নিজের সঙ্গে সংলাপ
তাওবা
আজ তুমি ভীষণ রকম অসুস্থ, বিমর্ষ, দুর্বল, তোমার পদযুগল ব্যথায় নীল। তুমি চাইলেও তা আর তোমার ইচ্ছা অনুযায়ী পরিচালিত হয় না। তোমার শির দাঁড়া ব্যথায় কাবু হয়ে এমন হয়েছে যে, তা তোমাকে আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে দেয় না। প্রয়োজনেও শরীর বাঁকা করে কোনো কাজ তুমি করতে পার না। তোমায় নিতান্ত প্রয়োজনীয় থলিটিও তুমি বহনে সক্ষম নও। দিন শেষে, রাতে তুমি শুয়ে ঘুমুবে তা-ও পার না। কারণ তীব্র ব্যথা, তোমার পৃষ্ঠদেশে অথবা ব্যথায় কাতর তোমার পদযুগল, তাতে প্রয়োজনীয় রক্ত প্রবাহ নেই! তোমার বৃক্কযুগল আজ মাত্র পঞ্চাশ শতাংশ কাজ করছে। তোমার রক্তে সুগারের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। ডাক্তার তোমার খাবারের শাসন তালিকা দিয়ে বলেছেন, তুমি আর তোমার রসনার চাহিদা পূরণ করতে পারবে না।
একটি বার ভেবে দেখ, যাকে তুমি তোমার শরীর বলছ, যার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে তুমি তোমার বলে জেনেছ এতদিন, তা যদি সত্যি সত্যি তোমারই হত তবে তা আজ তোমার ইচ্ছামাফিকই পরিচালিত হত। আসলে এ সকল কিছুই তোমার কাছে তোমার, আমার, আমাদের মহান প্রভুর আমানত। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা তোমার রূহ এবং দেহের সমন্বয় করে তোমাকে এ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন এবং সঙ্গে দিয়েছেন পরিপূর্ণ জীবন বিধান, সার্বিক দিকনির্দেশনা সম্বলিত কিতাব আলকুরআন। দিয়েছেন শিক্ষক নবী এবং বলে দিয়েছেন তাঁর দেওয়া আমানত তথা তোমার দেহ-মনের ব্যবহার বিধি। তোমার পদযুগল, হস্তযুগল, আঁখি যুগল, তোমার কর্ণ, নাসিকা, মস্তিষ্ক, সকলের সামষ্টিক ক্রিয়ায় তোমার উদ্দেশ্য হওয়া উচিত ছিল সেই মহান রবের সান্নিধ্য ও সন্তুষ্টি অর্জন। কতটুকু তা করেছ তার সঠিক জবাব তোমার কাছেই রয়েছে। নিজকে নিজে জিজ্ঞেস করে দেখ!
তুমি চাইলেই আর পূর্বের ন্যায় অতিশয় ব্যস্ত হতে পারবে না। আবার তোমার মৃত্যুযন্ত্রণা এখনও শুরু হয়নি। সময় পার হয়ে যাচ্ছে। নিজেকে তুচ্ছ জ্ঞান করে লুটিয়ে পড় সেই মহান রব-এর কুদরতী পায়ে এবং নিবেদন কর, ‘প্রভু নিজের প্রতি জুলুম অত্যাচার করেছি, আজ আমি অনুতপ্ত, আমায় ক্ষমা কর। আমার সকল কবীরা, ছগীরা, জানা, অজানা, ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় কৃত সকল গুনাহ হতে আমি তাওবা করছি। তুমি দয়া করে, মায়া করে আমার তাওবাকে কবুল কর! বাকী জীবন গুনাহ হতে বেঁচে, তাওবার উপর অটল থাকতে পারি সেই তাওফীক দান কর।