সতর্কতা
রমযান ও ঈদের চাঁদ নিয়ে এবার অস্বস্তি হয়নি। চাঁদ দেখা বিষয়ে গত বছরের তিক্ত অভিজ্ঞতা ও অস্বস্তি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল যে, আশংকা হচ্ছিল, এ ধরনের অস্বস্তি, দূরত্ব ও বিভাজনমূলক অবস্থান এর পর থেকে বার বার প্রকাশ পাবে। এ আশঙ্কাটি দেখা দিয়েছিল এবং প্রকটভাবেই দেখা দিয়েছিল। কিন্তু আল্লাহর শোকর এ বছর সে আশঙ্কা বাস্তবে ফলেনি। এ আশঙ্কাটি বাস্তবে না ফলার ব্যাপারটি হঠাৎ করেই ঘটেনি কিংবা আপনা থেকেই হয়নি। জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির পক্ষ থেকে এবার দেশের বড় বড় বহু মাদরাসা ও মসজিদে ফোন নম্বর জানিয়ে দিয়ে চাঁদ দেখার খবর জানানোর আহ্বান সংবলিত পত্র কিংবা সংবাদ পাঠানো হয়েছিল। সংবাদপত্রেও ব্যাপকভাবে খবর জানানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়েছিল। এ রকম একটি সমন্বয় ও সতর্কতাধর্মী পদক্ষেপ ছিল চাঁদ দেখার সংবাদ নিয়ে কোনো বিভক্তি-বিভাজন ও ফিৎনার ঘটনা না ঘটার অন্যতম কারণ। মূলত এসব ক্ষেত্রে এটাই কাক্সিক্ষত ছিল। সরকারী জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির কার্যক্রম জেলায়-থানায় সরকারি অফিসারদের তথ্য ও সাহায্যনির্ভর না করে সেটাকে সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মানুষ থেকে নিয়ে আলেম-উলামাদের বৃহত্তর পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া এবং গ্রহণযোগ্য সব মহল ও সূত্রকে তাতে সম্পৃক্ত করে চাঁদের সাক্ষ্য ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্য দিয়ে চাঁদ দেখার বিষয়ে যে ফিৎনামুক্ত সুন্দর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায় তার একটি ভালো উদাহরণ এবার সৃষ্টি হল। আশংকার পরিবর্তে আশার জন্ম হল।
ইতিপূর্বে 'আলকাউসার’ এ চাঁদ দেখা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নিবন্ধ ছাপা হয়েছে। চাঁদ দেখা বিষয়টিকে কীভাবে সর্বোচ্চ সর্বজনীন ও গ্রহণযোগ্য করা যায় সে বিষয়ে সুপারিশ পেশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে জাতীয় মসজিদের সম্মানিত মরহুম খতীবের জীবদ্দশায় তাঁর সঙ্গে ‘মারকাযুদ্দাওয়া’র পক্ষ থেকে একাধিক বৈঠকী আলোচনাও চালানো হয়েছে। এক্ষেত্রে উলামায়ে কেরামের আরও বিভিন্ন মহলের সক্রিয়তাও ছিল। এবারের রমযান ও ঈদের চাঁদ দেখার বিষয়ে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি পেছনের সেসব প্রয়াস ও সুপারিশের আলোকেই হয়তো সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে এবং এর যে সুফল পাওয়া গেছে তাতে সব মহলই স্বস্তি বোধ করছেন। এ পর্যায়ে সতর্কতা, সম্পৃক্ততা ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি এবং ফিৎনার দরজা বন্ধের জন্য আরো বিষয় রয়েছে। বিশেষজ্ঞ উলামায়ে কেরামের সঙ্গে পরামর্শ করে আশা করি তারা আগামী রমযানের আগে সে পদক্ষেপ নিবেন।