وحدة الأمة واتباع السنة উম্মাহর ঐক্য : পথ ও পন্থা
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
আবু সুফিয়ান
চকবাজার, ঢাকা
ফের্কা তো অনেক, মাযহাবও কম নয়, আমরা হক চিহ্নিত করব কীভাবে
প্রশ্ন : ১. আপনি উম্মাহর ঐক্যের উপর প্রবন্ধ লিখেছেন, কিন্তু মতভেদের সময় মানুষ কী করবে তাই তো পরিষ্কারভাবে পেলাম না। দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে আমাকে বিভিন্ন মত ও পথের লোকের সাথে মেলামেশা করতে হয়। তারা তো আমাকে খুব উত্তম সমাধান দিয়েছেন-কেউ বলেছেন, আহলে হাদীস হয়ে যাও, কেউ বলেছেন, সালাফী হয়ে যাও, কেউ তো বলেছেন, আহমদ রেযা খানের তরীকা ধর, রেজভী হয়ে যাও-এভাবে প্রত্যেক মতের লোক নিজের মতাদর্শকে হক বলে। এ অবস্থায় প্রকৃত হক চিহ্নিত করার উপায় কী?
উত্তর : গোসতাখী মাফ করবেন। সম্ভবত প্রবন্ধটি মনোযোগের সাথে পড়া হয়নি। নতুবা পরিষ্কার হয়ে যেত যে, হকের মানদন্ড কুরআন-সুন্নাহ ও ইজমায়ে উম্মতের মাধ্যমে নির্ধারিত। ঐ মানদন্ডের দ্বারাই নির্ণিত হবে, কে হকের উপর আছেন, কে নেই। শরীয়তের দলিলে তো কোনো মাযহাব ও ফের্কার নাম উল্লেখ করে সত্যকে তাদের জন্য রেজিস্টার্ড করে দেওয়া হয়নি। বরং পরিষ্কার ভাষায় হকের মানদন্ড বলে দেওয়া হয়েছে। ঐ মানদন্ডে যে ব্যক্তি ও দল যে পরিমাণ উত্তীর্ণ হবে তারা ঐ পরিমাণ সত্যের উপর আছে। যেমন ধর্মের পার্থক্য বা ধর্ম ও ধর্মনিরপেক্ষতার পার্থক্যের ক্ষেত্রে কুরআন মজীদের দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা-
إن الدين عند الله الإسلام
অর্থাৎ নিঃসন্দেহে ইসলামই আল্লাহর নিকট একমাত্র দ্বীন।-সূরা আলে ইমরান (৩) : ১৯
ومن يبتغ من غير الإسلام دينا فلن يقبل منه
অর্থাৎ কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো দ্বীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো কবুল করা হবে না।-সূরা আলে ইমরান (৩) : ৮৫
আর ফের্কার পার্থক্যের ক্ষেত্রে হাদীসের পরিষ্কার ফয়সালা যে, ইখতিলাফের সময় আমার সুন্নত এবং আমার পরে আগমনকারী হেদায়েতপ্রাপ্ত খলীফাদের সুন্নতকে আঁকড়ে ধর। (দ্বীনের নামে) নতুন আবির্ভূত বিষয়সমূহ থেকে বেঁচে থাক। কারণ (দ্বীনের নামে) নতুন আবিষ্কৃত সকল বিষয় বিদআত। আর সকল বিদআত গোমরাহী।’
তেমনি মুক্তিপ্রাপ্ত জামাতের বিষয়ে স্পষ্ট ফয়সালা- هي الجماعة এবং এই ঘোষণা-ما أنا عليه وأصحابي
এই সব কথাই প্রবন্ধে বরাতসহ লেখা হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে, ফের্কার মতভেদের ক্ষেত্রে হক চিহ্নিত করার মানদন্ড হচ্ছে :
১. আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাহ।
২. খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাহ।
৩. সাহাবায়ে কেরামের তরীকা।
এই মানদন্ডে যারা উত্তীর্ণ, তাদের শরয়ী উপাধি ‘আহলুস সুন্নাহ ওয়ালজামাআ’। এরপর ফিকহের মাযহাব, তাযকিয়া ও সুলূকের তরীকা কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হিসেবে কারো কোনো নাম-নিসবত যদি থাকে তাহলে শুধু এই নাম-নিসবত হক না-হকের মানদন্ড নয়। প্রত্যেক সিলসিলা, প্রত্যেক মতাদর্শ, প্রত্যেক মাযহাব এবং দ্বীনের খাদিমদের প্রত্যেক দলকে নিজেদের সব কিছু, বিশেষত আকীদা-বিশ্বাস, চিন্তা-চেতনা এবং জীবনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যকে ‘আসসুন্নাহ’ এবং ‘আলজামাআ’র নীতি ও উসূলের কষ্টিপাথরে যাচাই করতে হবে। অতপর যা কিছু বর্জনীয় সাব্যস্ত হবে তা বর্জনের সৎসাহস প্রত্যেক মুত্তাবিয়ে সুন্নতের মাঝে থাকতে হবে। এই মূলনীতির আলোকে যদি আপনার প্রশ্নের উত্তর খোঁজেন তাহলে পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, শুধু মৌখিক দাবির দ্বারা কারো হকের উপর থাকা প্রমাণিত হয় না। তেমনি শরীয়তসম্মত মতভেদের ক্ষেত্রগুলোতে হককে নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ হওয়ার দাবি করলেও অন্যরা না-হক প্রমাণিত হয় না। ‘আসসুন্নাহ’ ও ‘আলজামাআ’র মানদন্ডই এই ফয়সালা করবে যে, শরীয়তসম্মত মতভেদের ক্ষেত্রে উভয় দল হকের উপর প্রতিষ্ঠিত। কেউ যদি অবিচার করে এবং অন্যান্য আহলে হকের, হকের উপর থাকাকে অস্বীকার করে তাহলে স্বয়ং সুন্নাহ তাকে সংশোধন করবে।
ফিকহী মাযহাবের সবগুলোই তো আহলুস সুন্নাহ ওয়ালজামাআর ইমামগণের মাযহাব। সুতরাং কোনোটাই না-হক নয়। তবে কোনো মাসআলায় যদি কোনো ইমামের ভুল হয়ে যায় তাহলে ঐ সিদ্ধান্ত অনুসরণযোগ্য না হওয়া তো স্বতঃসিদ্ধ ও সর্বসম্মত।
তো আপনার বক্তব্য অনুযায়ী যারা আপনাকে ‘সহজ সমাধান’ দান করেছেন তাদের সামনে ‘সহীহ মুতালাক্কা বিল কবুল’ হাদীসে উল্লেখিত এই মানদন্ড পেশ করুন এবং এই মানদন্ডে তাদের সবাইকে বিচার করুন।
ইমরান ইবনে তাজ
শহীদবাড়িয়া
সুন্নতের উপর আমল করতে গিয়ে যদি হাঙ্গামা হয় হোক তাতে অসুবিধা কোথায়
প্রশ্ন : ২. আমি সীরাতের কিতাবে পড়েছি, যখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দিতে আরম্ভ করলেন, শিরক বর্জন করার এবং তাওহীদের উপর আসার দাওয়াত দিলেন তখন মক্কার মুশরিকরা তাঁর সম্পর্কে বলতে লাগল, এ তো বাপবেটার মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করছে! ভাই ভাইয়ের মাঝে, স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করছে; আমাদের ঐক্য ও সংহতিকে চুরমার করছে! (দালাইলুন নবুওয়াহ, আবু নুয়াইম আসপাহানী পৃ. ৭৮)
কিন্তু আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো তাঁর দাওয়াত বন্ধ করেননি।
এ থেকে বোঝা যায়, সত্য প্রতিষ্ঠার স্বার্থে বিবাদ-বিসংবাদ মেনে নিতে হবে। সুতরাং কেউ যদি জোরে আমীন বলে এবং অন্যদেরকেও উৎসাহিত করে, আর এ কারণে কোথাও বিবাদ হয় তাহলে কী আসে যায়? যারা মিথ্যার উপর থাকে তারা তো সব সময় বিভেদ-বিচ্ছিন্নতারই বাহানা দেয় এবং সত্যের আহবানকে বাধাগ্রস্ত করে।
উত্তর : এজন্যই তো বলা হয়, ‘শুধু পড়া যথেষ্ট নয়।’ তথ্য জানা এক জিনিস, দ্বীনের প্রজ্ঞা অন্য জিনিস। প্রজ্ঞা ও অন্তর্দৃষ্টির অধিকারী ব্যক্তিত্বের সাহচর্য ছাড়া নিছক ব্যক্তিগত অধ্যয়ন দ্বীন বোঝার জন্য যথেষ্ট নয়।
আপনি আমাকে বলুন তো, কাফিরকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়া, মুশরিককে তাওহীদের দাওয়াত দেওয়া আর এক সুন্নতের অনুসারীকে অন্য সুন্নতের দিকে ডাকা, এক স্বীকৃত ইজতিহাদ অনুসরণকারীকে অন্য ইজতিহাদের দিকে ডাকা-এই সম্পূর্ণ আলাদা আলাদা বিষয়কে এক করে ফেললেন কীভাবে?
এটাই তো দ্বীনের বিষয়ে প্রজ্ঞাহীনতা যে, উসূল ও ফূরূ, মূল ও শাখার পার্থক্য না বোঝা! সরাসরি নবীর দাওয়াত আর কোনো উম্মতির ইজতিহাদভিত্তিক দাওয়াতের পার্থক্য না বোঝা!
মনে রাখবেন, ইসলাম ও তাওহীদের দাওয়াতের বিপরীতে মুশরিকদের যে অভিযোগ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ছিল, ঐ অভিযোগই যদি সুন্নাহর বিভিন্নতা এবং ইজতিহাদী বিষয়ে মতপার্থক্যের ক্ষেত্রগুলোতে দাওয়াতের সময় আসে তাহলে তা হবে সম্পূর্ণ যৌক্তিক অভিযোগ।
আমীন বিলজাহর ও রাফয়ে ইয়াদাইনের মতো সুন্নাহর বিভিন্নতার ক্ষেত্রগুলোতে সীরাতে নববীর ঐ ঘটনাগুলো আপনার স্মরণ রাখা উচিত ছিল, যা প্রবন্ধের পৃ. ৮০-৮১ উল্লেখিত হয়েছে। যখন একজন অন্যজনের উপর নিজের অনুসৃত পন্থা আরোপ করতে চাইলেন তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
كلاكما محسن
তোমরা দুজনই ভালো।
তেমনি বনু কুরাইযার ঘটনায়
لم يعنف ...
কোনো দলকেই তিরষ্কার করলেন না।
এই সকল ফুরূয়ী মাসআলার ক্ষেত্রে শিরক ও তাওহীদ সংক্রান্ত ঘটনা উদ্ধৃত করার দ্বারা বোঝা যায়, এ ধরনের প্রশ্ন যারা করেন তারা উসূল-ফুরূ এবং মানসূস আলাইহি ও মুজতাহাদ ফীহর পার্থক্য বোঝেন না বা পার্থক্য করেন না। এ ধরনের পর্যায়গত পার্থক্যকে বিলুপ্ত করা মারাত্মক অন্যায়, যার উপর কুরআন মজীদে (৯:১৯) তিরষ্কার করা হয়েছে। এই ভ্রান্তির সংশোধন খুবই জরুরি।
ফুরূয়ী ও মুজতাহাদ ফীহ মাসাইলের ক্ষেত্রে সীরাতের ঐ ঘটনা উদ্ধৃত করা থেকে এই ধারণাও সৃষ্টি হয় যে, কিছু লোক নিজের মত ও ইজতিহাদকে বা নিজের পছন্দ ও অগ্রগণ্য-বিচারকে ওহীর মতো ভুল-ত্রুটির উর্ধ্বে মনে করেন, যেন তাদের সাথে কুরআন-সুন্নাহর অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের দ্বিমত করার কোনো অধিকার নেই! কেউ দ্বিমত করলে তা হবে সরাসরি ওহীর বিরোধিতার মতো অপরাধ! আর এর দ্বারা বিভেদ-বিশৃঙ্খলা হলে এর দায় দ্বিমতকারীকেই বহন করতে হবে, তাকে নয় যিনি তার ইজতিহাদকে ওহীর মতো অকাট্য মনে করেছেন! ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
বস্ত্তত এ জাতীয় প্রান্তিকতা থেকে আত্মরক্ষার জন্যই দ্বীনের প্রজ্ঞা ও তাফাক্কুহ অর্জন জরুরি। এ সকল প্রান্তিকতা থেকেই তো বিভেদ-বিচ্ছিন্নতার উদ্ভব ঘটে। যখন গায়রে নবী নিজের মত ও পছন্দ এবং ইজতিহাদ ও তারজীহকে হক-বাতিলের মি’য়ার বানিয়ে ফেলে, যারা তা মানবে তারা হক, অন্য সবাই বাতিল তখনই ফের্কা জন্ম নেয়। ফের্কা ইমামরা বানাননি; বানিয়েছেন ঐসব ব্যক্তি, যারা নিজেদের মত ও ইজতিহাদকে ওহীর মতো ভুল-ত্রুটির উর্ধ্বে জ্ঞান করেন এবং হককে নিজের গ্রহণ-বর্জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ মনে করেন, যেন এখানে দ্বিমত পোষণ মাসূম নবীর বিরোধিতা!
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সব ধরনের প্রান্তিকতা থেকে রক্ষা করুন এবং ইতিদাল ও ভারসাম্যের পথে সর্বদা অটল-অবিচল রাখুন। আমীন।
ইবনে খালিদ, ধানমন্ডি, ঢাকা
إذا صح الحديث فهو مذهبي
(ইযা ছাহহাল হাদীস ফাহুয়া মাযহাবী) হাদীস যখন সহীহ হবে তা আমার মাযহাব
প্রশ্ন : ৩. মাযহাবের ইমামগণও রায়ের উপর হাদীসকে অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন। বর্তমানে অনেক আলিম ‘প্রচলিত আমল’কে এই নির্দেশনা অনুযায়ী হাদীসভিত্তিক করার ব্যাপারে সচেষ্ট আছেন। এ কারণে তা হানাফী মাযহাবের অনেক মতের সাথে মিলছে না। মন্তব্য করুন।
উত্তর : আপনি শিরোনামে এক কথা লিখেছেন, বক্তব্যে অন্য কথা। ইমামরা হাদীসকে রায়ের উপর অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন এ তো দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট। তারা এটাই বলেছেন এবং এটাই করেছেন। কোথাও কোনো মাসআলায় যদি হাদীস সম্পর্কে জানা না থাকার কারণে রায় বা ইজতিহাদের ভিত্তিতে কোনো ফতোয়া দিয়ে থাকেন তাহলে তাঁদের মুজতাহিদ শাগরিদরা কিংবা তাঁদের পরের ঐ মাযহাবেরই কুরআন-হাদীসের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা তা সংশোধন করেছেন। উদাহরণস্বরূপ ফিকহে হানাফীর কথাই ধরুন। এতে অনেক মাসআলা এমন আছে, যাতে ইমাম আবু হানীফার কওলের পরিবর্তে ইমাম আবু ইউসুফ, ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান, ইমাম যুফার ইবনুল হুযাইল রাহ. বা ইমাম হাসান ইবনে যিয়াদ রাহ.-এর কওল অনুসারে ফতোয়া দেওয়া হয়। এর বিভিন্ন কারণের মধ্যে একটি ঐটি, যা উপরে বলা হয়েছে।
এখনও যদি পরিমার্জনের প্রয়োজন হয় তাহলে সুনির্দিষ্টভাবে এমন কোনো মাসআলার কথা বলুন, যাতে আবু হানীফা রাহ.-এর কওলটি একান্তই তাঁর নিজস্ব সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে হাদীস, আছর, ইজমা ও খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাহ কিছুই তার কাছে নেই। অথচ এর বিপরীতে আছে সহীহ সরীহ হাদীস, যে হাদীস অনুযায়ী আমল না করে ফিকহে হানাফীতে ইমাম আবু হানীফা রাহ.-এর এমন একটি কওলের উপর আমল হচ্ছে, যা একান্তই তাঁর নিজস্ব সিদ্ধান্ত! আপনি কোনো উদাহরণ দিলে তা পর্যালোচনা করা যাবে। শুধু দাবির উপর তো আলোচনা করা যায় না।
শিরোনামে একটি প্রসিদ্ধ বাক্য-
إذا صح الحديث فهو مذهبي
উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু তা উল্লেখ করার উদ্দেশ্য কী তা বলেননি। সাধারণত ঐ সকল বন্ধু, যারা মুতাওয়ারাছ ফিকহী মাযহাবগুলোকে হাদীস-সুন্নাহর বিরোধী (নাউযুবিল্লাহ) মনে করেন তাদেরকে দেখা যায়, মানুষকে মাযহাব ছেড়ে হাদীসের উপর আমলের (তাদের ধারণায়) দাওয়াত দেওয়ার সময় এই বাক্যটি ব্যবহার করে থাকেন। তারা বলেন, তোমাদের ইমামও বলেছেন, যখন হাদীস সহীহ প্রমাণিত হয় তো সেটিই আমার মাযহাব। সুতরাং তোমরা যদি তোমাদের মাযহাবের কিতাবে লিখিত মাসআলা ত্যাগ করে এই হাদীসের উপর আমল কর তাহলে হাদীসের উপরও আমল হবে, ইমামের মাযহাবের উপরও আমল হবে। অন্যথায় না হাদীসের উপর আমল হবে, না মাযহাবের উপর।
আমি জানি না, আপনি কি ঐ বন্ধুদের এই বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে এই বাক্য লিখেছেন, না অন্য কোনো অর্থে। যাই হোক, তাদের এহেন বক্তব্য খুবই আশ্চর্যজনক! কেন? সেটিই সংক্ষেপে বলছি। আল্লাহ তাআলা যদি তাওফীক দেন তাহলে এ বিষয়ে মাসিক আলকাউসারে একটি আলাদা প্রবন্ধ লেখার ইচ্ছা আছে।
আমাদের এই বন্ধুরা তো আসলে মাযহাবকে স্বীকার করেন না। এমনকি মাযহাব শব্দটিও তাদের অপছন্দ। তাহলে এখন মাযহাব শব্দটি তাদের আলোচনায় কেন আসছে আর কেনইবা আমাদেরকে মাযহাব অনুসরণের ‘পদ্ধতি’ শেখানো হচ্ছে?
দ্বিতীয় কথা, ইমাম আবু হানীফা রাহ. যদি এই বাক্যটিই উচ্চারণ করে থাকেন তাহলে তার সনদ লাগবে। অথচ তারা এর কোনো সনদ উল্লেখ করেন না।
তৃতীয় কথা, এই বাক্যের অর্থ কি এই হয় না যে, কোনো মাসআলায় যখন সহীহ হাদীস পাওয়া যায় তখন সেটিই হয় ইমামের মাযহাব? হাদীস থাকা অবস্থায় তিনি রায় ও কিয়াসের দিকে যান না। তো এটি ছিল ইমামের নীতি, এ নীতিই তিনি অনুসরণ করেছেন এবং এ অনুসারেই তাঁর ফিকহী মাযহাব সংকলন করেছেন। এ কারণে পূর্ণ আস্থার সাথে এই মাযহাবের অনুসরণ করা যায়। তাহলে কেন এই বন্ধুরা মাযহাব ও ইমামের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা করেন?
চতুর্থ কথা, এই বাক্যের অর্থ যদি এই হয় যে, যে কেউ যে কোনো কিতাব থেকে একটি হাদীস নিবে এবং তার মতে তা সহীহ প্রমাণিত হবে, এরপর তিনি ঐ হাদীসের যে ব্যাখ্যাই করবেন এবং তা থেকে যে মাসআলাই বের করবেন সব আবু হানীফার মাযহাব হয়ে যাবে। তদ্রূপ ইমাম শাফেয়ী রাহ.সহ অন্য সকল ইমামেরও মাযহাব হয়ে যাবে। কারণ ঐ বন্ধুদের দাবি, সকল ইমাম একথাই বলে গেছেন-
إذا صح الحديث فهو مذهبي
এখন ফিকহে হানাফীর সংশ্লিষ্টদের বিশ্বাস করতে হবে যে, খোদ আবু হানীফা রাহ., তাঁর শাগরিদগণ এবং যুগে যুগে ফিকহে হানাফীর ফকীহ ও মুহাদ্দিসদের কিতাবে যে মাযহাব লেখা আছে তা ফিকহে হানাফী নয়!
প্রশ্ন এই যে, তাহলে ঐ বেচারারা ফিকহ সংকলনের কাজ করেছেন কেন? তারা যখন একবার এই বাক্য উচ্চারণ করলেন-
إذا صح الحديث فهو مذهبي
তখনই তো মাযহাব সংকলনের কাজ হয়ে গেছে!
কারণ সংকলন করেও তো কোনো ফায়েদা নেই। তাদের সংকলিত ফিকহ তো তাদের মাযহাব হবে না; বরং যুগে যুগে যারা মাযহাবকে হাদীসের বিপরীতে দাঁড় করিয়ে জনসাধারণকে নিজের মত ও ইজতিহাদ অনুযায়ী হাদীস অনুসরণের দাওয়াত দিবে তারা যা কিছুই বলবেন সেগুলোই হবে আবু হানীফা রাহ.-এর মাযহাব, মালিকের রাহ.-এর মাযহাব এবং শাফেয়ী রাহ. ও আহমদ ইবনে হাম্বল রাহ.-এর মাযহাব।
আপনি কি বুঝতে পারছেন, তাদের এই কথার অর্থ কী?
প্রশ্ন আরো আছে, আবু হানীফা নিজে হাদীস থেকে যা কিছু বুঝেছেন, হাদীসের সহীহ-যয়ীফ, রাজিহ-মারজূহ বা নাসিখ-মানসূখের যে তাহকীক তিনি করেছেন তা যদি হাদীসের অনুসরণ না হয় এবং আবু হানীফা রাহ.-এর মাযহাবও না হয় তাহলে আপনিই বা কে, যার তাহকীক ও ব্যাখ্যা হবে হাদীসেরও অনুসরণ, আবু হানীফারও মাযহাব?!
পঞ্চম কথা এই যে, ফিকহ ও ফিকহী মাযহাবের পরিচয় কি আমাদের ঐ বন্ধুদের কাছে পরিষ্কার? যদি পরিষ্কার হয় তাহলে তারা ফিকহকে হাদীসের বিপরীতে দাঁড় করান কীভাবে? মুতাওয়ারাছ ফিকহী মাযহাব তো হাদীসেরই ভাষ্যকার, হাদীসের খাদিম এবং হাদীসের বিধানাবলির সুবিন্যস্ত সংকলক। তেমনি মাযহাবের সাথে সংশ্লিষ্টদের প্রতি তাদের এই কুধারণাই বা কেন যে, তাদেরকে যদি ইমামের মাযহাবের কথা না বলে হাদীস অনুসরণের কথা বলা হয় তাহলে তারা তা মানবে না এবং হাদীস অনুসরণ করবে না, কাজেই ইমামের উদ্ধৃতিতে হাদীসকে তাঁর মাযহাব বানাও, এরপর তাদের সামনে পেশ কর তাহলে তারা হাদীসের উপর আমল করবে!
এই কুধারণা অন্যায়। তাদের কর্তব্য, সুনির্দিষ্টভাবে বলা যে, ফিকহী মাযহাবের কোন মাসআলাটি সকল সহীহ হাদীসের খেলাফ, অথচ সে মাসআলা অনুসারে আমলও করা হচ্ছে, ফতোয়াও দেওয়া হচ্ছে। এমনটা প্রমাণিত হলে অবশ্যই মাযহাব অনুসারীরা তা প্রত্যাহার করবেন। মাযহাবের অনুসরণ যারা করেন তারা তো এ উদ্দেশ্যেই করেন যে, তাদের হাদীস অনুসরণ যেন নির্ভুল ও নিখুঁত হয়।
ষষ্ঠ কথা, তাদেরকে যখন সুনির্দিষ্ট কোনো উদাহরণ দেওয়ার কথা বলা হয় তখন তারা কী ধরনের উদাহরণ দেন তার একটি দৃষ্টান্ত দেখুন।
আমার সামনে একটি পুস্তিকা আছে, যার নাম ‘যেভাবে নামায পড়তেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ প্রণয়নে অধ্যাপক মোহাম্মাদ নূরুল ইসলাম। প্রকাশক : কামিয়াব প্রকাশন লিমিটেড।
এ পুস্তিকার শুরুতে
إذا صح الحديث فهو مذهبي
কেন্দ্রিক প্রসিদ্ধ চিন্তাটা তুলে ধরা হয়েছে। এরপর নামাযের যে সকল মাসআলায় সুন্নাহর বিভিন্নতা কিংবা হাদীস বা সুন্নাহ বোঝার ইজাতিহাদী ইখতিলাফ খাইরুল কুরূন থেকে চলে আসছে সেসব বিষয়ে একটি দিক গ্রহণ করা হয়েছে এবং তার উপর আমলের দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। যেন এর উপর আমল করলেই সব ইমামের মাযহাবের উপর আমল হয়ে যাবে!!
আপনি যদি গোটা প্রবন্ধটি পাঠ করে থাকেন তাহলে বলুন-
إذا صح الحديث فهو مذهبي
বাক্যটি কি সালাত-পদ্ধতির ঐসকল ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায়, যেখানে উভয় দিকে হাদীস ও আছার রয়েছে?!
এ পুস্তিকার ৩৬ নং পৃষ্ঠায় বিতরের নামায সম্পর্কে যা কিছু লেখা হয়েছে তা এখানে উল্লেখ করছি, যাতে
إذا صح الحديث فهو مذهبي
নীতি অনুসারে ফিকহী মাযহাবের সংশোধন ও পরিমার্জনের যে দাবি করা হচেছ তার আরেকটি দৃষ্টান্ত সামনে আসে।
তিনি লিখেছেন, ‘‘বিতরের সালাত আদায়ের পদ্ধতি : তিন রাকআত বিতর দু’ভাবে পড়ার পদ্ধতি হাদীসে পাওয়া যায়।
প্রথম পদ্ধতি : অন্যান্য নামাযের মতোই প্রথম ও দ্বিতীয় রাকআত পড়বে। তৃতীয় রাকআতে কিরাআত পাঠ শেষে দু’আ কুনূত পড়ে রুকুতে চলে যাবে অথবা কিরাআত পাঠের পর রুকু দিয়ে আবার উঠে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দু’আ কুনূত পড়ে একেবারে সিজদায় চলে যাবে। তবে দ্বিতীয় রাকাআতের পর তাশাহহুদের জন্য না বসে সরাসরি দাঁড়িয়ে যাবে। শুধু মাত্র তৃতীয় রাকআতের পর বসবে এবং আত্তাহিয়্যাতু, দরূদ ও দু’আ মাছূরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে নেবে।
আয়েশা সিদ্দীকা (রা.) বলেছেন, রাসূল (স.) তিন রাকাআত বিতরের সালাত আদায় করতেন, এর মাঝে তাশাহহুদের জন্য বসতেন না। একাধারে তিন রাকআত পড়ে শেষ রাকআতে বসতেন ও তাশাহহুদ পড়তেন। এভাবে উমর (রা.)ও বিতর পড়তেন। (হাকেম : ১১৪০)’’
আমরা এই নম্বরে হাকিমের হাদীসটি দেখেছি। হাদীসটির পাঠ এই-
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يوتر بثلاث، لا يسلم إلا في آخرهن.
অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন (রাকাত) বিতর পড়তেন। তাতে শেষ রাকাতে ছাড়া সালাম ফিরাতেন না।’
একে পুস্তিকার তরজমার সাথে মিলিয়ে পার্থক্য বোঝার চেষ্টা করুন। এই হাদীসটি বর্ণনা করার পর হাকিম লেখেন-
هذا وتر أمير المؤمنين عمر بن الخطاب رضي الله عنه، وعنه أخذه أهل المدينة.
অর্থাৎ এটিই ছিল আমীরুল মুমিনীন উমর রা.-এরও বিতরের নিয়ম, তাঁর থেকেই আহলে মদীনা এই নিয়ম গ্রহণ করেছেন।
কিন্তু পুস্তিকার লেখক হাকিমের এই বক্তব্যের প্রথম অংশকে, অর্থাৎ
هذا وتر أمير المؤمنين عمر بن الخطاب رضي الله عنه
সরাসরি আয়েশা রা.-এর বক্তব্য বানিয়ে দিয়েছেন।
বিতরের বিভিন্ন পদ্ধতি থেকে যে পদ্ধতিটি হানাফী মাযহাবে গ্রহণ করা হয়েছে তার সূত্র হাকিমের এই হাদীসটিও, যার উপর হাকিমের বক্তব্য অনুযায়ী খলীফায়ে রাশেদ ওমর ইবনুল খাত্তাব রা.- এরও আমল ছিল এবং মদীনাবাসীরও। কিন্তু পুস্তিকার লেখক এর কী তরজমা করলেন এবং একে বিতরের এক খেলাফে সুন্নত তরীকার দলীল হিসেবে পেশ করলেন! এই কি তাদের সহীহ হাদীস মোতাবেক আমল করা ও করানোর খিদমত? আমি তাঁর নিয়ত সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। তাঁর নিয়ত হয়তো ভালো এবং তিনি হয়তো তার বুঝ অনুসারে সহীহই লিখেছেন, কিন্তু বাস্তবে যা হয়েছে তা আমি নিবেদন করলাম।
‘‘দ্বিতীয় পদ্ধতি : অন্যান্য সালাতের মতো প্রথমে দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে নেবেন। অতপর পৃথকভাবে আরেক রাকাত পড়ে রুকুর আগে বা পরে দুআ কুনূত পড়ে সিজদা শেষে আবার বসে সালাম ফিরাবেন।-মুসলিম : ১২৫২ (প্রাগুক্ত)’’
এ নম্বরে উল্লেখিত সহীহ মুসলিমের হাদীসটির পাঠ এই-
إن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : صلاة الليل مثنى مثنى، فإذا رأيت أن الصبح يدركك فأوتروا بواحدة، فقيل لابن عمر : ما مثنى مثنى؟ قال : أن تسلم في كل ركعتين.
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রাতের নামায দুই রাকাত দুই রাকাত করে। অতপর যখন তোমার মনে হবে, সুবহে সাদিক হয়ে যাবে তখন এক রাকাত দ্বারা বেজোড় করবে। ইবনে ওমরকে জিজ্ঞাসা করা হল-‘দুই রাকাত দুই রাকাত অর্থ কী?’ তিনি বললেন, ‘প্রতি দুই রাকাতে সালাম ফেরানো।’
এ পুস্তিকায় যা কিছু বলা হয়েছে তার সাথে মিলিয়ে দেখুন, কোথায় কোথায় পার্থক্য আছে।
‘‘তৃতীয় পদ্ধতি : এ পদ্ধতিটি আমাদের দেশে প্রচলিত। এ পদ্ধতিতে ২য় রাকাআত শেষে বসে তাশাহুদ পড়া হয়। অথচ বিশ্বের খ্যাতনামা আলেম ভারতের আল্লামা ছফীউর রহমান মুবারকপুরী বলেছেন, এ নিয়মের পক্ষে সরাসরি কোনো সহীহ হাদীস নেই। বরং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ পদ্ধতিতে বিতর পড়তে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন-
لا توتروا بثلاث، ولا تشبهوا بصلاة المغرب
‘তোমরা মাগরিবের নামাযের মতো করে তিন রাকাআত বিতরের নামায পড়ো না’।-দারকুতনী, হাদীস : ১৬৫০, ২/৩৪৪; সহীহ ইবনু হিববান : ২৪২৯) (প্রাগুক্ত)
উপরোক্ত হাদীস, যার ভিত্তিতে তিনি নিজের বুঝ অনুসারে দুই জলসা, এক সালামের সাথে তিন রাকাত বিতরের পদ্ধতি ত্যাগ করাকে জরুরি বলছেন এই হাদীসের পাঠ তারই উদ্ধৃত নম্বরে দারাকুতনী ও সহীহ ইবনে হিববানে এভাবে আছে-
لا توتروا بثلاث، أوتروا بخمس، أو بسبع، ولا تشبهوا بصلاة المغرب
(তোমরা বিতর (শুধু) তিন রাকাত পড়ো না। পাঁচ বা সাত রাকাত পড়ো। মাগরিবের সাথে সামঞ্জস্য গ্রহণ করো না।)
লেখক এই হাদীসের মাঝে থেকে أوتروا بخمس أوبسبع (পাঁচ বা সাত রাকাত পড়ো) বাক্যটি বাদ দিলেন কেন? আসলে হাদীসের এই বাক্যগুলোর দ্বারা, সহীহ সনদে বর্ণিত এই হাদীসের অন্যান্য পাঠ এবং এ বিষয়ের অন্যান্য সহীহ হাদীস দ্বারা এই হাদীসের মর্ম পরিষ্কার হয়ে যায়। আর তা হচ্ছে, তোমরা বিতর শুধু তিন রাকাত পড়ো না; বরং এর আগে তাহাজ্জুদ হিসেবে দুই রাকাত নফল বা চার রাকাত নফল নামায অবশ্যই পড়ো। নফল দুই রাকাত হলে সর্বমোট পাঁচ রাকাত হবে, আর নফল চার রাকাত হলে সর্বমোট সাত রাকাত হবে। সুতরাং মাগরিবের আগে যেমন কোনো নফল পড়া হয় না বিতরকে এমন বানিও না।
এই হাদীসের এই ব্যাখ্যা সুনানে আবু দাউদে (হাদীস : ১৩৫২, ১৩৬২) সনদে বর্ণিত আয়েশা রা.-এর হাদীস দ্বারাও সমর্থিত। আরো বিস্তারিত জানার জন্য ‘শরহু মাআনিল আছার’, তহাবী ১/২০৫ এবং ‘নাসবুর রায়াহ’ ২/১১৬-১১৮৫-এর হাশিয়া দেখা যেতে পারে।
সামান্য চিন্তা করলেই যেকোনো পাঠকের মনে প্রশ্ন জাগবে যে, সামাঞ্জস্য থেকে বাঁচার জন্য দুই রাকাতের পর জলসা ছাড়তে হবে কেন। দুআ কুনূত দ্বারাও তো দুই নামাযে পার্থক্য হচ্ছে। দুই রাকাতে জলসার বিধান তো সব নামাযের সাধারণ বিধান-
وفي كل ركعتين التحية
অর্থাৎ প্রতি দু’রাকাআতে আছে আত্তাহিয়্যাহ।-সহীহ মুসলিম, হাদীস: ৪৯৮
তো إذا صح الحديث فهو مذهبي এর ভিত্তিতে মাযহাব সংশোধনের এই যদি হয় অবস্থা আর এই ‘সংশোধিত’ মাযহাবের উপর আমল করলেই তা যদি হয় হাদীস ও মাযহাব মোতাবেক আমল, তাহলে বলুন ঐ বন্ধুদের দাওয়াত গ্রহণ করা জনসাধারণের জন্য অপরিহার্য হবে কি না এবং গ্রহণ না করলে সত্যিই তারা হাদীস-অনুসরণ থেকে বঞ্চিত থাকবেন কি না?
এখানে এই তিনটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হল। অন্যান্য প্রশ্নের জবাব ইনশাআল্লাহু সুযোগমত আলকাউসারে লেখার চেষ্টা করা হবে। (ক্রমশ)