একটি চিন্তাগত ভুল
আদাব ও নফল বিষয়াদির জ্ঞানচর্চাও কি নফল?
শরীয়তের বিধানসমূহের মধ্যে শ্রেণী বিভাগ রয়েছে। কিছু বিষয় রয়েছে যা ফরজ ও ওয়াজিব, আর কিছু বিষয় রয়েছে যা নফল বা মুস্তাহাব পর্যায়ের। নফল বিষয়াদির মধ্যে কিছু রয়েছে যা স্বতন্ত্র আমল বা ইবাদত, যেমন নফল নামায, নফল রোযা ইত্যাদি। আবার কিছু রয়েছে যা ফরজ বা ওয়াজিব আমলের অংশ যেমন অযু, নামায ইত্যাদি আমলের আদব ও নফল পর্যায়ের কাজ সমূহ কার্যক্ষেত্রে দেখা যায়, আদব ও নফল শ্রেণীর বিষয়গুলো ব্যাপক অবহেলার শিকার। এর পিছনে যে মানসিকতা কার্যকর তা এই যে, এগুলো তো নফল কিংবা আদব। অর্থাৎ এগুলো ছেড়ে দিলে গুনাহ নেই। যখনই কোনো নফল আমলের ক্ষেত্র আসে কিংবা কোনো আদব পালন করার সুযোগ সৃষ্টি হয় তখন প্রথমে এই নেতিবাচক দিকটিই মনে আসে অথচ এখানে এভাবেও চিন্তা করা যেত যে, এ কাজে অনেক ছওয়াব ও অনেক উপকারিতা রয়েছে। নফল ও আদব পর্যায়ের বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে এই ইতিবাচক চিন্তা পরিত্যাগ করে উপরোক্ত নেতিবাচক চিন্তা অবলম্বন করা মুমিনের জন্য শোভনীয় নয়।
আমি এখানে যে ভুল চিন্তাটি সম্পর্কে বলতে চাই তা এই যে, অনেকে আদব ও নফল বিষয়ের প্রচার-প্রসার এবং নিজের অধীন লোকদেরকে এ বিষয়ে শিক্ষা প্রদানের কাজটিকেও একটি নফল কাজ মনে করেন। ফলে কোনো মুরব্বী যদি এ বিষয়ে তাগিদ করেন তাহলে একে ‘বাড়াবাড়ি’ বলে গণ্য করেন। মনে রাখা উচিত যে, এই চিন্তা ভুল। সঠিক কথা এই যে, আদব ও নফল শ্রেণীর বিষয়াদির পঠন-পাঠন এবং ইসলাহ-তরিবয়ত, দাওয়াত ও তাবলীগের ক্ষেত্রে এর চর্চা ও প্রচার-প্রসার করা ফরজে কিফায়া। দলীলের নিরিখে এ বিষয়টি স্পষ্ট। ফিকহে হানাফীর তৃতীয় ইমাম-ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান আশশাইবানী রাহ. ‘কিতাবুল কাস্ব’-এ বিষয়টি পরিষ্কার বলেছেন। মূল কিতাবে এবং শামসুল আইম্মা সারাখসী রা.-এর ভাষ্যগ্রন্থে এ বিষয়ে অনেক দলীল উল্লেখ করা হয়েছে। দেখুন-কিতাবুল কাস্ব, তাহকীক : শাইখ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ পৃ.১৫৯-১৬০ আলমাবসূত, সারাখসী ৩০-২৬৩