রবিউল আউয়াল ১৪২৮   ||   এপ্রিল ২০০৭

এটি হাদীস নয়
দ্বীন ও সিয়াসত দুই সহোদর

সিয়াসত বা রাজ্য-চালনা সামাজিক জীবনের অপরিহার্য প্রয়োজন। ন্যায় বিচার ও ইসলামী শিক্ষা মোতাবেক শাসনকার্য পরিচালনার আদেশ ইসলাম দিয়েছে। মুসলমানদের স্বতন্ত্র শরীয়ারাষ্ট্র হওয়া শুধু শান্তি-শৃঙ্খলার স্বার্থেই নয়, দ্বীনী দৃষ্টিকোণ থেকেও প্রয়োজন এবং তা একটি দ্বীনী দায়িত্ব। এ বিষয়ে কুরআন হাদীসের অনেক দলীল রয়েছে। এই স্বীকৃত বিষয়টিকে কেউ কেউ এই ভাষায় প্রকাশ করেছেন-

الدين والسياسة توأمان  বা الملك والسياسة توأمان কিংবা  السلطان والدين أخوان

দ্বীন ও শাসন জমজসহোদর ভাই। অর্থাৎ দ্বীনবিহীন শাসনব্যবস্থা ফলদায়ক হতে পারে না এবং এই শাসনব্যবস্থার মাধ্যমে ন্যায়বিচার  প্রতিষ্ঠা ও অন্যায়ের প্রতিবিধান ইত্যাদি উদ্দেশ্যেও হাসিল হয় না। তদ্রূপ সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দ্বীন প্রতিষ্ঠা শাসন-ক্ষমতা ছাড়া সম্ভব নয়। সারকথা, একটি অপরটির জন্য অপরিহার্য। তবে এটা পরিষ্কার যে, এ ক্ষেত্রে দ্বীন হল উদ্দেশ্য  আর শাসন ক্ষমতা তার ওসীলা বা উপায়। সূরা নূরে ইরশাদ হয়েছে

وَعَدَ اللّٰهُ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا مِنْكُمْ وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَیَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِی الْاَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ ۪ وَ لَیُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِیْنَهُمُ الَّذِی ارْتَضٰی لَهُمْ وَ لَیُبَدِّلَنَّهُمْ مِّنْۢ بَعْدِ خَوْفِهِمْ اَمْنًا ؕ یَعْبُدُوْنَنِیْ لَا یُشْرِكُوْنَ بِیْ شَیْـًٔا ؕ وَ مَنْ كَفَرَ بَعْدَ ذٰلِكَ فَاُولٰٓىِٕكَ هُمُ الْفٰسِقُوْنَ.

তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রম্নতি দিচ্ছেন যে, তিনি তাদেরকে পৃথিবীতে রাজত্ব দান করবেন, যেমন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে দান করেছেন এবং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য তাদের দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করবেন, যা তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তাদের ভয়ভীতির পরিবর্তে তাদেরকে নিরাপত্তা দান করবেন। তারা আমার ইবাদত করবে, আমার সঙ্গে কোন অংশী স্থির করবে না।...

তাহলে শাসনক্ষমতা দ্বীনের জন্য, দ্বীন শাসনক্ষমতার জন্য নয়।

যাহোক, এ মুহূর্তে আমি যে কথাটি বলতে চাই তা হল, কেউ কেউ উপরোক্ত বাক্যটিকে হাদীস মনে করে থাকে। এ ধারণা ভুল। এটি হাদীসের বাক্য নয়। কোনো মনীষীর উক্তি।

-মাকতুবে শাহ আবদুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভীসীরাতে সাইয়েদ আহমদ শহীদ, মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভী ১/৮০৫; তাহযীবুর রিয়াসাহ; আবু আব্দুল্লাহ আলক্বালয়ী ৯৫; উয়ূনুল আখবার; ইবনে কুতাইবা ১/৫৭

 

 

 

advertisement