অসৎকর্মের ফল
এ কথা সত্য যে, যখন কেউ-মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতর এমন কোনো ব্যক্তির সংবাদ শুনে তাকে দেখতে যায়- আল্লাহর যিকিরে যার অন্তর আকৃষ্ট, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ কালিমাতে যার প্রাণ নিবেদিত, তখন সেই মরণাপন্ন ব্যক্তিকে দেখা মাত্র তার অন্তরে তীব্রভাবে ভালোকাজের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয় এই আশায় যে, উত্তম কর্মের বিনিময়ে ভাগ্যবান ব্যক্তিদের কাতারে যেন সেও শামিল হতে পারে।
যারা সর্বদা সৎকর্ম করেছে মৃত্যুর সময় দেখা যায় তাদের কেউ কালিমা পড়ছে, কেউ কুরআনে কারীম তিলাওয়াত করছে, কেউবা ইসলামের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করছে।
যারা মন্দকর্মে জীবনের সময়গুলো অতিবাহিত করেছে, মৃত্যুর সময় ভালো কাজ তো দূরের কথা,তার কপালে অধিকাংশ সময় কালিমাও নসিব হয় না। আব্দুল আযীয বিন আবু রাওয়াদ বলেন, আমি মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতর এক ব্যক্তির নিকট পৌঁছলাম তারপর তাকে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলতে উৎসাহিত করলাম, কিন্তু সে ব্যক্তি কালিমাকে অস্বীকার করল, আর এ অবস্থায় মারা গেল। পরে তার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে লোকেরা বলল, এ ব্যক্তি মদ খেয়ে মাতাল থাকত। সুতরাং মন্দ পরিণতি থেকে বাঁচার জন্য অসৎকর্ম থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য। আর অসৎকর্ম হচ্ছে নামায ছেড়ে দেওয়া, জামাতে অবহেলা করা, দ্বীনের নামে কোনো বিষয় নব উদ্ভাবন করা, যা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কতৃর্ক প্রবর্তিত হয়নি, মানুষের প্রতি জুলুম-শোষণ, তাদের ধন-সম্পদ ও মান-মর্যাদায় আঘাত, আল্লাহর সাথে শিরক, ভালো কাজে অনীহা প্রকাশ, পরোপকারে পিছুটান, দুআয় বিমুখতা, দুনিয়ার ভালোবাসা ও তার চাকচিক্যের উপর নির্ভরতা, আখেরাতের প্রতি গুরুত্বহীনতা, আখেরাতের ভালোবাসার উপর দুনিয়ার ভালোবাসার প্রাধান্য দান।
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে- ‘নিশ্চয়ই যারা আমার সাক্ষাতের আশা পোষণ করে না এবং পার্থিব জীবনেই সন্তুষ্ট এতেই পরিতৃপ্ত থাকে এবং যারা আমার নিদর্শনাবলী সম্বন্ধে গাফিল এদের আবাস অগ্নি, এদের কৃতকর্মের জন্য’ -এছাড়া গর্ব-অহঙ্কার, হিংসা-বিদ্বেষ, দ্বিমুখিতা, কপটতা, মুসলমানদের প্রতি তুচ্ছতা, তাদের সাথে ধোকা-প্রতারণা ও মিথ্যা প্রবঞ্চনা, আল্লাহর যা পছন্দ তার প্রতি অনীহা, যা অপছন্দ তার প্রতি ভালোবাসা এসবই মন্দ পরিণতির কারণ। কেননা মানুষ যখন অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠে, তখন পাপকর্মে তার আসক্তি বেড়ে যায়। এমনকি মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে আসে, তবুও সে পাপ কাজ ছাড়ে না, কারণ শয়তান তার দুর্বলতার সুযোগে মৃত্যুর সময় তার ঘাড়ে চেপে বসে, তাকে কুমন্ত্রণা দিতে থাকে, ফলে এত জীবন যা করেছে,যা বলেছে, এখন তাই করতে থাকে, তাই বলতে থাকে। অবশেষে মন্দ পরিণতি নিয়ে মৃত্যু বরণ করে।