ফিলিস্তিন পরিস্থিতি : কিছু আয়াত ও হাদীস
এই তো সেই বরকতময় ভূমি!
একে রক্ষার দায়িত্ব প্রতিটি মুসলিমের
سُبْحٰنَ الَّذِيْۤ اَسْرٰي بِعَبْدِهٖ لَيْلًا مِّنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ اِلَي الْمَسْجِدِ الْاَقْصَا الَّذِيْ بٰرَكْنَا حَوْلَهٗ لِنُرِيَهٗ مِنْ اٰيٰتِنَا اِنَّهٗ هُوَ السَّمِيْعُ الْبَصِيْرُ.
পবিত্র সেই সত্তা, যিনি নিজ বান্দাকে রাতারাতি মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় নিয়ে যান, যার চারপাশকে আমি বরকতময় করেছি, তাকে আমার কিছু নিদর্শন দেখানোর জন্য। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা। -সূরা বনী ইসরাঈল (১৭) : ০১
ওরা মাজলূম : প্রতিরোধ ওদের আল্লাহপ্রদত্ত অধিকার
اُذِنَ لِلَّذِيْنَ يُقٰتَلُوْنَ بِاَنَّهُمْ ظُلِمُوْ، وَ اِنَّ اللهَ عَلٰي نَصْرِهِمْ لَقَدِيْرُ، ِالَّذِيْنَ اُخْرِجُوْا مِنْ دِيَارِهِمْ بِغَيْرِ حَقٍّ اِلَّاۤ اَنْ يَّقُوْلُوْا رَبُّنَا اللهُ...
যাদের সঙ্গে যুদ্ধ করা হচ্ছে, তাদেরকে অনুমতি দেওয়া যাচ্ছে (তারা নিজেদের প্রতিরক্ষার্থে যুদ্ধ করতে পারে)। যেহেতু তাদের প্রতি জুলুম করা হয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদেরকে জয়যুক্ত করতে পরিপূর্ণ সক্ষম। যাদেরকে তাদের ঘর-বাড়ি হতে অন্যায়ভাবে কেবল এ কারণে বের করা হয়েছে যে, তারা বলেছিল, আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ...। সূরা হজ্ব (২২) : ৩৯-৪০
ওদের অপরাধ ওরা মুমিন!
আল্লাহ সব দেখছেন!
وَ مَا نَقَمُوْا مِنْهُمْ اِلَّاۤ اَنْ يُّؤْمِنُوْا بِاللهِ الْعَزِيْزِ الْحَمِيْدِ، الَّذِيْ لَهٗ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضِ وَ اللهُ عَلٰي كُلِّ شَيْءٍ شَهِيْدٌ.
তারা মুমিনদেরকে শাস্তি দিচ্ছিল কেবল এ কারণে যে, তারা সেই আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল, যিনি মহা ক্ষমতার অধিকারী, প্রশংসার্হ। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর রাজত্ব যার মুঠোয় এবং আল্লাহ সমস্ত কিছু দেখছেন। -সূরা বুরূজ (৮৫) : ৮-৯
এই তো ক্ষতবিক্ষত মুসলিম শিশুর লাশের সারি; তবুও কি জাগবে না!
وَ مَا لَكُمْ لَا تُقَاتِلُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَ الْمُسْتَضْعَفِيْنَ مِنَ الرِّجَالِ وَ النِّسَآءِ وَ الْوِلْدَانِ الَّذِيْنَ يَقُوْلُوْنَ رَبَّنَاۤ اَخْرِجْنَا مِنْ هٰذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّالِمِ اَهْلُهَا وَ اجْعَلْ لَّنَا مِنْ لَّدُنْكَ وَلِيًّا وَّ اجْعَلْ لَّنَا مِنْ لَّدُنْكَ نَصِيْرًا.
(হে মুসলিমগণ!) তোমাদের জন্য এর কী বৈধতা আছে যে, তোমরা আল্লাহর পথে সেইসকল অসহায় নর-নারী ও শিশুদের জন্য লড়াই করবে না, যারা দুআ করছে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এই জনপদ থেকে-যার অধিবাসীরা জালিম-অন্যত্র সরিয়ে নাও এবং আমাদের জন্য তোমার পক্ষ হতে একজন অভিভাবক বানিয়ে দাও এবং আমাদের জন্য তোমার পক্ষ হতে একজন সাহায্যকারী দাঁড় করিয়ে দাও? -সূরা নিসা (০৪) : ৭৫
মুসলিম তো এমন!
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
مَثَلُ الْمُؤْمِنِينَ فِي تَوَادِّهِمْ، وَتَرَاحُمِهِمْ، وَتَعَاطُفِهِمْ مَثَلُ الْجَسَدِ إِذَا اشْتَكَى مِنْهُ عُضْوٌ تَدَاعَى لَه سَائِرُ الْجَسَدِ بِالسَّهَرِ وَالْحُمَّى.
পারস্পরিক ভালবাসা-সম্প্রীতি, দয়া-রহম, সহমর্মিতা ও সমব্যথী হওয়ার ক্ষেত্রে মুমিনদের দৃষ্টান্ত এক দেহের মতো, যার কোনো একটি অঙ্গ আক্রান্ত হলে বা অসুস্থ হলে পুরো দেহ নিদ্রাহীনতা ও জ্বরে কাতর হয়। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৫৮৬
মুসলিমগণ কি তাদের ভাইদের মাজলুম অবস্থায় শত্রুর হাতে ছেড়ে দিতে পারে?
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
المُسْلِمُ أَخُو المُسْلِمِ لاَ يَظْلِمُه وَلاَ يُسْلِمُه.
মুসলিমগণ একে অপরের ভাই, কোনো মুসলিম অপর ভাইয়ের ওপর জুলুম করতে পারে না, তাকে শত্রুর মোকাবেলায় সহায়তা না করে সঙ্গহীন একা ছেড়ে দিতে পারে না। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২৪৪২
প্রতিরোধ হবে সকল মুসলিম মিলে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
الْمُؤْمِنُ لِلْمُؤْمِنِ كَالْبُنْيَانِ يَشُدُّ بَعْضُه بَعْضًا.
মুমিনগণ পরস্পরে দেয়ালের মতো, যার এক অংশ অপর অংশকে শক্তি জোগায়। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৫৮৫
হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর সাহায্যকারী হয়ে যাও
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا كُوْنُوْۤا اَنْصَارَ اللهِ كَمَا قَالَ عِيْسَي ابْنُ مَرْيَمَ لِلْحَوَارِيّٖنَ مَنْ اَنْصَارِيْۤ اِلَي اللهِ قَالَ الْحَوَارِيُّوْنَ نَحْنُ اَنْصَارُ اللهِ فَاٰمَنَتْ طَّآىِٕفَةٌ مِّنْۢ بَنِيْۤ اِسْرَآءِيْلَ وَ كَفَرَتْ طَّآىِٕفَةٌ فَاَيَّدْنَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا عَلٰي عَدُوِّهِمْ فَاَصْبَحُوْا ظٰهِرِيْنَ.
হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর (দ্বীনের) সাহায্যকারী হয়ে যাও, যেমন ঈসা ইবনে মারইয়াম (আলাইহিস সালাম) হাওয়ারীদেরকে বলেছিলেন, আল্লাহর পথে কে আমার সাহায্যকারী হবে?
হাওয়ারীগণ বলল, আমরা আল্লাহর (দ্বীনের) সাহায্যকারী। তারপর বনী ইসরাইলের একদল ঈমান আনল এবং একদল কুফর অবলম্বন করল। সুতরাং যারা ঈমান এনেছিল, আমি তাদেরকে তাদের শত্রুর বিরুদ্ধে সাহায্য করলাম, ফলে তারা বিজয়ী হল। -সূরা সফ (৬১) : ১৪
মুজাহিদদের সহযোগিতা করে আমরাও হতে পারি জিহাদে অংশগ্রহণকারী
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
مَنْ جَهَّزَ غَازِيًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَقَدْ غَزَا، وَمَنْ خَلَفَ غَازِيًا فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِخَيْرٍ فَقَدْ غَزَا.
যে ব্যক্তি যুদ্ধে গমনকারী কোনো মুজাহিদকে যুদ্ধ-প্রস্তুতিতে সহযোগিতা করবে, সে জিহাদে শামিল। যে ব্যক্তি যুদ্ধে গমনকারী মুজাহিদের রেখে যাওয়া পরিবারের উত্তমরূপে দেখাশোনা করবে, সেও জিহাদে শামিল। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২৮৪৩
হে মুমিন! তোমার ব্যবসা লাভজনক হোক
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا هَلْ اَدُلُّكُمْ عَلٰي تِجَارَةٍ تُنْجِيْكُمْ مِّنْ عَذَابٍ اَلِيْمٍ، تُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ وَ رَسُوْلِهٖ وَ تُجَاهِدُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ بِاَمْوَالِكُمْ وَ اَنْفُسِكُمْ ذٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ، يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَ يُدْخِلْكُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِيْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ وَ مَسٰكِنَ طَيِّبَةً فِيْ جَنّٰتِ عَدْنٍ ذٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيْمُ، وَ اُخْرٰي تُحِبُّوْنَهَا نَصْرٌ مِّنَ اللهِ وَ فَتْحٌ قَرِيْبٌ وَ بَشِّرِ الْمُؤْمِنِيْنَ.
হে মুমিনগণ! আমি কি তোমাদেরকে এমন এক ব্যবসার সন্ধান দেব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাময় শাস্তি থেকে রক্ষা করবে? (তা এই যে,) তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনবে এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও জীবন দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। এটা তোমাদের পক্ষে শ্রেয়- যদি তোমরা উপলব্ধি কর। এর ফলে আল্লাহ তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন এবং তোমাদেরকে প্রবেশ করাবেন এমন উদ্যানে, যার তলদেশে নহর প্রবাহিত থাকবে এবং এমন উৎকৃষ্ট বাসগৃহে, যা স্থায়ী জান্নাতে অবস্থিত। এটাই মহা সাফল্য। আর তোমাদেরকে দান করবেন তোমাদের পছন্দনীয় আরও একটি জিনিস, (তা হল) আল্লাহর পক্ষ হতে সাহায্য এবং আসন্ন বিজয়! -সূরা সফ (৬১) : ১০-১৩
হে মুমিন! তুমি তো আল্লাহর সাথে জান-মালের সওদা করেছ!
اِنَّ اللهَ اشْتَرٰي مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ اَنْفُسَهُمْ وَ اَمْوَالَهُمْ بِاَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ يُقَاتِلُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ فَيَقْتُلُوْنَ وَ يُقْتَلُوْنَ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِي التَّوْرٰىةِ وَ الْاِنْجِيْلِ وَ الْقُرْاٰنِ وَ مَنْ اَوْفٰي بِعَهْدِهٖ مِنَ اللهِ فَاسْتَبْشِرُوْا بِبَيْعِكُمُ الَّذِيْ بَايَعْتُمْ بِهٖ وَ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيْمُ.
বস্তুত আল্লাহ মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও তাদের সম্পদ খরিদ করে নিয়েছেন, তাদের জন্য জান্নাত আছে- এর বিনিময়ে। তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে। ফলে হত্যা করে ও নিহতও হয়। এটা এক সত্য প্রতিশ্রুতি, যার দায়িত্ব আল্লাহ তাওরাত ও ইনজীলেও নিয়েছেন এবং কুরআনেও। আল্লাহ অপেক্ষা বেশি প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী আর কে আছে? সুতরাং তোমরা আল্লাহর সঙ্গে যে সওদা করেছ, সেই সওদার জন্য তোমরা আনন্দিত হও এবং এটাই মহা সাফল্য। -সূরা তাওবা (০৯) : ১১১
মানুষের দেখানো ভয়ে মুমিনরা ভীত নয়, তারা তো বলে- ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি‘মাল ওয়াকীল’
اَلَّذِيْنَ قَالَ لَهُمُ النَّاسُ اِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُوْا لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ اِيْمَانًا وَّ قَالُوْا حَسْبُنَا اللهُ وَ نِعْمَ الْوَكِيْلُ.
যাদেরকে লোকে বলেছিল, লোকেরা তোমাদের (সাথে যুদ্ধ করার) জন্য সেনা সংগ্রহ করেছে, সুতরাং তাদেরকে ভয় কর। তখন এটা (এই সংবাদ) তাদের ঈমানের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয় এবং তারা বলে ওঠে- ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি‘মাল ওয়াকীল’-আমাদের জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট এবং তিনি উত্তম কর্মবিধায়ক। -সূরা আলে ইমরান (০৩) : ১৭৩
তোমার শুধু চেষ্টা, কাজটি আল্লাহ্ই করবেন
وَ مَا رَمَيْتَ اِذْ رَمَيْتَ وَ لٰكِنَّ اللهَ رَمٰي.
(হে নবী!) তুমি যখন নিক্ষেপ করেছিলে, তখন তা তুমি নিক্ষেপ করনি; বরং আল্লাহ্ই নিক্ষেপ করেছিলেন। -সূরা আনফাল (০৮) : ১৭
হীনবল হয়ো না, তোমরাই বিজয়ী হবে!
وَ لَا تَهِنُوْا وَ لَا تَحْزَنُوْا وَ اَنْتُمُ الْاَعْلَوْنَ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِيْنَ.
(হে মুসলিমগণ!) তোমরা হীনবল হয়ো না এবং চিন্তিত হয়ো না। তোমরা প্রকৃত মুমিন হলে তোমরাই বিজয়ী হবে। -সূরা আলে ইমরান (০৩) : ১৩৯
وَ اِنَّ جُنْدَنَا لَهُمُ الْغٰلِبُوْنَ.
এবং নিশ্চয়ই আমার বাহিনীই হবে জয়যুক্ত। -সূরা সফ্ফাত (৩৭) : ১৭৩
হে মুমিন! ইহুদী-খ্রিস্টানদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করছ?!
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُوْدَ وَ النَّصٰرٰۤي اَوْلِيَآءَ بَعْضُهُمْ اَوْلِيَآءُ بَعْضٍ وَ مَنْ يَّتَوَلَّهُمْ مِّنْكُمْ فَاِنَّهٗ مِنْهُمْ اِنَّ اللهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظّٰلِمِيْنَ.
হে মুমিনগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রিস্টানদেরকে বন্ধু বানিয়ো না। তারা পরস্পরে একে অন্যের বন্ধু! তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি তাদেরকে বন্ধু বানাবে, সে তাদেরই মধ্যে গণ্য হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ জালিমদেরকে হেদায়েত দান করেন না। -সূরা মায়িদা (৫) : ৫১
ওরা তোমাদেরকে গ্রহণ করবে না, যতক্ষণ না তোমরা তাদের ধর্ম মেনে নেবে!
وَ لَنْ تَرْضٰي عَنْكَ الْيَهُوْدُ وَ لَا النَّصٰرٰي حَتّٰي تَتَّبِعَ مِلَّتَهُمْ قُلْ اِنَّ هُدَي اللهِ هُوَ الْهُدٰي وَ لَىِٕنِ اتَّبَعْتَ اَهْوَآءَهُمْ بَعْدَ الَّذِيْ جَآءَكَ مِنَ الْعِلْمِ مَا لَكَ مِنَ اللهِ مِنْ وَّلِيٍّ وَّ لَا نَصِيْرٍ.
ইহুদী ও নাসারা তোমার প্রতি কিছুতেই খুশি হবে না, যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্মের অনুসরণ করবে। বলে দাও, প্রকৃত হেদায়েত তো আল্লাহরই হেদায়েত। তোমার কাছে (ওহীর মাধ্যমে) যে জ্ঞান এসেছে, তার পরও যদি তুমি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ কর, তবে আল্লাহ থেকে রক্ষা করার জন্য তোমার কোনো অভিভাবক থাকবে না এবং সাহায্যকারীও না। -সূরা বাকারা (০২) : ১২০
হে আল্লাহ! মুক্ত কর আমাদের ‘ওয়াহ্ন’ থেকে
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
يُوشِكُ الْأُمَمُ أَنْ تَدَاعَى عَلَيْكُمْ كَمَا تَدَاعَى الْأَكَلَةُ إِلَى قَصْعَتِهَا.
অচিরেই (এমন একটা সময় আসছে, যখন) বিভিন্ন জাতি একে অপরকে ডেকে তোমাদের বিরুদ্ধে একত্র হবে, যেমন আহারকারীরা একে অপরকে খাবারের পাত্রের দিকে ডেকে নিয়ে আসে।
একজন জিজ্ঞাসা করলেন-
وَمِنْ قِلّةٍ نَحْنُ يَوْمَئِذٍ؟
সেদিন কি আমাদের সংখ্যাস্বল্পতার কারণে এমনটা হবে?
তিনি বললেন-
بَلْ أَنْتُمْ يَوْمَئِذٍ كَثِيرٌ، وَلَكِنّكُمْ غُثَاءٌ كَغُثَاءِ السّيْلِ، وَلَيَنْزَعَنّ اللهُ مِنْ صُدُورِ عَدُوِّكُمُ الْمَهَابَةَ مِنْكُمْ، وَلَيَقْذِفَنّ اللهُ فِي قُلُوبِكُمُ الْوَهْنَ.
বরং সেদিন তোমরা সংখ্যায় হবে অনেক। তবে তোমাদের অবস্থা হবে পানির তোড়ে ভেসে যাওয়া খড়কুটোর মতো। আল্লাহ তাআলা দুশমনের অন্তর থেকে তোমাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি উঠিয়ে নেবেন আর তোমাদের অন্তরে ‘ওয়াহ্ন’ (দুর্বলতা) সৃষ্টি করে দেবেন।
একজন জিজ্ঞাসা করলেন-
يَا رَسُولَ اللهِ، وَمَا الْوَهْنُ؟
আল্লাহর রাসূল! ‘ওয়াহ্ন’ মানে কী?
তিনি বললেন-
حُبّ الدّنْيَا، وَكَرَاهِيَةُ الْمَوْتِ.
দুনিয়ার মোহ আর মৃত্যুর ভয়। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪২৯৭
ওরা আল্লাহকে যতটুকু ভয় পায় না পায়, তোমাদেরকে ভয় পায় আরো বেশি
لَاَنْتُمْ اَشَدُّ رَهْبَةً فِيْ صُدُوْرِهِمْ مِّنَ اللهِ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَفْقَهُوْنَ.
(হে মুসলিমগণ!) প্রকৃতপক্ষে তাদের অন্তরে আল্লাহর চেয়ে তোমাদের ভয়ই বেশি। তা এজন্য যে, তারা এমনই এক সম্প্রদায়, যাদের বুঝ-সমঝ নেই। -সূরা হাশর (৫৯) : ১৩
ওরা ভীতু; চার দেয়ালের যোদ্ধা!
لَا يُقَاتِلُوْنَكُمْ جَمِيْعًا اِلَّا فِيْ قُرًي مُّحَصَّنَةٍ اَوْ مِنْ وَّرَآءِ جُدُرٍ بَاْسُهُمْ بَيْنَهُمْ شَدِيْدٌ تَحْسَبُهُمْ جَمِيْعًا وَّ قُلُوْبُهُمْ شَتّٰي ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَعْقِلُوْنَ.
তারা সকলে একাট্টা হয়েও তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে না, তবে এমন জনপদে (করবে), যা প্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত অথবা (করবে) দেওয়ালের আড়ালে লুকিয়ে। তাদের আপসের মধ্যে বিরোধ প্রচণ্ড। তুমি তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ মনে কর, অথচ তাদের অন্তর বহুধা বিভক্ত। তা এজন্য যে, তারা এমনই এক সম্প্রদায়, যাদের আকল-বুদ্ধি নেই। -সূরা হাশর (৫৯) : ১৪
তোমাদের হাতেই আল্লাহ তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন
قَاتِلُوْهُمْ يُعَذِّبْهُمُ اللهُ بِاَيْدِيْكُمْ وَ يُخْزِهِمْ وَ يَنْصُرْكُمْ عَلَيْهِمْ وَ يَشْفِ صُدُوْرَ قَوْمٍ مُّؤْمِنِيْنَ .
তাদের সাথে যুদ্ধ কর, যাতে আল্লাহ তোমাদের হাতে তাদেরকে শাস্তি দান করেন, তাদেরকে লাঞ্ছিত করেন, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদেরকে সাহায্য করেন এবং মুমিনদের অন্তর জুড়িয়ে দেন। Ñসূরা তাওবা (০৯) : ১৪
শহীদের এ মিছিল দেখে বিচলিত হয়ো না, শত্রুরা নিশ্চিহ্ন হবেই
اِنْ يَّمْسَسْكُمْ قَرْحٌ فَقَدْ مَسَّ الْقَوْمَ قَرْحٌ مِّثْلُهٗ وَ تِلْكَ الْاَيَّامُ نُدَاوِلُهَا بَيْنَ النَّاسِ، وَ لِيَعْلَمَ اللهُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَ يَتَّخِذَ مِنْكُمْ شُهَدَآءَ وَ اللهُ لَا يُحِبُّ الظّٰلِمِيْنَ، وَ لِيُمَحِّصَ اللهُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَ يَمْحَقَ الْكٰفِرِيْنَ .
তোমাদের যদি আঘাত লেগে থাকে, তবে তাদেরও অনুরূপ আঘাত (ইতিপূর্বে) লেগেছিল। এ তো দিন-পরিক্রমা, যা আমি মানুষের মধ্যে পালাক্রমে বদলাতে থাকি। এর উদ্দেশ্য ছিল মুমিনদেরকে পরীক্ষা করা এবং তোমাদের মধ্যে কিছু লোককে শহীদ করা। আর আল্লাহ জালিমদেরকে ভালবাসেন না। এবং (উদ্দেশ্য ছিল এ-ও যে,) আল্লাহ মুমিনদেরকে যাতে পরিশুদ্ধ করতে পারেন ও কাফেরদেরকে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করে ফেলেন। -সূরা আলে ইমরান (০৩) : ১৪০-১৪১
তোমরা সংখ্যায় কম তাতে কী হয়েছে?
كَمْ مِّنْ فِئَةٍ قَلِيْلَةٍ غَلَبَتْ فِئَةً كَثِيْرَةًۢ بِاِذْنِ اللهِ وَ اللهُ مَعَ الصّٰبِرِيْنَ .
এমন কত ছোট দলই না রয়েছে, যারা আল্লাহর হুকুমে বড় দলের ওপর জয়যুক্ত হয়েছে! আর আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন, যারা সবরের পরিচয় দেয়। -সূরা বাকারা (০২) : ২৪৯
তাদের দূর্গ তাদের রক্ষা করতে পারবে না
مَا ظَنَنْتُمْ اَنْ يَّخْرُجُوْا وَ ظَنُّوْۤا اَنَّهُمْ مَّانِعَتُهُمْ حُصُوْنُهُمْ مِّنَ اللهِ فَاَتٰىهُمُ اللهُ مِنْ حَيْثُ لَمْ يَحْتَسِبُوْا وَ قَذَفَ فِيْ قُلُوْبِهِمُ الرُّعْبَ.
(হে মুসলিমগণ!) তোমরা কল্পনাও করনি, তারা বের হয়ে যাবে। তারাও মনে করেছিল, তাদের দুর্গগুলো তাদেরকে আল্লাহ হতে রক্ষা করবে। অতঃপর আল্লাহ তাদের কাছে এমন দিক থেকে এলেন, যা তারা ধারণাও করতে পারেনি। আল্লাহ তাদের অন্তরে ভীতি সঞ্চার করলেন।... -সূরা হাশর (৫৯) : ২
মুমিনদের প্রার্থনা
رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَاۤ اِنْ نَّسِيْنَاۤ اَوْ اَخْطَاْنَا رَبَّنَا وَ لَا تَحْمِلْ عَلَيْنَاۤ اِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهٗ عَلَي الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِنَا رَبَّنَا وَ لَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهٖ وَ اعْفُ عَنَّا وَ اغْفِرْ لَنَا وَ ارْحَمْنَا اَنْتَ مَوْلٰىنَا فَانْصُرْنَا عَلَي الْقَوْمِ الْكٰفِرِيْنَ.
হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের দ্বারা যদি কোনও ভুল-ত্রুটি হয়ে যায় তবে সেজন্য তুমি আমাদের পাকড়াও করো না। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের প্রতি সেই রকমের দায়িত্বভার অর্পণ করো না, যেমন তা অর্পণ করেছিলে আমাদের পূর্ববর্তীদের প্রতি। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের ওপর এমন ভার চাপিয়ো না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। আমাদের (ত্রুটিসমূহ) মার্জনা কর, আমাদের ক্ষমা কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমিই আমাদের অভিভাবক ও সাহায্যকারী। সুতরাং কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য কর। -সূরা বাকারা (০২) : ২৮৬
رَبَّنَاۤ اَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَّ ثَبِّتْ اَقْدَامَنَا وَ انْصُرْنَا عَلَي الْقَوْمِ الْكٰفِرِيْنَ.
হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের ওপর সবরের গুণ ঢেলে দাও এবং আমাদেরকে অবিচল-পদ রাখ, আর কাফির সম্প্রদায়ের ওপর আমাদেরকে সাহায্য ও বিজয় দান কর। -সূরা বাকারা (০২) : ২৫০
আল্লাহর রহমতের কাছে মুমিনদের প্রত্যাশা
سَيُهْزَمُ الْجَمْعُ وَ يُوَلُّوْنَ الدُّبُرَ.
(সত্য কথা এই যে,) এই দল অচিরেই পরাস্ত হবে এবং তারা পিছন ফিরে পালাবে। -সূরা কামার (৫৪) : ৪৫