রমযান ১৪৪৫   ||   মার্চ ২০২৪

প্রশ্নোত্তর

আনওয়ারুল কুরআন বিভাগের সর্বশেষ শিরোনাম প্রশ্নোত্তর এর অধীনে প্রত্যেক সংখ্যায় ইনশাআল্লাহ তিন থেকে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে। সংক্ষেপের জন্য প্রশ্নকারীর নাম-পরিচয় অনুল্লেখ থাকবে।

 

প্রশ্ন ৯৮. ইলয়াসীন মানে কী?

উত্তর : ইলয়াসীন (اِلْ یَاسِیْنَ) হযরত ইলয়াস আলাইহিস সালামের নামেরই আরেকটি ভিন্ন রূপ। ইলয়াস শব্দটি অনারবী। অনারবী শব্দ যখন আরবীতে ব্যবহার হয়, তখন কখনো কখনো একাধিকরূপে ব্যবহার হয়। যেমন সীনা (একটি পাহাড়ের নাম) শব্দটি অনারবী, এটি আরবীতে সীনা (سِيْنَاء), সাইনা (سَیْنَآء) এবং সীনীন (سِیْنِیْن) ইত্যাদিরূপে ব্যবহার হয়। তেমনিভাবে ইলয়াস শব্দটিও ইলয়াসীন-রূপে ব্যবহার হয়। (দ্র. সূরা সফ্ফাতের ১৩০ নম্বর আয়াতের তাফসীর, তাফসীরে ইবনে কাসীর; লুগাতুল কুরআন ১/২৩৩)

 

প্রশ্ন ৯৯. হুজুর আমি তাফসীরে কাবীর মুতাআলা করতে চাচ্ছি। এই কিতাব সম্পর্কে প্রাথমিক কিছু ধারণা দিলে উপকৃত হতাম।

উত্তর : তাফসীরে কাবীরের আসল নাম মাফাতীহুল গাইব। লেখক : হিজরী ষষ্ঠ শতকের বিখ্যাত দার্শনিক আলেম ইমাম ফখরুদ্দীন মুহাম্মদ ইবনে উমর আররাযী (মৃত্যু : ৬০৬ হি.)। রেওয়ায়েত ভিত্তিক তাফসীরের ক্ষেত্রে তাফসীরে ইবনে কাসীর যেমন অতুলনীয়, তেমনি দিরায়াত ভিত্তিক তাফসীরের ক্ষেত্রে তাফসীরে কাবীর অনন্য।

এতে ইমাম রাযী রাহ. প্রতিটি আয়াতের নাহবী তারকীব বা বাক্যবিশ্লেষণ, শানে নুযূল বা অবতরণ প্রেক্ষাপট ও আয়াতের ব্যাখ্যা সম্পর্কে পূর্ববর্তী মনীষীদের প্রায় সকল বক্তব্য বিন্যস্ত আকারে বিশ্লেষণসহ উল্লেখ করেন। এক আয়াতের সঙ্গে অপর আয়াতের যোগসূত্র বর্ণনা এবং অনেক জায়গায় আয়াতের সাথে সম্পৃক্ত ফিকহী মাসআলাও দলীল-প্রমাণসহ উল্লেখ করেন। তাছাড়া তিনি যেহেতু দর্শন ও কালাম শাস্ত্রের পণ্ডিত ছিলেন। তাই তাঁর কিতাবে দলীলে আকলী (যৌক্তিক প্রমাণ ও বিশ্লেষণ)-এর প্রসঙ্গও এসেছে বেশি। এর মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন ভ্রান্ত মত ও ফেরকার খণ্ডন করেছেন। তাই আয়াতের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের সঙ্গে এসব আলোচনাও দীর্ঘ হয়েছে।

উল্লেখ্য, ইমাম রাযী রাহ. কিতাবটির পুরো কাজ সম্পন্ন করে যেতে পারেননি। ২৬তম পারার সূরা ফাত্হ পর্যন্ত তাফসীর লেখার পর তাঁর ইন্তেকাল হয়। বাকি অংশটুকুর তাফসীর লেখেন হিজরী সপ্তম শতকের আলেম কাজী শিহাবুদ্দীন ইবনে খলীল আদদিমাশকী (মৃত্যু : ৬৩৯ হিজরী) কিংবা শায়খ নাজমুদ্দীন আহমাদ ইবনে মুহাম্মদ রাহ. (মৃত্যু : ৭৭৭ হিজরী)।

এই তাফসীরগ্রন্থ সম্পর্কে আনওয়ার শাহ কাশ্মিরী রাহ. বলেন, কুরআন বোঝার ক্ষেত্রে আমি যে জটিলতারই সম্মুখীন হয়েছি, দেখেছি ইমাম রাযী রাহ. সে সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। (দ্র. ইয়াতীমাতুল বায়ান ফী শাইয়িম মিন উলূমিল কুরআন, পৃষ্ঠা ৪৩)

এ তাফসীরগ্রন্থ আরব অনারবের বহু মাকতাবা থেকে প্রকাশিত হয়েছে।

 

 

advertisement