট দিয়ে মারবে না; বরং যেভাবে কষ্ট কম হয় সেভাবে মারতে হবে। এক্ষেত্রে ধারালো ছুরি ইত্যাদি দিয়ে জবাই করে দেওয়া যেতে পারে অথবা কম কষ্টকর কোনো ঔষধও ব্যবহার করা যেতে পারে।

* >المحيط البرهاني< ৮/৯৪ : الهرة إذا كانت موذية لا يضرب، ولا يعرك أذنها، ولكنها تذبح بالسكين الحاد.

আলমুহীতুর রাযাবী ৫/৩৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩৭৫; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৬/৩৭০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩৬১; রদ্দুল মুহতার ৬/৩৮৮

শেয়ার লিংক