যিলহজ্ব ১৪৩৩   ||   নভেম্বর ২০১২

কুরআনের অবমাননা ও তার প্রতিক্রিয়া : উপলব্ধি ও পর্যবেক্ষণ

বৌদ্ধ যুবক উত্তম বড়ুয়া কর্তৃক কুরআন মজীদের চরম অবমাননা ও তার প্রতিক্রিয়ায় সাধারণ মুসলমানের ক্ষোভ ও বৌদ্ধপল্লিতে অগ্নিসংযোগের বিষয়টি এখন ব্যাপক আলোচিত। ১ অক্টোবর সোমবার দেশের দৈনিক পত্রিকাগুলো বিশেষ গুরুত্বের সাথে ঘটনাটি রিপোর্ট করেছে। ঐ দিনের একটি জাতীয় দৈনিকের শিরোনাম ছিল এরকম- ‘‘বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টা, ফেসবুকে কোরআন অবমাননার ছবি, রামু পটিয়া টেকনাফে বৌদ্ধ বসতিতে হামলা।’’ সংবাদের শুরুতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অপচেষ্টা শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে কক্সবাজারের রামু উপজেলায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এক যুবক অকল্পনীয় দুঃসাহস দেখিয়ে পবিত্র কুরআন শরীফ অবমাননা করেছে। ওই যুবক মহান আল্লাহ ও কাবা শরিফকে নিয়েও ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। ইসলামের এ ধরনের চরম অবমাননার প্রতিবাদে শনিবার রাতে তাৎক্ষণিকভাবেই বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে রামুর ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা। উত্তেজিত বিক্ষুব্ধ জনতার উপর পুলিশের গুলিবর্ষণে শিশুসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। পটিয়ায়ও বৌদ্ধবিহারে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। ... (দৈনিক আমার দেশ ১ অক্টোবর সোমবার)

যে ছবি থেকে ঘটনার সূত্রপাত তা কোনো প্রসিদ্ধ জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে বলে শোনা যায়নি। ঐ ছবি প্রকাশিত হলে গোটা দেশেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে পারত।

অতিসম্প্রতি মিয়ানমারে ব্যাপক মুসলিম-হত্যাযজ্ঞ, অসহায় মুসলিম নারী-পুরুষের বাংলাদেশ সীমান্তে পালিয়ে আসা এবং পুনরায় রক্ত ও আগুনের মাঝে ফিরে যাওয়া, এরপর ইনোসেন্স অব মুসলিম নামক ছবিতে আল্লাহর রাসূলের অবমাননা, ব্লগগুলোতে অবিরাম উসকানী ইত্যাদি কারণে এমনিতেই  সর্বস্তরের মুসলমানের হৃদয় ক্ষত-বিক্ষত ছিল। এ সময় ঐ বৌদ্ধ যুবকের কুরআন-অবমাননা যেন ঐ ক্ষতে লবন ছিটিয়ে দিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়াও যা হওয়ার তা-ই হয়েছে যদিও সেটা কারোরই কাম্য ছিল না। এরপর এঘটনাটিকে ইসলাম-বিদ্বেষী চক্র পরম সুযোগ মনে করে লুফে নিয়েছে। আমাদের জাতীয় দৈনিকগুলোয় প্রকাশিত কলাম, নিবন্ধ, সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয়  পাঠ করলেই তা অনুমান করা যায়। তাহলে ঘটনা এখানে একটি নয়, তিনটি : এক. বৌদ্ধ যুবকের কুরআন মজীদ অবমাননা, দুই. এর প্রতিক্রিয়ায় বৌদ্ধপল্লিতে অগ্নিসংযোগ এবং তিন. বুদ্ধিজীবী ও মিডিয়ার প্রতিক্রিয়া।

প্রথম বিষয়টির সূত্রে বলতে চাই, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দেশে অমুসলিম পৌত্তলিকদের এই ঔদ্ধত্যে আমরা স্তম্ভিত। ঐ বৌদ্ধ যুবকের ঘটনাই এক্ষেত্রে প্রথম ঘটনা নয়। একশ্রেণীর হিন্দু ও হিন্দুমনা ব্যক্তির দ্বারা ইসলাম ও ইসলামের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অবমাননার ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটছে। আমাদের বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের পক্ষ হতে এসব ঘটনার কোনো প্রতিবাদ হয়নি। কোনো বিচার-শাস্তিও হতে দেখিনি। এই অবজ্ঞা ও নির্লিপ্ততায় সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমান ক্ষুব্ধ হয়েছেন, মর্মাহত হয়েছেন, তাদের হৃদয় ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে, কিন্তু শান্তনা ও সহানুভূতির একটি বাক্যও কোথাও উচ্চারিত হয়নি। সমাজের বিবেকখ্যাত বুদ্ধিজীবীদের ন্যক্কারজনক নিস্তব্ধতা এবং বিচার ও প্রশাসনের অবজ্ঞাপূর্ণ নির্লিপ্ততায় তারা বারবার স্তম্ভিত হয়েছেন।

এ তো জানা কথা যে, অবজ্ঞা ও অবহেলা কখনো সম্প্রীতি সৃষ্টি করে না। একপেশে ও একচক্ষু নীতিও কারো জন্য মঙ্গলজনক হয় না। তাই যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলছেন তাদের কর্তব্য, এই সত্যকে উপলব্ধি করা। ন্যায়বিচার ছাড়া সম্প্রীতির আশা দুরাশা মাত্র।

দ্বিতীয় কথা এই যে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার দায় কি শুধু সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের? সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কি কোনোই দায়িত্ব নেই? দুঃখজনক সত্য এই যে, এই দা©র্য়ত্ববোধের কোনো পরিচয় এযাবৎ পাওয়া যায়নি; বরং একের পর এক উসকানীমূলক ঘটনা ঘটানো হয়েছে, যা সংখ্যালঘুর দেমাগকেই প্রকাশিত করেছে। এই দেমাগ ও ঔদ্ধত্য কি সম্প্রীতির পক্ষে সহায়ক?

কেউ বলতে পরেন, ঐসব ঘটনা কিছু দুষ্কৃতকারীর দ্বারা সংঘটিত হয়েছে, বৃহত্তর হিন্দুসমাজ বা বৌদ্ধসমাজ এসব আচরণের সাথে একাত্ম নয়। হয়তো তা-ই হবে। আমরাও অন্তরিকভাবে এমটাই কামনা করি, কিন্তু এর পক্ষে দৃশ্যমান কোনো প্রমাণ নেই।

সবার জানা আছে, এ দেশে যখন জেএমবির দ্বারা বোমা বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটল তখন সারা দেশের আলেম-উলামা এর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। এদেশের সংখ্যালঘু জনগণের নেতা বা প্রতিনিধিদের থেকে কি এ ধরনের কোনো অবস্থান দেখা গেছে? দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হিন্দু-সম্প্রদায়ের লোকদের দ্বারা ইসলাম ও ইসলামের নবী সম্পর্কে একের পর এক কটুক্তির ঘটনা ঘটেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে হিন্দু শিক্ষকদের দ্বারা মুসলিম ছাত্রীদের শ্লীলতাহানী ও ধর্ষিতা হওয়ার ঘটনাও একের পর এক ঘটেছে। এরপরও কি এদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা দুঃখপ্রকাশের সৌজন্যটুকুও রক্ষা করেছেন? এসব যে কিছু লম্পট দুষ্কৃতকারীর কাজ, এর প্রতি যে বৃহত্তর হিন্দুসমাজের কোনো সমর্থন নেই দুটো বাক্য খরচ করে একথাটা তাদের কেউ কি বলেছেন?

তাদের পক্ষ থেকে যদি ঐসব দুষ্কৃতির প্রতিবাদ হত তাহলে সেটা কি সম্প্রীতির পক্ষে সহায়ক হত না? কিন্তু সংখ্যালঘুর দেমাগ বলে কথা!

মিয়ানমারে যখন মুসলমানদের কচুকাটা করা হচ্ছিল, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, মুসলিম নারীরা ব্যাপকহারে ধর্ষিতা হচ্ছিলেন তখন কি এদেশের বৌদ্ধদের কপালে একটি ভাঁজও পড়তে দেখা গেছে? সহানুভূতির একটি বাক্যও কি তারা খরচ করেছেন? যদি করতেন তাহলে সেটা কি সম্প্রীতির পক্ষে সহায়ক হত না?

আসলে তারা গরজ বোধ করেননি। কেন করেননি তা অনুমান করাও কঠিন নয়। আমাদের অতিসম্প্রীতিপ্রেমী চাটুকার বুদ্ধিজীবীরাই যে সম্প্রীতির পথে সবচেয়ে বড় বাঁধা এটা বোঝার জন্য অনেক বেশি প্রজ্ঞার প্রয়োজন হয় না।

আলোচিত ঘটনায়ও এই চাটুকারিতার কোনো অভাব দেখা যাচ্ছে না। যেখানে স্বয়ং বৌদ্ধদের পক্ষ হতেও ফেসবুকে কোরআন অবমাননার ঘটনা অস্বীকার করা হয়নি; বরং ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর এক বৌদ্ধ শিক্ষাবীদ ক্ষীণ কণ্ঠে ঐ যুবকের বিচারও দাবি করেছেন তখন আমাদের একশ্রেণীর লেখক, গবেষক, সম্পাদক এ সম্ভাবনা প্রমাণে মরিয়া হয়ে উঠেছেন যে, ঐ ঘটনায় উত্তম বড়ুয়ার কোনো হাত ছিল না, হয়তো অন্য কেউ তার একাউন্টে ছবিটা যুক্ত করে থাকবে? প্রশ্ন এই যে, এই কথাগুলো স্বয়ং অভিযুক্ত ব্যক্তি বা তার সম্প্রদায়ের লোকদের পক্ষ থেকে আসবে না কেন? আশ্চর্য!

দুই.

এরপরও আমরা বলি, এই ন্যক্কারজনক ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় যা ঘটেছে তা সমর্থনযোগ্য নয়। কারণ কুরআনই আমাদের শিক্ষা দেয় সর্বাবস্থায় ন্যায় ও ইনসাফ রক্ষা করতে। কুরআন মাজীদের ইরশাদ (তরজমা) তোমাদেরকে মসজিদুল হারামে প্রবেশে বাধা দেওয়ার কারণে কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদেরকে যেন কখনো সীমালংঘনে প্ররোচিত না করে। সৎকর্ম ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পর সাহায্য করবে এবং পাপ ও সীমালংঘনে একে অন্যকে সাহায্য করবে না। আল্লাহকে ভয় করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তিদানে কঠোর।-সূরা মায়িদা ৫ : ২

প্রীতি ও বিদ্বেষ সর্বাবস্থায় মুসলিম থাকবেন কুরআন-সুন্নাহর সামনে সমর্পিত। এই সমর্পণেরই নাম ইসলাম এবং এটিই কল্যানকর মুসলিমের দুনিয়া ও আখিরাতে। এই সমর্পণগুণেই তো আমাদের পূর্বসূরীরা স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন। কুরআন যখন আদেশ করেছে তখন তাদের তরবারী কোষমুক্ত হয়েছে আবার কুরআনের আদেশেই তা কোষবদ্ধ হয়েছে। তারা যেমন পরোয়া করেননি নিন্দুকের নিন্দা কিংবা জালিমের রক্তচক্ষুর তেমনি পরিচালিত হননি নিজস্ব প্রীতি ও বিদ্বেষ দ্বারাও।

তাই তাঁদের প্রতি আল্লাহ তাঁর সন্তুষ্টি ঘোষণা করেছেন। হুদায়বিয়ার ঘটনা সবার জানা আছে। মক্কাবাসীর হাতে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দূত হযরত উসমান ইবনে আফফান রা.-এর  নিহত হওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়লে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিহাদের বাইয়াত নিয়েছিলেন। সাহাবীগণও জানবাজি রেখে জিহাদের জন্য প্রস্ত্তত হয়ে গেলেন। এটি ছিল তাদের ঈমানের একটি দৃষ্টান্ত। এরপর যখন বাহ্যত অবমাননাকর শর্তসমূহ মেনে নিয়েও আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  মক্কাবাসীর সাথে সন্ধি করলেন তখন সাহাবীগণ ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাঁর সিদ্ধান্তের সামনে সমর্পিত হলেন। এটা ছিল তাদের ঈমানের দ্বিতীয় দৃষ্টান্ত। এ দিকে ইঙ্গিত করেই আল্লাহ তাআলা কুরআন মজীদে ইরশাদ করেন-(তরজমা) তিনিই মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি অবতীর্ণ করেছেন, যাতে তাদের ঈমানে অধিকতর ঈমান যুক্ত হয় ...।-সূরা ফাতহ ৪৮ : ৪

এটিই আমাদের আদর্শ। চরম উসকানীর মুখেও সর্বোচ্চ সংযমের পরিচয় দেওয়া এবং সর্বাবস্থায় ন্যায় ও ইনসাফের সীমার ভিতরে থাকাই কুরআন মজীদের শিক্ষা।

তিন.

ঘটনা যতটুকুই হোক আমাদের মিডিয়া একে মহাপ্রলয়ের রূপ দিয়ে ফেলেছে। যদি বলা হয়, ঘটনাটি ক্ষুদ্র তবে সত্য বলা হবে না, আর যদি বলা হয়, মহাপ্রলয় ঘটে গেছে তবে তা-ও সত্য নয়। কিম' আমাদের সংবেদনশীল মিডিয়া এসব ক্ষেত্রে সাধারণত অনুপাত রক্ষায় অভ্যস্ত নয়। দিনের পর দিন উপসম্পাদকীয়গুলো ভারাক্রান্ত হয়ে আছে  ক্ষোভ, বেদনা, ঘৃণা ও হতাশায়! অথচ এই মহা-প্রলয়ে একটি প্রাণহানীর ঘটনাও ঘটেনি, একজন নারীও লাঞ্ছিত হননি, লুটপাটেরও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সোমবার একটি জাতীয় দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠায় একজন বৃদ্ধার মৃত্যুকে প্রধান শিরোনাম করা হয়েছিল। পরে জানা গেল ঐ সংবাদ সঠিক ছিল না।

এই ঘটনাকে যদি মিয়ানমারের মুসলিম নিধনের সাথে তুলনা করা হয় তাহলে তা হবে পর্বতের সাথে মুষিকের তুলনা। আর এই দুই ঘটনায় আমাদের মিডিয়ার যে প্রতিক্রিয়া, তা যদি তুলনা করা হয় তাহলে সেটা হবে মুষিকের সাথে পর্বতের তুলনা। মুসলিম-প্রসঙ্গে আমাদের শীতল ও নির্লিপ্ত মিডিয়াই যখন সংখ্যালঘু-প্রসঙ্গে অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে ওঠে তখন তা আর শ্রদ্ধার উদ্রেক করে না। এই মওসুমী সংবেদনও অনেক ক্ষেত্রেই ভাঁড়ামি ও চাটুকারিতার সীমাকেও অতিক্রম করে যায়।

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক উপাচার্য লিখেছেন, একাত্তরেও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর এমন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি। আরেকজন গবেষকের বক্তব্য, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদারদের অত্যাচারে জন্মমাটি ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় এক হাজার ৬০০ রাখাইন পরিবার।

কোনটা সত্য?

একজন ভারাক্রান্ত চিত্তে লিখেছেন, আমি জানিনা, যে ১০টি বৌদ্ধগ্রামে আগুন লাগানো হলো, লুট করা হলো, কত মানুষ মারা গেলেন বুঝি জানা যাবে না কোনো দিন... কোনো দিন কি জানতে পারা যাবে, কোন বেহেশতের লোভ দেখিয়ে এই মানুষগুলোকে উদ্ধীপ্ত করেছে কে?

বেহেশতের লোভ দেখিয়ে উদ্দীপ্ত করতে হবে কেন? পৌত্তলিক সংখ্যালঘুদের ঔদ্ধত্য তো ঐ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এখন সাধারণ মানুষকে দোযখের ভয় দেখিয়েও থামানো যাচ্ছে না।

অনেকে এ জাতীয় ঘটনাকে দেশ, ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তৎপর হয়ে ওঠেছে। আলোচিত ঘটনায় আমাদের মিডিয়ার প্রতিক্রিয়া একটু মনোযোগের সাথে পর্যবেক্ষণ করলেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।

একটা বিষয় খুব জোরে সোরে প্রচার করা হচ্ছে যে, ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত। সরকার ও বিরোধী দল উভয় শিবির এই বিষয়ে একমত। কিন্তু মতভেদ হয়ে গেছে পরিকল্পনাকারী নির্ণয়ে। তারা একে অপরের দিকে আঙ্গুল তাক করে রেখেছে।  সবাই মিলে যেন ঘটনাটির স্বতঃস্ফূর্ততার সম্ভাবনা থেকে চোখ বন্ধ রাখতে চাইছেন। কিন্তু এই চোখ বন্ধ রাখার সংস্কৃতি কি সত্যিকারের অর্থেই দেশ ও জাতির জন্য কল্যানকর?

ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত হোক বা স্বতঃস্ফূর্ত  এটা এদেশের বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ এবং দেশপ্রেমিক জনগণ সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য যে সুবিচার ও পরস্পর শ্রদ্ধাবোধের কোনো বিকল্প নেই তা চোখে অঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ঘটনাটি। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্যই অপরিহার্য এ ঘটনার সঠিক বার্তা সঠিকভাবে উপলব্ধি করা। ষ

 

 

advertisement