কালচার
ডিসেম্বরের শেষে বারোটা বাজা বন্ধ করুন
ঈসায়ী সনের শেষ মাসের শেষ রাত ১২টা বাজলে ইদানীং শহর-নগরগুলোতে সমাজ ও কালচারেরও বারোটা বাজতে শুরু করে। নতুন বছরের পয়লা লগ্নটিকে স্বাগত জানাতে গিয়ে উদ্দাম নাচগান ও মাতলামীর আয়োজন চলে। পশ্চিমা দেশগুলোর এই নষ্ট কালচারটিকে গত দেড় দশক যাবৎ বাংলাদেশের শহরগুলোতেও টেনে আনা হয়েছে। এখন আবার এর সর্বনাশ থেকে বাঁচার জন্য ঐদিন বিশেষ টহল, বিশেষ পাহারাদারির ইন্তেজামও চলে।
এদেশের মানুষের আনন্দ উপলক্ষ্যের নিজস্ব আয়োজনের কোনো কমতি নেই। দুই ঈদসহ গ্রামে গ্রামে আছে মাহফিল, মজলিস আর ঘরোয়া নানা উপলক্ষ্য। তারপরও থার্টিফাস্টনাইটের নামে পঁচে যাওয়া কালচারটি আমদানির পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন পশ্চিমানুরাগী কিছু বিনোদনবাদী মিডিয়াবিদ ও বুদ্ধিজীবি। এরা সুশালীন সভ্যতার কোনো বুনিয়াদ গড়ার পরিবর্তে অশ্লীলতার ভাগাড় সৃষ্টি করে সুখ বোধ করেন। ভ্যালেন্টাইন
ডে-র নামে ১৪ ফেব্রুয়ারীতে তরুণ-তরুণীদেরকে পাপের সমুদ্রে ভাসিয়ে দেওয়ার পদক্ষেপটিও এই ত্রুপই নিয়েছেন। সেটির রেওয়াজও এখন এদেশের শহর-নগরগুলোতে ছেয়ে গেছে।
আমাদের দেশে পশ্চিমা কালচারের আমদানি শেষে আমাদের শিক্ষিতজনেরা আচরণটা করেন বোকা বালকের মতো। সেই সার্কাস দেখতে দেখতে পকেটমারের হাতে পকেটের টাকা হারিয়ে বাজার না করে কাঁদতে কাঁদতে ঘরে ফেরার দশা। এই সব কালচার হাতে পেয়ে এক শ্রেণী প্রথমে মনে করেন, বেশতো আধুনিক আধুনিক লাগে। ফূর্তির কিছু ব্যাপারও আছে। মন্দ কি! এরপর যখন মাদকের ছোবলে তারা তরুণ-তরুণীকে ধ্বংস হয়ে যেতে দেখেন, ইয়াবা আর ফেন্সিডিলের পেছনে যুবসমাজকে পাগলের মতো ছুটতে দেখেন তখন আধুনিকতাবাদী অভিভাবকগণ বোকা বালকের মতো কাঁদতে বসেন। আরে! সাবধান তো হওয়া উচিত আগে থেকে। এই থার্টিফাস্টনাইট, এই গানবাদ্যের আয়োজন, এই ভ্যালেন্টাইন ডে-ই ইয়াবা, ভায়াগ্রা, ফেন্সিডিল, হিরোইন, পেথিড্রিনের প্রবেশ পথ। এই প্রবেশপথটাকে খোলা রাখলে হাজার অভিযান চালিয়েও মাদকের উত্তেজনা ও উন্মাদনা থামানো যাবে না।
সুতরাং মাদকবিরোধী, অশ্লীতাবিরোধী অভিযান ও সংস্কারের এই সু-মওসুমে আমরা আশা করতেই পারি, ৩১ ডিসেম্বর রাত ১২ টার পরের উন্মাদনা বন্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিবেন। আগে থেকেই নিবেন।