হাদীসে নববীর পাঠগ্রহণ : উসূল ও আদাব
১ যিলকদ ৩২ হি., মোতাবেক ৩ সেপ্টেম্বর ১১ ঈ. জুমাবার পাটুয়াটুলি লেন জামে মসজিদে উপরের শিরোনামে একটি ইলমী মজলিস অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে জামিয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়া ঢাকার উস্তাযুল হাদীস মাওলানা আবদুল মতীন দামাত বারাকাতুহুম দাওরায়ে হাদীসের তালিবে ইলমদের উদ্দেশে মাশাআল্লাহ অত্যন্ত দিকনির্দেশনামূলক ও গুরুত্বপূর্ণ একটি আলোচনা করেন। আলোচনাটির গুরুত্বের কারণে তাঁর ও আমার নযরে ছানীর পর তা শিক্ষার্থীদের পাতায় পেশ করা হল। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে উপকৃত হওয়ার তাওফীক দান করুন। আমীন।-তত্ত্বাবধায়ক
***
বিভিন্ন মাদরাসা থেকে আগত আমার ছাত্র ভাইয়েরা!
ইসলামে হাদীসের গুরুত্ব কত তা আমাদের জানা আছে। আর ইলমে হাদীস কতটা নাজুক ফন-এই অনুভূতিও কমবেশি আমাদের আছে। তাই হাদীসের দরস গ্রহণের উসূল ও আদাব রক্ষা করার গুরুত্ব নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। বিস্তারিত আলোচনা তো সম্ভব নয়, আমি নিচের শিরোনামগুলোর উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
١تصحيح الاغلاط الواقعة في كتب الحديث سندا ومتنا
۲تحقيق معاني ألفاظ الحديث
۳معرفة ضبظ اسماء الرجال على وجه الإتقان
٤دراسة كتب أسماء الرجال مع التيقظ لمواضع الخلل والعلل
٥معرفة أصول السلف في الحديث التي هي أصول الحنفية، مع المقارنة بأصول المحدثين بعد المئتين
٦فقه الحديث مع حفظ النصوص واحاديث الاحكام التي هي مستدلات الفقه الحنفي.
تصحيح الاغلاط الواقعة في كتب الحديث سندا ومتنا
আমরা যারা হাদীস পড়ি আমাদের প্রথম ও প্রধান, হলো হাদীসটিسندا ওمتنا সহীহ করে পড়া। তাই আমাদের কর্তব্য, সনদ ও মতনে পান্ডুলিপি প্রস্ত্ততকারী, মুহাক্কিক, প্রকাশক কিংবা মুদ্রণকারীর অসতর্কতার কারণে যেসব ভুলভ্রান্তি হয় তা চিহ্নিত করা এবং সঠিক বিষয়টির জ্ঞান লাভ করা। এটা এক দিনেই হয়ে যাবে না, কিন্তু ফিকিরে যদি আসে তাহলে ক্রমান্বয়ে প্রস্ত্ততি নিতে পারব। এর জন্য সহায়ক কিতাব সংগ্রহ করতে পারি, সহীহ নুসখা সংগ্রহ করতে পারি। আমাদের যে হাদীসের কিতাবগুলো আছে এর মধ্যে অনেকগুলোর সহীহ নুসখা পাওয়া যায়। আর কিছু আছে পুরো না হলেও অনেকাংশে সহীহ। এ নুসখাগুলো এ জন্যই যোগাড় করব যে, কিতাবটা সহীহ করে পড়তে হলে ঐ সব নুসখার প্রয়োজন হবে।
আমি তিরমিযী শরীফ পড়াই। বিভিন্ন প্রয়োজনে অনেক কিতাব দেখতে হয়। এভাবে মুরাজাআত ও মুকাবালার দ্বারা ভুলগুলোর সংশোধন হতে থাকে। এগুলো সাধারণত নিজের ব্যক্তিগত কিতাবের টীকায় নোট করে নেই। তো এমন এমন গলতি আমাদের কিতাবে রয়েছে, যা আমরাও এভাবে পড়ছি এবং এভাবেই পড়া চলছে; অথচ আমাদের হাতে এখন ওসাইল কম নয় এবং বাহির থেকে কিতাব এসে পৌঁছাটা আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়ে গেছে।
أغلاط এর কিছু নমুনা
১. তিরমিযী শরীফে প্রথম দিকে, অনেকে হয়তো পড়ে ফেলেছেন আর অনেকে পড়বেন, একটি বাব আছে-باب الاستنجاء بالحجرين এই বাবে ইমাম তিরমিযী রহ. একটা اضطراب উল্লেখ করেছেন। আমাদের নুসখা গলত থাকার কারণে মুবারকপুরীর তুহফাতুল আহওয়াযী থেকে নিয়ে মা‘আরিফুস সুনানসহ সব কিতাবে, এমনকি দরসে তিরমিযীতেও ঐ ভুলের অনুসরণ করা হয়েছে।
ওখানে শেষের যে সনদটি আছে সেটির সঠিক রূপ হলো :
زكريا بن أبي زائدة عن عبد الرحمن بن يزيد عن الأسود بن يزيد عن عبد الله بن مسعود رضي الله عنه
عن الأسود بن يزيد"" কথাটি আমাদের নুসখা থেকে বাদ পড়েছে। আর বাদ পড়ার কারণে اضطراب টা যেভাবে সাজানো হয়েছে ঐভাবে সাজানো ঠিক হয় না। এটাকে ভেঙ্গে আরেকভাবে সাজাতে হয়। বিস্তারিত বর্ণনার দিকে তো যেতে পারছি না, দাওরায়ে হাদীসের ছাত্ররা শুধু এতটুকু মনে রাখলে চলবে যে عن عبد الرحمن بن يزيد এর পরে عن الأسود بن يزيد আমাদের নুসখায় নেই। এই না থাকাটা ভুল।
আমিও প্রথম এখানে الأسود بن يزيد দেখে দাগ দিয়েছি, ভুলের উপর এত ইতিমাদ ছিল যে, বিশুদ্ধ নুসখায় এটা দেখে গলত মনে করে দাগ দিয়েছি। পরে যখন تحفة الأشراف দেখলাম, فتح الباري দেখলাম, তখন ধরা পড়ল, যেটাকে গলত মনে করে দাগ দিয়েছি সেটাই আসলে সঠিক।
এরকম জিনিসগুলো আমাদের ঠিক করে নিতে হবে। অনেক জায়গায় এর কারণে বেশ গলতির শিকার আমরা হয়ে যাই।
২. সুনানে তিরমিযীতে আরেক জায়গায়زياد بن عبد الله البكائي সম্পর্কে তিরমিযী রহ. وكيع بن الجراح এর উদ্ধৃতিতে উল্লেখ করেছেন যে, زياد مع شرفه يكذب في الحديث অর্থাৎ ‘ভদ্রতা সত্ত্বেও যিয়াদ হাদীসে মিথ্যা বলত।’ অথচ ইমাম বুখারীর التاريخ الكبير খুলে দেখা গেল এখানে আছে- زياد أشرف من أن يكذب في الحديث অর্থাৎ যিয়াদ হাদীসের ক্ষেত্রে মিথ্যা বলা থেকে অনেক উর্ধ্বে! এই যে বেশকমটা আমরা যদি অনুসন্ধানী দৃষ্টি রাখি আমাদের সামনে ধরা পড়বে। এই বছর না হোক, আমার যেহেনে যদি ঢুকে যে, সবক্ষেত্রেأصل এরمراجعت করতে হবে, তাহলে এমন অনেক জিনিস আমাদের সামনে ধরা পড়বে।
1. ইমাম তিরমিযী রহ.এর আরেকটি কিতাব আছে العلل الكبير । সেখানে علقمة بن وائل সম্পর্কে ইমাম বুখারীর হাওয়ালায় লেখা হয়েছে- علقمة لم يسمع من أبيه অর্থাৎ ‘আলকামা তার পিতা থেকে শুনেনি।’ আর এটাকেই হাতিয়ার বানিয়ে আস্তে আমীন বলার হাদীসের সনদে যে علقمة عن أبيه এসেছে, সেখানে জোরেশোরে লা-মাযহাবিরা প্রচার করে থাকে যে, আলকামা তার পিতা থেকে শোনেননি। অথচ علقمة عن أبيه এ সনদ মুসলিম শরীফে আছে। ইলালে কাবীরে ইমাম বুখারীর হাওয়ালায় যে বলা হয়েছে ইমাম বুখারীর التاريخ الكبير উল্টিয়ে দেখা গেল তার বিপরীত কথা। সেখানে আছে سمع أباه অর্থাৎ আলকামা তাঁর পিতা থেকে হাদীস শুনেছে। বোঝা গেল ইলালে কাবীরের বক্তব্য ইমাম বুখারীর নয়।
اغلاط এর প্রকারভেদ :
ক) গলতি কখনো ناشر বা প্রকাশকের কারণে হয়।
খ) কখনো ناسخ বা অনুলিখকের কারণে হয়।
গ) কখনো محقق বা সম্পাদকের কারণে হয়।
ঘ) কখনো কখনো مصنف এর কারণেও হয়।
সব রকম اغلاط ই আমাদের সামনে ধরা পড়ছে।
আজকাল তো কম্পিউটারের যুগ, আমরা ভেবেছিলাম কম্পিউটার এলে অনেক সহজ হয়ে যাবে। কিন্তু কম্পিউটার আসার পর দেখা গেল ভুলের হার আরো বেড়েছে। লাইনকে লাইন বাদ পড়েছে। এরপর অযোগ্য লোকদের দ্বারা ইরাব ও হরকত লাগানো হচ্ছে, অযোগ্য লোকদের দ্বারা রিজালের উপর কালাম করানো হচ্ছে, ফলে যা ঘটছে তা অবাক হওয়ার মত।
ইবনে মাজাহর দুটি উদাহরণ আমি এখানে পেশ করছি।
এক. كةاب الةجارة এর باب الأسواق ودخولها একটি হাদীস আছে, ফুয়াদ আব্দুল বাকীর নুসখা অনুযায়ী যার নম্বও ২২৩৩
হাদীসের সনদটি এরূপ :حدثني صفوان بن سليم قال: حدثني محمد وعلي أنبأنا الحسن بن أبي الحسن البراد
এই যেأنبانا এখানে সহীহ শব্দ হলابنا । এখানে محمد وعلي এর পরিচয় দেয়া হয়েছে এরা দু’জন হল الحسن بن ابي الحسن এর পুত্র। তো এখানেابنا এর স্থলেانبانا হয়ে গেছে। তথাপি কেউ কেউ ভুল ধরে ফেলতে পারত। কিন্তু ড. মুস্তফা আ’যমী যখন সুনানে ইবনে মাজাহ তাহকীক করে ছেপেছেন, তাঁর অভ্যাস হলো حدثنا و انبانا এর পূর্বে قال,قالا,قالوا ইত্যাদি বৃদ্ধি করা। সে হিসেবে তিনি এখানে محمد وعلي এর পর "قالا" যোগ করে দিয়েছেন। এবার ইবারত হয়ে গেল- قالا أنبأنا الحسن بن أبي الحسن
এখন আর সংশয়ও জাগবে না যে, এটা মূলত ছিল "ابنا" পরিবর্তন হয়ে انبانا হয়ে গেছে।
নুসখার তাহকীক করতে গিয়ে মুহাক্কিকদের পক্ষ থেকে এমন গলতি হয়ে যায়।
দুই. ইবনে মাজাহর كةاب الأطعمة এর باب الضيافة একটি হাদীস-যার নম্বর হল ৩৩৫৭। হাদীসটির সনদ হল-
حدثنا جبارة بن المغلس قال : ثنا المحاربي قال : ثنا عبد الرحمن بن نهشل عن الضحاك بن مزاحم عن ابن عباس رضي الله عنه.
ইবনে মাজাহর সমস্ত নুসখায় সনদটা এভাবে আছে। تهذيب الكمال (১৭/৪৬৪) খুলে এই তথ্য পেলাম যে, মিয্যী রহ.(মৃত্যু : ৭৪২ হি.) বলেন-
هكذا وقع عنده في جميع الروايات عنه وهو وهم فاحش وتخليط قبيح , والصواب: " عن المحاربي عبد الرحمن عن نهشل"
তো ইবনে মাজাহর নুসখায় সনদ যেভাবে আছে তার অর্থ হল, মুহারিবী বলছে حدثنا عبد الرحمن بن نهشل তার মানে মুহারিবির উস্তাদ হল عبد الرحمن আর عبد الرحمن এর পিতার নাম نهشل কিন্তু মিয্যী রহ. বলছেন-
والصواب عن المحاربي عبد الرحمن عن نهشل
অর্থাৎ المحاربي এর নামই হল عبد الرحمن নামটা আগে উল্লেখ করে যদি عبد الرحمن المحاربي বলা হত তাহলে হয়তো এ সমস্যাটা হত না।
মুহারিবীর উস্তাদ হল نهشل بن سعيد সে হিসাবে হওয়া দরকার عن نهشل بن سعيد আর عبد الرحمن হবে المحاربي এর সাথে।
এটা আমি উদাহরণ স্বরূপ তুলে ধরলাম এজন্য যে, এ রকম ভুল যেমন নাসিখ থেকে হয়, কোনো কোনো সময় মুসান্নিফ থেকেও হয়। এজন্য এসব কিতাবের সহীহ নুসখা প্রকাশিত হয়েছে, যাদের সামর্থ্য আছে তারা সে সহীহ নুসখাগুলো সংগ্রহ করার চেষ্টা করি।
আমাদের ভিতরে যদি চেতনা আসে তাহলে আমরা ঐভাবে মেহনত করব এবং মুরাজাআত করব। যেখানে কিতাব আছে সেখানে কিতাবের, নতুবা যারা এ বিষয়ের পারদর্শী তাদের কাছে মুরাজাআত করে নিলে ইনশাআল্লাহ আস্তে আস্তে এ সমস্যাগুলো কেটে যাবে।
আমাকে চিন্তা করতে হবে, আমার কাজটা কী, আমার দায়িত্ব কী। এখন আমি যতটুকু পারি করব। মাদরাসার ব্যবস্থাপনার উপর কোনো আপত্তি করব না। আমার হুজুরের কাছে যতটুকু مواد আছে সে আলোকেই তিনি পড়াচ্ছেন, এখান থেকে এসব আলোচনা শুনে গিয়ে যদি উল্টা আছর হয় তবে সেটা খুব খারাপ হবে।
কিছু সহীহ নুসখার বিবরণ
তিরমিযী শরীফের সহীহ নুসখা
তিরমিযী শরীফের জন্য আহমদ শাকেরের নুসখা সংগ্রহ করা যেতে পারে। এটা অবশ্য মুকাম্মাল নুসখা নয়। তিনি নিজে যে দুই খন্ড তাহকীক করেছেন সেটা মোটামুটি ভালো হয়েছে, বাকী তিন খন্ড যারা করেছেন তারা আহমদ শাকেরের নাহ্জ ধরে রাখতে পারেননি। তিনি যে নুসখাগুলো সামনে রেখে কাজ করেছেন তারা সে নুসখাগুলো সামনে রাখেনি। আমরা যদি আমাদের নুসখার সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে ঠিক করে নেই তাহলে অনেকটা নির্ভুল করা যাবে। আমি অবশ্য মিলিয়ে মিলিয়ে তিরমিযী ১ম খন্ড ঠিক করেছিলাম। তখন দেখেছি কোন কোন জায়গায় আমাদের নুসখায় গলতি রয়েছে। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে ঐ নুসখায়ও গলতি রয়েছে।
এরপর شعيب الأرناؤوط এর নুসখা এসেছে। এটাতে দেখলাম গলতি তুলনামূলক কম।
সুনানে ইবনে মাজাহর সহীহ নুসখা
ফুয়াদ আবদুল বাকীর পর আর কেউ ইবনে মাজাহর সহীহ নুসখা প্রস্ত্তত করেছে বলে আমাদের জানা নেই। ড. মুস্তফা আ’যমী যে নুসখার তাহকীক করেছে তাতে তো বহু خلط রয়েছে। এজন্য অন্তত ফুয়াদ আবদুল বাকীর নুসখা সামনে রেখে আমাদের নুসখার সাথে মিলিয়ে মিলিয়ে পড়লে কিছু কিছু গলতি ঠিক হয়ে যাবে। এভাবে সহীহ নুসখা সংগ্রহ করতে হবে।
সুনানে আবু দাউদের সহীহ নুসখা
আবু দাউদের সহীহ নুসখা শায়খ মুহাম্মদ আওয়ামা (হাফিযাহুল্লাহ) প্রস্ত্তত করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ আবু দাউদের সহীহ নুসখা প্রস্ত্তত হয়ে গেছে। এটা আমরা সামনে রাখতে পারি।
সহীহ বুখারীর জন্য الطبعة السلطانية খুবই উপযোগী। আর হযরত মাওলানা আহমদ আলী সাহারানপুরীর মূল ও প্রথম নুসখাও।
সহীহ মুসলিমের জন্য তুরষ্কের আল্লামা ذهني -এর তাহকীককৃত নুসখা। খোঁজ করলে আরো অনেক কিতাবেরই সহীহ নুসখা পাওয়া যেতে পারে।
দুই. تحقيق معاني ألفاظ الحديث
দ্বিতীয়ত : আমি যে বিষয়টির উপর তাম্বীহ করতে চাচ্ছি তা হচ্ছে-
تحقيق معاني ألفاظ الحديث
এটা এজন্য বলছি যে, কিছু শব্দ আছে আমাদের জানা। এগুলোকে যেভাবে শুনি, যেভাবে জানি সেটার উপরই নির্ভর করে থাকি, কিন্তু তাহকীক করলে দেখা যায় যে, যা জানি তা গলত।
এর দুটো উদাহরণ তুলে ধরছি :
১. এ পর্যন্ত আমি অনেক ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করেছি এবং খুব কম ছাত্রই জবাব দিতে পেরেছে যেناصيه অর্থ কী? আমরাও ছোটবেলায় যখন কুদূরী পড়েছি ناصيه অর্থ জেনেছি, কপাল। সে হিসাবে ناصيه বা اعلى الناصية মাসাহ করার অর্থ হল, কপাল মাসাহ করা। কিন্তু ناصيه অর্থ যে মাথার অগ্রভাগ এটা দেখা যায় অনেক ছাত্রই জানে না।
২. অনুরূপ আরেকটি শব্দ আমি এক ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, বল দেখি هدبةالثوب এর মধ্যেهدبة অর্থ কী? আমরাও পড়েছি এবং এখনো ছাত্রদের যেহেনে এটা গেঁথে আছে যে-هدبة الثو মানে কাপড়ের আঁচল। আসলে هدبه অর্থ ঝালর। কাপড়ের পরে যে বাড়তি অংশ থাকে, যেমন জায়নামাযে একটু বাড়তি অংশ থাকে এটাকে هدبة বলে। সাহাবী هدبة বলে যা বুঝাতে চেয়েছেন কাপড়ের কিনারা অর্থ করলে তা বুঝায় না যেমনটা বুঝা যায় কাপড়ের ঝালর করলে।
এরকম বেশ কিছু শব্দ আছে যা আমরা একরকম পড়ছি বা আমাদের যেহেনে একরকম বসে আছে, কিন্তু যখনই লুগাত খুলে দেখা হয় তখন দেখা যায় অর্থটা আসলে এরকম নয়। এজন্য আমাদের এ ফিকির রাখতে হবে যে, শব্দটা যতই মাশহুর হোক না কেন আমি তাহকীক করে পড়ার চেষ্টা করব। এখন যতটুকু পারি পড়ব আর এ ফিকির যদি আমার মধ্যে থাকে তাহলে পরবর্তীতেও চেষ্টা অব্যাহত রাখব। আমি মেহনত করে তাহকীক করে পড়ব এটা আমার কাজ।
তিন.
معرفة ضبط اسماء الرجال على وجه الإتقان
এই বিষয়টা এজন্যই বলতে চাচ্ছি যে, আমাদের ছাত্ররা ব্যাপকভাবে এ বিষয়ে গাফিলতি করে থাকে এবং ভালো ভালো ছাত্ররা এক্ষেত্রে ভুল করে থাকে।
১. আমাদের একজনকে লিখতে দেখেছি- عبد الرزاق بن هُمَام( بضم الهاء وتخفيف الميم المفةوحة) অথচ সহীহ হল, الهَمَّام(بفتح الهاء وتشديد الميم المفةوحة) কিন্তু الهَمَّامএর জায়গায় هُمَام লেখার কারণ হল فتح القدير এর মুসান্নিফ ابن الهمام এর উপর অনুমান করা। এ রকম নামের মধ্যে গলতিটা আমাদের বেশি হয়। এদিকে মনোযোগ না দেয়ার কারণে আমরা অন্যদের হাসি তামাশার পাত্রে পরিণত হয়ে যেতে পারি। এজন্য আমি এটাও বলব যে, নাম সহীহভাবে উচ্চারণ করতে হবে। পড়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে এবং সহীহ ضبط টা মনে রাখতে হবে। দাওরায়ে হাদীসের বছর নামগুলো বারবার আসে তাই এটার প্রতি আমি যেন লক্ষ্য রাখি এবং খেয়াল করে যেহেনে বসাই।
২. আমার মনে আছে আমরা ছাত্র থাকাকালে ইয়াহইয়া ইবনে মায়ীন রাহ.-এর নাম ابن مُعِين(بضم الميم) পড়েছিলাম, অথচ সহীহ হল-ابن مَعين(بفتح الميم)
৩. আমাদের ভালো একজন ব্যক্তি المعجم الكبير এর মুসান্নিফের নাম উচ্চারণ করে তিবরানী, আবার কেউ কেউ (তবরানী) বলে, আসলে সহীহ ضبط হল طَبَراني (তবারানী) এটা অনেকে জানে না। যাই হোক আমরা নামগুলো সহীহ ভাবে জেনে মনে রাখার চেষ্টা করব।
চার.
دراسة كتب اسماء الرجال مع التيقظ لمواضع الخلل والعلل
তালিবুল ইলমদের জন্য আমি মনে করি, দুটি কিতাব তারা সামনে রাখতে পারে।
এক. تقريب التهذيب হাফেয ইবনে হাজার রহ.(মৃত্যু : ৮৫২ হি.) যা রচনা করেছেন।
দুই. الكاشف হাফেয যাহাবী রহ. (মৃত্যু : ৭৪৮ হি.) যেটি রচনা করেছেন।
এ দুই কিতাবের مزايا ওخصوصيات কী এগুলো এখানে আলোচনার বিষয় নয়। الكاشف এর সেই নুসখা সংগ্রহ করতে হবে যা শায়খ মুহাম্মদ আওয়ামার তাহকীক ও তালীকসহ ছেপেছে এবং এখন থেকেই কিছু কিছু করে মোতালাআ শুরু করতে হবে। এসব বিষয়ে যওক না থাকলে দেখা যাবে একজন বলে দেবে আপনি দলিল হিসেবে যে হাদীসটি পেশ করেছেন তা যয়ীফ তখন আমার ক্ষমতা হবে না এটা খন্ডন করার। আমি এখন এ বিষয়ে যেহেতু ফিতনার সম্মুখীন তাই এভাবে প্রস্ত্ততি নেব যে রাবীদের জীবনী সংক্ষিপ্তভাবে এ দুই কিতাব থেকে মিলিয়ে মিলিয়ে পড়ব। এতে আমার ضبط টা সহীহ হবে এবং আস্তে আস্তে ذوق বা রুচি তৈরী হবে।
আর مع التيقظ শব্দটা যোগ করেছি এজন্য যে, আমার ঐ ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে। রিজালের কিতাবে বহুاغلاط পাওয়া যায়। এসব গলতি তিন কারণে হয়ে থাকে : ناشر এর কারণে, محقق এর কারণে, কখনো কখনো মুসান্নিফের কারণে।
এজন্য এগুলি সতর্কতার সাথে পড়তে হবে।
সবকিছু একসঙ্গেই পড়তে হবে এমনটি জরুরি নয়। কিছু কিছু করে পড়তে থাকবো যখন আমার মধ্যে এর চেতনা ও যওক সৃষ্টি হবে তখন আমি অগ্রসর হতে পারব।
اغلاط -এর কিছু নমুনা
১. কিছু দিন আগে পড়ছিলাম হাফেয যাহাবী রহ.-এর العبر في خبر من غبر কিতাবটি। আমার নুসখায় আছে العبر في خبر من عبر(بالعين) মুহাক্কিক লিখেছেন যে, দুই রকমই সহীহ। যা হোক উক্ত গ্রন্থে নাজানি কার দ্বারা হরকত লাগানো হয়েছে, বেচারা মুসহিরকে লিখেছে মিসহার। এ রকম বহু বহু ভুল দেখলাম। যেমন- اسماعيل بن شروس الصنعاني এক রাবী। এ বেচারা সম্পর্কে ইবনে আদী, যিনি বড় মাহের মানুষ, আসমাউর রিজালের উপর তার প্রসিদ্ধ কিতাব الكامل في ضعفاء الرجال , তিনি তার এ কিতাবেاسماعيل بن شروس সম্পর্কে معمر এর কথা উল্লেখ করেছেন- كان يضع الحديث অর্থাৎ তিনি হাদীস রচনা করতেন, হাদীস জাল করতেন। ইমাম বুখারীর উদ্ধৃতি দিয়ে এ কথা উল্লেখ করেছেন, কিন্তু ইমাম বুখারীর التاريخ الكبير খুলে দেখা গেল সেখানে يضع الحديث এর জায়গায় আছে- يثبج الحديث যার অর্থ হল- كان يخلط الحديث অর্থাৎ তিনি হাদীসের মধ্যে خلط করতেন। আসলে معمر তার সম্পর্কে বলেছে يثبج الحديث আর ইবনে আদীর নুসখায় এসে হয়ে গেছে يضع الحديث । পরে হাফেয যাহাবী রহ. মুগনীতে লিখেছেন- كذاب।
তবে كذاب লিখে বলে দিয়েছেন-قاله معمر যা হোক হাওয়ালা দিয়েছেন। এরপর যখন তাঁর আরেক কিতাব ديوان الضعفاء তে এর সম্পর্কে বলেছেন তখন সেখানে শুধু كذاب লিখেছেন কোন হাওয়ালা বা উদ্ধৃতি দেননি।
তিরমিযীতে এক জায়গায় আমি আটকে গেলাম। তিরমিযী রহ. عبد الرحمن بن زياد بن انعم সম্পর্কে বলেছেন-هذا اسناد مشرقي শরাহ-শুরূহাতে কোথায়ও এর সমাধান খুঁজে পেলাম না। সবশেষে মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল মালেক ছাহেবকে ফোন করলাম। তিনি আমাকে একটা সমাধান জানালেন আমার কাছে সেটা খুব ভালো লেগেছে। আল হামদুলিল্লাহ এটা সহীহ সমাধান। এখানে বলার সময় নেই তবে এতটুকু বলি যে, আমরা যখন প্রস্ত্ততি নেব তখন যেখানে আটকে যাই মুরাজাআত করব।
আমার ছাত্রদের অনেকে তিরমিযী পড়ায়। অনেকেই ঐভাবে মুরাজাআত করেই পড়ায় কিন্তু কারো কারো মধ্যে এর অভাব দেখা যায়। এটা তোমাদেরকে বলছি, তোমরাও সামনে ইনশা-আল্লাহ তাদরীসী করবে তখন মুরাজাআত করবে। এটার খুব অভাব।
পাঁচ.
معرفة أصول السلف في الحديث التي هي أصول الحنفية، مع المقارنة بأصول المحدثين بعد المئتين
আমাদের হানাফিয়্যাদের যে উসূলুল হাদীস, তা মূলত সালাফের উসূল। কিন্তু আমরা তা জানি না। اصول الفقه এর কিতাবে আমরা পড়েছি بحث السنة । এতে হানাফীদের কিছু উসূল উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও আরো অনেক উসূল মুতাকাদ্দিমীনের ফিকহে মুদাল্লাল ও ফিকহে মুকারানের কিতাবসমূহ, ইমাম তহাবীর শরহু মাআনিল আছার ও শরহু মুশকিলিল আছারে আছে। দ্বিতীয় শতকের পূর্ববর্তী ইমামগণ বিশেষত ইমাম আবু হানীফা ও তাঁর শাগরিদের কাছে এই উসূলই معمول بها ছিল। কিন্তু আমরা এসব উসূল জানার চেষ্টা করি না।
আমি একটি মাদরাসায় গিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে মুতালায়া করতাম এবং বিভিন্ন বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতাম, তারা পড়ালেখা করে যখন تخصص في علوم الحديث থেকে ফারেগ হল তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম, বল তো মুরসাল সম্পর্কে হানাফিয়্যাদের উসূল কী? দেখলাম তারা বলতে পারছে না। হানাফিয়্যাদের মত কী, আমাদের উসূল কী এটা জানে না। এই দিকে মনোযোগ দেয়া হয়নি একারণে এটা রয়ে গেছে।
ঐ দিন ছাত্রদেরকে দেখালাম যে হানাফিয়্যারা مرسل এর যে تعريف লিখেছে হুবহু এটাই মুহাদ্দিসদের মত অথচ আমাদের গলত বুঝানো হয় যে, মুহাদ্দিসরা مرسل বলে এটাকে আর ফুকাহারা مرسل বলে ঐটাকে। আমি قدماء মুহাদ্দিসদের কথা বলছি। এটা যখন আমি জানব তো আমার মনের অবস্থা হবে একরকম আর যখন জানব সব মুহাদ্দিসরা বলে একটা আর হানাফিয়্যারা বলে অন্যটা তখন আমার হালত হবে আরেক রকম।
এজন্য এ বিষয়টার প্রতি খেয়াল রাখি যে, মুহাদ্দিসীনে কেরামের উসূল জানার পাশাপাশি আমাদের ইমামদের উসূলগুলো ভালোভাবে মনে রাখব। আমাদের ইমামগণ রেওয়ায়েত ও দেরায়েত উভয়টিই জানতেন। এমন নয় যে, তারা শুধু ফকীহ ছিলেন।
একটা মেছাল দিচ্ছি, مرسل সম্পর্কে আমরা নূরুল আনওয়ারে পড়ে এসেছি ওখান থেকে যফর আহমাদ উসমানী রহ.(মৃত:১৩৯৪হি.) قواعد في علوم الحديث এ এনেছেন যে, قرون ثلاثة এর মারাসিলمطلقا গ্রহণযোগ্য; যে কোন ধরনের রাবীর ارسال হোক না কেন। কিন্তু তাহকীক করে দেখা গেল একেবারে এ রকম না। ইমাম আবু বকর আলজাসসাস রাহ. (মৃত্যু : ৩৭০ হি.) এর কিতাব الفصول في الاصول যখন ছেপে এল তখন দেখলাম যে তিনি قيد লাগিয়েছেন এবং মাযহাবের ইমামদের দিকে নিসবত করেই লিখেছেন। তিনি লেখেন-
الصحيح عندي و ما يدل عليه مذهب اصحابنا أن مرسل التابعين وأتباعهم مقبول ما لم يكن الراوي ممن يرسل الحديث عن غير الثقات (২: ৩১)
তিনি قيد লাগিয়েছেন যে, তাবিয়ীন ও তাবে তাবিয়ীনের مرسل তখনই গ্রহণযোগ্য যখন রাবী غير ثقات থেকে ইরসাল করেন এমন না হয়। তার মানে রাবী যদি এমন হয় যে, সে শুধু ثقات থেকে রেওয়ায়েত করে তাহলে তার مرسل গ্রহণযোগ্য হবে। এখন আমি যদি শিখি যে, মুরসাল مطلقا মাকবূল তাহলে হাফেয ইবনে হাজার রহ.(মৃত:৮৫২হি.) আমাকে মাঝে মধ্যে ফাতহুল বারীতে বলবেন, والمرسل عند المخالفين أيضا حجة অথচ এ ধরনের অনেক জায়গায় দেখা যায় আমাদের উসূল মোতাবেক ঐ মুরসাল আমাদের নিকট হুজ্জত নয়। কিন্তু মূল জিনিসটা যদি আমার জানা না থাকে তো আমি সেখানে সমস্যায় পড়ে যাব। হাফেয সাহেব যখন বলবেন والمرسل عند المخالفين أيضا حجة তখন আমার কোনো জবাব থাকবে না। এজন্য আমি বলছি, মুহাদ্দিসীনের উসূল জানার পাশাপাশি আমাদের হানাফিয়্যাদের উসূলও জানতে হবে।
এখানে মনে রাখতে হবে, উসূল দুই ধরনের : এক হলো متاخرين মুহাদ্দিসীনে কেরামের اصول واصطلاح আমরা অধিকাংশরা এগুলোই পড়ে থাকি যেমন شرح النخبة আমরা অনেকে অবশ্য তাও পড়ি না। এক্ষেত্রে আমাদেরকে গুরুত্ব দিতে হবে। উসূলের উপর আমি যতক্ষণ পাকা না হব ততক্ষণ আমি কারো সামনে টিকে থাকতে পারব না। এলোমেলো কথা বলে কারো সামনে টিকে থাকা যায় না। শরহে নুখবাতে متاخرين এর যে ইসতেলাহগুলো এসেছে সেগুলোকে متقدمين এর কিতাব ও ব্যবহার থেকে খুঁজে খুঁজে বের করতে হবে, জানতে হবে। আমরা যদি এ বিষয়গুলো যেহেনে রাখি তাহলে আস্তে আস্তে সামনে অগ্রসর হতে পারব। এদিকে توجه দেয়ার জন্য আমি সকলকে আহবান জানাচ্ছি।
ছয়.
فقه الحديث مع حفظ النصوص واحاديث الأحكام التي هي مستدلات الفقه الحنفي
এখানে আমি فقه الحديث দ্বারা বুঝাতে চাচ্ছি হাদীসের فهم ও যথাযথ অনুধাবন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তাআলা এ নেয়ামত আমাদের আকাবিরকে একশত ভাগ দিয়েছিলেন। এ فقه الحديث ও تفقه দিন দিন কমে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে আরেকটা দুর্বলতা হল,حفظ النصوص তো বটেই احاديث الاحكام ও আমাদের মুখস্থ থাকে না বা নেই। আমরা যখন বিভিন্ন জায়গায় সমস্যায় পড়ি তখন দেখা যায় মনের মধ্যে ঐ সাহসটা আমাদের থাকে না যে সাহসটা এগুলো মুখস্থ থাকলে থাকত। এজন্য আমাদের আকাবিরের কিতাব থেকে যেমন আমরা فقه الحديث জানব, পাশাপাশি আমাদের যে দলীলগুলো আছে, আয়াত ও হাদীসের যে দলীলগুলো আছে তা মুখস্থ রাখার চেষ্টা করব। হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল মালেক সাহেব এবার মারকাযুদ্দাওয়াতে حفظ النصوص এর উপর নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। শায়খ মুহাম্মদ আওয়ামা দা.বা. আমাদের দেশে حفظ النصوص এর গুরুত্বহীনতার কথা জেনে অস্থিরতা প্রকাশ করেছেন। এ জন্য আমাদের আহবান, এর প্রতি আমরা গুরুত্ব দেই। اثار السنن যা আল্লামা নিমাভী রহ.(মৃত:১৩২২হি.) রচনা করেছেন এবং এ ধরনের অন্যান্য কিতাব থেকে আমরা আমাদের দলীলগুলো মুখস্থ রাখতে পারি।
সর্ব শেষে ছোট্ট একটা কথা বলে আমার আলোচনা শেষ করব, তা হল, হাদীসের কিতাব সমূহে যে تراجم الابواب আছে তার প্রতি গুরুত্ব দেয়া এবং তা খেয়াল করে পড়া । আমরা যারা দাওরায়ে হাদীসের ছাত্র তারা যদি একটু খেয়াল করে পড়ি তাহলে তা আমার হাদীস বুঝার ক্ষেত্রে এবং হাদীস দ্বারা استدلال এর ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।
একটি উদাহরণ :
সহীহ বুখারীতে হাদীস আছে- إذا أمن القاري فأمنوا এটা দ্বারা القراءة خلف الامام تركএর পক্ষে দলীল হয়। এই হাদীস থেকে বুঝা যায়, ইমামই হল ক্বারী। এখন কেউ বলতে পারে, ক্বারী বলে নামাযের বাহিরে যে কেরাত পড়ে তাকেও তো বুঝানো হতে পারে, তখন আমরা বলতে পারব, ইমাম ইবনে মাজাহ রহ.(মৃত:২৭৩হি.) باب القراءة خلف الإمام এর অধীনে এ হাদীসটি নিয়ে এসেছেন। তার মানে ইমাম ইবনে মাজাহ রহ. বুঝেছেন এ হাদীসটি قراءت خلف الامام এর সঙ্গে সম্পৃক্ত, নামাযের বাহিরে পড়ার সম্পর্কে নয়।
এভাবে আমি تراجم الابواب থেকে অনেক ফায়দা পেয়েছি। আমরা যদি খেয়াল করি তবে অনেক জায়গায় দেখব আমরা যেভাবেاستدلال করি বড় বড় মুহাদ্দিস সেভাবেইاستدلال করেছেন যেটা আমার খোঁজ করে বের করতে হতো বা খোঁজ করে হয়তো পেতাম না।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে তাওফীক দান করুন। আমীন।
وآخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين