রবিউল আখির ১৪৩২   ||   মার্চ-২০১১

কুই আগে রাওয়ানা হ্যায়, কুই পিছে রাওয়ানা

আবু আবদুর রশীদ

ছোটকাল থেকেই বড়দের মুখে শুনে আসছি-ইহাঁ হাম ছব মুসাফির হ্যায়ঁ, ওহী আখের ঠিকানা/কুই আগে রাওয়ানা হ্যায়, কুই পিছে রাওয়ানা। এখানে আমরা   মুসাফির, আখিরাতই শেষ ঠিকানা/কেউ যান আগে আর কেউ যান পরে।

এরপর একথাও শুনেছি, প্রতিদিনই বলা হয়, অমুক ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছে। নিশ্চিতই এমন এক দিন আসবে, যেদিন বলা হবে-ওমরের মৃত্যু হয়েছে।

মাওলানা আবদুর রহমান জামী রাহ.-এর মুখে নিচের পঙক্তির মর্মও বারবার শুনেছি-দুনিয়ার বুকে যেন মোরা নৌকা-যাত্রী/স্থির মনে হলেও সময় আমাদের নিয়ে বয়ে চলে।

কিন্তু আফসোস! আমাদের মৃত্যু-চিন্তার সুযোগ হয় না। হে আল্লাহ! আমাদেরকে কবর ও আখেরাতের অনন্ত জীবনের প্রস্ত্ততি গ্রহণের তাওফীক দান কর।

গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে আততায়ীর হাতে হাফেয মাওলানা ইসহাক রাহ.-এর শাহাদতের পর ২১ জানুয়ারি ১১ ঈ. সন্ধ্যায় দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় আলিম মাওলানা সিদ্দীকুর রহমান (১৯৪৬ ঈ.-২০১১ ঈ.)-এর ইন্তেকালের সংবাদ পেলাম। যিনি গওহরডাঙ্গা, ফরিদাবাদ, নূরিয়া ও     রহমানিয়াসহ বেশ কয়েকটি বড় মাদরাসার উপরের শিক্ষক ছিলেন। ২৯ জানুয়ারি ২০১১ ঈ. রাতে মাওলানা আবদুল করীম যশোরীর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি। এরপর গত ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১ ঈ, সোমবার আমাদের শ্রদ্ধেয় উস্তাদ হযরত মাওলানা আবদুল মজীদ (বাগমারা, বরুড়া)-এর মৃত্যুসংবাদও শ্রদ্ধেয় বড় ভাই মাওলানা দেলোয়ার ছাহেবের সূত্রে শোনালেন। হযরতের নিকট আমি খেড়িহর মাদরাসায় গুলিস্তার বাবে হাশতম পড়েছি। তিনি অত্যন্ত নীবর প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। উপরের কিতাব পড়ানো সত্ত্বেও এই কিতাবটি আমাদেরকে অত্যন্ত আগ্রহভরে পড়াতেন। এছাড়াও আরো কয়েকটি সংবাদ পেয়েছি।

এমনকি ১ রবিউল আওয়াল ১৩৩২ হিজরী, মোতাবেক ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১ ঈ., শনিবার দিবাগত রাত মুশফিক মুরববী হযরত মাওলানা যমীরুদ্দীন নানুপুরীর    ইন্তেকালের সংবাদও শুনতে হল। এক মাসও অতিবাহিত হয়নি, গত পরশু ২২ রবিউল আওয়াল ১৪৩২ হিজরী, মোতাবেক ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১১ ঈ., শনিবার দুপুরে স্নেহভাজন মৌলভী ত্বহা হুসাইন দানিশ পটিয়ার হযরত মাওলানা নূরুল ইসলাম কদীম রাহ. (জন্ম : ১৩৩৮ হি.)-এর    ইন্তেকালের সংবাদ দিল। তিনি হযরত মাওলানা মুফতী আযীযুল হক রাহ.-এর বিশিষ্ট খলীফা এবং দেশের আকাবির ওলামা ও মাশায়েখের একজন ছিলেন।

আল্লাহ তাআলা তাঁদেরকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন এবং তাঁদের উত্তরসূরীদেরকে ছবরে জামীলের তাওফীক দিন। 

এভাবেই প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ বিদায় নিয়ে যাচ্ছেন। তারা আমাদেরকে সতর্ক করছেন, তোমাদের গন্তব্যও  এটি। হায়, আমরা যদি শিক্ষা নিতাম এবং আখিরাতের প্রস্ত্ততি গ্রহণ করতাম। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফীক দান করুন আমীন। 


 

advertisement