পর্দার বিধান ও সুন্নতের উপর আমল দেখে এক মার্কিন মহিলা ডাক্তারের ইসলামগ্রহণ
সম্প্রতি মার্কিন শিশু ও নারী বিশেষজ্ঞ ডা. ইউ এস অরিভিয়া ইসলাম গ্রহণ করেন। নিজের ইসলামগ্রহণ প্রসঙ্গে ডা. অরিভিয়া বলেন, আমি আমেরিকার একটি হাসপাতালে নারী ও শিশু বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করি। একদিন হাসপাতালে এক আরব মুসলিম নারী এলেন সন্তান প্রসবের জন্য। প্রসব মূহুর্ত ঘনিয়ে এলে তাকে জানালাম আমি বাসায় যাচ্ছি, আর আপনার বাচ্চা প্রসবের দায়িত্ব অর্পণ করে যাচ্ছি অন্য এক ডাক্তারের হাতে। মহিলা হঠাৎ কাঁদতে লাগলেন এবং সাথে সাথে জুড়ে দিলেন, না না আমি কোনো পুরুষ ডাক্তারের সাহায্য চাই না। আমি তার কথা শুনে অবাক হয়ে গেলাম। এ অবস্থায় তার স্বামী আমাকে জানালেন, সে চাচ্ছে তার কাছে যেন কোনো পুরুষের আগমন না ঘটে। কারণ, সে সাবালিকা হওয়া থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত তার আপন বাপ, ভাই ও মামা প্রভৃতি মাহরাম পুরুষ ছাড়া অন্য কেউ তার চেহারা দেখেনি। আমি হেসে উঠলাম। তারপর চরম বিস্মিত হয়ে তাকে বললাম, অথচ আমি এমন এক নারী আমেরিকান কোনো পুরুষ নেই, যে আমার চেহারা দেখিনি। অতঃপর আমি তার আবেদনে সাড়া দিলাম।
বাচ্চা প্রসবের পরদিন আমি তাকে সাহস ও সান্ত্বনা দিতে এলাম। পাশে বসে তাকে জানালাম, প্রসব-উত্তর সময়ে দাম্পত্যমিলন অব্যহত রাখার দরুণ আমেরিকার অনেক মহিলা অভ্যান্তরীন সংক্রমণ এবং সন্তান প্রসবঘটিত জ্বরে ভোগেন। অতএব আপনি এ সম্পর্ক স্থাপন থেকে কম পক্ষে ৪০ দিন বিরত থাকবেন। এ ৪০ দিন পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহন ও শারীরিক পরিশ্রম থেকে দূরে থাকার গুরুত্বও তুলে ধরলাম। এটা করলাম আমি সর্বশেষ ডাক্তারি গবেষণার ফলাফলের নিরিখে। অথচ আমাকে হতভম্ব করে দিয়ে তিনি জানালেন, ইসলাম এ কথা বলে দিয়েছে। প্রসব উত্তর ৪০ দিন পবিত্র হওয়া অবধি ইসলাম স্ত্রী মিলন নিষিদ্ধ করেছে। তেমনি এ সময় তাকে নামাজ ও রোজা থেকেও অব্যাহতি দিয়েছে। এ কথা শুনে আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। বিস্ময়ে বিমূঢ় হলাম। আমাদের এত গবেষণা আর এত পরিশ্রমের পর তো কেবল আমরা ইসলামের শিক্ষা পর্যন্তই পৌছলাম!
আরেকদিন এক শিশু বিশেষজ্ঞ এলেন নবজাতককে দেখতে। তিনি শিশুর মায়ের উদ্দেশে বললেন, বাচ্চাকে যদি ডান কাতে শোয়ান তবে তা শিশুর সাস্থ্যের জন্য ভালো। এতে করে তার হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক থাকে। শিশুর বাবা তখন বলে উঠলেন, আমরা সবাই সর্বদাই ডান পাশ হয়ে ঘুমাই। এটা আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নত। এ কথা শুনে আমি বিস্ময়ে থ হয়ে গেলাম। এই জ্ঞান লাভ করতে আমাদের জীবনটাই পার করলাম আর সে কি-না তার ধর্ম থেকেই এ শিক্ষা পেয়েছে।
ফলে আমি এ ধর্ম সম্পর্কে জানার সিদ্ধান্ত নিলাম।
ইসলাম সম্পর্কে পড়া শোনার জন্য আমি এক মাসের ছুটি নিলাম এবং আমেরিকার অন্য শহরে চলে গেলাম, যেখানে একটি ইসলামিক সেন্টার আছে। সেখানে আমি অধিকাংশ সময় পড়াশোনা, নানা জিজ্ঞাসা আর প্রশ্নোত্তরের মধ্যে কাটালাম। আরব ও আমেরিকার মুসলমানদের সঙ্গে ওঠাবসা করলাম। আলহামদুলিল্লাহ এর কয়েক মাসের মাথায় আমি ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দিলাম।
এ ঘটনা থেকে শিক্ষা
আমরা যদি আল্লাহর হুকুম মেনে চলতে পারি, সাথে নবীর আদর্শ নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে হাজার হাজার অমুসলিম আমাদের আদর্শ দেখে ইসলামের ছায়াতলে আসতে থাকবে। ষ
সূত্র : ইন্টারনেট
সংগ্রহে : মো : নাজমুল হক, বগুড়া