স্বাধীনতা সুরক্ষাই বিজয়ের প্রাণ
যে কোনো বড় বিষয় অর্জন করা কঠিন কাজ। কিন্তু অর্জিত বিষয়টিকে রক্ষা করা তার চেয়েও কঠিন, গুরুত্বপূর্ণ ও দরকারি কাজ। এই নীতিটি যদি আমাদের স্বাধীনতার সঙ্গে, রাষ্ট্রের অর্জিত স্বাধীনতা ও স্বাধীন অস্তিত্বের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয় তাহলে সেটি আরও জোরালোভাবে ধরা পড়ে। অর্জিত স্বাধীনতা ও বিজয়ের চল্লিশ বছর পূর্তিকালে অর্জনকে রক্ষা করার বিষয়টি মিলিয়ে দেখা এবং এর প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি ১৯৭১ সালে নয় মাসের একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন অস্তিত্ব লাভ করেছে। এর আগে এ অঞ্চলটি ছিল পাকিস্তানের অংশ-পূর্ব পাকিস্তান। তারও আগে (১৯৪৭ সনের আগে) এ অঞ্চলটি পূর্ববঙ্গ হিসেবে খ্যাত ছিল এবং বৃহত্তর বৃটিশ উপনিবেশ-পাক-ভারত উপমহাদেশের অংশ ছিল। এজন্যই বলা হয়, এ অঞ্চলটি গত ষাট বছরে দু’ দুবার স্বাধীন হয়েছে। একবার বৃটিশ উপনিবেশ থেকে, আরেকবার যুক্ত পাকিস্তানের কাঠামো থেকে। শেষোক্ত অর্জনকেই এখন সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে বলা হয় স্বাধীনতা অর্জন। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় হিসেবেও এ পর্বটিকেই বিবেচনা করা হয়।
সে বিজয় বা অর্জনের পর এরই মধ্যে চল্লিশ বছর পার হয়ে গেছে। কিন্তু এই চল্লিশ বছরে আমাদের স্বাধীনতার স্বরূপ ও মূল অবয়ব কতোট অক্ষুণ্ণ আছে কিংবা স্বাধীনতার সাফল্য কতটুকু বজায় রয়েছে-তার একটি পরিমাপ করা এবং রাষ্ট্রের স্বাধীন অস্তিত্বকে শংকামুক্ত করতে আরও সতর্ক হওয়ার বিষয়টি নানা কারণে এখন বেশি গুরুত্ববহ হয়ে উঠেছে। কারণ, অর্জিত বিষয় রক্ষা করতে না পারলে অর্জনের কোনো মূল্য থাকে না।
দুই.
১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে একজন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর এম এ জলিল। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কেবল দেশের স্বাধীন অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রামে নিবেদিত হওয়ায় তাকে কোনো খেতাব দেওয়া হয়নি। ৯ নং সেক্টরের কমান্ডার হওয়ার পরও তিনি খেতাব পাননি। বিজয়ের পর পর মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী রাষ্ট্র-ভারতে দেশের সম্পদ পাচার হওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলায় তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পর্যন্ত নিক্ষেপ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে প্রথমে সমাজতান্ত্রিক ধারায় এবং জীবনের শেষ পাঁচ-ছয় বছর ইসলামী ধারার রাজনীতিতে পুরোপুরি নিবেদিত ছিলেন তিনি। তিনি একটি বড় প্রবন্ধ লিখেছিলেন, যেটি পরে ছোট পুস্তিকা আকারে প্রকাশিত হয়েছিল। প্রবন্ধটির শিরোনাম ছিল-‘অরক্ষিত্স্বাধীনতাই পরাধীনতা’। শিরোনামের মধ্যেই আসলে পুরো প্রবন্ধের বক্তব্য ফুটে উঠেছে। তিনি তার প্রবন্ধে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী প্রতিবেশী বড় রাষ্ট্রটির আগ্রাসী তৎপরতার মুখে স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্ব সংকটের বিভিন্ন চেহারা ফুটিয়ে তুলেছিলেন। গত শতাব্দীর আশির দশকের শেষ দিকে তার প্রবন্ধের এই শিরোনামটি বহু দেশপ্রেমিক লেখক-বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিকের মুখে মুখে উচ্চারিত হতে দেখেছি।
মরহুম মেজর এম এ জলিলের প্রবন্ধের শিরোনামটির ভাব ও বক্তব্য অক্ষুণ্ণ রেখে উল্টো করে বললে আমরা এখন বলতে পারি, স্বাধীনতার সুরক্ষাই বিজয়ের প্রাণ বা বিজয়ের স্বার্থকতা। কারণ স্বাধীনতা অর্জনের পর তার নানামাত্রিক আবেদন ও দাবি ধারণ করতে না পারলে প্রকৃত স্বাধীনতা টিকে থাকে না; বরং স্বাধীনতার নামে একটা মোড়ক শুধু অবশিষ্ট থাকে। ভেতরে ভেতরে রাষ্ট্রের হৃদয় ও আত্মায় পরাধীনতার সব আলামত স্পষ্ট হয়ে উঠে।
ভূ-গোল ঠিক রেখেও স্বাধীন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব খোকলা করে দেওয়া যায়। একটি রাষ্ট্রের মানচিত্রে বড় রকম আঘাত না করেও তার পানি, ভূমি, পরিবেশ, অর্থ, ব্যবসা, সংস্কৃতি, শিক্ষা ও চেতনায় পরাধীনতার বিষ ছড়িয়ে দেওয়া যায়। বহু সূক্ষ্ম ও পরিণামদর্শী মানুষের বিবেচনায় আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশে এখন সেই বিষটি বেশি পরিমাণে ছড়িয়ে দিচ্ছে প্রতিবেশী বড় রাষ্ট্র ভারত।
তিন.
বাংলাদেশ ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর অভ্যুদয় ঘটা একটি রাষ্ট্রের নাম। এ রাষ্ট্রটি সেদিন থেকেই স্বাধীন। সংবিধান, নীতি-ধারা ও চর্চায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অটুটই আছে। কিন্তু স্বাধীন রাষ্ট্র-সত্ত্বার স্বকীয়তা ও সার্বভৌমত্বের যেসব সূচক ও উপাদান থাকে তার সবকটিই এখনও অক্ষুণ্ণ আছে কি না-এ প্রশ্নটি আজ বেশির ভাগ নাগরিকের মনে উঁকি দিচ্ছে।
স্বাধীনতা বিঘ্নিত ও অরক্ষিত হওয়ার প্রধান সূচক হচ্ছে মানচিত্রে আঘাত আসা। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমাদের সমুদ্রসীমা নিয়ে এমন সমস্যা এখন প্রকট যে, সমুদ্রে আমাদের সীমানার শতাধিক মাইল অঞ্চল হাতছাড়া হওয়ার জোগাড় এবং সে অঞ্চলে রয়েছে একাধিক তেল-গ্যাস ক্ষেত্র। সম্প্রতি সিলেটসহ দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে সীমান্ত সমন্বয়ের নামে বাংলাদেশের একরের পর একর জায়গা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে প্রতিবেশী দেশের জন্য। এ ছাড়া গভীর সমুদ্রে অবস্থিত তালপট্টি দ্বীপও এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিক হত্যা এবং একতরফা কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনাও প্রকাশ্য।
এছাড়াও স্বাধীনতা অরক্ষিত হওয়ার অপর একটি দিক হচ্ছে দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অপর কোনো দেশের পক্ষ থেকে কোনো শংকামূলক উপাদান ও উপলক্ষ বিরাজ করা। সম্প্রতি ভারতের এক অংশ থেকে অপর অংশে যাওয়ার করিডোর দিয়ে সে শংকামূলক উপলক্ষ তৈরি করা হয়েছে।
স্বাধীনতার সুরক্ষা বাধাগ্রস্ত হওয়ার আরেকটি দিক হচ্ছে অপর দেশের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক নদী-প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টি করে পানি আগ্রাসনের মধ্য দিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্রটিকে বিপর্যস্ত করে তোলা। সত্তরের দশক থেকে ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে বাংলাদেশের পশ্চিম-উত্তর অঞ্চলের নদীগুলোকে পানিশূন্য করে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিবেশী দেশ। এতে স্বাধীন বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের নদীগুলো শুকিয়ে মাঠ হয়ে যাবে। অর্থনৈতিক আগ্রাসন, বাণিজ্য বৈষম্য, শিক্ষা-সংস্কৃতি, মিডিয়া ও চেতনাগত আগ্রাসনেও এ দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বকীয়তা বার বার প্রশ্নবিদ্ধ করছে প্রতিবেশী বড় দেশটি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী এ দেশটি বিজয়ের দিন থেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার মূল প্রাণকে নির্জীব ও নিষ্প্রাণ রাখতে একের পর এক পদক্ষেপ নিয়েই চলেছে। যেমন করছে তারা নেপাল-ভুটানের ক্ষেত্রেও। যার ফলে স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের স্বাধীনতা সুরক্ষিত থাকছে না। এ কারণেই প্রতিবেশী দেশের লোকেরা এদেশে এসে এদেশের মন্ত্রীদের সামনে বলতে পারছে, বাংলাদেশ ভারতের ‘বাফার স্টেট’ হবে। তাই বিজয়ের চল্লিশ বছর পর অবশ্যই স্বাধীনতা সুরক্ষার বিষয়ে দেশপ্রেমিক নাগরিকদের সক্রিয় ও সচেতন ভাবনা ভাবতে হবে।
চার.
একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে আমাদের জীবনযাপন ও বসবাস আল্লাহ তাআলার দান। রাষ্ট্রটি মুসলিমপ্রধান। বহু ঝড়-ঝাপটা ও ভ্রুকুটি সত্ত্বেও এ রাষ্ট্রের রাষ্ট্রধর্ম এখনও ইসলাম। আমাদের প্রধান দুটি প্রতিবেশীর একটি রাষ্ট্র হিন্দুপ্রধান, অপরটি বৌদ্ধপ্রধান। নামে ধর্মনিরপেক্ষ হলেও হিন্দুপ্রধান প্রতিবেশী বড় রাষ্ট্রটি ইতিহাস ও বর্তমানের যে কোনো বিবেচনায় সবচেয়ে হিংস্র-সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রগুলোর একটি। এ সাম্প্রদায়িকতা রাষ্ট্রযন্ত্র ও রাষ্ট্রের নাগরিক-মানসিকতা উভয় দিক থেকে এবং দেশের ভেতরে ও বাইরে সবখানে। এ রকম পরিবেশে আমাদের স্বাধীনতা সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি।
চিন্তার আরেকটি দিক হচ্ছে, উন্নয়নশীল মুসলিম প্রধান দেশগুলোর ওপর এখন বিশ্বসাম্রাজ্যবাদী শক্তির কু-নজরও সবচেয়ে বেশি সক্রিয়। এ জন্য মুসলিমবিরোধী আঞ্চলিক শক্তিগুলোকেও তারা উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশের সাম্প্রতিক চিত্র এক্ষেত্রে বড় রকম উদাহরণ। এসব দিক নিয়ে বিবেচনায় বসলে সহসাই আমাদের স্বাধীনতার নিশি্ছদ্র নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য নিরন্তর প্রয়াসের প্রয়োজনটা সামনে চলে আসে। তাই অর্থ-বাণিজ্য, খনিজসম্পদ, শিক্ষা-সংস্কৃতি, পানি ও ভূমিসহ সবক্ষেত্রেই প্রকৃত স্বাধীন একটি অবয়ব ও অস্তিত্ব ধারণ করতে না পারলে এদেশের অর্জিত স্বাধীনতা বিপণ্ণ হতে পারে যে কোনো সময়। বিজয়ের চল্লিশ বছর পূর্তিকালে বাস্তব নানা কারণে এ ধরনের জ্বলন্ত আশঙ্কার বিষয়গুলো নিয়ে বাধ্য হয়ে ভাবতে বসাও বেদনার। বেদনার হলেও উপায় নেই। কারণ কেবল বিজয় আর স্বাধীনতার জয়ধ্বনি তুলে তালি বাজালেই বিজয় অর্থবহ হতে পারে না। সে পর্যায়ে নেই আমরা। স্বাধীনতা সুরক্ষার চিন্তা না করে কোনো উপায় নেই।
এ পর্যায়ে আরেকটি বিষয়ে আমাদের নজর দেওয়া দরকার। সেটি হচ্ছে, মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নির্ণয় এবং রাষ্ট্রীয় মূলনীতি নির্ধারণে কোনো ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণ করতে না পারা। একইভাবে জরুরি রাষ্ট্রীয় ইস্যুগুলোতে ইতিবাচক ঐকমত্য সৃষ্টি করতে না পারা। মুক্তিযুদ্ধ কেন হয়েছিল, সে যুদ্ধের চেতনা কী এবং কতটুকু পর্যন্ত বিস্তৃত-এ সম্পর্কে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান ভিন্ন। রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে কী কী থাকতে হবে-সে বিষয়েও জাতির কর্ণধারদের কমন কোনো বক্তব্য নেই। ক্ষমতাহীন দলগুলো সংবিধানে এ পর্যন্ত পরস্পরবিরোধী পনেরটি সংশোধনী এনেছে। সংবিধানের মূল চেহারা ও সংশোধিত চেহারা নিয়ে এখন বিতর্ক ও বিশৃঙ্খলা অনেক তুঙ্গে। এতে করে জাতীয় ঐক্যের ভিত তো ফেটে চৌচির হচ্ছেই উল্টো অনৈক্য ও পারস্পরিক বিরাগভাজনে গোটা দেশের নাগরিক সমাজ প্রচন্ডভাবে বিভক্ত হয়ে আছে। স্বাধীনতা সুরক্ষার ক্ষেত্রে এ পরিস্থিতিটা মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই স্বাধীনতা অর্জন ও বিজয়ের প্রাণ অক্ষুণ্ণ রাখতে চাইলে দেশের সব মহলের উপর-নীচ সব পর্যায়ে সজাগ, সতর্ক, ঐক্যবদ্ধ ও সাহসী অবস্থান গ্রহণ করতে হবে।
পাঁচ.
স্বাধীনতা সুরক্ষার ভিত্তি কী হবে-এটি একটি প্রশ্ন হতে পারে। এ প্রশ্নের উত্তরে যাওয়ার আগে আরেকটি প্রশ্ন নিয়ে আমরা ভাবতে পারি। সেটি হচ্ছে, এখন এ মুহূর্তে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ওপর কেউ খড়গহস্ত হলে কেন হবে। উত্তর : এক. এ দেশটি আক্রান্ত হতে পারে সম্ভাবনাময় মুসলিমপ্রধান একটি দেশ বলে। সুতরাং স্বাধীনতা হরণকারী হতে পারে মুসলিম বিনাশী এক বা একাধিক শক্তি। সে হতে পারে বিশ্ব বা আঞ্চলিক কোনো মাদবর-মোড়ল অথবা যৌথশক্তি। দুই. দেশে দুর্নীতি, বিশৃঙ্খলা ও অনৈক্য থাকলে বহিঃশক্তির পক্ষে অর্জিত স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করে দেওয়া সহজ হতে পারে।
এবার আমরা প্রথম প্রশ্নের উত্তরে যেতে পারি। সে উত্তরটি হচ্ছে, এ দেশের স্বাধীনতা সুরক্ষার ভিত্তি হতে হবে ঈমান ও আমানতদারি। ঈমান, ইসলাম ও মুসলিমবিনাশী শক্তির আগ্রাসনের মুখে কোনো দেশের মুসলমানই ঈমান থেকে দূরে সরে গিয়ে বাঁচতে পারেনি। শত্রুরা তাদের রেহাই দেয়নি, বিশ্বাস করেনি। ঈমানহীন মুসলিম আল্লাহর মদদ পায়নি, শত্রুর করুণাও পায়নি। অসহায় পতন হয়েছে তাদের। এজন্যই মুসলিমপ্রধান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সুরক্ষার প্রধান অবলম্বন ঈমান। পূর্ণাঙ্গ মুমিনের জীবন ও চেতনা ধারণ ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুরক্ষা হবে না। নাগরিকদের আত্মরক্ষা ও প্রতিরোধ চেতনা গড়ে উঠার জন্য সর্বব্যাপী ঈমানের বলে বলীয়ান শক্তির প্রয়োজন সর্বাধিক।
আর প্রয়োজন আমানতদারির। দুর্নীতি, বিশৃঙ্খলা ও অনৈক্যের অবক্ষয়ে ডুবে গেলে ছোট শত্রুও ‘বড় ভূমিকা’ রাখার সুযোগ পেয়ে যায়। তাই আমানতদারির জীবন অবলম্বন করতে হবে। এই আমানতদারি দ্বিমুখী। বান্দার প্রতি আল্লাহর আমানত। মানুষের প্রতি মানুষের আমানত, এই দুই আমানতের যথাযথ মর্যাদা দিলে ইনশাআল্লাহ স্বাধীনতার সুরক্ষা নিয়ে বারবার শংকিত হতে হবে না এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে স্বাধীনতার প্রাণ ছিনিয়ে নেওয়ার মতো কোনো শক্তির মুখোমুখিও হতে হবে না আমাদের।