সুন্নতের প্রতি ভালবাসা
গত বছর রমযানের শেষের দিকে বাড়িতে গেলাম। খতম তারাবী শেষ। হাফেয সাহেবগণ বাড়িতে চলে গেছেন। ফলে আমিই তারাবী পড়ালাম। বেতেরও আমিই পড়ালাম। বেতেরের প্রথম রাকাআতে পড়লাম সূরা আ’লা, দ্বিতীয় রাকাতে কাফিরূন। তৃতীয় রাকাতে সূরা ইখলাস।
নামায শেষে একজন মুসল্লী সহাস্য বদনে সাক্ষাৎ করলেন। তাকে অত্যন্ত পুলকিত দেখাচ্ছিল। চোখে মুখে প্রাপ্তির আনন্দ। যেন সবেমাত্র তার হস্তগত হয়েছে দুস্প্রাপ্য মানিক-রতন বা সাত রাজার ধন। কিছুক্ষণ পর বুঝলাম হ্যাঁ, সত্যিই তাই। তিনি আনন্দের অতিশয্যে আমার পিঠে হাত রেখে বললেন, জাযাকাল্লাহ। আজ বেতের নামায পড়ে আমার খুব শান্তি লেগেছে। জান্নাতী আনন্দ অনুভব করেছি। অনেক দিন পর সুন্নত কিরাতে বেতের নামায পড়লাম। আপনি যখন প্রথম রাকাআতে সূরা আ’লা পড়লেন তখনই আনন্দ অনুভব করছিলাম আর ভাবছিলাম দ্বিতীয় রাকাআতে কী পড়বেন? তারপর যখন দ্বিতীয় রাকাআতে সূরা কাফিরূন পড়লেন তখন দেহ মন আনন্দে দুলে উঠল। মনে মনে প্রার্থনা করছিলাম আল্লাহ তৃতীয় রাকাতে যেন সূরা ইখলাছ পড়ে। তারপর তৃতীয় রাকাতে যখন সূরা ইখলাছ পড়লেন তখন যারপরনাই আনন্দিত হলাম। আল্লাহ আপনাকে জাযায়ে খায়ের দান করুন। দ্বীনের খেদমতের জন্য কবুল করুন। (আমীন)
আজ এই লেখা লিখতে বসার সময় সুন্নতের প্রতি তার ভালবাসা আমাকেও একটি সুন্নতের উপর আমল করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। শীতকাল। অজু করা কষ্টের। হাম্মাম (টয়লেট) থেকে বের হয়েই লেখাটা লিখতে বসতে যাচ্ছিলাম। পরক্ষণেই ভাবলাম সুন্নতের প্রতি ভালবাসার কথা লিখব আর প্রয়োজন পূরণের পর অজু করার সুন্নতের উপর আমল করব না, তা হয় না। তাই ওযু করে লিখতে বসলাম। জাযাহুল্লাহু খাইরান ফিদ্ দারাইন। তাছাড়া এ ঘটনার পর পাঁচ ছ মাস পেরিয়ে গেছে কিন্তু বিষয়টি লেখার সুযোগ হয়নি। আজ বেতেরের নামাযে সুন্নত কেরাত পড়লাম। তখন তার কথা মনে পড়ল। অন্যদেরও যদি এ ঘটনা শুনে ফায়দা হয়, তাই লিখে ফেললাম।
আল্লাহ সুন্নতের প্রতি আমাদের ভালবাসা বাড়িয়ে দিন। প্রতিটি কাজে খুঁজে খুঁজে জেনে জেনে সুন্নতের অনুসরণ করার তাওফীক দিন আমীন। ষ
মুহাম্মাদ ফজলুল বারী