আহসান হাবীব - কক্সবাজার

৬০৩১. প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধু মোটরসাইকেল এ্যাক্সিডেন্ট করে পায়ে আঘাত পায়। তখন ডাক্তার তার পায়ে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দেয়। তাই সে তার ওপর মাসেহ করেই ওযু করে। গতকাল যোহরের নামাযের জন্য ওযু করে আসার পথে ঐ স্থানটি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে ব্যান্ডেজটি খুলে পড়ে যায়। ফলে সে শুধু ঐ স্থানটি পুনরায় ধুয়ে নামায আদায় করে। জানতে চাচ্ছি, শুধু ঐ স্থানটি ধোয়াই যথেষ্ট ছিল, নাকি পূর্ণ ওযু করা দরকার ছিল?

উত্তর

ঐ স্থান ধোয়াই যথেষ্ট ছিল। কেননা ক্ষতস্থান শুকিয়ে যাওয়ার কারণে ব্যান্ডেজ পড়ে গেলে পূর্বের মাসেহ বাতিল হয়ে যায় এবং ওযু অবস্থায় থাকলে শুধু ঐ স্থানটি ধুয়ে নেওয়াই যথেষ্ট।

-মাবসূত, সারাখসী ১/৭৪; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ১/৪৪২; বাদায়েউস সানায়ে ১/৯১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/১৫৬; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ৭৪

শেয়ার লিংক

সামীউল ইসলাম - কুষ্টিয়া

৬০৩২. প্রশ্ন

একবার ফরয গোসল করে নামায আদায় করি। নামাযের পর দাঁতের ফাঁক থেকে গোশতের টুকরাজাতীয় খাবার বের হয়। আমার জানার বিষয় হল, গোশতের সেই টুকরা দাঁতের ফাঁকে বিদ্যমান থাকা অবস্থায় কি আমার গোসল পূর্ণ হয়েছে? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

ভালোভাবে কুলি করলে পানি মুখের সব অংশেই পৌঁছে যায়। সাধারণত দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাবার ভেতরে পানি পৌঁছতে বাঁধা হয় না। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার গোসল পূর্ণ হয়েছে বলে ধর্তব্য হবে এবং উক্ত নামাযও সহীহ হয়েছে বলে গণ্য হবে।

-আলফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশায়িখ ১/১৮; খিযানাতুল আকমাল ১/২১৪; আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ১/১৬০; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/৫২; আলমুহীতুর রাযাবী ১/১০৬

শেয়ার লিংক

লাবিব মাসরূর - নেত্রকোণা

৬০৩৩. প্রশ্ন

আমার হাতের একটি আঙ্গুল কেটে যায়। ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার আঙ্গুলে ব্যান্ডেজ বেঁধে দেন। ব্যান্ডেজ খুলতে ও ভেজাতে নিষেধ করেন। ব্যান্ডেজ বাঁধার সময় আমার ওযু ছিল না। আমরা জানি, মোজার ওপর মাসাহ করার জন্য মোজা পবিত্র অবস্থায় পরতে হয়। অন্যথায় মোজার ওপর মাসাহ করা যায় না। তাই আমার সন্দেহ হচ্ছে, আমি উক্ত ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করতে পারব কি না?

উত্তর

আপনি উক্ত ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করতে পারবেন। কেননা, ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করার বিধান মোজার মাসাহ-এর মতো নয়। ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করার জন্য পবিত্র অবস্থায় ব্যান্ডেজ বাঁধা জরুরি নয়। সুতরাং আপনি প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ব্যান্ডেজের ওপর মাসাহ করবেন এবং উক্ত হাতের বাকি অংশ ধোয়া সম্ভব হলে ধৌত করবেন।

-মাবসূত, সারাখসী ২/১৩৫; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৭; মুখতারাতুন নাওয়াযেল ১/২৩৪; আলইখতিয়ার ১/৯৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৮০

শেয়ার লিংক

সোহেল রানা - ঢাকা

৬০৩৪. প্রশ্ন

আমাদের বাসায় একটি কাচের টেবিল আছে। আমার ছোট ভাই অনেক সময় ঐ টেবিলে উঠে পেশাব করে দেয়। তখন আমরা কাপড় দিয়ে ভালো করে টেবিলটি মুছে ফেলি। জানার বিষয় হল, টেবিলটি কাপড় দিয়ে মুছলে কি পাক হয়ে যাবে, না পানি দিয়ে ধৌত করতে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে টেবিলটি ভেজা বা শুকনো কাপড় দিয়ে এমনভাবে মুছতে হবে যেন নাপাকীর দাগ ও গন্ধ দূর হয়ে যায়, তাহলে পাক হয়ে যাবে; ধোয়া জরুরি নয়। কারণ যেসব বস্তু মসৃণ এবং নাপাকী শুষে না, যেমন- কাচ, মসৃণ লোহা ইত্যাদি; এগুলো পাক করার জন্য ধোয়া জরুরি নয়। নাপাকীর দাগ ও গন্ধ দূর হয়ে যাওয়ার মতো করে মোছাই যথেষ্ট।

-আলফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশায়িখ, পৃ. ৩৪; আলহাবিল কুদসী ১/১০৬; আলগায়া, আবুল আব্বাস সারুজী ২/৩৮; ইমদাদুল ফাত্তাহ, পৃ. ১৬৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩১০

শেয়ার লিংক

শেহনাজ আক্তার - মানিকগঞ্জ

৬০৩৫. প্রশ্ন

এক নারী যোহরের নামাযের প্রায় শেষ ওয়াক্তে নামাযে দাঁড়ায়। নামায চলাকালেই তার মাসিক শুরু হয়ে যায়। তখন সে নামায ছেড়ে দেয়। মুহতারামের নিকট প্রশ্ন হল, এমতাবস্থায় সেই নারীর করণীয় কী? পবিত্র হওয়ার পর উক্ত যোহর নামাযটি কি কাযা করতে হবে?

 

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যোহরের ওয়াক্তের ভেতরই যেহেতু মাসিক শুরু হয়ে গেছে তাই সেদিনের যোহর নামায মাফ হয়ে গেছে। উক্ত যোহর পরবর্তীতে কাযা করতে হবে না। এক্ষেত্রে ওয়াক্তের শেষে নামায শুরু করলেও একই বিধান। কেননা কোনো ওয়াক্তের একেবারে শেষেও যদি মাসিক শুরু হয় তাহলেও সে ওয়াক্তের নামায আদায় করা না হয়ে থাকলে তা মাফ হয়ে যায়। পরবর্তীতে কাযা করতে হয় না। বিশিষ্ট তাবেয়ী ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন-

إِذَا حَاضَتِ الْمَرْأَةُ فِي وَقْتِ صَلَاةٍ، فَلَيْسَ عَلَيْهَا أَنْ تَقْضِيَ تِلْكَ الصَّلَاةَ.

যে ওয়াক্তে নারীর মাসিক শুরু হয় উক্ত নামায কাযা করা তার ওপর আবশ্যক নয়। (কিতাবুল আছার, ইমাম মুহাম্মাদ, বর্ণনা ৫১)

-কিতাবুল আছল ১/২৮৬; খিযানাতুল আকমাল ১/৬৮; আযযাখীরাতুল বুরহানিয়া ১/৪১৩; রদ্দুল মুহতার ১/২৯১

শেয়ার লিংক

আবিদ মুখলিস - নেত্রকোণা

৬০৩৬. প্রশ্ন

একদিন আসরের জামাতে ইমাম সাহেব ভুলে প্রথম বৈঠক না করে দাঁড়িয়ে যান। মুসল্লিরা লোকমা দিলেও ইমাম সাহেব তৃতীয় রাকাত থেকে ফিরে আসেননি। বরং নামাযের শেষে সাহু সিজদা আদায় করেন। নামাযের পর কিছু মুসল্লি বললেন, যেহেতু ইমাম সাহেব লোকমা দেওয়ার পরও প্রথম বৈঠক ছেড়ে দিয়েছেন তাই নামায হয়নি। প্রশ্ন হল, তাদের কথা কি ঠিক?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইমাম সাহেব না বসে ঠিকই করেছেন এবং উক্ত নামায সহীহ হয়েছে। আর মুসল্লিদের উক্ত কথা সঠিক নয়। কেননা, ইমাম প্রথম বৈঠক না করে ভুলে তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেলে মাসআলা হল, বৈঠকের জন্য ফিরে আসবে না এবং প্রথম বৈঠক ছুটে যাওয়ার কারণে নামায শেষে সাহু সিজদা করবে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইমাম সাহেব যেহেতু সাহু সিজদাও আদায় করেছেন তাই উক্ত নামায আদায় হয়ে গেছে। হযরত যিয়াদ ইবনে ইলাকা রাহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

صَلَّى بِنَا المُغِيرَةُ بْنُ شُعْبَةَ فَلَمَّا صَلَّى رَكْعَتَيْنِ قَامَ وَلَمْ يَجْلِسْ، فَسَبَّحَ بِهِ مَنْ خَلْفَهُ، فَأَشَارَ إِلَيْهِمْ أَنْ قُومُوا، فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ صَلَاتِهِ سَلَّمَ وَسَجَدَ سَجْدَتَيِ السَّهْوِ وَسَلَّمَ، وَقَالَ: هَكَذَا صَنَعَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.

মুগীরা ইবনে শুবা রা. আমাদের নিয়ে নামায পড়লেন এবং দ্বিতীয় রাকাতে না বসে দাঁড়িয়ে গেলেন। তখন মুসল্লিগণ সুবহানাল্লাহ বলে লোকমা দিল। কিন্তু তিনি (না বসে) ইশারায় তাদেরকে দাঁড়িয়ে যেতে বললেন। এরপর নামায শেষে সালাম ফিরিয়ে সাহু সিজদা আদায় করলেন এবং (শেষে) সালাম ফেরালেন। (অর্থাৎ : সালাম ফিরিয়ে নামায শেষ করলেন) আর বললেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনই করেছেন। (জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৬৫)

-কিতাবুল আছল ১/১৬১; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৭৮; আলবাহরুর রায়েক ২/১০০; শরহুল মুনইয়া, পৃ. ৪৫৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১২৭

শেয়ার লিংক

নিয়ায তাহমীদ - খুলনা

৬০৩৭. প্রশ্ন

কিছুদিন আগে নামাযে হঠাৎ হাঁচি দিলে মুখে আলহামদু লিল্লাহ চলে আসে। আমার প্রশ্ন হল, এভাবে নামাযের মধ্যে হাঁচির দুআ পড়ার কারণে কি আমার নামায নষ্ট হয়ে গেছে?

উত্তর

নামাযে হাঁচির দুআ পড়া ঠিক নয়। তবে হাঁচির দুআ আলহামদু লিল্লাহ পড়া হয়ে গেলে নামায নষ্ট হবে না। তাই আপনার নামায হয়ে গেছে।

-ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৩৬; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/৭৮; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৪৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/২১৭; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩৯২; যাদুল ফাকীর, পৃ. ১৩৬

শেয়ার লিংক

আবদুস সামী - দৌলতপুর, কুষ্টিয়া

৬০৩৮. প্রশ্ন

একদিন এক বন্ধুর সাথে মসজিদে আসর নামায পড়তে যাই এবং উভয়ে মাসবুক হই। ইমাম সাহেব সালাম ফেরানোর পর যখন ছুটে যাওয়া রাকাতগুলো পড়তে দাঁড়াই তখন আমি ভুলে যাই যে, কত রাকাত ছুটে গেছে। তাই পাশের বন্ধুকে খেয়াল করে বাকি নামায শেষ করি। মুহতারামের নিকট প্রশ্ন হল, এভাবে নামায পড়ার কারণে কি আমার নামায সহীহ হয়েছে?

উত্তর

পাশের মুসল্লিকে খেয়াল করে নিজের ছুটে যাওয়া রাকাত স্মরণ করে নামায পড়লে তা সহীহ হয়ে যায়। সুতরাং আপনার উক্ত নামায সহীহ হয়েছে। তবে নামায আরও মনোযোগ সহকারে আদায় করা কর্তব্য।

-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৬৩; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৫৯; ফাতহুল কাদীর ১/৩৩৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯২; রদ্দুল মুহতার ১/৫৯৭

শেয়ার লিংক

রায়হান - কক্সবাজার

৬০৩৯. প্রশ্ন

মাদরাসা থেকে আমাদের বাড়ি সফরসম দূরত্বে অবস্থিত। তাই আমি আসা-যাওয়ার পথে সফরের নামায আদায় করি। কিন্তু কয়েকদিন আগে বাড়ি থেকে আসার সময় যে কোনো কারণে সফর অবস্থায় আসর নামায পড়তে পারিনি। জানার বিষয় হল, এখন মুকীম অবস্থায় ঐ ওয়াক্তের কাযা কীভাবে আদায় করব? দুই রাকাত না চার রাকাত? দ্রুত জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

সফর অবস্থায় আসরের ছুটে যাওয়া নামাযটি দুই রাকাতই পড়তে হবে। চার রাকাত নয়। কারণ সফর অবস্থায় চার রাকাতবিশিষ্ট ফরয নামায কাযা হয়ে গেলে মুকীম অবস্থায় তা আদায় করলেও দুই রাকাতই আদায় করতে হয়। সুফিয়ান ছাওরী রাহ. বলেন-

مَنْ نَسِيَ صَلَاةً فِي الْحَضَرِ فَذَكَرَ فِي السَّفَرِ صَلّى أَرْبَعًا، وَإِنْ نَسِيَ صَلَاةً فِي السَّفَرِ ذَكَرَ فِي الْحَضَرِ صَلّى رَكْعَتَيْنِ.

যে ব্যক্তি মুকীম অবস্থায় নামায আদায় করতে ভুলে গেছে, অতঃপর সফর অবস্থায় তা স্মরণ হয়েছে সে উক্ত নামায চার রাকাতই আদায় করবে। আর যে সফর অবস্থায় নামায আদায় করতে ভুলে গেছে অতঃপর মুকীম অবস্থায় স্মরণ হয়েছে সে দুই রাকাতই আদায় করবে। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা ৪৩৮৮)

-আলহাবিল কুদসী ১/২২১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫১৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫২৩; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৫১৬

শেয়ার লিংক

রবিউল ইসলাম - গোপালগঞ্জ

৬০৪০. প্রশ্ন

একদিন আমার ফজর নামাযের দ্বিতীয় রাকাতে সূর্যোদয় হয়ে যায়। জানতে চাই, আমার ঐ নামায কি সহীহ হয়েছে?

উত্তর

না, আপনার উক্ত ফজর নামায সহীহ হয়নি। তাই তা কাযা পড়ে নিতে হবে।

-কিাতবুল আছল ১/১৩০; আলহাবিল কুদসী ১/২১৯; আলমুহীতুল বুরহানী ২/১২; ইলাউস সুনান ৫/৭; মাআরিফুস সুনান ২/১৪৬

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ হাবিবুর রহমান - উত্তরা

৬০৪১. প্রশ্ন

আমার জানামতে নামাযে নারীদের চুল ঢেকে রাখা আবশ্যক। চুল খোলা থাকলে নামায হয় না। কিন্তু কিছু কিছু নারীকে দেখা যায়, এমন পাতলা ওড়না পরে নামায পড়ে যে, ওড়নার ওপর দিয়ে মাথার চুল স্পষ্ট দেখা যায়। প্রশ্ন হল, তাদের নামায কি সহীহ হবে?

উত্তর

নামাযে নারীদের মাথা ও চুল ঢেকে রাখা ফরয। চুল দেখা গেলে নামায সহীহ হয় না। তাই ওড়না এমন মোটা হতে হবে, যা মাথায় দিলে চুল দেখা যায় না। কিন্তু ওড়না যদি এমন পাতলা হয়, যা মাথায় দেওয়ার পরও চুল দেখা যায় তাহলে তা পরে নামায পড়লে নামায সহীহ হবে না।

-কিতাবুল আছল ১/১৭৩; আলহাবিল কুদসী ১/১৫৯: আততাজনীস ওয়াল মাযীদ ১/৪০৫; আলগায়া, আবুল আব্বাস সারুজী ২/৩০৬; রদ্দুল মুহতার ১/৪১০

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ মাজহারুল ইসলাম - নাসির নগর, বি. বাড়িয়া

৬০৪২. প্রশ্ন

ক. নামাযে কেউ যদি ع -এর জায়গায় ء পড়ে; যেমন সূরা তাকাসূর-এর শেষ আয়াতে  يومئذ عن النعيم- نئيم পড়ে তাহলে তার নামায হবে কি?

. সূরা হাশরের (২৮ পারা) هو الله الذي لا إله إلا هو এর هو -এর মধ্যে ওয়াক্ফ অবস্থায় যদি মাদ বা দীর্ঘ না করে তাহলে নামাযের কোনো ক্ষতি হবে কি?

উত্তর

ক. যেহেতু ع এবং ء উচ্চারণের মাখরাজ কাছাকাছি এবং উভয় হরফের মাঝে পার্থক্য করে উচ্চারণ করাও অনেকের ক্ষেত্রে কষ্টকর তাই যারা ভালোভাবে পড়তে জানেনা তাদের জন্য কোনো কোনো ফকীহ قريب المخرج কাছাকাছি মাখরাজের হরফগুলোর উচ্চারণের বিষয়ে ছাড় দিয়েছেন। তাই সাধারণ লোকজন এমন ভুল উচ্চারণ করলে কারণে নামায নষ্ট হবে না। ছাড়া প্রশ্নোক্ত আয়াতের ক্ষেত্রে তো অর্থও একেবারে বিকৃত (تغير فاحش) হয় না। তাই এক্ষেত্রে সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী নামায সহীহ হয়ে যাবে।

তবে লক্ষণীয় যে, মশকের মাধ্যমে যাদের জন্য এ ধরনের ভুল শুদ্ধ করে নেওয়া সম্ভব তাদের জন্য উচিত হচ্ছে দ্রুত এই ভুলগুলো শুদ্ধ করে নেওয়া। বিশেষ করে এমন অশুদ্ধ তিলাওয়াতকারীকে মসজিদের ইমাম বানানো যাবে না।

খ. উক্ত মাদ ছেড়ে দেওয়ার কারণে নামায নষ্ট হয়নি। এটা নামায ভঙ্গের কারণ নয়। তবে কুরআন তিলাওয়াতে এরকম ভুলও না হওয়া উচিত। -আলমুহীতুল বুরহানী ২/৬১; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ২১; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৪০; যাদুল ফাকীর, পৃ. ১৪০; রদ্দুল মুহতার ১/৬৩৩

শেয়ার লিংক

রাহাত - বগুড়া

৬০৪৩. প্রশ্ন

মুহতারাম মুফতী সাহেবের কাছে একটি বিষয় জানতে চাচ্ছি। গতকাল মাগরিবের নামায যার পাশে পড়ি, তিনি নামায শেষে আমাকে বলেন, নামাযে আঙ্গুল ফোটান কেন? নামাযে আঙ্গুল ফোটালে কী সমস্যা- এটা জিজ্ঞাসা করার আগেই তিনি চলে যান। এখন আমি পেরেশানীতে পড়ে যাই। কারণ আমি প্রায়ই নামাযে আঙ্গুল ফুটিয়ে থাকি। তাই দয়া করে জানাবেন, নামাযে আঙ্গুল ফোটালে কোনো সমস্যা আছে কি?

উত্তর

নামাযে আঙ্গুল ফোটানো মাকরূহে তাহরিমী। তাই নামাযে আঙ্গুল ফোটানো থেকে বিরত থাকা কর্তব্য। আর পেছনের কৃতকর্মের জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে তাওবা-ইস্তিগফার করবেন।

উল্লেখ্য, নামাযের বাইরেও বিনা প্রয়োজনে আঙ্গুল ফোটানো অনুত্তম।

-আননুতাফ ফিল ফাতাওয়া, পৃ. ৪৭; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫০৪; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ১১; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৪০৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৬

শেয়ার লিংক

সিরাজুল ইসলাম - কুষ্টিয়া

৬০৪৪. প্রশ্ন

ওযরের কারণে কিছুদিন চেয়ারে বসে নামায পড়তে হয়। একদিন ফজরের নামাযের সময় চেয়ারে বসে জামাতের অপেক্ষা করছিলাম। একপর্যায়ে তাতে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। ইকামতের শব্দে ঘুম ভাঙলে তৎক্ষণাৎ জামাতে শরীক হই। আমার জানার বিষয় হল, এভাবে চেয়ারে বসে ঘুমানোর কারণে আমার ওযু ভেঙে গিয়েছিল কি না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ওযু ভাঙেনি। কেননা চেয়ারে বসে হেলান দিয়ে ঘুমানোর সময় যদি কোমরের নিচের অংশ আসনের সাথে লেগে থাকে তাহলে ওযু ভাঙবে না। 

-মাবসূত, সরাখসী ১/৭৯; উয়ূনুল মাসায়েল, পৃ. ১৮; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৯; ফাতহুল কাদীর ১/৪৩১; আলগায়া, আবুল আব্বাস সারুজী ১/১৫২; দুরারুল হুক্কাম ১/১৫; রদ্দুল মুহতার ১/১৪১

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আফফান - কুমিল্লা

৬০৪৫. প্রশ্ন

আমাদের মসজিদে যখনই কোনো জানাযা আসে, আর ঐ জানাযায় মৃত ব্যক্তির  এমন কোনো ওলি উপস্থিত থাকে, যে সঠিকভাবে জানাযার নামায পড়তে পারে, তখন এ নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়ে যায়- মৃত ব্যক্তির জানাযা পড়ানোর কে বেশি হকদার; ওলি না মহল্লার ইমাম? কেউ বলে, ওলি বেশি হকদার। কেউ বলে, মহল্লার ইমাম। আশা করি সঠিক সমাধান জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

জানাযার নামাযে যদি ওলি এবং মহল্লার ইমাম উভয়েই উপস্থিত থাকে, তাহলে ইলম-আমলে যে বেশি অগ্রসর সে জানাযা পড়ানোর বেশি হকদার। তাই যদি মহল্লার ইমাম ইলম-আমলে বেশি অগ্রসর হন তাহলে ইমামই জানাযা পড়ানোর বেশি হকদার হবেন। 

-কিতাবুল আছার, বর্ণনা ২৩৭; কিতাবুল আছল ১/৩৪৯; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৬১৮; আলবাহরুর রায়েক ২/১৮০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২২২; ফাতহুল কাদীর ২/৮১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৮৩

শেয়ার লিংক

আবদুল খালেক - রাজৈর, মাদারীপুর

৬০৪৬. প্রশ্ন

গত বছর আমার ছেলে একটি মিথ্যা মামলায় আটক হয়। তখন তার সাত বছরের জেল মঞ্জুর হয়। পরে আমি উচ্চ আদলতে আপিল করি। সেই আপিলের চূড়ান্ত রায়ের দিন ছিল ২০২১ ঈ. সালের ২২ নভেম্বর। তখন আমি মানত করেছিলাম, যদি ওইদিন আমার ছেলের মুক্তির চূড়ান্ত রায় দেওয়া হয় তাহলে আমি ২৩ নভেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত একটানা এক মাস রোযা রাখব। আল্লাহর রহমতে ২২ নভেম্বর আমার ছেলের মুক্তির রায় দেওয়া হয়। তখন আমি ২৩ নভেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক মাস রোযা রাখি। কিন্তু তখন বিশেষ কিছু কারণে মাঝে তিন দিন রোযা রাখতে পারিনি।

হুজুরের কাছে জানতে চাই, এখন কি আমাকে পুনরায় ওই ত্রিশটি রোযা আবার রাখতে হবে, নাকি শুধু ওই ছুটে যাওয়া তিন দিনের রোযা কাযা করলেই চলবে? বিষয়টি জানতে চাই।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকে শুধু উক্ত ছুটে যাওয়া তিন দিনের রোযা কাযা করতে হবে। পুনরায় নতুনভাবে এক মাস রোযা রাখতে হবে না।

-কিতাবুল আছল ২/১৬৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৬৫; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/২৩৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/ ২১০হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ২/৩৪০

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ রাশেদ - কুমিল্লা

৬০৪৭. প্রশ্ন

এই বছর আমি হজ্বে যাওয়ার ইচ্ছা করেছি। আমার মুখ থেকে মাঝেমধ্যে অনেক দুর্গন্ধ বের হয়। ঐ সময় আমি মুখে দারুচিনি, লং ইত্যাদি রেখে চিবাই। যাতে মুখের দুর্গন্ধে কেউ কষ্ট না পায়।

এখন আমি জানতে চাচ্ছি, হজ্বের ইহরাম অবস্থায় যদি আমার মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হয়, আমি কি দারুচিনি বা এলাচি মুখে রেখে চিবাতে পারব?

উত্তর

ইহরাম অবস্থায় যেমনিভাবে সুগন্ধি ব্যবহার নিষেধ। তেমনিভাবে সুগন্ধিজাতীয় জিনিস সরাসরি খাওয়া নিষেধ। তাই ইহরাম অবস্থায় সরাসরি দারুচিনি, এলাচি ইত্যাদি মুখে রাখা বা খাওয়া যাবে না।

প্রকাশ থাকে যে, দারুচিনি বা সুগন্ধিজাতীয় জিনিস দিয়ে যেই খাবার পাকানো হয়, ঐ খাবার খেতে কোনো সমস্যা নেই।

-মাবসূত, সারাখসী ৪/১২৪; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/৩৫৬; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৪৩৯; আলবাহরুল আমীক ২/৮৪২; মানাসিকে মোল্লা আলী কারী, পৃ. ৩১৫; রদ্দুল মুহতার ২/৫৪৭

শেয়ার লিংক

মোস্তফা - চাপাইনবাবগঞ্জ

৬০৪৮. প্রশ্ন

কিছুদিন আগে আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। তখন আমি মানত করেছিলাম, আল্লাহ যদি আমাকে সুস্থ করে দেন তাহলে আমি হজ্ব করব। আমি যখন এই মানত করি তখন আমার ওপর হজ্ব ফরয ছিল।

মুহতারামের নিকট জানতে চাই, এখন কি আমার ফরয হজ্ব আদায়ের দ্বারা মানতের হজ্ব আদায় হবে, নাকি মানত আদায়ের জন্য আলাদাভাবে হজ্ব করতে হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ফরয হজ্ব আদায়ের দ্বারাই আপনার মানতের হজ্ব আদায় হয়ে যাবে। অবশ্য আপনি যদি মানত দ্বারা ফরয হজ্ব ব্যতীত স্বতন্ত্র হজ্ব আদায়ের নিয়ত করে থাকেন তাহলে আপনাকে মানত আদায়ের জন্য আলাদা একটি হজ্ব করতে হবে। এক্ষেত্রে ফরয হজ্ব আদায়ের দ্বারা মানতের হজ্ব আদায় হবে না।

-ফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশায়িখ পৃ. ১৪২; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/২৬৭; আলবাহরুর রায়েক ২/৩১০; ফাতহুল কাদীর ৩/৮৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৬৩

শেয়ার লিংক

নাদিম হাসান - নন্দিগ্রাম, বগুড়া

৬০৪৯. প্রশ্ন

প্রায় পাঁচ বছর আগে আমার নানার ওপর হজ্ব ফরয হয়েছে। লাগাতার কয়েক বছর সাংসারিক বিভিন্ন ঝামেলার কারণে হজে¦ যেতে পারেননি। কিন্তু এখন তার কাছে হজ্ব করার মতো আর সম্পদ নেই। তবে পাঁচ বিঘা জমি রয়েছে। যার আয় দ্বারা পরিবার নিয়ে ভালোভাবে চলতে পারেন এবং ওই জমির ওপরই তার সংসার নির্ভরশীল। হুজুরের কাছে জানার বিষয় হল, আমার নানার ওপর পূর্বে যে হজ্ব ফরয হয়েছিল তা এখন আদায় করতে হবে কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

কারো ওপর একবার হজ্ব ফরয হলে যদি তখন হজ্ব আদায় না করে আর পরবর্তীতে দরিদ্র হয়ে যায়, তাহলে তখনও তার যিম্মায় উক্ত ফরয থেকে যায়। উক্ত হজ্ব আদায় না করা পর্যন্ত যিম্মা-মুক্ত হবে না। সুতরাং প্রশ্নোক্ত অবস্থায় আপনার নানার যিম্মার ফরয হজ্ব থেকেই গেছে। অতএব তিনি তার হজ্বের খরচাদি সংগ্রহ করতে যথাসাধ্য চেষ্টা চালাবেন। এমনকি যদি তার জমির কিছু অংশ বিক্রি করলে হজ্বের খরচ হয়ে যায় এবং বাকি জমি দ্বারা কোনো রকম সংসার চালানো যায় তাহলে এভাবে তাকে ফরয হজ্ব আদায় করে নিতে হবে। আর যদি জীবদ্দশায় তা আদায়ের  কোনো ব্যবস্থা করতে না পারে তাহলে মৃত্যুর আগে ওসিয়ত করে যাবে যেন মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া সম্পত্তির একতৃতীয়াংশ দ্বারা বদলী হজ্ব করানো হয়।

-বাদায়েউস সানায়ে ২/৩০২; আলবাহরুর রায়েক ২/৩১৪; মানাসিক, মোল্লা আলী আলকারী, পৃ. ৬৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২০৬; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ১/৪৮৩

শেয়ার লিংক

সুফিয়া আক্তার - মোমেনশাহী

৬০৫০. প্রশ্ন

গত কয়েকদিন আগে শাওয়াল মাসের ১০ তারিখে আমার স্বামী মারা গেছেন। আমি জানি যে, স্বামীর মৃত্যুর কারণে আমাকে চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করতে হবে। এখন মুহতারামের কাছে জানার বিষয় হল, এই চার মাস দশ দিন কি আমি প্রতি মাস ৩০ দিন হিসাব করে পালন করব, নাকি স্বাভাবিকভাবে মাস হিসাবে পালন করব? যদি মাস হিসাবে হয় তাহলে কি চান্দ্রমাস হিসাবে পালন করব, নাকি ইংরেজি বা বাংলা মাস হিসাবে?

উত্তর

স্বামীর মৃত্যুর ক্ষেত্রে যে চার মাস দশ দিন ইদ্দতের কথা বলা হয়েছে তা চান্দ্রমাস হিসাবেই ধর্তব্য। ইংরেজি বা বাংলা মাস হিসাবে নয়তবে লক্ষণীয় হল, মাসের হিসাবে ইদ্দত গণনা তখন করবে যখন চান্দ্রমাসের প্রথম তারিখ থেকে ইদ্দত শুরু হবে। তখন সে পরপর চার মাস এবং এরপর দশ দিন ইদ্দত পালন করবে। এক্ষেত্রে প্রত্যেক মাস চাঁদ অনুযায়ী ২৯ দিনের হোক বা ৩০ দিনের সেটি দেখার বিষয় নয়। কিন্তু কারও স্বামী যদি আরবী মাসের প্রথম তারিখের পরে মারা যায় তাহলে সে মোট ১৩০ দিন ইদ্দত পালন করতে হবে। সুতরাং আপনাকেও ১৩০ দিন হিসাবে ইদ্দত পালন করতে হবে।

-মাবসূত, সারাখসী ৬/১২; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৫৪৯; আলমুহীতুল বুরহানী ৫/২২৭; আলবাহরুর রায়েক ৪/১৩২; হাশিয়াতুশ শুরুমবুলালী ১/৪০৫

শেয়ার লিংক

আলী হায়দার - মুরাদনগর, কুমিল্লা

৬০৫১. প্রশ্ন

আমার বড় ছেলে জন্ম হওয়ার এক মাস পরই তার মা অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং প্রায় তিন চার দিন আইসিওতে ভর্তি ছিল। এসময় আমার ঐ ছেলে তার নানীর দুধ পান করেছিল। আর এটা আমাদের পরিবারের সবাই জানতএখন আলহামদু লিল্লাহ সে অনেক বড় হয়েছে এবং তার খালাত বোনের সাথে তার বিবাহ ঠিক হয়েছে। এদিকে আমার ছোট ভাই মাদরাসায় লেখাপড়া করছে। সে এই বিবাহের কথা শুনে বলছে, খালাত বোনের সাথে আমার ছেলের এই বিবাহ সহীহ হবে না।

এখন জানার বিষয় হল, আমার ছোট ভাইয়ের কথা কি ঠিক?

উত্তর

হাঁ, আপনার ছোট ভাই ঠিকই বলেছে। কেননা, সে তার নানীর দুধ পান করার কারণে নানী তার দুধ মা হয়েছে এবং তার খালা তার দুধ বোন হয়েছে। আর দুধ বোনের সন্তানের সাথে বিবাহ হারামযেমনিভাবে রক্তের সম্পর্ক আপন বোনের সন্তানের সাথে বিবাহ হারাম।

-আলজামি লি আহকামিল কুরআন, কুরতুবী ৫/৭২; বাদায়েউস সানায়ে ৩/৩৯৬; আলমুহীতুর রাযাবী ৩/৪৮৭; ফাতাওয়া ওয়ালওয়ালিজিয়া ১/৩৬৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩৬২; আদ্দুররুল মুখতার ৩/২১৭

শেয়ার লিংক

ফারুক হোসেন - সখিপুর, শরীয়তপুর

৬০৫২. প্রশ্ন

গত তিন বছর পূর্বে দুই লক্ষ টাকা মহর ধার্য করে আমি বিবাহ করি। এর মধ্য থেকে এক লক্ষ টাকা আমি পরিশোধ করেছি। আমার সাধ্যমত আমি আমার স্ত্রী-পরিবারের ভরণ- পোষণের ব্যবস্থা করি। এক্ষেত্রে আমি আমার পক্ষ থেকে কোনো ত্রুটি করি না। কিন্তু আমার স্ত্রী প্রতিবেশী কারো কারো বিলাসিতা দেখে আমাকে প্রায়ই বিভিন্ন বিলাসবহুল জিনিসপত্র ক্রয় করার জন্য বলতে থাকে। এসব নিয়ে মাঝে মাঝে আমাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। আমাদের বৈবাহিক সম্পর্কে অনেক তিক্ততা সৃষ্টি হয়ে গেছে। এরই মাঝে হঠাৎ একদিন আমার স্ত্রী আমার কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকার বিনিময়ে খোলার আবেদন করে। তখন আমি তা গ্রহণ করি। এখন আমি চাচ্ছি, আমার স্ত্রীকে ইতিপূর্বে মহর বাবদ প্রদানকৃত এক লক্ষ টাকাও ফেরত নেব।

মুফতী সাহেবের নিকট জানতে চাই, আমি কি আমার স্ত্রী থেকে মহর বাবদ প্রদত্ত উক্ত এক লক্ষ টাকা নিয়ে নিতে পারব? বিষয়টি জানালে উপকৃত হব।

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি যেহেতু পঞ্চাশ হাজার টাকার বিনিময়ে খোলা গ্রহণ করেছেন সেহেতু আপনার জন্য আপনার স্ত্রীকে মহর বাবদ যে এক লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে তা নেওয়া জায়েয হবে না। এক্ষেত্রে আপনার প্রাপ্য শুধু পঞ্চাশ হাজার টাকা। অবশ্য মহর বাবদ যে এক লক্ষ টাকা বাকি আছে তা খোলার কারণে মাফ হয়ে গেছে। তা আপনাকে পরিশোধ করতে হবে না।

প্রকাশ থাকে যে, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে স্বামীর জুলুম বা অন্যায়ের কারণেই যদি স্ত্রী খোলা করতে বাধ্য হয় এবং স্ত্রীর তেমন দোষ না থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে স্বামীর জন্য স্ত্রীর কাছ থেকে কোনো কিছু গ্রহণ করা বৈধ হবে না।

-কিতাবুল আছল ৪/৫৬৪; আলমুহীতুল বুরহানী ৫/৬৮; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ১/২০৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ৩/১৯৪; রদ্দুল মুহতার ৩/৪৪৫

শেয়ার লিংক

সানাউল্লাহ - মুরাদনগর, কুমিল্লা

৬০৫৩. প্রশ্ন

কয়েক সপ্তাহ আগে আমার মামার বিয়ের অনুষ্ঠান নিয়ে মামার সাথে আমার মনোমালিন্য হয়। যার কারণে আমি মামার বিয়ের অনুষ্ঠানে না যাওয়ার কসম করে ফেলি। অনুষ্ঠানের কয়েকদিন আগে মামার সাথে আমার মীমাংসা হয়ে যায় এবং মামার পীড়াপীড়িতে তার বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা দেই। অনুষ্ঠানে যাওয়ার এক দিন আগে আমাদের বাড়িতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দশ-বারজন অসহায় গরিব লোক সাহায্যের জন্য আসে। আমি ঐ কসমের কাফফারার নিয়তে একটি কসমের কাফফারা সমপরিমাণ টাকা তাদেরকে দিয়ে দেই এবং পরের দিন ঐ অনুষ্ঠানে যাই।

এখন আমার সংশয় হচ্ছে যে, কসম ভাঙার আগে কাফফারা আদায় করাটা সহীহ হল কি না? আশা করি জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

কসম ভঙ্গ হওয়ার আগে কাফফারা ওয়াজিব হয় না। আর কাফফারা ওয়াজিব হওয়ার আগে আদায় করলে তা সহীহ হয় না। সুতরাং অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে কাফফারার নিয়তে যে টাকাগুলো দিয়েছেন তা নফল দান হয়েছে। কসমের কাফফারা হিসাবে আদায় হয়নি। অতএব উক্ত অনুষ্ঠানে যাওয়ার দ্বারা কসম ভঙ্গ হয়েছে। এখন নতুন করে কাফফারা আদায় করতে হবে।

-আহকামুল কুরআন, জাসসাস ২/৪৫৬; আলহাবিল কুদসী ১/৫৩৭; আননাহরুল ফায়েক ৩/৫৮; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ২/৬৪; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৭২৭

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আলআমিন - মুরাদনগর, কুমিল্লা

৬০৫৪. প্রশ্ন

আমার বড় চাচার কোনো সন্তান নেই। তার একটি জমি আছে। এটা মোট ২ কাঠা। আমাদের বংশের নিজস্ব কোনো কবরস্থান না থাকায় আমার চাচা ঐ জমি তার মৃত্যুর পর আমাদের বংশের কবরস্থানের জন্য ওয়াকফ করতে ওসিয়ত করেন এবং ঐ জায়গায় তাকে দাফন করতে বলেন। আমার চাচা আলহামদু লিল্লাহ এখনো জীবিত আছেন। কিছুদিন আগে আমার চাচি মারা যান। তাকে ঐ স্থানে দাফন করা হয়। এখন এলাকার এক লোক কবরস্থানের ঐ জায়গার ২ কাঠা থেকে এক কাঠা ক্রয় করার মাধ্যমে অংশীদার হতে চাচ্ছেন। যাতে পরবর্তীতে আমাদের কেউ তাদেরকে ঐ কবরস্থানে দাফন করতে বাধা প্রদান করতে না পারে।

এখন জানার বিষয় হল, আমার চাচা কি ঐ ওসিয়তকৃত জমি থেকে এক কাঠা বিক্রি করতে পারবে?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী আপনার চাচা উক্ত জমি যেহেতু তার মৃত্যুর পর ওয়াকফ করার ওসিয়ত করেছেন তাই তার জীবদ্দশায় উক্ত জমি তার নিজ মালিকানাধীন সম্পদের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং তিনি চাইলে তার জীবদ্দশায় উক্ত জমি থেকে এক কাঠা বা যতটুকু ইচ্ছা বিক্রি করতে পারবেন।

-কিতাবুল আছল ৫/৫২৭; আলমাবসূত, সারাখসী ২৭/১৬২; মুখতারাতুন নাওয়াযিল ৪/৩৫৭; ফাতাওয়া সিরাজিয়া, পৃ. ১৪৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৬৫৮

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ ইকরাম মিয়া - কুমিল্লা

৬০৫৫. প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় একটি ভণ্ড পীরের মাযার ছিল। প্রায় ২০ বছর আগে এলাকার ওলামা ও দ্বীনদার মুসলমান মিলে ঐ মাযারটিকে ভেঙে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। ঐ জমিটি পূর্বে ওয়াকফকৃত না থাকায় মিরাসসূত্রে এখন ঐ জমির মালিক ঐ মৃত ভণ্ড পীরের ছোট ছেলে। সে মাদরাসায় লেখাপড়া করেছে এবং দ্বীনের সঠিক বুঝ রাখে। ঐ জমিনটি মোট দুই কাঠা। সে চাচ্ছে, ঐ জমিনটাকে মসজিদের জন্য ওয়াকফ করে তার ওপর মসজিদ নির্মাণ করতে।

জানার বিষয় হল, ঐ জায়গায় কি মসজিদ নির্মাণ করা যাবে?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী কবরের জায়গাটির মালিক যেহেতু তার ছেলে সুতরাং সে চাইলে ঐ জায়গায় মসজিদ নির্মাণ করতে পারবে। তবে সেখানে কবরের কোনো চিহ্ন বা কোনো কিছু বাকি রাখা যাবে না। কবরের কোনো চিহ্ন না থাকলে তার ওপর মসজিদ নির্মাণ করা জায়েয। এতে কোনো অসুবিধা নেই।

-সহীহ বুখারী, হাদীস ৪২৮; শরহু মুসলিম, নববী ৫/৭; উমদাতুল কারী ৪/১৭৯তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫৮৯; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ৩৩৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৬৭

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ দাউদ - ফরিদপুর

৬০৫৬. প্রশ্ন

আমাদের এলাকায় মসজিদের জন্য মসজিদের টাকা দিয়ে একটি গভীর নলকূপ খনন করা হয়। এলাকায় যেহেতু এ ধরনের ভালো পানিবিশিষ্ট নলকূপ কম তাই অনেক সাধারণ মানুষ এ নলকূপ থেকে তাদের বাসা-বাড়িতে পানি নিয়ে যায়। মুফতী সাহেবের কাছে জানতে চাই যে, নলকূপ থেকে এভাবে পানি নেওয়া কি বৈধ হবে?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে মসজিদের নলকূপ থেকে সাধারণ মানুষের পানি নেওয়ার ব্যাপারে দাতাগণের যদি আপত্তি না থাকে তাহলে পানি নিতে অসুবিধা নেই। এছাড়া গ্রামাঞ্চলে এভাবে পানি সংগ্রহের প্রচলন থাকে। দাতাগণও এভাবে পানি নেওয়াকে সমর্থন করে। তাই সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী গ্রামবাসীর জন্য মসজিদের নলকূপ থেকে পানি নেওয়া নাজায়েয হবে না। তবে সতর্ক থাকতে হবে, এর কারণে যেন মুসল্লীদের ওযু করতে অসুবিধা না হয় এবং মসজিদের কোনো ধরনের ক্ষতি না হয়।

-আলবাহরুর রায়েক ৫/২৫০; রদ্দুল মুহতার ৪/ ৪৪৫; তানকীহুল ফাতাওয়াল হামিদিয়্যা ১/১২৩

শেয়ার লিংক

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ - কেরাণীগঞ্জ, ঢাকা

৬০৫৭. প্রশ্ন

জনৈক ব্যক্তি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় চার-পাঁচ মাসের বেতন বাকি ছিল। ফলে ঐ ব্যক্তি চাকরি ছেড়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন। বেশ কিছুদিন পর আগের প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক অবস্থা ভালো হলে প্রতিষ্ঠান বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য তার সাথে যোগাযোগ করে। কিন্তু ঐ ব্যক্তি বলেন, আল্লাহর রহমতে আমি এখন সচ্ছল। আমার ঐ বকেয়া বেতনের প্রয়োজন নেই। আমি  দাবি ছেড়ে দিলাম। তার দুই মাস পর ঐ ব্যক্তি তার স্ত্রীর কথায় মত পরিবর্তন করেন। এখন তিনি আগের প্রতিষ্ঠানটির কাছে বকেয়া বেতন দাবি করছেন। যা তিনি আগেই মাফ করে দিয়েছিলেন।

হুজুরের কাছে জিজ্ঞাসা হল, শরীয়তের দৃষ্টিতে ঐ ব্যক্তি কি এখন ঐ বকেয়া বেতন দাবি করার অধিকার রাখেন? আর ঐ প্রতিষ্ঠান কি তার উক্ত বেতন পরিশোধ করতে বাধ্য?

উত্তর

প্রশ্নের বর্ণনা অনুযায়ী ঐ ব্যক্তি যেহেতু স্বেচ্ছায় তার বকেয়া বেতনের দাবি ছেড়ে দিয়েছেন, তাই পরবর্তীতে তার জন্য ঐ বেতন পুনরায় দাবি করা জায়েয হবে না। এ পরিস্থিতিতে উক্ত প্রতিষ্ঠানও মাফ করে দেওয়া বেতন পরিশোধ করতে বাধ্য নয়।

-কিতাবুল আছল ৩/৩৯০; আলমাবসূত, সারাখসী ১২/৮৩; আততাহকীকুল বাহির ৭/৩৮৪; মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যা, মাদ্দা ১৫৬২; শরহুল মাজাল্লাহ, আতাসী ৪/৫৭৬

শেয়ার লিংক

পলাশ - বরিশাল

৬০৫৮. প্রশ্ন

ঈদের সময় লঞ্চের কেবিন নিয়ে অনেক কাড়াকাড়ি হয়। যাত্রীদের চাহিদাও থাকে প্রচুর। তো আমি ঈদে বাড়ি যাওয়ার সময় দু-একটি টিকেট বেশি কাটি। পরে যখন সব কেবিন বুকিং হয়ে যায়, তখন অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করি। এতে আমার অনেক লাভ হয়।

মুহতারামের কাছে জানতে চাই। আমার এ কাজটি শরীয়তের দৃষ্টিতে কেমন? এবং এই অতিরিক্ত টাকা কি আমার জন্য বৈধ? যদি বৈধ না হয় তাহলে আমার করণীয় কী? আশা করি জানিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

টিকেটের ক্রয়কৃত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করা জায়েয নয়। তাই কেউ অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করলে ক্রেতার ঠিকানা জানা থাকলে তাকে অতিরিক্ত টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে। আর মালিক জানা না থাকলে কোনো গরীবকে সদকা করে দিতে হবে। সে টাকা বিক্রেতার ব্যবহার করা কোনো অবস্থায়ই বৈধ নয়।

উল্লেখ্য, এছাড়া এধরনের কর্মকা- লঞ্চ কর্তৃপক্ষ থেকেও অনুমোদিত নয়। তাই এধরনের কর্মকা- থেকে বিরত তাকা কর্তব্য।

-আলমাবসূত, সারাখসী ১৫/১৩০; বাদায়েউস সানায়ে ৪/৭৬; আলবাহরুর রায়েক ৭/৩০৪; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/৫০; আদ্দুররুল মুখতার ৬/২৯

শেয়ার লিংক

শাকির শাহরিয়ার - সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম

৬০৫৯. প্রশ্ন

কয়েকদিন আগে আমি একটি কাপড়ের দোকান থেকে তিনটি শাড়ি এবং দুটি পাঞ্জাবি ক্রয় করি। বিক্রেতা তখন বলেছিল, দেখেশুনে নেন, পরে কিন্তু কোনো দোষের কথা বলে কাপড় ফেরত দিতে পারবেন নাতখন তাড়াহুড়োর কারণে আমি আর কাপড়গুলো দেখতে পারিনি। বাড়ি এসে দেখি একটি শাড়ির মাঝের কিছু জায়গা কাটা আর একটি পাঞ্জাবীর কলার নষ্ট। তখন আমি সেগুলো ফেরত দিতে চাইলে দোকানদার তা নিতে চায় না।

হুজুরের কাছে জানতে চাচ্ছি, এক্ষেত্রে শরীয়তের হুকুম কী? ওই দোষযুক্ত কাপড়দুটি কি আমি তাকে ফেরত দিতে পারব না?

উত্তর

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কাপড় বিক্রেতা বিক্রির সময় যেহেতু বলে দিয়েছে যে, দেখেশুনে নেন পরে কোনো দোষের কারণে কাপড় ফেরত দিতে পারবেন না এবং ঐ কথা মেনে নিয়েই কাপড়গুলো ক্রয় করেছেন তাই এখন বিক্রেতা উক্ত  দোষযুক্ত শাড়ি ও পাঞ্জাবিটি ফেরত নিতে বাধ্য নয়।

প্রকাশ থাকে যে, পণ্যের যদি এমন ত্রুটি থাকে, যা ক্রেতা দেখলে পছন্দ নাও করতে পারে তাহলে তা অস্পষ্ট রেখে বিক্রি করা ধোঁকার শামিল। তাই এই ত্রুটির কথা স্পষ্টভাবে বলে বিক্রি করতে হবে। তদ্রƒপ এমন ত্রুটি, যার কারণে মূল্য কমে যায় তা উল্লেখ না করে স্বাভাবিক মূল্যে বিক্রি করাও ধোঁকা। এসব ক্ষেত্রে বিক্রির সময় ফেরত দেওয়া যাবে না বললেও বিক্রেতার ফেরত নেওয়া নৈতিক দায়িত্ব।

-কিতাবুল আছল ২/৪৮৮; আলমুহীতুল বুরহানী ১০/১৫৬; ফাতাওয়া বায্যাযিয়া ৪/৪৪২; ফাতহুল কাদীর ৬/৩৮; আলবাহরুর রায়েক ৬/৩৫, ৬৬

শেয়ার লিংক

সিরাজুল হক সরদার - মতলব, চাঁদপুর

৬০৬০. প্রশ্ন

আমি একজনের কাছ থেকে একটি জায়গা ক্রয় করি। সেখানে একটি বাঁশঝাড় ছিল। জায়গা ক্রয় বিক্রয়ের সময় ঐ বাঁশঝাড়ের ব্যাপারে কোনো কথা উল্লেখ করা হয়নি। আমি মনে মনে ভেবে রেখেছি, জায়গার সাথে বাঁশঝাড়টিও আমি পাব। এ কারণে জায়গার মূল্য একটু বেশি হওয়ার পরও আমি তা কিনতে রাজি হয়েছি। কিন্তু বিক্রেতা এখন ঐ বাঁশঝাড়টি আমাকে দিতে রাজি হচ্ছে না এবং সে ঐ বাঁশগুলো কেটে নিতে চাচ্ছে।

মুফতী সাহেবের নিকট জানতে চাচ্ছি, শরীয়তের দৃষ্টিতে এখন ঐ বাঁশঝাড়রটির মালিক কে হবে?

উত্তর

জায়গাটি ক্রয় করার সময় আপনি যেহেতু সেখানের বাঁশঝাড়সহ জায়গাটি ক্রয় করেছে এমন কথা বা সিদ্ধান্ত হয়নি তাই এখন বিক্রেতা চাইলে বাঁশ কেটে নিয়ে যেতে পারে। জায়গা ক্রয়ের কারণে  এর সাথে আপনি এমনিতেই বাঁশঝাড়ের মালিক হয়ে যাননি।

-আলমুহীতুর রাযাবী ২/৪০৫; আলমুহীতুল বুরহানী ৯/২৮৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৮/২৯৩; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৯৪; রদ্দুল মুহতার ৪/৫৫১

শেয়ার লিংক