ঈমানের কিছু কালিমা ॥
ইসলামী আকীদার কিছু বাক্য এবং যিকির ও দুআর কিছু শব্দমালা
(নভেম্বর ২০২৩ সংখ্যায় প্রকাশিতের পর)
ঈমানের কিছু কালিমা
কালিমায়ে তাওহীদ বা কালিমায়ে তায়্যিবা
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ.
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল।
কালিমায়ে শাহাদাত
أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ.
অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।
শাহাদাতের আরেকটি কালিমা
أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا الله، وَحْدَهٗ لَا شَريْكَ لَهٗ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ.
অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি একক; তাঁর কোনো শরীক নেই। আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।
শাহাদাতের আরেকটি কালিমা
أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا خَاتَمُ أَنْبِيَائِهٖ وَرُسُلِهٖ.
অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর সর্বশেষ নবী ও রাসূল।
ইসলামী আকীদার কিছু বাক্য
ঈমানে মুজমাল
(সংক্ষেপে ঈমানের ঘোষণা)
১.
رَبُّنَا اللهُ.
অর্থ : আমাদের রব আল্লাহ।
২.
آمَنْتُ بِاللهِ.
অর্থ : আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি।
৩.
آمَنْتُ بِاللهِ وَبِرُسُلِهٖ.
অর্থ : আমি আল্লাহ ও তাঁর সকল রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছি।
৪.
آمَنْتُ بِاللهِ وَكَفَرْتُ بالطَّاغُوتِ.
অর্থ : আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি এবং সকল মিথ্যা মাবুদ ও খোদা- দাবিদারকে অস্বীকার করেছি।
৫.
رَبِّيَ اللهُ وَدِيْنِيَ الإِسْلامُ وَنَبِيِّيْ مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ : আমার রব আল্লাহ। আমার দ্বীন ইসলাম। আমার নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম।
৬.
رَبَّنَاۤ اٰمَنَّا فَاكْتُبْنَا مَعَ الشّٰهِدِیْنَ.
অর্থ : হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি। সুতরাং (হকের) সাক্ষ্যদাতাদের সাথে আমাদের নামও লিখে নিন।
৭.
آمَنْتُ بِاللهِ كَمَا هُوَ بِأَسْمَائِهٖ وَصِفَاتِهٖ، وَقَبِلْتُ جَمِيْعَ أَحْكَامِهٖ.
অর্থ : আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি, তাঁর যাবতীয় নাম ও গুণাবলিসহ। এবং তাঁর সমস্ত বিধিবিধান গ্রহণ করেছি।
৮.
آمَنْتُ بِاللهِ وَبِرَسُوْلِهٖ مُحَمَّدٍ رَحْمَةٍ لِّلْعَالَمِيْنَ وَسَيِّدِ الْمُرْسَلِيْنَ .
অর্থ : আমি আল্লাহর প্রতি ও তাঁর রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি ঈমান এনেছি। তিনি সারা জগতের জন্য রহমত এবং রাসূলগণের সরদার।
৯.
آمَنْتُ بِاللهِ وَبِمُحَمَّدٍ رَسُوْلِ اللهِ خَاتَمِ النَّبِيِّيْنَ، هُوَ آخِرُ الْأَنْبِيَاءِ لاَ نَبِيَّ بَعْدَهٗ .
অর্থ : আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ঈমান এনেছি; তিনি আল্লাহর রাসূল ও খাতামুন নাবিয়্যীন। তিনি সর্বশেষ নবী; তাঁর পরে আর কোনো নবী নেই।
১০.
آمَنْتُ بِمَا نُزِّلَ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَبِمَا جَاءَ بِهٖ مِنَ اللهِ تَعَالٰى، مِنْ قُرْآنٍ وَحَدِيْثٍ، وَسُنَّةٍ وَشَرِيْعَةٍ، وَسَلَّمْتُ كُلَّ ذٰ لِكَ تَسْلِيْمًا.
অর্থ : আমি ঈমান এনেছি— মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর যা নাযিল করা হয়েছে— তার প্রতি। এবং তিনি আল্লাহ তাআলার থেকে যা কিছু নিয়ে এসেছেন— তার প্রতি। অর্থাৎ কুরআন ও হাদীস এবং সুন্নাহ ও শরীয়ত। আমি এই সবকিছু মেনে নিয়েছি।
ইসলামের ঘোষণার দুটি বাক্য
১.
أَسْلَمْتُ لِرَبِّ الْعٰلَمِیْنَ.
অর্থ : আমি সমগ্র বিশ্বের প্রতিপালকের (পূর্ণ) আনুগত্য স্বীকার করলাম।
২.
اِنَّ صَلَاتِیْ وَ نُسُكِیْ وَمَحْیَایَ وَ مَمَاتِیْ لِلهِ رَبِّ الْعٰلَمِیْنَ، لَا شَرِیْكَ لَهٗ وَ بِذٰلِكَ اُمِرْتُ وَ اَنَا أَوَّلُ الْمُسْلِمِیْنَ.
অর্থ : আমার নামায, আমার ইবাদত ও আমার জীবন-মরণ সবই আল্লাহর জন্য, যিনি জগৎসমূহের প্রতিপালক। তাঁর কোনো শরীক নেই। এরই আদেশ আমাকে করা হয়েছে এবং আনুগত্য স্বীকারকারীদের মধ্যে আমিই আগে আগে।
তাওহীদের ঘোষণার একটি বাক্য
اِنِّیْ وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِيْ فَطَرَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ حَنِیْفًا وَّ مَاۤ اَنَا مِنَ الْمُشْرِكِیْنَ .
অর্থ : আমি সম্পূর্ণ একনিষ্ঠ হয়ে সেই সত্তার দিকে নিজের মুখ ফেরালাম, যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।
যিকির ও দুআর কিছু শব্দ
১.
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ.
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই।
২.
سُبْحَانَ اللهِ، وَالْحَمْدُ لِلهِ، وَلَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ.
অর্থ : আল্লাহ পবিত্র। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আল্লাহ সবচে বড়।
৩.
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ، وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ، لَهُ الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ.
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি একক; তাঁর কোনো শরীক নেই। তাঁরই সমস্ত রাজত্ব এবং তাঁরই সমস্ত প্রশংসা। তিনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান।
৪.
لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللهِ.
অর্থ : (গুনাহ থেকে) বাঁচা ও (নেক আমলের) শক্তি একমাত্র আল্লাহর হাতে।
৫.
حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْلُ.
অর্থ : আল্লাহ্ই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি উত্তম কার্যসম্পাদনকারী।
৬.
لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّيْ كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِيْنَ.
অর্থ : আপনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আপনি পবিত্র। নিশ্চয় আমিই অপরাধীদের একজন।
৭.
رَضِيْتُ بِاللهِ رَبًّا، وَبِالْإِسْلَامِ دِيْنًا، وَبِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَبِيًّا.
অর্থ : আমি আল্লাহকে রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবী হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট।
আযানের শব্দ
اَللهُ أَكْبَرُ اَللهُ أَكْبَرُ
اَللهُ أَكْبَرُ اَللهُ أَكْبَرُ
অর্থ : আল্লাহ সবচেয়ে বড়। আল্লাহ সবচেয়ে বড়।
أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ
أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ
অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই।
أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللهِ
أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللهِ
অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল।
حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ
حَيَّ عَلَى الصَّلَاةِ
অর্থ : নামাযের দিকে আসো।
حَيَّ عَلَى الْفَلَاحِ
حَيَّ عَلَى الْفَلَاحِ
অর্থ : সফলতার দিকে আসো।
اَللهُ أَكْبَرُ اَللهُ أَكْبَرُ
অর্থ : আল্লাহ সবচেয়ে বড়। আল্লাহ সবচেয়ে বড়।
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই।
শুধু ফজরের আযানে—
الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِّنَ النَّوْمِ
الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِّنَ النَّوْمِ
অর্থ : ঘুম থেকে নামায উত্তম।
আযানের পর দুআ
اَللّٰهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ، وَالصَّلاَةِ القَائِمَةِ، آتِ مُحَمَّدَنِ الْوَسِيْلَةَ وَالْفَضِيْلَةَ، وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَّحْمُوْدَنِ الَّذِيْ وَعَدْ تَّهٗ.
অর্থ : হে আল্লাহ, এই পরিপূর্ণ দাওয়াত ও প্রতিষ্ঠিত নামাযের রব! আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দান করুন ওয়াসীলা ও মর্যাদা এবং তাঁকে পৌঁছান মাকামে মাহমূদে, যার প্রতিশ্রুতি আপনি তাকে দিয়েছেন।
নামাযের কিছু যিকির
১. তাকবীরে তাহরীমা
اَللهُ أَكْبَرُ
অর্থ : আল্লাহ সবচে বড়।
২. সানা
سُبْحَانَكَ اللّٰهُمَّ وَبِحَمْدِكَ، وَتَبَارَكَ اسْمُكَ، وَتَعَالٰى جَدُّكَ، وَلَا إِلٰهَ غَيْرُكَ.
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি, আপনার প্রশংসাসহ। আপনার নাম বরকতময়। আপনার মর্যাদা সুউচ্চ। আপনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই।
৩. রুকুর তাসবীহ
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ
অর্থ : আমার মহান প্রতিপালক চিরপবিত্র।
৪. রুকু থেকে ওঠার সময়
سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهٗ
অর্থ : আল্লাহ তাঁর প্রশংসাকারীর প্রশংসা শুনেছেন।
৫. রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে
رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ
অর্থ : হে আমাদের রব! আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা।
৬. সিজদার তাসবীহ
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلٰى
অর্থ : আমার সর্বোচ্চ প্রতিপালক চিরপবিত্র।
৭. তাশাহ্হুদ বা আত্তাহিয়্যাত
التَّحِيَّاتُ لِلهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ
অর্থ : আদব ও তাযীম এবং ভক্তি ও সম্মানের সমস্ত বক্তব্য আল্লাহরই জন্য এবং (আল্লাহরই জন্য) সমস্ত ইবাদত এবং সমস্ত সাদাকা।
السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهٗ.
হে নবী! আপনার প্রতি সালাম ও শান্তি এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত ও বরকত।
السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلٰى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِيْنَ.
সালাম ও শান্তি বর্ষিত হোক আমাদের প্রতি এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের প্রতি।
أَشْهَدُ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ.
আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।
৮. দরূদ শরীফ
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ.
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি রহমত বর্ষণ করুন মুহাম্মাদের প্রতি এবং মুহাম্মাদের পরিবারের প্রতি।
كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ.
যেমন রহমত বর্ষণ করেছেন ইবরাহীমের প্রতি এবং ইবরাহীমের পরিবারের প্রতি।
إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত, মর্যাদাবান।
اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ
হে আল্লাহ! আপনি বরকত নাযিল করুন মুহাম্মাদের প্রতি এবং মুহাম্মাদের পরিবারের প্রতি।
كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ
যেমন বরকত নাযিল করেছেন ইবরাহীমের প্রতি এবং ইবরাহীমের পরিবারের প্রতি।
إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
নিঃসন্দেহে আপনি প্রশংসিত, মর্যাদাবান।
৯. একটি দুআয়ে মাসূর
اَللّٰهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمًا كَثِيْرًا
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি নিজের ওপর অনেক যুলুম করেছি।
وَلَا يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلَّا أَنْتَ
আপনি ছাড়া কেউ পারে না গুনাহ মাফ করতে।
فَاغْفِرْ لِيْ مَغْفِرَةً مِّنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِيْ
সুতরাং আপনার পক্ষ থেকে আপনি আমাকে মাফ করুন এবং আমার প্রতি দয়া করুন।
إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ.
নিঃসন্দেহে আপনি পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়াবান।
১০. সালাম
السَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ.
অর্থ : তোমাদের ওপর বর্ষিত হোক শান্তি ও আল্লাহর রহমত।
১১. দুআয়ে কুনুত
اَللّٰهُمَّ إنَّا نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ
অর্থ : হে আল্লাহ! আমরা আপনার কাছে সাহায্য চাই এবং আপনার কাছে মাফ চাই।
وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ
আমরা আপনার প্রতি ঈমান রাখি এবং আপনার ওপর ভরসা করি।
وَنُثْنِيْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ
আমরা আপনার গুণগান করি।
وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ
আমরা আপনার শোকর করি এবং আপনার কুফর করি না।
وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ
আর যে আপনার অবাধ্যতা করে, আমরা তাকে ত্যাগ করি ও বর্জন করি।
اَللّٰهُمَّ إيَّاكَ نَعْبُدُ، وَلَكَ نُصَلِّيْ وَنَسْجُدُ
হে আল্লাহ! আমরা আপনারই ইবাদত করি। আপনারই জন্য নামায পড়ি এবং আপনাকেই সিজদা করি।
وَإِلَيْكَ نَسْعىٰ وَنَحْفِدُ
আমরা আপনারই দিকে ছুটে যাই এবং ধাবিত হই।
وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشىٰ عَذَابَكَ
আমরা আপনার রহমতের আশা করি এবং আপনার শাস্তিকে ভয় করি।
إنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ.
নিঃসন্দেহে আপনার শাস্তি কাফেরদের জন্য অবধারিত।
১২. সালাম ফেরানোর পর
اَللّٰهُمَّ أَنْتَ السَّلَامُ وَمِنْكَ السَّلَامُ، تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ.
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনিই ‘সালাম’। শান্তি ও নিরাপত্তা আপনারই পক্ষ থেকে। হে প্রতাপ ও মর্যাদার মালিক! আপনি মহিমময়।
(চলবে ইনশাআল্লাহ)
তথ্যসূত্র :
১. মুসনাদে বায্যার, হাদীস ৪০৬৫; তাফসীরে ইবনে কাসীর, সূরা কাহ্ফ, ৮২ নং আয়াত-এর ব্যাখ্যায়; আলমু‘জামুল আওসাত, তাবারানী, হাদীস ২২১; ফাতহুল বারী ৭/৫৪৫ (হাদীস ৪২০৯ -এর ব্যাখ্যায়); আলইসাবা ৬/ ৪৬৩
তবারানীর উল্লেখিত হাদীসে রয়েছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঝাণ্ডায় লেখা ছিল—
لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ
وهذا الحديث إسناده صويلح، كما تعرف من تخريجه في >أنيس الساري< ৩: ১৮১১-১৮১২، وذكره الحافظ في >الفتح< ৭: ৫৪৫ تحت الحديث ৪২০৯، من طريق ابن عدي، عن أبي هريرة، وسكت عليه، مع أن إسناد حديث ابن عباس السابق، الذي أحال عليه ابنُ عدي حديثَ أبي هريرة أصلحُ منه وأقربُ أن يسكت على إسناده، مع أن الحافظ لم يذكره! وكأنه رجع عما ذكره في >الفتح< ৬: ১৪৭، في الباب ১২১ من كتاب الجهاد والسير، من توهية إسناد حديث ابن عباس. ولعله لم يستحضر جميع ما في الباب وأحوال أسانيد رواياته عند كتابة شرح هذا الباب، فأطلق الكلام على إسناد أبي الشيخ، مع أن الحكم عليه بقوله: >وإسناده واه<، لا يوافق حال الإسناد، راجع كتاب >أخلاق النبي صلى الله عليه وسلم وآدابه< لأبي الشيخ ২: ৪১৬، تحقيق الدكتور صالح بن محمد الونيان، و>أنيس الساري في تخريج أحاديث فتح الباري< للشيخ نبيل بن منصور ৩: ১৮১০-১৮১২.
২. সহীহ বুখারী, হাদীস ৮৩১
৩. সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৩৪
৪. মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস ৪৯৪৬।
আরো দেখুন, ‘কিতাবুল ফুতূহ’, সাইফ ইবনে উমর তামীমী (আনুমানিক ১৮০ হিজরী)— ‘ইতহাফুস সাদাতিল মুত্তাকীন’, যাবীদী ১০/৩০২ (আবু বকর রা.-এর খুতবায় উল্লেখিত কালিমায়ে শাহাদাত)
৫. ‘ঈমানে মুজমাল’ বলতে বোঝানো হয়, ঈমান ও আকীদা বিষয়ক এমন সংক্ষিপ্ত বাক্যকে, যা শরীয়তের দৃষ্টিতে ব্যক্তির মুসলিম হওয়ার পরিচয় বহন করে, যদি তার মধ্যে ঈমান নষ্টকারী কোনো কিছু না পাওয়া যায়। উপরে তাওহীদ ও শাহাদাতের যে কালিমাগুলো উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলোও মূলত ঈমানে মুজমালেরই একেকটি কালিমা।
৬. সূরা হা-মীম সাজদা (৪১) : ৩০; সূরা আহকাফ (৪৬) : ১৩
৭. সহীহ মুসলিম, হাদীস ৬২
৮. সহীহ বুখারী, হাদীস ১৩৫৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৯৩০
৯. মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, বর্ণনা ৩৫১৮, ১৬০৪৪
১০. মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ৬৭৩৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৮৬১৪
১১. সূরা মায়েদা (৫) : ৮৩
১২. দীর্ঘ কাল ধরে ঈমানে মুজমালের প্রসিদ্ধ ও প্রচলিত একটি বাক্য। এর আলোচনা আল্লামা শিহাবুদ্দীন খফাজী (১০৬৯ হি.)-এর হাশিয়া ‘ইনায়াতুল কাযী ওয়া কিফায়াতুর রাযী আলা তাফসীরিল বাইযাবী’ ১/২১৩-এ এসেছে।
إلا أن دعوى الخفاجي هناك أنه قد اختُلف فيه دعوى خاطئة، بمعنى أنه لو ثبت أنه قد اختَلف فيه أحد فخلافه مردود جزماً، وحكم كلمات الإيمان المجملة أنه يثبت بها إيمان المرء، حسب التفصيل المذكور في كتب العقائد وكتب الفقه المبسوطة، بشرط أن لا يظهر منه شيء ينافي ما أقرَّ به من الإيمان المجمل. ثم إن المطلوب من كل مسلم شرعاً أن لا يكتفي بالإيمان المجمل، بل يفترض عليه أن يتعلم عقائد الإيمان وشرائع الإسلام، حتى يكون إيمانه مفصلا عقيدةً وشريعةً، وعلما وعملاً.
১৩. ঈমানে মুজমালের এ বাক্যের উদ্দেশ্য হল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই দুই বৈশিষ্ট্য শিশুদের অন্তরে বদ্ধমূল করে দেওয়া :
এক. রাহমাতুল্লিল আলামীন।
দুই. সায়্যিদুল মুরসালীন।
প্রথম বৈশিষ্ট্যটি কুরআন কারীমে সূরা আম্বিয়ায় [(২১) : ১০৭] উল্লেখিত হয়েছে। আর দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্যটি অনেক হাদীস ও আছার দ্বারা প্রমাণিত।
দেখুন, মাসিক আলকাউসারে (অক্টোবর ২০২১) প্রকাশিত প্রবন্ধ ‘খাতামুন নাবিয়্যীন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম : শ্রেষ্ঠত্ব ও কিছু বৈশিষ্ট্য’।
১৪. ঈমানে মুজমালের এ বাক্যের উদ্দেশ্য হল, আকীদায়ে খতমে নবুওত এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ‘খাতামুন্নাবিয়্যীন’ ও ‘আখিরুল আম্বিয়া’-এর বিষয়টি শিশুদের অন্তরে গেঁথে দেওয়া। খতমে নবুওতের আকীদাটি ইসলামের মুতাওয়াতির ও সর্বজনবিদিত আকীদা। ইসলামে আকীদায়ে তাওহীদ, আকীদায়ে আখিরাত ও আকীদায়ে রিসালাতের যে অবস্থান, আকীদায়ে খতমে নবুওতেরও হুবহু একই অবস্থান। ‘খাতামুন্নাবিয়্যীন’— এ নাম ও বৈশিষ্ট্যটি সূরা আহযাবে (৩৩) : ৪০ উল্লেখিত হয়েছে। আর ‘আখিরুল আম্বিয়া’ নামটি সহীহ মুসলিমে (হাদীস ১৩৯৪) বর্ণিত হয়েছে।
১৫. ঈমানে মুজমালের এ বাক্যের উদ্দেশ্য হল, ঈমানের পরিচয় শিশুদের অন্তরে বদ্ধমূল করে দেওয়া। এই পরিচয়টি সূরা মুহাম্মাদ (৪৭) : ২, সূরা নিসা (৪) : ৬৫, সূরা জাছিয়া (৪৫) : ১৮, সূরা আহযাব (৩৩) : ২১, ৩৪ ও সূরা নাহল (১৬) : ৪৪ -সহ অনেক আয়াত ও হাদীস থেকে গৃহীত। সূরা নাহলের আয়াতের তাফসীর পালনপুরী রাহ.-কৃত ‘হেদায়াতুল কুরআন’ ১/৪৬৭-৪৭৪ দেখুন। ঈমানের যে সংজ্ঞা বা পরিচয়টি উম্মতে মুসলিমার দ্বীনী কিতাবাদিতে উল্লেখিত থাকে, তার সারকথা এটাই—
)تَصْدِيْقُ النَّبِي صَلَّى الله عليه وسلم في ما عُلِمَ مَجيئُه به من الله تعالى(
১৬. সূরা বাকারা (২) : ১৩১
১৭. সূরা আনআম (৬) : ১৬২-১৬৩
১৮. সূরা আনআম (৬) : ৭৯
১৯. সূরা মুহাম্মাদ (৪৭) : ১৯; সহীহ বুখারী, হাদীস ৯৯
২০. সহীহ বুখারী, হাদীস ১১৫৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২১৩৭; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৮৩২, ৫০৬০
২১. সহীহ বুখারী, হাদীস ৮৪৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৯৩, ৫৯৪; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫০৭৭
২২. সহীহ বুখারী, হাদীস ৪২০৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৭০৪; জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৫৮১
২৩. সূরা আলে ইমরান (৩): ১৭৩; সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৫৬৩; জামে তিরমিযী, হাদীস ২৪৩১
২৪. সূরা আম্বিয়া (২১) : ৮৭; জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৫০৫
২৫. সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৫২৯; জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৩৮৯
২৬. সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৭৯; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৯৯; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস ৩৭০
২৭. সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৫০০; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৭১৬; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হাদীস ৩৮৬
২৮. সহীহ বুখারী, হাদীস ৬১৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৮৪
২৯. সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৮০৩; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস ১৮৬৫
৩০. জামে তিরমিযী, হাদীস ২৪২; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ২৪০২, ২৪০৬
৩১. সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭৭২
৩২. সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭৭২
৩৩. সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭৭২
৩৪. সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭৭২
৩৫. সহীহ বুখারী, হাদীস ৮৩১
৩৬. সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৩৭০
৩৭. সহীহ বুখারী, হাদীস ৮৩৪
৩৮. জামে তিরমিযী, হাদীস ২৯৫, সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস ৭২৮
৩৯. মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস ৭১০০, ৩০৩৩৭; ইখতিলাফু আবী হানীফা ওয়াবনি আবী লাইলা ৪৬৩-৪৬৪; শারহু মাআনিল আছার ১/১৭৭
)والسياق المذكور مأخوذ من مجموع الروايات المذكورة(
আলবাহরুর রায়েক ২/৭৪
৪০. সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৯১