রজব ১৪২৮   ||   আগস্ট ২০০৭

মারকাযের দিনরাত

০১-০৬-১৪২৮ হি., ১৭-০৬-২০০৭ ইং

মুদীর ছাহেব ও অন্যান্য আসাতিযায়ে কেরাম আদাবে মুআশারা ও সাফাইয়ে মুআলামার বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। প্রতিষ্ঠানের যে জিনিসপত্র সবার ব্যবহারে আসে সেগুলোর বিষয়ে শরীয়তের নীতিমালা সম্পর্কেও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। অন্যের ব্যক্তিগত জিনিসপত্রের বিষয়ে সাধারণভাবে যে উদাসীনতা পরিলক্ষিত হয় সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলা হয়েছে যে, সহপাঠীদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র তাদের স্পষ্ট অনুমতি ও আন্তরিক সম্মতি ছাড়া ব্যবহার করা এবং এই ধারণা করা যে, সে কিছু মনে করবে না, কিংবা এক সঙ্গে থাকলে অমন একে অপরের জিনিস কিছু ব্যবহার হয়েই যায় কিংবা যদি তার অসম্মতি থাকত তাহলে স্পষ্ট করে ব্যবহার করতে নিষেধ করে দিত ইত্যাদি- জায়েয নয়। শরীয়তে এসব বাহানার কোনো মূল্য নেই।

 

০৬-০৬-১৪২৮ হি., ২২-০৬-২০০৭ ইং

জুমার পর প্রায় তিনটায় সময় হঠাৎ শায়খুল হাদীস ছাহেব দামাত বারাকাতুহুম মারকাযুদ দাওয়ায় তাশরীফ আনলেন। তাঁর এক দৌহিত্রের আবদারে বেলা তাকাল্লুফ হুজুর এখানে চলে আসেন। আছরের আধাঘণ্টা পূর্ব পর্যন্ত দফতরে অবস্থান করেন। এ সময় তিনি তাঁর উস্তাদদের স্মৃতিচারণ করেছেন এবং তাদের বিশেষ অনুগ্রহের কথা বলেছেন। বিশেষত হযরত সদর ছাহেব হুজুর- এর কথা বারবার বলেছেন।

সহীহ বুখারীর আযমত এবং বুখারীর দরসদান বিষয়ে তার প্রতি আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেছেন। তিনি মারকাযুদ দাওয়ায় সহীহ বুখারীর দরস শুরু করার বিষয়ে বিশেষভাবে তাকীদ করেছেন।

মজলিসের শেষ দিকে সবার অনুরোধে স্বরচিত কাসীদায়ে লামিয়াপড়ে শোনান। সম্পূর্ণ কাসীদাটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শানে রচিত। কাসীদার প্রতিটি শেরযেন তাঁর হৃদয় থেকে উৎসারিত হচ্ছিল। কণ্ঠে কাসীদা, হৃদয়ে আবেগ এবং চোখে বাধাহীন অশ্রু। আছরের কিছুক্ষণ আগ পর্যন্ত এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত ছিল।

 

২৩-০৬-১৪২৮ হি., ০৯-০৭-২০০৭ ইং

ফজরের পর মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক ছাহেব উসূলে ফিকহ বিষয়ে মুহাযারাপেশ করলেন। এ বিষয়ে এটি ছিল বর্তমান শিক্ষাবর্ষের শেষ মুহাযারা। এ মুহাযারায় তিনি ওই বিষয়গুলি আলোচনা করেছেন, যেগুলোর প্রতি মনোযোগী হওয়া এই শাস্ত্রে পারদর্শিতা অর্জনের জন্য জরুরি। বস্তুত এই বিষয়গুলির প্রতি অমনোযোগিতার ফলে তালিবে ইলমরা এই ইলমের মর্ম ও হাকীকত থেকে দূরে সরে গিয়ে শুধু শব্দ ও খোলসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা এই ছিল যে, ইলমে উসূলে ফিকহের অনেকগুলি বুনিয়াদী কায়েদা ও তার দলীল অন্যান্য শাস্ত্রের কিতাবাদিতে বিক্ষিপ্তভাবে বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু উসূলে ফিকহের কিতাবে সেগুলোর কোনো আলোচনাই নেই।

 

২৫-০৬-১৪২৮ হি., ২১-০৭-২০০৭ ইং

জোহরের পরের নিয়মিত তালীম ও দুআর মজলিসে আমীনুত তালীম ছাহেব সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এই মজলিসের উদ্দেশ্য হল আদাবুল মুআশারাসম্পর্কে তাফাককুহ অর্জন করা এবং নফসের বিভিন্ন ব্যাধি সম্পর্কে সচেতন হয়ে তা দূর করার প্রচেষ্টায় মনোযোগী হওয়া। এ বিষয়ে মুরাকাবা ও মুহাসাবার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। আর এটা তখনই হবে যদি মজলিসে পঠিত বিষয়গুলোকে শুধু জ্ঞানার্জনের সীমায় আবদ্ধ না রেখে কর্মের অঙ্গনেও তার অনুশীলন করা হয়।

আমীনুত তালীম বলেন, এজন্য যে কিতাব মজলিসে পড়া হয়, যেমন এখন রিসালাতুল মুসতারশিদীন হায়াতুস সাহাবা পড়া হচ্ছে, তা শুধু পড়া ও শোনার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা যাবে না; বরং পড়নেওয়ালা পরিষ্কার করে ধীরে ধীরে পড়বে, অন্যরা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এরপর পরস্পর আলোচনা করবে এবং দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্মে তা প্রতিফলিত করার চেষ্টা করবে।

 

 

advertisement