২৪-০৩-৩৪ হি., ৬-০২-১৩ ঈ., বুধবার
আজ দেওবন্দের মুহতামিম হযরত মাওলানা মুফতী আবুল কাছেম নুমানী দামাত বারাকাতুহুম মারকাযুদ দাওয়ায় তাশরীফ আনেন। দীর্ঘ সাত দিনের সফরে তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে যান। তিনি ফজরের পূর্বেই মারকাযুদ দাওয়াহ-র হযরতপুর প্রাঙ্গনে তাশরীফ আনেন এবং ফজরের জামাতে ইমামতি করেন। নামাজের পর মারকায পরিদর্শন করেন। মারকাযের সুবিশাল লাইব্রেরী দেখে তিনি খুব খুশি হন।
আজ হরতাল থাকায় তিনি হালকা নাস্তা করে সকাল সকাল আরজাবাদ মাদরাসার উদ্দেশে রওনা হন। মারকাযের আমীনুত তালীম ছাহেবের সাথে কথাপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের খেদমতের কথা অনেক শুনেছি এবং খুশি হয়েছি। আজকাল ইলমুল ইসনাদে পারদর্শী ব্যক্তি খুবই কম। দাওরায়ে হাদীসে এ বিষয়ে খুব জোর দেওয়া প্রয়োজন।‘
আমীনুত তালীম ছাহেব একপর্যায়ে তাঁর খেদমতে কয়েকটি দরখাস্ত পেশ করেন। তার মধ্যে একটি ছিল (তাহকীকুত তুরাস) বিষয়ে। তিনি বলেন, দেওবন্দে ‘তাহকীকুত তুরাস’-এর জন্য সতন্ত্র বিভাগ থাকা দরকার। কারণ, এ ময়দানে আমাদের খেদমত অনেক কম। তা শুনে মুহতামিম সাহেব বললেন, আপনি অনেক জরুরি ও সুন্দর পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রতি মাসের ন্যায় আজও ‘মাসিক দ্বীনী মাহফিল’ অনুষ্ঠিত হয়। আসর থেকে এশা পর্যন্ত চলে এ মজলিস। আজকের মজলিসে বাদ আসর আলোচনা করেন মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল মজিদ সাহেব। তিনি আলোচনার একপর্যায়ে বলেন, দুনিয়াতে আল্লাহ জান্নাতের বিভিন্ন নেয়ামতের নমুনা দিয়েছেন। জান্নাতের শ্রেষ্ঠ নেয়ামত হল আল্লাহর দিদার। দুনিয়াতে তার নমুনা হল নামায ও অন্যান্য ইবাদাত। হাদীসে আছে ‘তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত কর যেন তুমি তাঁকে দেখছ।’
বাদ মাগরিবের বয়ানে মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া ছাহেব বলেন, ‘সাহাবায়ে কেরাম দ্বীন শিখেছেন সরাসরি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে। সকাল-সন্ধ্যা তাঁরা পড়ে থেকেছেন নবীর দরবারে। সাহাবীদের থেকে শিখেছেন তাবেয়ীগণ। এভাবে আমাদের কাছে দ্বীন এসেছে। এভাবেই চলছে দ্বীনের তালীম ও তাআল্লুম। একই ধারায় চলে আসা এ মাদরাসাগুলোও দ্বীন শেখার কেন্দ্র। তদ্রূপ আহলে হকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত যত দ্বীনী মজলিস হয় সেগুলোও দ্বীন শেখার মাধ্যম।
এখন আমরা দ্বীন শিখব কীভাবে? ইন্টারনেট থেকে বা সিডির মাধ্যমেওতো মানুষ দ্বীন শিখছে। কিন্তু এগুলো দ্বীন শেখার মাধ্যম নয়, সহায়ক। দ্বীন শেখার শরয়ী পদ্ধতি হল, যা সাহাবায়ে কেরাম ও উম্মাহর আলিমগণের পদ্ধতি, যা কুরআনে শেখানো পদ্ধতি (অর্থ) ‘‘যদি তোমরা না জান, তাহলে ‘আহলুয্ যিক্র’ থেকে জিজ্ঞাসা কর। কোথাও ব্যতিক্রম কোনো কিছু শুনেই তা গ্রহণ বা প্রচার করব না; বরং আহলে ইলম থেকে তার শুদ্ধাশুদ্ধি যাচাই করে নেব।