জুমাদাল উখরাাহ ১৪৩৪   ||   এপ্রিল ২০১৩

সদা সত্য বলব, কখনো মিথ্যা বলব না

মাওলানা মুহাম্মাদ ফজলুল বারী

সত্য মিথ্যা। দুটি শব্দই দুই অক্ষরের। কিন্তু দুই শব্দের মাঝে ব্যবধান রাত দিনের, আলো আঁধারের। সত্য আলো, মিথ্যা অন্ধকার। সত্য জান্নাতের পথ, মিথ্যা জাহান্নামের পথ। সত্য পূণ্যের পথ দেখায়, মিথ্যা পাপের পথে নিয়ে যায়।  সত্যকে সবাই ভালবাসে, মিথ্যাকে ঘৃণা করে। সত্যবাদী সবার প্রিয়, মিথ্যাবাদীকে কেউ দেখতে পারে না। এমনকি মিথ্যাবাদী যদি বাস্তবেও সত্য বলে তবুও বিশ্বাস করে না। কারণ আগের মিথ্যার কারণে সে বিশ্বাস হারিয়েছে। মিথ্যার মাধ্যমে মানুষ নিজেকে বাঁচানোর মিছে চেষ্টা করে। কিন্তু আরো ফাঁদে পড়ে। একটি মিথ্যা থেকে বাঁচার জন্য আরেকটি মিথ্য বলে, তবুও বাঁচতে পারে না। বরং মিথ্যার ফাঁদে আরো জড়িয়ে যায়। এক পর্যায়ে নিজের মিথ্যার উপর নিজেরই আক্ষেপ হয়। কেন মিথ্যা বলতে গেলাম, সত্য বললে তো এত বিপদ হতো না।

মিথ্যা হল কাপুরুষতা আর সত্য হল সৎসাহস। যে সৎসাহস দেখিয়ে সত্য বলে দেয়; বর্তমানের অন্যায়ের কারণে হয়ত তাকে সাময়িক শাস্তি বা ঘৃণার সম্মুখীন হতে হয়, কিন্তু পরবর্তীতে সত্য বলার সৎসাহসের কারণে সে প্রসংসিত হয়। আর বিশ্বাসের যে সম্পদ সে লাভ করে তার কাছে হাজারও শাস্তি বা ঘৃণা তুচ্ছ।  

আর যে মিথ্যাবাদী হিসেবে পরিচিতি পায়, সে দশবার কসম করে একটি সত্য কথা বললেও মানুষ ভাবে সে মিথ্যা বলছে। ফলে সে সত্য বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।

তাই এসো হে ভাই শপথ করি, সদা সত্য বলব। আল্লাহর প্রিয় হব, মানুষের আস্থাভাজন হব; কখনো মিথ্যা বলব না। মানুষের আস্থা হারাবো না, আল্লাহকে নারাজ করব না। হাদীস শরীফে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় সত্য পূণ্য ও নেক আমলের পথ দেখায়। আর নেক আমল জান্নাতের পথ দেখায়। আর ব্যক্তি সত্য বলতে বলতে আল্লাহর কাছে ‘সিদ্দীক’ (মহাসত্যবাদী) হিসেবে পরিগণিত হয়।

আর মিথ্যা পাপের পথ দেখায়। আর পাপ পাপিকে জাহান্নামে নিয়ে ফেলে। ব্যক্তি মিথ্যা বলতে বলতে আল্লাহর খাতায় ‘কাযযাব’ (চরম মিথ্যুক) বলে চিহ্নিত হয়ে যায়। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৬০৯৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস, ১০৩) 

 

 

advertisement