জুমাদাল আখিরাহ ১৪৩৩   ||   মে-২০১২

‘যে কারবারগুলো ইসলামে নিষিদ্ধ সেগুলোর পতন বাস্তবেও অবশ্যম্ভাবী’

মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ

মুফতী আবুল হাসান মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ

এমএলএম ব্যবসা, কমিশন ভিত্তিক সোসাইটি শেয়ারবাজারের ঝুঁকি কিংবা ধ্বস সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত বিষয়। ইতিপূর্বে এসব বিষয়ে মাসিক আলকাউসার-এর সম্পাদক বর্তমান সাক্ষাৎকারদাতার বেশ কয়েকটি বিশ্লেষণসমৃদ্ধ আলোচনা ছাপা হয়েছে মাসিক আলকাউসার-এ। এসব ব্যবসার বর্তমান পরিস্থিতি এবং এক্ষেত্রে সরকারি নজরদারি বা ব্যবস্থাগ্রহণের সাফল্য-ব্যর্থতা নিয়ে সাক্ষাৎকারে তিনি কথা বলেছেন। একই সঙ্গে তুলে ধরেছেন শরীয়া পরিপন্থী ধারায় গড়ে তোলা প্রলুব্ধকর কারবারের নানা প্রবণতা বিপর্যয়ের কথা।

প্রশ্ন : মাসিক আলকাউসারের বিগত কয়েক সংখ্যায় এমএলএম ব্যবসা সম্পর্কে আপনার একটি ধারাবাহিক আলোচনা ছাপা হয়েছে। এরই মধ্যে দেশের বড় একটি এমএলএম কোম্পানিসহ জাতীয় কোম্পানিগুলোর স্বরূপ উন্মোচিত হতে শুরু করেছে। শুরু হয়েছে সরকারি পদক্ষেপ। একই সঙ্গে এসব বিষয় মিডিয়াতে প্রতিবেদন প্রকাশ হচ্ছে। এর আগে তুঙ্গে থাকা অবস্থাতেই দেশের শেয়ারবাজার সম্পর্কে আপনার একটি ধারাবাহিক সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছিল, যেখানে ওই ব্যবসার বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতিসহ তা যে শরীয়তের দৃষ্টিতেও অগ্রহণযোগ্য-সে আলোচনা উঠে এসেছিল। মাসিক আলকাউসার- আপনার আলোচনার পর পর ক্ষেত্রগুলোতে প্রকৃত স্বরূপ প্রকাশিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টাকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

উত্তর : আসলে আমরা যখন ব্যবসা বা লেনদেন সম্পর্কে শরঈ হুকুম বের করার চেষ্টা করি তখন দুটি বিষয়কে সামনে রাখি। একটি হচ্ছে, ব্যবসা বা লেনদেনটিকে কুরআন-সুন্নাহ তথা শরয়ী নীতিমালার আলোকে বিশ্লেষণ করা। এভাবে ফিকহী দৃষ্টিকোণ থেকে তাতে কী কী বৈধতা বা অবৈধতার উপাদান রয়েছে তা আমরা তুলে ধরি। দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, ব্যবসা বা লেনদেনটির ভালোমন্দ লাভালাভ

বাস্তবতা স্বাভাবিকতার দিক থেকেও তুলে ধরার চেষ্টা করি।

প্রথম বিবেচনায় আমরা শরয়ী হুকুমটা বলে দিই। আর দ্বিতীয় বিবেচনায় ব্যবসার বাস্তব চিত্রটার প্রতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করি।

প্রলোভন, হুজুগ আবেগের বাইরে এসে কেউ যখন বাস্তবতার নিরিখে বিষয়গুলোকে দেখবেন তখন বুঝতে পারবেন যে, এসব তাৎক্ষণিক চটকদার ব্যবসার অন্তঃসারশূন্যতা কত বেশি। তারা বুঝতে পারবেন, এমএলএম বা কমিশনভিত্তিক সোসাইটি ইত্যাদির কারবার কখনো টেকসই কোনো কারবার হিসেবে স্বীকৃত হতে পারে না। এমএলএম নিয়ে সরকার মাত্র নজরদারি শুরু করেছে। এর আগে আপনি শেয়ারবাজারের দিকে দেখুন। একেকটি শেয়ার যখন উল্লেখযোগ্য কোনো কারণ ছাড়াই লাগামহীন উঁচু দামে বেচাকেনা হচ্ছিল তখন কি কেউ সরকারি-বেসরকারি কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে তৎপর হতে দেখেছে, যারা বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে আলোকপাত করবে এবং মানুষকে সতর্ক করবে? ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে যখন শেয়ারের কেবল মূল্যবৃদ্ধি ঘটানো হচ্ছিল তখন কি সেটা দুশ্চিন্তার বিষয় ছিল না? নজর দেওয়া হল তখন যখন সব কিছু প্রায় শেষ হয়ে গেছে। সাধারণ অবুঝ বা অতিমুনাফালোভী বিনিয়োগকারীদের হাজার হাজার কোটি টাকা বেহাত হয়ে গেছে।

কিন্তু শরয়ী দৃষ্টিকোণ বাস্তবতার নিরিখে বিশ্লেষণ থেকে আমরা তখনি সতর্কীকরণের কাজটি করেছি। এটা আমাদের দায়িত্ব ছিল। নিরাবেগ বিশ্লেষণে গেলে কথাগুলোই বলতে হত, যা আমরা বলেছি। পরে তার স্বরূপ প্রকাশিত হয়েছে। লাখ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের হাহাকার শোনা গেছে। এটা ঘটা প্রায় অবধারিতই ছিল। আমাদের বলার কারণে হয়েছে-এভাবে ভাবার দরকার নেই। অবধারিত একটি বিষয়কেই আমরা একটু আগে চিহ্নিত করেছি এবং নিঃসঙ্কোচে পাঠকদের বলে দিয়েছি। কারণ আমরা নিরাবেগ ছিলাম এবং শরয়ী দৃষ্টিকোণ সামনে নিয়ে বলেছিলাম। তবে ভালো হত, যদি সরকারি-বেসরকারি নীতি নির্ধারকরা আরো আগে থেকে সতর্কীকরণের ভূমিকা পালন করতেন, প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরতেন। তাহলে লাখ লাখ মানুষ বিপুল ক্ষতি থেকে বাঁচতে পারতেন।

প্রশ্ন : অতি সম্প্রতি দেশের একটি বড় এমএলএম কোম্পানিসহ এমএলএম ব্যবসার ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থাগ্রহণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। মিডিয়াতেও বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশ হচ্ছে। বিষযে আপনি কিছু বলবেন?

উত্তর : বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি দেশের বড় একটি এমএলএম কোম্পানির বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এবং বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেছে। এরপর ওই কোম্পানির পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করার পর সেটিও খারিজ হয়ে গেছে। মিডিয়াতেও গুরুত্বের সঙ্গে এমএলএম ব্যবসার অন্তঃসারশূন্যতা তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে হচ্ছে। কিন্তু সবকিছুই হয়েছে দেরিতে। আজ এমএলএম কোম্পানির কর্তাদের হাতে বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা চলে গেছে। টাকাগুলো উচ্চবিত্ত শ্রেণীর নয়, নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর। তাদের সামনে শর্ট টাইমে বড়লোক বানানোর প্রলোভনের ফাঁদ পাতা হয়েছে। এভাবেই এত টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, এমএলএম কোম্পানিগুলোর কর্তারা গ্রুপ অব কোম্পানি গড়ে তুলেছে। টিভি চ্যানেল খুলেছে, পত্রিকা প্রকাশ করেছে। অথচ তারাই আবার দাবি করে থাকে যে, তাদের গ্রাহকদের তারা কম মূল্যে পণ্য দিয়ে থাকে। এটা একটা অসত্য দাবি। এখন সরকারের অর্থ বিভাগ তাদের দিকে নজর দিচ্ছে। নজরটা দেওয়া উচিত ছিল একদম শুরুতেই। বলতে পারি, রহস্যজনকভাবে অনেক দেরিতে নজর দেওয়ার ব্যাপারটি ঘটেছে। অনেকটা সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়ার পর।

আর সে ক্ষেত্রেও কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি, হাইকোর্টে এমএলএম কোম্পানির দায়ের করা রিট খারিজ হওয়ার পরও সরকার তড়িৎ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মাঝে মাঝে কেবল বলা হচ্ছে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে যুবকের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। এই বিলম্বে ব্যবস্থাগ্রহণ কালক্ষেপণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দরিদ্র গ্রাহকরা। কারণ পরিচালকরা এই সুযোগে টাকা সরিয়ে ফেলে থাকে। মূল কোম্পানির তহবিল থেকে টাকা সরিয়ে তারা অন্য দিকে নিয়ে যায়। এরপর যখন তাদের শক্ত হাতে ধরা হয় তখন দেখা যায় তহবিল ফাঁকা। আমানতকারী গ্রাহকদের ফিরিয়ে দেওয়ার মতো কিছুই নেই। তারপরও সরকার মনোযোগ দেওয়ায় ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু বিষয়ক পদক্ষেপগুলো দ্রুত নেওয়া উচিত।

আরেকটি বিষয় হল, পদক্ষেপ কেবল একটি-দুটি কোম্পানির ক্ষেত্রে নয়, জাতীয় এমএলএম বা অস্বাভাবিক পন্থার যেসব ব্যবসা মানুষকে রাতারাতি বড়লোক বানানোর প্রলোভন দেয় তাদের সবকটিকে গোড়াতেই থামিয়ে দেওয়া উচিত। উচিত জাতীয় ভিত্তিহীন চটকদার ব্যবসাকে আইন করে নিষিদ্ধ করা। আমাদের দেশের অনেক মানুষ স্বল্প শিক্ষিত কিছুটা হুজুগ দ্বারা আক্রান্ত। প্রলোভন সৃষ্টিকারী ব্যবসার কর্তারা এটাকেই বড় রকম সুযোগ সুযোগের ক্ষেত্র মনে করে। তাই আইন করে গোড়া থেকে সরকারিভাবে সতর্কীকরণের পদক্ষেপ চালু থাকা দরকার। এক্ষেত্রে কঠোর নীতি প্রয়োগে গড়িমসি করলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় লাখ লাখ সাধারণ পর্যায়ের গ্রাহকদের।

প্রশ্ন : কোনো কোনো বড় এমএলএম কোম্পানির ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থাগ্রহণের যেসব খবর পাওয়া যাচ্ছে তাতে কি আপনি এসব প্রলোভনমূলক ব্যবসা বন্ধ হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী?

উত্তর : সরকার যদি একটি দুটি এমএলএম কোম্পানি বন্ধ করে দেয়, বাস্তবে ধরনের কারবারের মূলে হাত না দেয়-স্থায়ী আইন করে বাধা না দেয় তাহলে এতে কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না। কারণ দেশ-বিদেশের যে কোনো এমএলএম কোম্পানি এক নামে বেশি দিন ব্যবসা চালায় না বা তাদের পক্ষে চালানো সম্ভব হয় না। কারণ একটা পর্যায়ে তাদের চেইন নিচের দিকে শেষ হয়ে যায়। তখন আগের উদ্যোক্তারাই নতুন নামে ব্যবসা শুরু করে। সুতরাং আইন করে ধারাটিকে বন্ধ করতে হবে। সাময়িকভাবে একটি দুটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে তেমন কোনো সুফল পাওয়া যাবে না।

বর্তমানে ইন্টারনেটভিত্তিক ডলার বা টাকা কামানোর যেসব ব্যবসা আছে সেগুলোরও অনেক কটিই শরীয়তের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ বাস্তবতার দিক থেকেও ঝুঁকিপূর্ণ। যেমন ক্লিক বাণিজ্য। অর্থাৎ কোনো একটি সাইটে ক্লিক করলেই ডলার পাওয়া যাবে- ধরনের অফার থাকে। এসব ব্যবসার ক্ষেত্রেও সরকারের পক্ষ থেকে নিরুৎসাহমূলক নীতি থাকা উচিত।

প্রশ্ন : বিভিন্ন কারবার বা ব্যবসা বিষয়ে আপনার আলোচনার ক্ষেত্রে দেখা যায়, যে ব্যবসাটি শরীয়তের দৃষ্টিতে ঝুঁকিপূর্ণ

বাস্তবতার বিচারেও সেটি আর্থিক বিপর্যয়ের উপলক্ষে পরিণত হয়ে থাকে। এরই মধ্যে সেটাই হয়েছে। এতে আপনি কি মনে করেন যে, শরীয়তের দৃষ্টিতে যেটি অগ্রহণযোগ্য বাস্তবক্ষেত্রেও তার ব্যর্থতার কারণ মূলত শরয়ী নীতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যশীলতা বা শরয়ী নীতির পরিপন্থী হওয়া?

উত্তর : হ্যাঁ, অবশ্যই। ইসলাম হচ্ছে স্বাভাবিক কল্যাণকর দ্বীন। মূল কথা হচ্ছে, ব্যবসা বা কারবার যুগ যুগ থেকে চালু ছিল। ইসলাম আসার আগে থেকেই ব্যবসা চলে আসছে। ইসলাম ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ঐসব নীতি বিধান দিয়েছে, যা কল্যাণকর। আর ক্ষতিকর নিয়মনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সুতরাং থেকে আপনি ধরে নিতে পারেন, যে কারবারগুলো ইসলামে নিষিদ্ধ বাস্তবেও সেগুলোর পতন বা বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী। যদিও সাধারণ অবস্থা দেখে বা উড়ন্ত বাহ্য দৃষ্টিতে মানুষ সব সময় সেটা বুঝতে পারে না। শরীয়তের নীতিমালা রক্ষিত হয় না-চটকদার এমন অনেক ব্যবসায় শুরুতে মানুষ প্রলুব্ধ হয়, লাভজনক মনে করে। পরে আবার জন্য তাকে আক্ষেপও করতে দেখা যায়।

প্রশ্ন : সুদী ব্যাংকগুলো তো শরীয়তের দৃষ্টিতে অনুমোদিত নয়। কিন্তু এগুলো তো তাদের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ করছে। অর্থনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। বিষয়ে আপনি কী বলেন?

উত্তর : সুদী লেনদেন ইসলামে নিকৃষ্টতম হারাম। বিশ্ব অর্থব্যবস্থা যেহেতু সুদনির্ভর তাই এর ক্ষতি ভোগ করছে পুরো পৃথিবীই। লক্ষ্য করলেই দেখতে পাওয়া যাবে, প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পদ কিভাবে এককেন্দ্রিক হচ্ছে। সুদের কুপ্রভাবে দেশে দেশে অল্প কিছু লোকের হাতে ধন সম্পদ কুক্ষিগত হয়ে যাচ্ছে। বেশির ভাগ মানুষ ভোগ করছে দারিদ্র কষ্ট। এর সবই সুদের পরিণতি। দীর্ঘ মেয়াদী প্রক্রিয়ায় অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ার কারণে মানুষ ক্ষতিটাকে তাৎক্ষণিক তীব্রভাবে অনুভব করে না। প্রক্রিয়াটাকেই স্বাভাবিক মনে করে। সুদমুক্ত ভালো ইসলামী বিকল্প পৃথিবীজুড়ে চালু থাকলে মানুষ বুঝতে পারত, তারা কী হারাচ্ছে এবং সুদের কারণে তাদের কী কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে-

يمحق الله الربوا ويربى الصدقت

(তরজমা) আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং সদাকাকে বৃদ্ধি করেন।-সূরা বাকারা () : ২৭৬

তবে সুদী ব্যাংক বা সুদী অর্থব্যবস্থার সঙ্গে আলোচিত এমএলএম ব্যবসা ক্লিক বাণিজ্যের কিছু মৌলিক পার্থক্য আছে। কারণ হঠাৎ গজিয়ে ওঠা এমএলএম বা প্রলোভন প্রদর্শনকারী বিভিন্ন সংস্থার কারবারগুলো হল অনেকটা প্রতারণাভিত্তিক কারবার। সেখানে শরীয়তের বহু নিষিদ্ধ উপাদানের সমাবেশ ঘটে থাকে। একই কারণে কারবার তার সঙ্গে জড়িত লোকদের ক্ষতিও দ্রুতই ডেকে আনে।

প্রশ্ন : আপনি কি সংশ্লিষ্টদের ব্যাপারে কোনো পরামর্শ দিবেন?

উত্তর : আমার প্রথম অনুরোধটি থাকবে মুসলমান ভাইবোনদের প্রতি। তারা যেন নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ সময় ধরনের অতি মুনাফা প্রদানকারী শরীয়ত পরিপন্থী কারবারের পিছনে ব্যয় করে দুনিয়া আখিরাত বরবাদ না করেন।

এরপর বিশেষ অনুরোধ করব উলামায়ে কেরাম, মাদরাসা, কলেজ-ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের, তারা যেন এসবের পিছনের পড়ে নিজেদের ক্যারিয়ার ধ্বংস না করেন।

মনে রাখতে হবে, বড় লোক হওয়ার বৈধ কোনো শর্টকাট রাস্তা ইসলামে যেমন নেই তেমনি তা বিজ্ঞান সমর্থিতও নয়। আর আপনি সঠিক যথাযথ শিক্ষা অর্জন করলে জীবন চলার জন্য আপনাকে এসবের পিছনে দৌড়াতে হবে না। মনে রাখবেন, পরে পস্তানোর চেয়ে আগে সতর্ক হওয়া ভালো।

আর শেষ আবেদন করব সরকারের কাছে। তারা যেন সকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর আইন করার পর বাণিজ্য অর্থ মন্ত্রণালযের একটি বিশেষ সেল গঠন করেন এবং সেখানে বেছে বেছে যোগ্য সৎ কর্মচারী-কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেন, যারা সর্বপ্রকার চাপ অবৈধ অফারকে অগ্রাহ্য করে ধরনের ভুইঁফোড় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গোড়াতেই যথোপযুক্ত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে তৎপর থাকে।

উপরোক্ত সুপারিশগুলোর যতটুকুই

বাস্তবায়িত হবে মানুষ তার সুফল ভোগ করবে। উপকৃত হবে দেশ জনগণ।

সাক্ষাৎকার গ্রহণ : শরীফ মুহাম্মদ

 

 

 

advertisement