একদিন যোহরের নামাযের জন্য অযু করার পর লক্ষ করলাম, ডান হাতের কিছু অংশ শুকনো রয়ে গেছে। তখন আমি পুনরায় অযু করে নিই। জানার বিষয় হল, উক্ত অবস্থায় আমার করণীয় কী ছিল?
একদিন যোহরের নামাযের জন্য অযু করার পর লক্ষ করলাম, ডান হাতের কিছু অংশ শুকনো রয়ে গেছে। তখন আমি পুনরায় অযু করে নিই। জানার বিষয় হল, উক্ত অবস্থায় আমার করণীয় কী ছিল?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে শুধু শুকনো অংশ ধুয়ে নিলেই অযু সম্পন্ন হয়ে যেত। নতুন করে অযু করার প্রয়োজন ছিল না। তা সত্তে¡ও পূর্ণ অযু করে নেওয়া দূষণীয় হয়নি।
ইবনে জুরাইজ রাহ. বলেন, আমি আতা রাহ.-কে বললামÑ
نَسِيتُ شَيْئًا قَلِيلًا مِنْ أَعْضَاءِ الْوُضُوءِ مِنَ الْجَسَدِ. قَالَ: فَأَمِسّهُ الْمَاءَ.
অযুর অঙ্গের কোনো অংশ যদি ধুইতে ভুলে যাই তাহলে কী করণীয়? আতা রাহ. বললেন, ঐ অংশটুকু ধুয়ে নিবে। (মুসান্নাফে আবদুর রায্যাক, বর্ণনা ১১৩)
শেয়ার লিংকÑশরহু মুখতাসারিত তাহাবী ১/৩২৮; আলহাবিল কুদসী ১/১২১; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৭
আমার বয়স বারো বছর। গত বিশ দিন আগে আমার ঋতুস্রাব শুরু হয়। এরপর এখনো তা বন্ধ হয়নি। ধারাবাহিকভাবে চলছে। এমনকি নামাযের ওয়াক্তে আমি এতটুকু সময়ও পাই না, যে সময় আমি অযু করে ফরয নামাযটা আদায় করব। আমার জানার বিষয় হল, আমার অবস্থা যদি এভাবেই চলতে থাকে তাহলে আমার নামাযের কী হুকুম হবে? আমি কীভাবে নামায আদায় করব?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যখন থেকে আপনার হায়েয (ঋতুস্রাব) শুরু হয়েছে তখন থেকে প্রত্যেক মাসের উক্ত দশ দিন হায়েয হিসেবে গণ্য করবেন। দশ দিন শেষ হওয়ার পর থেকে পূর্ণ বিশ দিন পবিত্রতা গণ্য করবেন। অর্থাৎ ঐ নির্ধারিত দশ দিন পার হওয়ার পর গোসল করে পবিত্র হবেন এবং স্বাভাবিক নিয়মে নামায আদায় করবেন। এরপর থেকে যত দিন এই ওজর অব্যাহত থাকবে প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাযের জন্য নতুন করে অযু করতে হবে। উক্ত ওজর ব্যতীত অযু ভঙ্গের অন্য কোনো কারণ না পাওয়া গেলে ঐ অযু দিয়ে ওয়াক্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত নফল নামাযসহ কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি সবই করতে পারবেন।
শেয়ার লিংকÑজামে তিরমিযী, হাদীস ১২৬; কিতাবুল আছার, ইমাম মুহাম্মাদ, বর্ণনা ৫০; কিতাবুল আছল ১/২৯০; বাদায়েউস সানায়ে ১/১৫৮; আলইখতিয়ার ১/১০৭; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৩১; আলবাহরুর রায়েক ১/২১৪; রদ্দুল মুহতার ১/২৮৬
সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে আমার হাতে প্রচÐ যখম হয়। ডাক্তার তার উপর ব্যান্ডেজ করে দিয়েছে। ব্যান্ডেজ খোলা কষ্টসাধ্য হওয়ায় তার উপর মাসেহ করে নামায পড়ছিলাম। নামাযের মধ্যে হঠাৎ ব্যান্ডেজটি খুলে পড়ে যায়। সেই অবস্থায় নামায পূর্ণ করি।
আমার জানার বিষয় হল, আমার উক্ত নামায কি সহীহ হয়েছে? মাসেহকৃত ব্যান্ডেজ ক্ষত ভাল হওয়ার আগে খুলে পড়লে কি অযুর কোনো ক্ষতি হয়?
প্রশ্নোক্ত বর্ণনা থেকে বোঝা যাচ্ছে, আপনার ক্ষত ভাল হওয়ার আগেই ব্যান্ডেজটি খুলে গেছে। যদি এমনই হয়ে থাকে তাহলে আপনার অযু নষ্ট হয়নি এবং ঐ নামায আদায় হয়ে গেছে। কেননা ক্ষত ভাল হওয়ার আগে কোনো কারণে ব্যান্ডেজ খুলে পড়লে অযু নষ্ট হয় না। কিন্তু যদি ক্ষতস্থান শুকিয়ে যাওয়ার পর খুলে যায় তাহলে মাসেহ বাতিল হয়ে যায়। নামায অবস্থায় এমনটি ঘটলে নামায ছেড়ে দিয়ে ব্যান্ডেজের স্থানটি ধুয়ে নিয়ে পুনরায় নামায পড়তে হবে।
শেয়ার লিংকÑআলমাবসূত, সারাখসী ১/৭৪; বাদায়েউস সানায়ে ১/৯১; হালবাতুল মুজাল্লী ১/৩৪৭; আলইখতিয়ার ১/৯৭; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৫; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ১১৬; মারাকিল ফালাহ, পৃ. ৭৩
এক দিন সকালে আমার গোসল ফরয হয়। অসুস্থ থাকার কারণে ঘরের পাকা মেঝেতে তায়াম্মুম করে নামায আদায় করে নিই। আমার জানার বিষয় হল, পাকা মেঝেতে তায়াম্মুম করা কি সহীহ হয়েছে?
হাঁ, আপনার তায়াম্মুম সহীহ হয়েছে। মাটি জাতীয় যেকোনো পবিত্র জিনিসের উপর তায়াম্মুম করা সহীহ। আর সিমেন্ট-বালি দ্বারা তৈরি পাকা মেঝে মাটির হুকুমে।
শেয়ার লিংকÑকিতাবুল আছল ১/৮৫; আলমাবসূত, সারাখসী ১/১০৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৩৫; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৭৬; আলবাহরুর রায়েক ১/১৪৭
ফজরের নামাযের সময় অযু করে আমি উভয় পায়ে চামড়ার মোজা পরি। যোহরের নামাযের জন্য অযু করার সময় পা ধোয়ার পরিবর্তে আমি উক্ত মোজার উপর মাসেহ করি। এরপর ডান পা খুলে চুলকানোর কারণে মোজা খুলে চুলকাই। পরে শুধু সে পা ধুয়ে আসরের নামায পড়ে নিই। নামাযের পরে ইমাম সাহেবকে বিষয়টি জানালে তিনি বললেন, তোমার নামায হয়নি। এখন উভয় পা ধুয়ে পুনরায় নামায পড়ে নাও।
আমার জানার বিষয় হল, ইমাম সাহেব কি সঠিক বলেছেন? আসলেই কি আমার একটি মোজা খোলার কারণে উভয় পা ধোয়া আবশ্যক হয়ে গিয়েছিল? আমার কি উক্ত নামায পুনরায় পড়তে হবে?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে এক পায়ের মোজা খোলার কারণে আপনার মাসেহ বাতিল হয়ে গেছে। তাই এক্ষেত্রে মোজা খুলে উভয় পা ধুয়ে নেওয়া জরুরি ছিল। আর আপনি যেহেতু উভয় পা না ধুয়ে নামায পড়েছিলেন তাই আপনার উক্ত নামায সহীহ হয়নি। ইমাম সাহেব ঠিকই বলেছেন। এখন আপনাকে উভয় পা ধুয়ে (পবিত্রতা অর্জন করে) উক্ত নামায পুনরায় পড়ে নিতে হবে।
শেয়ার লিংকÑকিতাবুল আছল ১/৭৪; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ১/৪৫৫; ফাতহুল কাদীর ১/১৩৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৪; আলইনায়া ১/১৩৫; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৭৫; আলবাহরুর রায়েক ১/১৭৯
আমার বাবা নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়েন এবং বিতির নামায সবসময় তাহাজ্জুদের পরেই আদায় করেন। রমযান মাসে তার জন্য কোন্টি উত্তম? তাহাজ্জুদের পর বিতির পড়া, নাকি মসজিদে তারাবীর পর জামাতের সাথে বিতির আদায় করা? সঠিক মাসআলাটি জানালে উপকৃত হব।
রমযান মাসে বিতির নামায একাকী শেষ রাতে আাদায় করার চেয়ে তারাবীর পর জামাতের সাথে আদায় করা উত্তম। আর অন্য মাসে কেউ যদি শেষ রাতে ওঠার ব্যাপারে নিজের প্রতি আস্থাশীল হয় তাহলে তার জন্য শেষ রাতে পড়াই উত্তম। তাই আপনার বাবা অন্য মাসে তাহাজ্জুদের পর বিতির পড়লেও রমযান মাসে তারাবীর পর জামাতের সাথেই বিতির পড়ে নেবেন।
শেয়ার লিংকÑআলমুহীতুল বুরহানী ২/২৬৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৪৪; ফাতহুল কাদীর ১/৪০৯; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৪২১; মারাকিল ফালাহ, পৃ. ২১১
আমি একজন সিএনজি চালক। আগে নিয়মিত নামায পড়তাম না। এখন নিয়মিত পড়ার চেষ্টা করি। চারটা সূরাও শিখেছি, কিন্তু বিতরের নামাযে যে দুআয়ে কুনূত পড়তে হয় সেটা এখনও শিখতে পারিনি, জানার বিষয় হল, এমতাবস্থায় আমি বিতরের নামাযে কী পড়ব?
বিতরের দুআয়ে কুনূত হিসেবে প্রসিদ্ধ দুআটি পড়া উত্তম। তাই তা দ্রæত শিখে নেবেন। তবে এ স্থানে কুরআন-হাদীসের অন্য কোনো দুআ পড়লেও ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। তাই প্রসিদ্ধ দুআয়ে কুনূত শেখার আগ পর্যন্ত আপনি اللهُمّ اغْفِرْ لِيْ (আল্লাহুম্মাগ ফিরলী) এই দুআ তিনবার, অথবা
رَبَّنَاۤ اٰتِنَا فِی الدُّنْیَا حَسَنَةً وَّ فِی الْاٰخِرَةِ حَسَنَةً وَّ قِنَا عَذَابَ النَّارِ .
পড়তে পারেন।
শেয়ার লিংকÑমুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৬৯৬৬; কিতাবুল আছল ১/১৩৯; আলমাবসূত, সারাখসী ১/১৬৫; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/৩৩৩; বাদায়েউস সানায়ে ১/৬১৪; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১১১; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৪১৮
আমাদের এলাকার মসজিদের ভেতরের অংশ বারান্দার তুলনায় এক বিঘত উঁচু। একদিন মসজিদের ভিতরে কিছু কাজ হচ্ছিল। তাই মুসল্লিরা বারান্দায় দাঁড়ায়, তবে বারান্দা সঙ্কীর্ণ হওয়ায় ইমাম সাহেব একা মসজিদের ভেতরের অংশে দাঁড়ান। জানার বিষয় হল, ইমাম মুসল্লিদের তুলনায় উঁচু অংশে দাঁড়ানোর কারণে কি নামাযে কোনো সমস্যা হবে?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইমাম উঁচুতে দাঁড়ানোর কারণে নামাযের ক্ষতি হয়নি। কারণ একে তো ঐ জায়গা বেশি উঁচু নয়। সাধারণ অবস্থায় ইমামের মুসল্লিদের তুলনায় এক হাত বা তার বেশি পরিমাণ উঁচুতে দাঁড়ানো মাকরূহ। দ্বিতীয়ত ওজরের কারণে এমন উঁচুতে দাঁড়ালেও (যেমন জায়গা সঙ্কীর্ণতার কারণে হলে) সমস্যা নেই।
প্রকাশ থাকে যে, বিনা ওজরে ইমামের জন্য মুসল্লিদের থেকে উঁচু জায়গায় দাঁড়ানো ঠিক নয়; বরং তিনি মুসল্লিদের বরাবর সমান জায়গায় দাঁড়াবেন। আর কখনো ওজরবশত উঁচুতে দাঁড়াতে হলে সম্ভব হলে উঁচু স্থানেই ইমামের পেছনে বা ডানে-বামে দুজন মুসল্লিকে দাঁড় করাবে।
শেয়ার লিংকÑবাদায়েউস সানায়ে ১/৫০৮; আয্যাখীরাতুল বুরহানিয়া ২/৮৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২১১; ফাতহুল কাদীর ১/৩৬০; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৪১৩; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৩৬১; আদ্দুররুল মুখতার ১/৬৪৬
একাকী ফরয নামায আদায়ের ক্ষেত্রে কখনো কখনো আমি তৃতীয় বা চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে সূরা মিলিয়ে ফেলি। জানার বিষয় হল, এই সুরতে কি আমার উপর সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে?
ফরয নামাযের তৃতীয় ও চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে সূরা মিলানোর নিয়ম নেই। কিন্তু কেউ পড়ে ফেললে সাহু সিজদা ওয়জিব হবে না।
শেয়ার লিংকÑআলমুহীতুল বুরহানী ২/৩১০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৭৬; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/৩৫৩; ফাতহুল কাদীর ১/৪৩৮; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৩৩১; রদ্দুল মুহতার ১/৪৫৯
নামাযে হাঁচি দেয়ার পর ভুলে ‘আলহামদু লিল্লাহ’ বলে ফেললে নামায ফাসেদ হয়ে যাবে কি?
না, নামাযে হাঁচি দেওয়ার পর ‘আলহামদু লিল্লাহ’ বলে ফেললে নামায ফাসেদ হবে না। তবে নামাযে হাঁচি আসলে ‘আলহামদু লিল্লাহ’ না বলাই নিয়ম।
শেয়ার লিংকÑআততাজনীস ওয়াল মাযীদ ১/৪৯৮; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৩৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১২০; যাদুল ফাকীর, পৃ. ১৩৬; আলবাহরুর রায়েক ২/৫; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৪৩৯
অনেক সময় এমন হয় যে, প্রথম বৈঠকে আমি তাশাহহুদ শেষ করার পূর্বে ইমাম সাহেব তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যান, অথবা শেষ বৈঠকে আমি দরূদ শরীফ শেষ করার পূর্বেই ইমাম সাহেব সালাম ফিরিয়ে ফেলেন। এক্ষেত্রে আমার করণীয় কী?
তাশাহহুদ শেষ করার পূর্বে ইমাম দাঁড়িয়ে গেলেও আপনি যথাসম্ভব দ্রæত তাশাহহুদ পূর্ণ করবেন, এরপর ইমামের সাথে শরীক হবেন। আর দরূদ শরীফ যেহেতু সুন্নত, পক্ষান্তরে ইমামের অনুসরণ ওয়াজিব; তাই আপনার দরূদ শরীফ শেষ করার পূর্বে ইমাম সালাম বলে ফেললে ইমামের সাথেই সালাম ফিরিয়ে নিবেন। দরূদ শরীফ শেষ করার জন্য অপেক্ষা করবেন না।
শেয়ার লিংকÑমুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/২৯৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৯৬; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৫৯; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৫২৭; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/১০৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯০
একাকী নামায পড়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় এমন হয় যে, সূরার তারতীব ঠিক রাখতে পারি না। যেমন প্রথম রাকাতে ‘সূরা কুরাইশ’ আর দ্বিতীয় রাকাতে ‘সূরা আছর’ পড়ে ফেলি। জানার বিষয় হল, এমতাবস্থায় কি আমার উপর সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে?
ফরয নামাযে সূরাসমূহের তারতীব ঠিক রাখা মুস্তাহাব। ইচ্ছাকৃত তারতীব ভঙ্গ করা অনুত্তম। ভুলে কখনো তারতীব ভঙ্গ হয়ে গেলে সমস্যা নেই। এ ভুলের কারণে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় না।
শেয়ার লিংকÑআলমুহীতুল বুরহানী ২/৩১০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৯৭; আলবাহরুর রায়েক ২/৯৪; ইলাউস সুনান ৪/১৪৫
গতকাল মহল্লার মসজিদে এশার নামায জামাতের সাথে আদায় করি। সুন্নত-বিতির আদায়ের পর জানতে পারলাম, ফরয নামাযে সমস্যা হয়েছে। নামায দোহরাতে হবে। তাই সকলে মিলে পুনরায় এশার নামায জামাতে আদায় করি। অতঃপর বিতির না পড়ে শুধু সুন্নত পড়েই আমি বাসায় চলে আসি। আমি জানতাম, এমতাবস্থায় বিতির দ্বিতীয়বার পড়তে হয় না। আমার জানা কি ঠিক আছে? আমার বিতির না পড়া কি সঠিক হয়েছে, না বিতির দ্বিতীয়বার পড়া উচিত ছিল? ভবিষ্যতে এমন সমস্যার সম্মুখীন হলে কী করব?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে প্রথমবারই আপনার বিতির আদায় হয়েছে। বিতির পড়ার সময় এশার ফরযের পর। তাই এশার ফরয পড়ে বিতির পড়লেই তা আদায় হয়ে যায়। কখনো যদি বিতির আদায় করার পর ফরয নামাযটি সহীহ হয়নি বলে প্রমাণিত হয় তবুও বিতির পুনরায় পড়তে হবে না। কেননা তা যথাসময়েই আদায় হয়েছে।
শেয়ার লিংকÑকিতাবুল আছল ১/১২৪; আলমাবসূত, সারাখসী ১/১৫০; খিযানাতুল আকমাল ১/৪৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৮; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ২২৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫১
নামাযে মাসবুক হলে কখনো এমন হয় যে, বাকি নামায পূর্ণ করার সময় ইমামের সাথে কত রাকাত পেলাম তা স্মরণ থাকে না, তখন পাশের ব্যক্তি, যে আমার সাথেই নামাযে শরীক হয়েছে তার দেখাদেখি বাকি নামায পূর্ণ করি। জানার বিষয় হল, এভাবে অন্যের দেখাদেখি নামায পূর্ণ করলে তা সহীহ হবে কি? অন্যথায় এক্ষেত্রে করণীয় কী?
পাশের মাসবুক ব্যক্তির নামাযের প্রতি খেয়াল করে নিজের ছুটে যাওয়া রাকাতের সংখ্যা স্মরণ করা এবং সে অনুযায়ী নামায আদায় করা জায়েয। তাই আপনার আদায়কৃত ঐ নামায সহীহ হয়েছে।
প্রকাশ থাকে যে, নামাযে আরো মনোযোগী হওয়া উচিত। যেন এ ধরনের সমস্যা বারবার না হয়।
শেয়ার লিংকÑফাতাওয়া খানিয়া ১/১০৪; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/৯৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৬৩; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৪৬৭; আলবাহরুর রায়েক ১/৩৭৮; রদ্দুল মুহতার ১/৫৯৭
গতকাল মাগরিবের নামাযে আমি কল্পনা থেকে ভুলে মুখে কিছু কথা বলে ফেলি। আমার জানার বিষয় হল, আমার নামায কি সহীহ হয়েছে? না হলে আমাকে কি সেই নামায আবার পড়তে হবে?
নামাযে কথা বললে নামায ফাসেদ হয়ে যায়। ইচ্ছাকৃত বা ভুল যেভাবেই কথা বলা হোক একই হুকুম। সুতরাং উক্ত নামায কাযা করে নিতে হবে।
হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম রা. বলেনÑ
كُنّا نَتَكَلّمُ فِي الصّلَاةِ يُكَلِّمُ الرّجُلُ صَاحِبَهُ وَهُوَ إِلَى جَنْبِهِ فِي الصّلَاةِ حَتّى نَزَلَتْ وَ قُوْمُوْا لِلهِ قٰنِتِیْنَ فَأُمِرْنَا بِالسّكُوتِ، وَنُهِينَا عَنِ الْكَلَامِ.
আমরা নামাযে কথা বলতাম। নামাযী ব্যক্তি তার পাশের ব্যক্তির সঙ্গে নামাযে কথা বলত, অতঃপর যখন وَ قُوْمُوْا لِلهِ قٰنِتِیْنَ এই আয়াত নাযিল হল তখন আমাদেরকে চুপ থাকার আদেশ দেওয়া হয় এবং কথা বলতে নিষেধ করা হয়। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৩৯; সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৫৩৪
হযরত মুআবিয়া ইবনে হাকাম আসসুলামী রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনÑ
إِنّ هَذِهِ الصّلَاةَ لَا يَصْلُحُ فِيهَا شَيْءٌ مِنْ كَلَامِ النّاسِ، إِنّمَا هُوَ التّسْبِيحُ وَالتّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ.
নামাযে কোনো ধরনের কথাবার্তা বলার সুযোগ নেই, এ তো হল তাসবীহ তাকবীর ও কুরআনের তিলাওয়াত। Ñসহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৩৭
হযরত ইবনে জুরাইজ রাহ. বলেনÑ
أَرَأَيْتَ لَوْ سَهَوْتُ فِي الْمَكْتُوبَةِ فَتَكَلّمْتُ؟ قَالَ: بِلَفْظَةٍ؟ قُلْتُ: نَعَمْ، قَالَ: قَدِ انْقَطَعَتْ صَلَاتُكَ، فَعُدْ لَهَا جَدِيدًا.
আমি আতা রাহ.-কে জিজ্ঞেস করলাম, আমি যদি নামাযে ভুলে কথা বলে ফেলি (তাহলে এর কী হুকুম হবে?) তিনি বললেন, মুখে উচ্চারণ করে? আমি বললাম, হাঁ, তিনি বললেন, তাতে তোমার নামায ফাসেদ হয়ে গেছে, নতুন করে আবার পড়তে হবে। Ñমুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদীস ৩৫৬৬
ইবরাহীম নাখায়ী, কাতাদা ও হাম্মাদ রাহ. প্রমুখ তাবেঈ থেকেও অনুরূপ বক্তব্য বর্ণিত আছে। (মুসান্নাফে আব্দুর রায্যাক, হাদীস ৩৫৭১, ৩৫৭৩)
শেয়ার লিংকÑআলমাবসূত, সারাখসী ১/১৭০; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫৩৭; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/৩১৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৪৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৩৬; ফাতহুল কাদীর ১/৩৪৪; আলবাহরুর রায়েক ২/২
কিছু দিন আগে আমি খুব অসুস্থ ছিলাম। এমনকি লম্বা সময় পর্যন্ত আমার হুঁশও ছিল না। ফলে আমার ঐ দিনের ফজর, যোহর ও আছরের নামায কাযা হয়ে যায়। আমি মাগরিবের সময় উক্ত কাযা নামাযগুলো ধারাবাহিকভাবে আদায় করে তারপর মাগরিবের নামায আদায় করি। অসুস্থতার কারণে লম্বা সময় নামায পড়তে সামান্য কষ্ট হয়েছিল। তারপরও আমি উক্ত নিয়মে কাযা নামাযগুলো আদায় করি। আমাদের এলাকার এক ভদ্র লোক, যে মাঝেমধ্যে কিছু দ্বীনী কিতাব পড়েন তিনি বললেন, আপনি উক্ত নামাযগুলো আপনার সুবিধা মত পড়লেই পারতেন, এত কষ্ট করার প্রয়োজন ছিল না। আমার জানার বিষয় হল, একাধিক কাযা নামায আদায়ের ক্ষেত্রে কি ধারাবাহিকতা রক্ষা করা জরুরি?
উল্লেখ্য, লম্বা সময় নামায পড়ার কারণে আমার অসুস্থতা বাড়েওনি এবং বাড়ার আশংকাও ছিল না।
ঐ নামাযগুলো ধারাবাহিকভাবে আদায় করা নিয়মসম্মতই হয়েছে। কারণ কাযা নামাযের সংখ্যা পাঁচ ওয়াক্তের কম হলে সেগুলো আদায়ের ক্ষেত্রে ধরাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব। অর্থাৎ প্রথমে কাযা নামাযগুলোর মধ্যে প্রথম ফরয নামায আদায় করবে। এরপর ধারাবাহিকভাবে অন্যান্য ফরযগুলো আদায়ের পর ওয়াক্তিয়া নামায আদায় করবে।
শেয়ার লিংকÑজামে তিরমিযী, হাদীস ১৭৯; আলজামেউস সাগীর, পৃ. ৭৫-৭৬; আলমাবসূত, সারাখসী ১/১৫৩; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/৩৪৫; আলইখতিয়ার ১/২২০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২১
আমি একদিন প্রাইভেট কারে বাসা থেকে মাদরাসায় যাচ্ছিলাম। গাড়িতে উঠে কুরআন তিলাওয়াত শুরু করলাম। তখন একটি সিজদার আয়াত দুই-তিন বার পড়লাম। এক্ষেত্রে কি প্রত্যেকবার তিলাওয়াতের কারণে স্বতন্ত্র সিজদা আবশ্যক হবে। নাকি একটি সিজদা করলে যথেষ্ট হয়ে যাবে?
একই স্থানে থেকে একটি সিজদার আয়াত বারবার পড়লেও একটি সিজদাই আদায় করতে হয়। তাই গাড়িতে একটি সিজদার আয়াত বারবার তিলাওয়াত করলে প্রত্যেকবার তিলাওয়াতের জন্য স্বতন্ত্র সিজদা আবশ্যক হবে না; বরং একটি সিজদাই আদায় করবে।
শেয়ার লিংকÑআলমাবসূত, সারাখসী ২/১৪; বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৩৩; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৩৭০; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ১৪; আদ্দুররুল মুখতার ২/১১৪
আমি গোরস্থান মাদরাসায় পড়ি; তাই প্রায়ই দুই-একটা জানাযা নামায অনুষ্ঠিত হতে দেখি। অনেককে দেখা যায়, জুতা-স্যান্ডেল খুলে তার উপর দাঁড়ায়। আমার প্রশ্ন হল, জুতা যদি নাপাক হয় তাহলে জুতা খুলে তার উপর দাঁড়ানো জায়েয হবে কি?
আর যদি জুতা পবিত্র হয় তাহলে জুতা খুলে তার উপর দাঁড়ানোর প্রয়োজন কী?
জানাযা নামাযে দাঁড়ানোর নিয়ম বিস্তারিতভাবে দলীলসহকারে জানালে কৃতজ্ঞ হব।
জুতার নিচের অংশ নাপাক হলে তা পরিধান করে নামায পড়া যাবে না; তবে উপরিভাগ যদি পাক থাকে তাহলে জুতার উপরে দাঁড়িয়ে জানাযার নামায পড়া যাবে। এতে অসুবিধে নেই।
জানাযার নামাযের জায়গা যদি পাক হয় এবং জুতার উপর-নিচও পাক থাকে তাহলে জুতা পরিধান করেও জানাযার নামায পড়ার সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে জুতা খোলা জরুরি নয়।
উল্লেখ্য, জুতার উপরিভাগ যদি পাক থাকে তাহলে সতর্কতামূলক জুতার উপর দাঁড়ানোই ভালো। কেননা জুতার নিচে নাপাকি থাকার সম্ভাবনা থাকে।
শেয়ার লিংকÑসহীহ বুখারী, হাদীস ৩৮৬; উমদাতুল কারী ৪/১১৯; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ১/৩৯৬; আলমুহীতুল বুরহানী ২/২০; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৩০; আলবাহরুর রায়েক ২/১৭৯; হালবাতুল মুজাল্লী ১/৫৭৯
আমাদের এলাকায় একটি ছোট মসজিদ আছে। সেটিতে বর্তমানে মুসল্লিদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় তা সম্প্রসারণ করা খুবই প্রয়োজন। কিন্তু মসজিদের সামনে অনেক পুরাতন একটি কবর আছে, যা মসজিদের ওয়াকফিয়া জায়গাতেই অবস্থিত। এটি যদি আপন অবস্থায় বহাল রাখা হয় তাহলে তা মসজিদের ভেতরের অংশে চলে যায়। এমতাবস্থায় কবরটির জায়গায় কি মসজিদ সম্প্রসারণ করা যাবে? যদি যায় তাহলে কবরটি কী করা হবে? বিস্তারিত জানতে চাই।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কবরটি যেহেতু পুরাতন হয়ে গেছে এবং মসজিদের ওয়াকফিয়া জায়গায় অবস্থিত তাই উক্ত কবর সমান করে সেখানে মসজিদ সম্প্রসারণ করা যাবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু কবরটি সমান না করে কবরের হালতে রেখে দিয়ে সেখানে মসজিদ সম্প্রসারণ করা যাবে না।
শেয়ার লিংকÑসহীহ মুসলিম, হাদীস ৫২৪; শরহে মুসলিম, নববী ৫/৭; উমদাতুল কারী ৪/১৭৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/১৪৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৪৯০, ৪৭০; রদ্দুল মুহতার ৪/৪৪৫
আমি ভার্সিটির একজন ছাত্র। আগে দ্বীনের বুঝ না থাকায় নামায-রোযা ঠিকমত আদায় করতাম না। এখন দ্বীনের বুঝ পেয়েছি। তাই পিছনের জীবনে ছেড়ে দেওয়া নামায-রোযা কাযা করা শুরু করেছি। তখন অনেক রমযানে এমন হত যে, বাসার জোরাজুরির কারণে ভোর রাতে সাহরী করে রোযা রাখতাম। পরে ভার্সিটিতে এসে ভেঙ্গে ফেলতাম। এক আলেমের মুখে শুনেছি, এভাবে রোযা ভাঙ্গলে শুধু কাযা করলে হয় না; বরং কাফফারা অর্থাৎ এক রোযার জন্য ৬০টি রোযা রাখতে হয়। জানার বিষয় হল, আমি তো এভাবে অনেক রোযা ভেঙ্গেছি। এখন আমি এত কাফফারা কীভাবে আদায় করব? শরীয়তে আমার জন্য কোনো ছাড় আছে কি?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি বিনা ওযরে যতগুলো রোযা ভেঙ্গেছেন প্রত্যেকটির জন্য একটি করে কাযা আদায় করবেন। আর সবকটি রোযার জন্য একটি কাফফারা আদায় করবেন। যেটি পিছনের সবগুলো রোযার জন্য যথেষ্ট হবে। প্রতিটির জন্য ভিন্ন ভিন্ন কাফফারা আদায় করতে হবে না।
প্রকাশ থাকে যে, বিনা ওযরে রোযা ভাঙ্গা অনেক বড় অন্যায়। পরবর্তীতে এর কাযা সম্ভব হলেও এর যথাযথ ক্ষতিপূরণ কোনোভাবেই সম্ভব হয় না। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনÑ
مَنْ أَفْطَرَ يَوْمًا مِنْ رَمَضَانَ مِنْ غَيْرِ رُخْصَةٍ لَمْ يُجْزِهِ صِيَامُ الدَّهْرِ كُلِّهِ.
যে ব্যক্তি সফর অথবা অসুস্থতা ছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবেই রমযানের কোন রোযা ভঙ্গ করবে সে আজীবন রোযা রাখলেও এর সত্যিকারের বদলা হবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, বর্ণনা ৯৮৯৩)
সুতরাং সতর্ক থাকতে হবে, যেন সামনে এমন না হয়। আর পিছনের ভুলের জন্য কাযা-কাফফারার পাশাপাশি তাওবা-ইস্তেগফার করে নিতে হবে।
শেয়ার লিংকÑকিতাবুল আছল ২/১৫৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬০; খিযানাতুল আকমাল ১/৩২১; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ১/১০২; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; আদ্দুররুর মুখতার ২/৪১৩
আমাদের এলাকায় মশার খুব উপদ্রব। বিকাল হলেই দরজা-জানালা বন্ধ করে দিতে হয় মশা ঘরে কম ঢোকার জন্য। তারপরও ঘরে অনেক মশা থাকে। তাই আমরা কয়েল জালাই। একদিন রমযানে আমাদের বাসায় একজন মেহমান আসেন। আমরা স্বাভাবিকরীতি অনুযায়ী বিকালে কয়েল জালিয়ে দিই। তখন ঐ মেহমান বললেন, কয়েল বন্ধ কর। রোযা অবস্থায় কয়েল জালানো ঠিক নয়। এর ধোঁয়া নাকে গেলে রোযা নষ্ট হয়ে যায়। জানার বিষয় হল, ঐ মেহমানের কথা কি ঠিক?
লোকটির কথা ঠিক নয়। রোযা অবস্থায় কয়েল জালালে রোযার সমস্যা হয় না। কয়েল জালালে সাধারণত এর গন্ধটাই নাকে যায়। আর কখনো যদি ধোঁয়াও নাকে চলে যায় তুবও রোযা ভাঙ্গবে না। কেননা অনিচ্ছাকৃত নাক দিয়ে ধোঁয়া চলে গেলে রোযা ভাঙ্গে না। তবে কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে কয়েল বা অন্য কিছুর ধোঁয়া নাক দিয়ে টেনে নেয় তাহলে সেক্ষেত্রে রোযা ভেঙ্গে যাবে।
শেয়ার লিংকÑকিতাবুল আছল ২/১৭১; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৪৯; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২০৮; গুনইয়াতু যাবিল আহকাম (আশশুরুমবুলালিয়া) ১/২০২; মারাকিল ফালাহ, পৃ. ৩৬১; মাজমাউল আনহুর ১/৩৬১
গত রমযানে এক রাতে আমি সেহরির পর মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ি। আমার যখন ঘুম ভেঙ্গেছে তখন ফজরের সময় হয়ে গিয়েছিল। তো আমি ঘুম থেকে উঠে দ্রæত পানটি ফেলে দিই। জানার বিষয় হল, আমার ঐ দিনের রোযা কি সহীহ হয়েছে?
ঘুমন্ত অবস্থায় মুখে থাকা পানের রস লালার সঙ্গে পেটে চলে যাওয়াই স্বাভাবিক। তাই এক্ষেত্রে সতর্কতামূলক রোযা ভেঙ্গে গেছে বলে ধতর্ব্য হবে। অতএব রোযাটি কাযা করে নিতে হবে। তবে কাফফারা লাগবে না।
শেয়ার লিংকÑআলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৯৩; আলহাবিল কুদসী ১/৩১৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৩৮৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০২; ইমদাদুল ফাত্তাহ, পৃ. ৬৮৯; রদ্দুল মুহতার ২/৪০১
রমযানে রোযা অবস্থায় আমি ভুলে কিছু চাটনি খেয়ে ফেলেছি। প্রশ্ন হল, রোযা অবস্থায় ভুলে কিছু খেলে কি রোযা ভেঙ্গে যায়?
রোযা অবস্থায় ভুলে (অর্থাৎ রোযার স্মরণ না থাকায়) কোনো কিছু খেলে রোযা ভাঙ্গে না। হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনÑ
إِذَا نَسِيَ فَأَكَلَ وَشَرِبَ فَلْيُتِمَّ صَوْمَهُ، فَإِنَّمَا أَطْعَمَهُ اللهُ وَسَقَاهُ.
কেউ যদি (রোযা অবস্থায়) ভুলে কিছু খায় বা পান করে তাহলে সে যেন রোযা পূর্ণ করে। কারণ আল্লাহ তাআলাই তাকে আহার করিয়েছেন এবং পান করিয়েছেন। (সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯৩৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৫৫)
শেয়ার লিংকÑকিতাবুল আছল ২/১৫; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৩৭; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ১/৪৬৮; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭১
জনৈক ব্যক্তির ছেলে এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি মান্নত করেন যে, আল্লাহ যদি তার ছেলেকে সুস্থ করে দেন তাহলে তিনি একটি ছাগল সদকা করবেন। আল্লাহর মেহেরবানীতে পরবর্তীতে তার ছেলে সুস্থ হয়ে যায়। এখন তিনি তার মান্নত পূর্ণ করতে চাচ্ছেন। কিন্তু লোকটি এত বেশি দরিদ্র যে, তিনি নিজেই যাকাত-সদকা গ্রহণের উপযুক্ত। এমতাবস্থায় তিনি কি তার মান্নতের ছাগল থেকে নিজে খাওয়ার জন্য কিছু অংশ রেখে দিতে পারবেন? সঠিক মাসআলাটি জানালে উপকৃত হব।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তির মান্নত আদায়ের জন্য একটি ছাগলের পুরোটাই গরিব-মিসকিনকে সদকা করে দেওয়া আবশ্যক। গরিব হলেও সে নিজে তা থেকে কিছুই খেতে পারবে না।
শেয়ার লিংকÑআয্যাখীরাতুল বুরহানিয়া ৮/৩১৪; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৫৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪৩৮; আলবাহরুর রায়েক ৮/১৭৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৭
কিছুদিন আগে আমাদের গ্রামে এক ছেলের চোখে ফুসকুড়ি ওঠে। এরপর জ্বালাপোড়া কমানোর জন্য গ্রামের প্রচলিত চিকিৎসা অনুযায়ী পাশের বাড়ির এক মহিলা তার চোখে দেয়ার জন্য একটি ছোট পাত্রে ৭/৮ ফোঁটা বুকের দুধ দিয়ে আসে। ঘটনাক্রমে ঐ পাত্র থেকে দুধটুকু অসুস্থ ছেলেটির দেড় বছরের ভাগ্নী খেয়ে ফেলে। জানার বিষয় হল, পাত্র থেকে এতটুকু দুধ পান করার কারণে দুধসম্পর্ক সাব্যস্ত হবে কি না? ঐ মেয়ে বড় হলে তার ছেলেদের সাথে দেখা দিতে পারবে কি না?
দুই বছরের ভেতর বুকের দুধ অল্প পান করলেও দুধ সম্পর্কের হুকুম সাব্যস্ত হয়ে যায়। অতএব প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ মহিলার সাথে ছেলেটির ভাগ্নীর দুধ সম্পর্ক স্থাপিত হয়ে গেছে। কারণ ৭/৮ ফোঁটা দুধ পান করলে তা পেটে চলে যাওয়াই স্বাভাবিক।
মুজাহিদ রাহ. আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণনা করেনÑ
يُحَرِّمُ قَلِيلُ الرّضَاعِ كَمَا يُحَرِّمُ كَثِيرُهُ.
বেশি পান করলে যেমনিভাবে দুগ্ধ সম্পর্ক স্থাপিত হয় অল্প পান করলেও তেমনিভাবে দুগ্ধ সম্পর্ক স্থাপিত হয়। (মুসন্নাফে ইবনে আবি শাইবা, বর্ণনা ১৭৩১২)
তাই ঐ মেয়েটি তার দুধমার ছেলের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারবে।
শেয়ার লিংকÑমুখতারাতুন নাওয়াযিল ২/৮৯; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ২/১১; খিযানাতুল আকমাল ১/৪১৭; আলহাবিল কুদসী ১/৩৭৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩৬১; এলাউস সুনান ১১/১১৭
আমরা দুই বন্ধু ফসল করার জন্য যৌথ একটি জমি ক্রয় করি। আমার ঐ বন্ধু তার অংশ একটি মসজিদের জন্য ওয়াকফ করার ইচ্ছা করেছিল; কিন্তু তা আর করা হয়নি। কিছুদিন পর আমার অংশটুকু উক্ত মসজিদের জন্য ওয়াকফ করে দিই। বাকি এখনো ভাগ করা হয়নি। তখন একজন আলেম শুনে বললেন যে, বণ্টনের পূর্বে আপনার ওয়াকফ করা সহীহ হয়নি।
হুজুরের নিকট জানতে চাচ্ছি, আমার অংশটুকু বণ্টনের পূর্বে ওয়াকফ করা সহীহ হয়েছে কি না? আমি যদি ভাগ করে আমার অংশটুকু মসজিদ কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিই, তা কি যথেষ্ট হবে?
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত জমি থেকে আপনার অংশটুকু ওয়াকফ করা সহীহ হয়েছে। আপনার বন্ধুও যদি পূর্ব ইচ্ছা অনুযায়ী নিজ অংশ দিয়ে দেয় তাহলে তো পুরো জমিই মসজিদের হয়ে যাবে। অন্যথায় আপনি নিজ অংশ বন্ধু থেকে আলাদা করে তা মসজিদের দায়িত্বশীলদের বুঝিয়ে দিবেন। যৌথ সম্পত্তি যদি বণ্টনযোগ্য হয় তাহলে এর ওয়াকফ সহীহ হয়ে যায়।
শেয়ার লিংকÑখিযানাতুল আকমাল ৪/৪৪৮; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ৩/১০৬; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৪/২৬৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৮/১৬
আমার এক আত্মীয় আমেরিকা থাকে। সেখানে তার একটি সুপার শপ আছে। আমেরিকার একটি কোম্পানি নিয়মিত তাতে হিমায়িত মুরগি সাপ্লাই দেয়। উক্ত কোম্পানিতে ইসলামী পদ্ধতি অনুযায়ী ‘বিসমিল্লাহ’ বলে মুরগি জবাই করা হয় না। তবে সুপার শপে এ মুরগিগুলো যদি মুসলমানদের কাছে বিক্রি করা না হয়; বরং অমুসলিম ক্রেতাদের কাছে এসব মুরগি বিক্রয় করা হয়। তাহলে তা কি জায়েয আছে? এবং এ থেকে অর্জিত মুনাফা কি হালাল হবে?
যে প্রাণী আল্লাহর নামে জবাই করা হয় না তা মৃত প্রাণীর হুকুমে। এমন পণ্যও কোনো মুসলমানের জন্য বিক্রি করা জায়েয নয়, যদিও ক্রেতা অমুসলিম হয়। তাই এমন ব্যবসা থেকে বিরত থাকা কর্তব্য।
শেয়ার লিংকÑবাদায়েউস সানায়ে ৪/৩৩১; আয্যাখীরাতুল বুরহানিয়া ৯/৩৮৮; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৪/৩৭২; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৩/১১৫; আদ্দুররুল মুখতার ৫/৫৪
আমার এক আত্মীয় একজন অভিজ্ঞ ব্যবসায়ী। তিনি ৪ মাসের কথা বলে আমার থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। প্রায় এক বছর আগে ঋণের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও কোনো কারণে এখনো তিনি তা পরিশোধ করেননি। কিছুদিন আগে আমার বড় ভাইয়ের পরামর্শে আমি তার সাথে চুক্তি করি যে, আপনার কাছে আমার যে এক লাখ টাকা আছে তা আপনি ব্যবসায় খাটান। এর থেকে যা লাভ আসবে তার অর্ধেক আপনি নিবেন আর অর্ধেক আমাকে দেবেন। আমাদের উক্ত চুক্তি কি সহীহ হয়েছে?
ঋণ গ্রহীতার কাছ থেকে টাকা পাওয়ার পূর্বে সে টাকা ঋণগ্রহীতার কাছে বিনিয়োগ করা জায়েয নয়। তাই আপনার প্রশ্নোক্ত চুক্তি সহীহ হয়নি। লোকটি যদি আপনার টাকা আদায় করে দেয় তবে এরপরে আপনি তার সাথে অথবা অন্য যে কারো সাথে শরীয়তসম্মত পন্থায় ব্যবসার চুক্তি করতে পারবেন।
শেয়ার লিংকÑকিতাবুল আছল ৪/১৩০; বাদায়েউস সানায়ে ৫/১১৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/৩৯৩; ফাতহুল কাদীর ৭/৪১৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৫/৫১৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৪/২৮৬; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যা, মাদ্দা ১৪০৯
আমাদের এলাকায় ধান-পাটের সিজনে চাষীরা উৎপাদন খরচ চালাতে প্রায়ই হিমশিম খেয়ে যায়। বিশেষত শেষ মুহূর্তে যখন শ্রমিকের পারিশ্রমিকও দ্বিগুণ হয়ে যায় তখন সব চাষীই অর্থ-সংকটে পড়ে। এসময় বাজারে বড় বড় গুদাম ব্যবসায়ীরা চাষীদেরকে সুদ-মুক্ত ঋণ সুবিধা দেয়। তা এভাবে যে, চাষী তার ধান-পাট উৎপাদনের খরচ অনুযায়ী ঋণ নিয়ে যাবে; তবে শর্ত হল, ‘উৎপাদিত ধান-পাট সবই তার (উক্ত ব্যবসায়ীর) দোকানে বিক্রি করতে হবে।’ সাধারণত চাষীরা ব্যাপকভাবে এই ঋণ-সুবিধা গ্রহণ করে থাকে।
জানতে চাই, শরীয়তের দৃষ্টিতে এই লেনদেনে কোনো অসুবিধা আছে কি? বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।
প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিতে ঋণ আদান-প্রদান করা জায়েয নয়। কারণ ঋণ গ্রহীতা থেকে কোনো সুবিধা গ্রহণের শর্ত করা নাজায়েয। এটি এক প্রকার সুদের অন্তর্ভুক্ত।
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনÑ
لاَ يَحِلّ سَلَفٌ وَبَيْعٌ، وَلاَ شَرْطَانِ فِي بَيْع.
ঋণদাতার কাছে কোনো কিছু বিক্রয়ের শর্তে ঋণ প্রদান করা বৈধ নয়। এবং (বিক্রয়-চুক্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন)
শর্ত আরোপ করে বিক্রয় করাও জায়েয নয়। (জামে তিরমিযী, হাদীস ১২৩৪; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৫০৪)
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ‘চাষীর উৎপাদিত সকল ধান-পাট উক্ত ব্যবসায়ীর দোকানেই বিক্রয় করতে হবে’Ñ এ শর্ত দ্বারা ব্যবসায়ী (ঋণদাতা) বাড়তি সুবিধা নিচ্ছে। সুতরাং এধরনের শর্তে ঋণ নেওয়া-দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, কেউ যদি বিনা শর্তেই কাউকে ‘করযে হাসানা’ প্রদান করে, আর তার কাছে পণ্য বিক্রয়ের জন্য ঋণ গ্রহীতাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ চাপ প্রয়োগ না করে; বরং অন্য জায়গায় বিক্রয় করারও তার অধিকার থাকে, সেক্ষেত্রে ঋণ গ্রহীতা স্বেচ্ছায় উক্ত ব্যবসায়ীর দোকানে তার পণ্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারবে। এতে সমস্যা নেই।
শেয়ার লিংকÑকিতাবুল আছার, ইমাম মুহাম্মাদ বর্ণনা ৭২৭; আলমাবসূত, সারাখসী ১৪/৩৫; আলমুহীতুল বুরহানী ২৩/২১০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৩/৫৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৯/৩৮৮; রদ্দুল মুহতার ৫/১৬৬
আমাদের দেশে বিভিন্ন মোবাইল-সিম কোম্পানি গ্রাহকদের মোবাইল লোন-সুবিধা দেয়। প্রয়োজনের সময় তাদের থেকে ব্যালেন্স লোন মিনিট বা ইন্টারনেট লোন পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে লোন পরিশোধের সময় তারা অতিরিক্ত টাকা কেটে নেয়। যেমন ১৭.৩৩ টাকা ব্যালেন্স লোন দিয়ে পরিশোধের সময় ২০ টাকা কেটে নেয়। আমার কাছে এটি সুদ ও নাজায়েয মনে হয়। কারণ ১৭.৩৩ টাকা ব্যালেন্সের বিনিময়ে ২.৬৭ টাকা বেশি পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু কয়েকদিন আগে একজন মাদরাসা ছাত্রের সাথে কথা হলে সে বলল, ‘এ লোন নেওয়া বৈধ, সুদ বা নাজায়েয নয়।’
হুজুরের কাছে বিষয়টির আসল সমাধান জানতে চাচ্ছি। আশা করি বিস্তারিত জানাবেন।
মোবাইল ব্যালেন্সে উক্ত সুবিধা গ্রহণকে লোন নাম দেওয়া হলেও এটি মূলত পোস্ট পেইড ব্যবহারের মতই। যাতে আগে ব্যবহার করে পরে টাকা পরিশোধ করতে হয়। এতে খারাপ দিকটা হল এক্ষেত্রে তারা চার্জ বা এসএমএস ফি তুলনামূলক বেশি নেয়। সামান্য সুবিধা দিয়ে এত বেশি মূল্য নেওয়া নেহায়েত অন্যায় কাজ। তবে কোম্পানির জন্য তা সমীচীন না হলেও ব্যবহারকারীর জন্য ‘লোন’ সুবিধা নিয়ে সেবা গ্রহণ করার অবকাশ রয়েছে। এটি নাজায়েয হবে না।
শেয়ার লিংকÑকিতাবুল আছল ২/৪৫৪; আলমাবসূত, সারাখসী ১৩/৭; ফাতহুল কাদীর ৬/১৫৩