রমযান ১৪৪৫   ||   মার্চ ২০২৪

রমযান মাস : আল্লাহর সন্তুষ্টি ও মাগফিরাত লাভের এ অবারিত সুযোগ কাজে লাগাই!

মুহাম্মাদ ফজলুল বারী

রমযান মাস। এখন জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়েছে। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করা হয়েছে। শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়েছে। আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষক ঘোষণা করছে-

يَا بَاغِيَ الخَيْرِ أَقْبِلْ، وَيَا بَاغِيَ الشّرِّ أَقْصِرْ.

ওহে কল্যাণ-অন্বেষী! নেকীর পথে তুমি আরো অগ্রসর হও। ওহে অকল্যাণের পথিক! তুমি  নিবৃত্ত হও, নিয়ন্ত্রিত হও। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৬৮২; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৬৪২

চারিদিকে কেবল ক্ষমা ও মাগফিরাতের ঘোষণা- রোযা রাখো, পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেব। তারাবী-তাহাজ্জুদ আদায় কর, ক্ষমা লাভে ধন্য হও। লাইলাতুল কদরে ইবাদত কর, মাগফিরাতের সাগরে অবগাহন কর।

ইফতারের সময় ক্ষমা করা হয়, রাতে ক্ষমা করা হয়, দিনে ক্ষমা করা হয়। চারিদিকে ক্ষমা ক্ষমা রব।

এমন সুযোগ যেন আমার হাতছাড়া না হয়। এজন্য সতর্ক হব রমযানের শুরুতেই।

রমযান শেষে আফসোস নয়; সচেতন হই শুরুতেই

রমযানের একেবারে শেষ প্রহরে আমরা আফসোস করে বলি- হায়, রমযান চলে গেল, কিছুই করতে পারলাম না; জানি না- মাগফিরাতের নিআমত লাভ করতে পারলাম কি না!

সুতরাং শুরুতেই সচেতন হই, সাধ্যমতো কাজে লাগাই রমযানকে। (যদিও আল্লাহর নেক বান্দারা সাধ্যমতো আমল করার পরও আফসোস করেন।) স্মরণ রাখি নবীজীর এ হাদীস। জাবের রা. থেকে বর্ণিত-

أَنّ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ رَقَى الْمِنْبَرَ، فَلَمّا رَقَى الدّرَجَةَ الْأُولَى قَالَ: آمِينَ، ثُمّ رَقَى الثّانِيَةَ فَقَالَ: آمِينَ، ثُمّ رَقَى الثّالِثَةَ فَقَالَ: آمِينَ، فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ، سَمِعْنَاكَ تَقُولُ: آمِينَ ثَلَاثَ مَرّاتٍ؟ قَالَ: لَمّا رَقِيتُ الدّرَجَةَ الْأُولَى جَاءَنِي جِبْرِيلُ  فَقَالَ: شَقِيَ عَبْدٌ أَدْرَكَ رَمَضَانَ، فَانْسَلَخَ مِنْهُ وَلَمْ يُغْفَرْ لَه ٗ، فَقُلْتُ: آمِينَ....

একবার নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন। প্রথম ধাপে উঠে বললেন, আমীন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে উঠেও বললেন, আমীন। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহর রাসূল! আপনাকে (এভাবে) তিনবার আমীন বলতে শুনলাম?

তখন নবীজী বললেন, আমি যখন মিম্বারের প্রথম সিঁড়িতে আরোহণ করলাম তখন জিবরীল আগমন করলেন এবং বললেন, ঐ ব্যক্তি হতভাগা, যে রমযান মাস পেল, আর রমযান গত হয়ে গেল, কিন্তু তার গুনাহ মাফ হল না। আমি বললাম, আমীন।... -আলআদাবুল মুফরাদ, বুখারী, হাদীস ৬৪৪; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৭৪৫১

নবীজী তো কখনো আমাদের ধ্বংস চাইবেন না; তিনি চেয়েছেন- এমন অবারিত সুযোগকে যেন আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করি। তাই আসুন, রমযানের শুরুতেই পরিকল্পনা গ্রহণ করি। রমযানের গুরুত্ব অনুধাবন করে একে যথাযথ কাজে লাগাই।

রোযার গুরুত্ব ও ফযীলত

রোযার মাধ্যমে পূর্বের সকল সগীরা গুনাহ মাফ হয়

রমযান মাসের রোযা এতটা মহিমান্বিত একটি আমল, যার মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বান্দার অতীতের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

مَنْ صَامَ رَمَضَانَ، إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدّمَ مِنْ ذَنْبِه.

যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাব তথা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও সওয়াবের প্রত্যাশা রেখে রমযান মাসে রোযা রাখবে, তার পূর্বের গুনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৮

রোযার প্রতিদান আল্লাহ নিজে দেবেন

আল্লাহ তাআলার নিকট বান্দার রোযা অত্যন্ত প্রিয়। এর প্রতিদান আল্লাহ নিজে দেবেন। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ يُضَاعَفُ، الْحَسَنَةُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعمِائَة ضِعْفٍ، قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: إِلَّا الصَّوْمَ، فَإِنَّه ٗ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهٖ، يَدَعُ شَهْوَتَه ٗ وَطَعَامَه ٗ مِنْ أَجْلِي.

মানুষের প্রত্যেক আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করা হয়। একটি নেকীর সওয়াব দশ গুণ থেকে সাত শ গুণ পর্যন্ত। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, কিন্তু রোযা আলাদা; কেননা তা একমাত্র আমার জন্য এবং আমি নিজেই এর বিনিময় প্রদান করব। বান্দা একমাত্র আমার জন্য নিজের প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং পানাহার থেকে বিরত থাকে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৫১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৯৭১৪

আমার রোযা যেন আমার জন্য ঢাল হয়

হাদীস শরীফে রোযাকে ঢাল বলা হয়েছে। জাহান্নাম থেকে ঢাল। তবে আমার দায়িত্ব এ ঢালকে অক্ষুণ্ন রাখা; বিদীর্ণ হওয়া থেকে রক্ষা করা। ইরশাদ হয়েছে-

الصّومُ جُنّةٌ مَا لَمْ يَخْرِقْهَا.

রোযা ঢাল স্বরূপ, যতক্ষণ না তা বিদীর্ণ করে ফেলা হয়। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৬৯০

আরেক বর্ণনায় এসেছে, নবীজীকে জিজ্ঞেস করা হল, কীভাবে তা বিদীর্ণ হয়? নবীজী বললেন-

بِكَذِبٍ، أَوْ غِيبَةٍ.

মিথ্যা অথবা গীবতের মাধ্যমে। -আলমুজামুল আওসাত, তবারানী, হাদীস ৪৫৩৬

হাদীস শরীফে আরো এসেছে-

مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزّورِ وَالعَمَلَ بِهٖ وَالجَهْلَ، فَلَيْسَ لِلهِ حَاجَةٌ أَنْ يَدَعَ طَعَامَهٗ وَشَرَابَهٗ.

যে মিথ্যা কথা ও কাজ এবং মূর্খসুলভ আচরণ ছাড়ল না, তার পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬০৫৭

রোযাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর নিকট মেশকের চেয়েও অধিক প্রিয়

রোযাদার ব্যক্তি দিনভর উপোস থাকে। অনাহারে থাকার দরুন তার মুখে একধরনের দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। দুনিয়াবি বিবেচনায় তা দুর্গন্ধ মনে হলেও রাব্বুল আলামীনের নিকট তা মেশকের চেয়েও প্রিয়। নবীজী বলেন-

وَالّذِي نَفْسُ مُحَمّدٍ بِيَدِه، لَخُلُوفُ فَمِ الصّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللهِ مِنْ رِيحِ المِسْكِ.

ঐ সত্তার কসম, যার কব্জায় মুহাম্মাদের প্রাণ, রোযাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর নিকট মেশকের সুগন্ধি থেকেও প্রিয়। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯০৪

রোযাদারের জন্য রয়েছে বিশেষ আনন্দের মুহূর্ত

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

لِلصّائِمِ فَرْحَتَانِ: فَرْحَةٌ عِنْدَ فِطْرِهٖ، وَفَرْحَةٌ عِنْدَ لِقَاءِ رَبّهٖ.

রোযাদারের জন্য দুটি বিশেষ আনন্দের মুহূর্ত রয়েছে। একটি হল, ইফতারের সময়। অপরটি হল, যখন সে তার রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে (আর তিনি তাকে বিশাল পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত করবেন)। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৫১

রোযাদারের দুআ ফিরিয়ে দেওয়া হয় না

রোযাদার ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার নিকট এতটাই মহব্বতের পাত্র যে, সে কিছু চাইলে আল্লাহ তা ফিরিয়ে দেন না। নবীজী বলেন-

ثَلاَثَةٌ لاَ تُرَدّ دَعْوَتُهُمْ: الصّائِمُ حَتّى يُفْطِرَ، وَالإِمَامُ العَادِلُ، وَدَعْوَةُ الْمَظْلُومِ يَرْفَعُهَا اللهُ فَوْقَ الغَمَامِ وَيَفْتَحُ لَهَا أَبْوَابَ السّمَاءِ وَيَقُولُ الرّبّ: وَعِزّتِي لأَنْصُرَنّكِ وَلَوْ بَعْدَ حِينٍ.

তিন ব্যক্তির দুআ ফিরিয়ে দেওয়া হয় না :

এক. রোযাদারের দুআ ইফতার পর্যন্ত।

দুই. ন্যায়পরায়ণ শাসকের দুআ।

তিন. মজলুমের দুআ। আল্লাহ এ দুআকে মেঘমালার উপরে নিয়ে যান। এর জন্য আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেন। রব বলেন, আমার ইযযতের কসম, বিলম্বে হলেও আমি তোমাকে সাহায্য করব। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৫৯৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৭৫২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৯৭৪৩

রোযাদারের জন্য রোযা সুপারিশ করবে

কিয়ামতের দিন রোযাদারের জন্য রোযা নিজে সুপারিশ করবে। হাদীসে এসেছে-

الصِّيَامُ وَالْقُرْآنُ يَشْفَعَانِ لِلْعَبْدِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، يَقُولُ الصِّيَامُ: أَيْ رَبِّ، مَنَعْتُهُ الطّعَامَ وَالشّهَوَاتِ بِالنّهَارِ، فَشَفِّعْنِي فِيهِ، وَيَقُولُ الْقُرْآنُ: مَنَعْتُهُ النّوْمَ بِاللّيْلِ، فَشَفِّعْنِي فِيهِ، قَالَ: فَيُشَفّعَانِ.

কিয়ামতের দিন সিয়াম ও কুরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোযা বলবে, ওগো রব! দিবসে আমি তাকে পানাহার ও (বৈধ) জৈবিক চাহিদা পূরণ থেকে নিবৃত্ত রেখেছি। তার ব্যাপারে আপনি আমার সুপারিশ কবুল করুন। কুরআন বলবে, রাতে আমি তাকে নিদ্রা থেকে বিরত রেখেছি। তার ব্যাপারে আপনি আমার সুপারিশ কবুল করুন। অতঃপর তাদের সুপারিশ কবুল করা হবে। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৬৬২৬; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস ৫০৮১

রোযাদারের জন্য থাকবে জান্নাতের বিশেষ তোরণ

রোযাদার হলেন আল্লাহ তাআলার বিশেষ মেহমান। জান্নাতে প্রবেশের জন্য তার সৌজন্যে বিশেষ তোরণের ব্যবস্থা থাকবে। নবীজী বলেন-

إِنّ فِي الجَنّةِ بَابًا يُقَالُ لَهُ الرّيّانُ، يَدْخُلُ مِنْهُ الصّائِمُونَ يَوْمَ القِيَامَةِ، لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ، يُقَالُ: أَيْنَ الصّائِمُونَ؟ فَيَقُومُونَ لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ، فَإِذَا دَخَلُوا أُغْلِقَ فَلَمْ يَدْخُلْ مِنْهُ أَحَدٌ.

জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে। নাম রাইয়ান। কিয়ামতের দিন তা দিয়ে রোযাদাররা প্রবেশ করবে। তারা ব্যতীত অন্য কেউ সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা করা হবে, রোযাদাররা কোথায়?

তখন তারা আসবে। তারা ছাড়া তা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ করবে না। রোযাদাররা প্রবেশ করার পর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। এরপর আর কেউ তা দিয়ে প্রবেশ করবে না। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৮৯৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৫২

সাহরী খাই, বরকত লাভ করি

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

تَسَحّرُوا فَإِنّ فِي السّحُورِ بَرَكَةً.

তোমরা সাহরী কর। কেননা সাহরীর খাবারে বরকত রয়েছে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯২৩, সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০৯৫

শেষ ওয়াক্তে সাহরী গ্রহণ করা উত্তম

সাহরী করা যেমন মুস্তাহাব তেমনি তা ওয়াক্তের শেষ দিকে করাও উত্তম। অর্থাৎ সতর্কতামূলক সময় হাতে রেখে সুবহে সাদিকের পূর্ব-নিকটবর্তী সময়ে সাহরী করা ভালো। নবীজী বলেন-

إِنّا مَعَاشِرَ الْأَنْبِيَاءِ أُمِرْنَا أَنْ نُعَجِّلَ فِطْرَنَا، وَأَنْ نُؤَخِّرَ سَحُورَنَا.

আমরা নবীগণ এ মর্মে আদিষ্ট হয়েছি যে, সময় হওয়ার সাথে সাথেই ইফতার করব এবং শেষ ওয়াক্তে সাহরী গ্রহণ করব। -আলমুজামুল আওসাত, তবারানী, হাদীস ১৮৮৪; মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস ৪৮৮০

সময় হওয়ার সাথে সাথেই ইফতার করি

এতক্ষণ আল্লাহর হুকুম ছিল খাবে না। এখন সূর্য অস্ত গিয়েছে। এখন তাঁর হুকুম ইফতার করা। তাই আর দেরি নয়, জলদি জলদি ইফতার শুরু করে দিন।

পূর্বে উল্লেখ হয়েছে দ্রুত ইফতার করা ছিল নবীগণের বৈশিষ্ট্য। সাহাবায়ে কেরামও দ্রুত ইফতার করতেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

لاَ يَزَالُ النّاسُ بِخَيْرٍ مَا عَجّلُوا الفِطْرَ.

মানুষ ততদিন খায়ের ও কল্যাণের মাঝে থাকবে, যতদিন তারা সময় হওয়ার সাথে সাথে দ্রুত ইফতার করবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯৫৭; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১০৯৮

ইফতারের আগের দুআ থেকে গাফেল না থাকি; এসময় দুআ কবুল হয়

পুরো রমযানই রহমত-মাগফিরাতের মাস। তবে কিছু কিছু মুহূর্তে বান্দার প্রতি তা প্রবল বেগে ধাবিত হয়। ইফতারের সময়টিও এমন। তাই এ সময়ের দুআ আল্লাহ পাক বিশেষভাবে কবুল করেন। নবীজী বলেন-

إِنّ لِلصّائِمِ عِنْدَ فِطْرِه ٖ لَدَعْوَةً مَا تُرَدّ.

ইফতারের সময় রোযাদারের অন্তত একটি দুআ এমন, যা ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৭৫৩

অর্থাৎ কমপক্ষে একটি দুআ অবশ্যই কবুল হয়। সুতরাং এসময় নিজে দুআ করি, ঘরের নারীদেরও শরীক করি।

ইফতারের দুআ পড়ি

ইফতারের সময় হাদীস শরীফে এ দুআ পড়ার কথা এসেছে-

اللهم لَكَ صُمْتُ، وعلى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ.

আয় আল্লাহ! আপনার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই রোযা রেখেছি এবং আপনার রিযিক দিয়েই ইফতার করেছি। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৩৫৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৯৭৪৪

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইফতার গ্রহণ করে এই দুআও পড়তেন-

ذَهَبَ الظّمَأُ وَابْتَلّتِ الْعُرُوقُ، وَثَبَتَ الْأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللهُ.

পিপাসা নিবারিত হল, শিরা-উপশিরা সতেজ হল। আর আল্লাহ চাহেন তো সওম-এর সওয়াব প্রাপ্তির খাতায় লিপিবদ্ধ হল। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ২৩৫৭; সুনানে কুবরা, নাসায়ী, হাদীস ৩৩১৫

রোযাদারকে ইফতার করাই

রোযাদারকে ইফতার করানো অনেক বড় সওয়াবের আমল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

مَنْ فَطّرَ صَائِمًا كَانَ لَه ٗ مِثْلُ أَجْرِهٖ  ، غَيْرَ أَنّه ٗ لاَ يَنْقُصُ مِنْ أَجْرِ الصّائِمِ شَيْئًا.

কেউ যদি কোনো রোযাদারকে ইফতার করায় তাহলে সে ঐ রোযাদারের সমান সওয়াব লাভ করবে। আর এতে ঐ রোযাদারের সওয়াবে কোনো কম করা হবে না। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৮০৭

নিয়মিত তারাবী আদায় করি

রমযান মাসের বিশেষ একটি আমল হচ্ছে তারাবীর নামায আদায় করা। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য তা সুন্নতে মুআক্কাদাহ।

তারাবীতে কালামুল্লাহ্র সাথে বান্দার বিশেষ সম্পর্ক স্থাপিত হয় এবং এর মাধ্যমে বান্দার গুনাহ মাফ হয়। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

مَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا، غُفِرَ لَهٗ مَا تَقَدّمَ مِنْ ذَنْبِه ٖ.

যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাব তথা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও সওয়াবের প্রত্যাশা নিয়ে কিয়ামে রমযান আদায় করবে তার বিগত গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২০০৯

সাহরীর জন্য একটু আগে উঠি : তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত হতে চেষ্টা করি

তাহাজ্জুদ অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ আমল। কুরআনে কারীমে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাহাজ্জুদের বিশেষ হুকুম করা হয়েছে। তাহাজ্জুদের সময় তথা রাতের শেষ ভাগে আল্লাহর রহমত বান্দার প্রতি নিবিষ্ট থাকে।

এসময় বান্দার উচিত রবের ডাকে সাড়া দিয়ে তাহাজ্জুদের সালাতে মশগুল হওয়া। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

أَفْضَلُ الصّلَاةِ بَعْدَ الصّلَاةِ الْمَكْتُوبَةِ، الصّلَاةُ فِي جَوْفِ اللّيْلِ.

ফরয নামাযের পর মধ্যরাতের নামায সর্বোত্তম। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬৩

রমযানের এক মাস যদি সাহরীতে একটু আগে উঠে নিয়মিত তাহাজ্জুদ আদায় করি, তাহলে বাকি এগারো মাস সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে- ইনশাআল্লাহ।

রমযান কুরআন নাযিলের মাস : কুরআনের সাথেই কাটুক রমযান

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِیْۤ اُنْزِلَ فِیْهِ الْقُرْاٰنُ هُدًی لِّلنَّاسِ وَ بَیِّنٰتٍ مِّنَ الْهُدٰی وَ الْفُرْقَانِ ۚ فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْیَصُمْهُ .

রমযান মাস, যাতে কুরআন নাযিল হয়েছে, যা মানবজাতির জন্য হেদায়েতের দিশারী, সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন এবং সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী। অতএব তোমাদের যে এ মাস লাভ করবে, সে যেন তাতে অবশ্যই রোযা রাখে। -সূরা বাকারা (২) : ১৮৫

সুতরাং রমযানে রুটিন করে কুরআন তিলাওয়াত করি; নিজ পরিবার ও পরিবেশে প্রতিযোগিতার সাথে কুরআন তিলাওয়াতের পরিবেশ তৈরি করি। ঘরের নারীদের তিলাওয়াতের সময় বের করতে সাহায্য করি।

রমযানে আকাবির-আসলাফের তিলাওয়াতের ঘটনাগুলো জানতে ও আমল করতে চেষ্টা করি।

এ সংখ্যায়ও একেন্দ্রিক স্বতন্ত্র প্রবন্ধ রয়েছে। সেটি অবশ্যই পড়তে চেষ্টা করি।

তিলাওয়াতের পাশাপাশি সংক্ষিপ্ত নির্ভরযোগ্য কোনো তাফসীর থেকে অল্প অল্প পড়তে  চেষ্টা করি। যাদের এখনো সহীহ-শুদ্ধভাবে তিলাওয়াত শেখার সুযোগ হয়নি, তারা রমযান থেকেই এ মেহনত শুরু করি।

লাইলাতুল কদর : এ নিআমত লাভে ধন্য হই

রমযানের পুরো মাস জুড়ে বিরাজ করে রহমত ও ক্ষমার ঘোষণা। তবে এ মাসে রয়েছে বিশেষ এক মহিমান্বিত রজনী- লাইলাতুল কদর। আল্লাহ তাআলা এ রাতের ব্যাপারে বলেন-

لَیْلَةُ الْقَدْرِ ۙ۬ خَیْرٌ مِّنْ اَلْفِ شَهْرٍؕؔ۝۳ تَنَزَّلُ الْمَلٰٓىِٕكَةُ وَ الرُّوْحُ فِیْهَا بِاِذْنِ رَبِّهِمْ ۚ مِنْ كُلِّ اَمْرٍۙۛ۝۴ سَلٰمٌ ۛ۫ هِیَ حَتّٰی مَطْلَعِ الْفَجْرِ.

কদর রজনী সহস্র মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সেই রজনীতে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতরণ করেন প্রত্যেক কাজে তাদের রবের অনুমতিক্রমে। শান্তিই শান্তি, সেই রজনী সুবহে সাদিক উদিত হওয়া পর্যন্ত। -সূরা কদর (৯৭) : ৩-৫

সুতরাং আল্লাহর দেওয়া এ মহা নিআমত ও পুরস্কার লাভে সচেষ্ট হই। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

مَنْ قَامَ لَيْلَةَ القَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهٗ مَا تَقَدّمَ مِنْ ذَنْبِهِ.

...যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাব তথা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও সওয়াব প্রাপ্তির আশায় লাইলাতুল কদরে কিয়াম (নামায-ইবাদত-বন্দেগী) করবে, তার পূর্বের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২০১৪

লাইলাতুল কদর থেকে বঞ্চিত হওয়া অনেক বড় মাহরূমী

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ও তাঁর হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে এত বড় খোশখবরী পাওয়ার পর এ রাতের ক্ষমা ও রহমত লাভের চেষ্টা না করা অনেক বড় বঞ্চনার বিষয়। আনাস রা. বলেন, রমযান এলে নবীজী বলতেন-

إِنّ هَذَا الشّهْرَ قَدْ حَضَرَكُمْ، وَفِيهِ لَيْلَةٌ خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ شَهْرٍ، مَنْ حُرِمَهَا فَقَدْ حُرِمَ الْخَيْرَ كُلّهٗ، وَلَا يُحْرَمُ خَيْرَهَا إِلّا مَحْرُومٌ.

এই মহিমান্বিত মাস উপস্থিত। তাতে একটি রজনী রয়েছে, যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ ও বরকত থেকে বঞ্চিত হল, সে যেন সকল কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হল। আর কেবল অভাগাই এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত থাকে। -সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১৬৪৪; সুনানে নাসায়ী, হাদীস ২১০৬

সুতরাং হেলায় না কাটিয়ে কদরের রাতের কদর করি।

যেভাবে লাভ করতে পারি শবে কদর

কীভাবে শবে কদর লাভ করতে পারি- এবিষয়ে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন-

تَحَرّوْا لَيْلَةَ القَدْرِ فِي العَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ.

তোমরা রমযানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর তালাশ কর। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২০২০

আরেক বর্ণনায় এসেছে-

الْتَمِسُوهَا فِي العَشْرِ الأَوَاخِرِ فِي الوَتْرِ.

তোমরা শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে কদর অন্বেষণ কর। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২০১৬

শবে কদরের ন্যূনতম ফযীলত থেকে যেন বঞ্চিত না হই

মুমিনমাত্রেরই কর্তব্য হল, কদর রজনীর পূর্ণ কদর করা। অন্তত এ রাতে বিলকুল গাফেল না থাকা। রমযান মাসের ফরয নামাযগুলো জামাতের সাথে আদায় করার মাধ্যমে কদর রজনীর ন্যূনতম কদর হতে পারে। হাদীস শরীফে এসেছে-

যে ব্যক্তি এশার নামায জামাতে আদায় করল সে যেন অর্ধ রজনী কিয়াম করল। আর যে ব্যক্তি ফজরের নামাযও জামাতে আদায় করল সে যেন পূর্ণ রাত নামায পড়ল। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৬৫৬

শবে কদরে কী দুআ করব?

আম্মাজান আয়েশা রা. নবীজীকে জিজ্ঞাসা করেন- ইয়া রাসূলাল্লাহ, যদি আমি জানতে পারি, আজ লাইলাতুল কদর, তাহলে আমি কী দুআ করতে পারি?

নবীজী বললেন, তুমি বল-

اللهم إِنّكَ عُفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّيْ.

আয় আল্লাহ! আপনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমা করতেই ভালবাসেন। সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৫১৩

শেষ দশকে ইতিকাফ করতে চেষ্টা করি

রমযানের ত্রিশ দিনের শেষ দশ দিন অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত। রমযানের একটি বিশেষ আমল হচ্ছে সুন্নত ইতিকাফ। তা আদায় করার সময় এটি। রমযানের খায়ের-বরকত লাভে ইতিকাফের গুরুত্ব অপরিসীম। ইতিকাফের মাধ্যমে লাইলাতুল কদর লাভ করার সম্ভাবনাও বেশি। তাই নবীজী রমযানের শেষ দশকে মসজিদে ইতিকাফ করতেন।

আম্মাজান আয়েশা সিদ্দীকা রা. বলেন-

أَنّ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ كَانَ يَعْتَكِفُ الْعَشْرَ الْأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ، حَتّى تَوَفّاهُ اللهُ عَزّ وَجَلّ، ثُمّ اعْتَكَفَ أَزْوَاجُهٗ مِنْ بَعْدِهٖ.

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তিকালের আগ পর্যন্ত রমযানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। নবীজীর পর তাঁর স্ত্রীগণও ইতিকাফ করতেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৭২; সহীহ বুখারী, হাদীস ২০২৬

সদাকাতুল ফিতর আদায় করি : রোযায় ঘটে যাওয়া ত্রুটির ক্ষতিপূরণ করি

আল্লাহ তাআলার হুকুমে বান্দা পুরো মাস রোযা রেখেছে। আল্লাহ যেভাবে হুকুম করেছেন সেভাবে রাখতেই চেষ্টা করেছে। রোযা রাখতে গিয়ে যে টুকটাক ভুল হয়ে যায় তার কাফফারা স্বরূপ সদাকাতুল ফিতরের বিধান দেওয়া হয়েছে। ইবনে আব্বাস রা. বলেন-

فَرَضَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ زَكَاةَ الْفِطْرِ طُهْرَةً لِلصّائِمِ مِنَ اللّغْوِ وَالرّفَثِ، وَطُعْمَةً لِلْمَسَاكِينِ، مَنْ أَدّاهَا قَبْلَ الصّلَاةِ، فَهِيَ زَكَاةٌ مَقْبُولَةٌ، وَمَنْ أَدّاهَا بَعْدَ الصّلَاةِ، فَهِيَ صَدَقَةٌ مِنَ الصّدَقَاتِ.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সদাকাতুল ফিতরের বিধান দান করেছেন রোযাদারকে অর্থহীন ও অশ্লীল কথা-কাজ থেকে পবিত্র করার জন্য এবং মিসকীনদের খাবারের ব্যবস্থা হিসাবে। যে ব্যক্তি তা (ঈদের) নামাযের আগে আদায় করবে সেটা গ্রহণযোগ্য সদকা হিসেবে পরিগণিত হবে। আর যে নামাযের পর আদায় করবে সেটা সাধারণ সদকা হিসেবে বিবেচিত হবে। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৬০৯

প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যার মালিকানায় মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্য সমপরিমাণ সম্পদ রয়েছে, তার ওপর সদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব। প্রত্যেকে তার নিজের পক্ষ থেকে এবং নাবালেগ সন্তানের পক্ষ থেকে সদাকাতুল ফিতর আদায় করবে।

অতএব নিজের রোযাকে পরিশুদ্ধ করতে ঈদের নামাযে যাওয়ার আগেই সদাকাতুল ফিতর আদায় করি।

শাওয়ালের ছয় রোযা

রমযানের পরবর্তী আরবী মাস হচ্ছে শাওয়াল। পয়লা শাওয়াল ঈদের দিন। এরপর শাওয়ালের ছয়টি রোযা রাখার চেষ্টা করি। এ রোযার ফযীলত অনেক। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

مَنْ صَامَ رَمَضَانَ ثُمّ أَتْبَعَهٗ  سِتّا مِنْ شَوّالٍ، كَانَ كَصِيَامِ الدّهْرِ.

যে ব্যক্তি রমযানে রোযা রাখল। এরপর শাওয়ালে ছয়টি রোযা রাখল। সে পুরো বছর রোযা রাখার সওয়াব লাভ করবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬৪

 

 

advertisement