আমরা মুখে শুনেছি, মাগরিব নামাযে কেসারে মুফাসসাল থেকে পড়া সুন্নত। কিন্তু আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব এর বাইরে থেকে অনেক লম্বা কিরাত পড়েন। মাগরিবে এমন লম্বা কিরাত পড়া কি ঠিক?
ইমামের জন্য মাগরিবের নামাযে ছোট কেরাত পড়া হাদীস ও আসার দ্বারা প্রমাণিত। হাদীস শরীফে আছে, হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাগরিবের নামাযে কেসারে মুফাসসাল পড়তেন। (শরহু মাআনিল আসার ১/১৫৭; ইলাউস সুনান ৪/৩২)
অন্য বর্ণনায় আছে, হযরত উমর রা. আবু মুসা আশআরী রা.কে মাগরিবে কেসারে মুফাসসাল থেকে পড়তে বলেছেন। (শরহু মাআনিল আসার ১/১৫৭; ইলাউস সুনান ৪/৩৫)
অপর একটি বর্ণনায় এসেছে, হযরত আবু আবদুল্লাহ সুনাবিহী রাহ. বলেন, আমি আবু বকর রা.-এর খেলাফতকালে একবার মদীনায় এলাম। তাঁর পিছনে মাগরিব আদায় করলাম। তিনি মাগরিবের প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতেহা ও কেসারে মুফাসসাল থেকে একটি করে সূরা পড়লেন। (মুয়াত্তা ইমাম মালেক ২৭; ইলাউস সুনান ৪/৩৯)
যাহহাক ইবনে উসমান রাহ. বলেন, আমি উমর ইবনে আবদুল আজীজ রাহ.কে মাগরিবে কেসারে মুফাসসাল পড়তে দেখেছি। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৩/২৩৪)
কেসারে মুফাসসাল হল, ‘লাম ইয়াকুন’ থেকে ‘নাস’ পর্যন্ত সূরাসমূহ।
সুতরাং মাগরিবের নামাযে কেসারে মুফাসসাল থেকে পড়া উত্তম। অবশ্য রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো কখনো মাগরিব নামাযে সূরা তুর, সূরা মুরসালাত এ জাতীয় বড় বড় সূরা পড়েছেন এ কথাও সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। তাই কখনো কখনো কেসারে মুফাসসালের বাইরে এবং কেসারে মুফাসসালের পরিমাণের চেয়ে বেশি পড়লে তা সুন্নত পরিপন্থী হবে না। তবে ইমামের উচিত মুফাসসালাতের বাইরে পড়লে মুসল্লীদের অবস্থার প্রতি লক্ষ্য রেখে পড়া এবং কেরাত বেশি লম্বা না করা। কেননা হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ নামাযে ইমামতি করবে তখন যেন সে সংক্ষিপ্ত করে। কারণ তাদের (মুসল্লীদের) মধ্যে দুর্বল, অসুস্থ এবং বৃদ্ধ লোকও থাকে। আর যখন সে একা নামায আদায় করে তখন যত ইচ্ছা দীর্ঘ করতে পারে। (সহীহ বুখারী ১/৯৭)
তাই সাধারণ অবস্থায় ইমামের জন্য কেরাতের মাসনূন পরিমাণের চেয়ে দীর্ঘ করা উচিত নয়।