দেশে প্রচলিত প্রথা হিসেবে এক ব্যক্তি এক বিঘা জমি এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে বন্ধক নিল। ২/৩ বছর কিংবা আরো বেশি বছর পর অর্থাৎ যখন জমিওয়ালা পূর্ণ এক লক্ষ টাকা ফেরত দেবে তখন বন্ধকওয়ালা জমি ছেড়ে দেবে। উল্লেখ্য, যতদিন বন্ধকওয়ালা টাকা ফেরত না পাবে ততদিন সে জমি চাষাবাদ করে ফসল ভোগ করবে। তবে সে প্রতি বছর খাজনার টাকা জমিওয়ালাকে দিয়ে দেবে। জানার বিষয় হল, এ নিয়মে জমি বন্ধক রাখা বা দেয়া শরীয়তে জায়েয হবে কি না। বিশেষত জমি বন্ধক রেখে পারিবারিক সমস্যা সমাধানের উপায় কী?
প্রচলিত জমি বন্ধক পদ্ধতি শরীয়তসম্মত নয়। এভাবে কাউকে টাকা দিয়ে বন্ধকী জমি ভোগ করা এক প্রকারের সুদ। তাই এধরনের লেনদেন করা যাবে না। এমনকি জমি ভোগ করা বাবদ খাজনার টাকা দিলেও প্রশ্নোক্ত চুক্তি বৈধ হবে না। অতএব উক্ত চুক্তি বাতিল করে দিতে হবে।
উল্লেখ্য, জায়েয পন্থায় অন্যের জমি ভোগ করতে চাইলে ঋণ প্রদান ও বিনিময়ে বন্ধক হিসাবে জমি গ্রহণের চুক্তি না করে শুরু থেকেই পত্তন বা ভাড়া চুক্তি করতে হবে। এক্ষেত্রে জমির মালিকের একত্রে বেশি টাকার প্রয়োজন হলে জমির ভাড়া ধার্য করে একসঙ্গে কয়েক বছরের জন্য জমি ভাড়া দেবে এবং অগ্রিম ভাড়া নিয়ে নেবে। যেমন কারো এক লক্ষ টাকার প্রয়োজন, এক বিঘা জমির বার্ষিক ভাড়া হয় দশ হাজার টাকা। তখন সে দশ বছরের জন্য জমিটি ভাড়া দিয়ে অগ্রিম এক লক্ষ টাকা ভাড়া হিসাবে নিতে পারবে। এরপর যে কয় বছর অর্থদাতা জমি ভোগ করবে সে কয় বছরের ভাড়া ঐ টাকা থেকে কর্তিত হবে। দশ বছরের আগে জমি ফেরত দিলে আনুপাতিক হারে অবশিষ্ট টাকা জমিওয়ালা ভাড়া গ্রহিতাকে ফেরত দিয়ে দেবে। আর কেউ যদি আগে থেকে ভাড়াচুক্তি না করে বন্ধকী চুক্তি করে, তবে সেক্ষেত্রে অর্থদাতা বন্ধকী জমি থেকে উপকৃত হতে চাইলে, পূর্বের বন্ধকী চুক্তি বাতিল করে নতুনভাবে ভাড়াচুক্তিতে আবদ্ধ হতে হবে। তবে এক্ষেত্রে জমির ভাড়া যুক্তিযুক্ত হতে হবে। এলাকার এই মানের জমির ভাড়া সাধারণত যে পরিমাণ, তার সমান বা কাছাকাছি হতে হবে। অর্থাৎ নামেমাত্র ভাড়া ধরা চলবে না; বরং তা বাস্তবসম্মত হতে হবে।