এখতিয়ার বহির্ভূত বিষয়ের কামনা নয়
এখতিয়ারাধীন কল্যাণ অর্জনে সচেষ্ট হই
কুরআন তার অনুসারীদের যে গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতিগুলো মেনে চলার শিক্ষা প্রদান করে তন্মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুলনীতি হল, এখতিয়ার বহির্ভূত বিষয়ের আকাঙ্ক্ষা পোষণ না করে এখতিয়ারভুক্ত কল্যাণকর বিষয় অর্জনে সচেষ্ট হওয়া। সাধ্যাতীত বিষয়ের পেছনে না পড়ে সাধ্যাধীন কল্যাণ অর্জনে হিম্মতের পরিচয় দেওয়া। এখতিয়ার বহির্ভূত ক্ষেত্র অনেক। তন্মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করে কুরআন মাজীদে মুমিনদের সচেতন করা হয়েছে এভাবে-
وَ لَا تَتَمَنَّوْا مَا فَضَّلَ اللهُ بِهٖ بَعْضَكُمْ عَلٰی بَعْضٍ لِلرِّجَالِ نَصِیْبٌ مِّمَّا اكْتَسَبُوْا وَ لِلنِّسَآءِ نَصِیْبٌ مِّمَّا اكْتَسَبْنَ وَ سْـَٔلُوا اللهَ مِنْ فَضْلِهٖ اِنَّ اللهَ كَانَ بِكُلِّ شَیْءٍ عَلِیْمًا.
তোমরা এমন কিছুর আকাঙ্ক্ষা করো না, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের কতককে কতকের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। পুরুষ যা অর্জন করে তাতে তার অংশ থাকবে এবং নারী যা অর্জন করে তাতে তার অংশ থাকবে। তোমরা আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত। -সূরা নিসা (৪) : ৩২
আল্লাহ তাআলা তাঁর অপার হিকমতে মানুষের কতককে কতকের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেন। স্ত্রী-সন্তান-সন্ততি, ধন-সম্পদ-সহায়সম্পত্তি, কায়িকশক্তি-মেধাশক্তি, সুস্থতা-অসুস্থতা, রূপ-গুণ-সৌন্দর্য, আভিজাত্য, বংশীয় মর্যাদা, প্রভাব-প্রতিপত্তি প্রভৃতি নানা গুণ ও বৈশিষ্ট্যে আল্লাহ একের উপর অপরকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেন। কারো জন্য বিপুল পরিমাণ ধন-সম্পদ উপযোগী হয় কারো জন্য উপযোগী হয় দারিদ্র্য। কাউকে সুন্দর দেহসৌষ্ঠব দান করা হয়, কেউ হয় অপেক্ষাকৃত কম সৌন্দর্যের অধিকারী। কাউকে সন্তান-সন্ততির নিআমত দান করা হয়। আর কারো জন্য সন্তানের নিআমতের তুলনায় অন্য নিআমতের ফায়সালা করা হয়। ধনী-গরীব, সুন্দর-অসুন্দর, শক্তিমান-শক্তিহীন, সন্তানবান-সন্তানহীন, সুস্থ-অসুস্থ- প্রভৃতি সৃষ্টির এই তারতম্য ও বৈচিত্র্য আল্লাহ তাআলার হিকমত ও কুদরতের এক বিশেষ বহিঃপ্রকাশ।
ধনী-গরীবের এই পার্থক্য কেন? শক্তিমান-শক্তিহীনের এই তারতম্য কেন? এই বৈচিত্র্যের পেছনে মহান রাব্বুল আলামীনের কী হিকমত কার্যকর? এ নিয়ে বহু গুণীজন বহু কথা বলেছেন, ভাবনা ও রুচির পার্থক্যভেদে প্রত্যেকে আপন আপন আঙ্গিকে বিষয়টি বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছেন। এই বিশ্লেষণী আলোচনায় বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। এবং এগুলো অনেকের পক্ষে বেশ কার্যকর ও উপকারী বলেও প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হল, মহান রাব্বুল আলামীনের এই ফায়সালার পেছনের আসল রহস্য ও গুঢ়তত্ত্ব সম্পূর্ণরূপে উদ্ঘাটন করা কোনো মানুষের পক্ষেই সম্ভব নয়। মুমিন হিসেবে আমাদের জন্য তার প্রয়োজনও নেই। কারণ আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস রাখি, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সকল ফায়সালায় বান্দার জন্য কল্যাণ থাকে। তাই আল্লাহ তাআলার কোন্ কাজে কী হিকমত নিহিত আছে তা উদ্ঘাটনের পেছনে পড়ার প্রয়োজন নেই আমাদের। মুমিন হিকমত ও তত্ত্ব-রহস্যের গোলাম নয়, মুমিন আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের হুকুম ও ফায়সালার গোলাম। আল্লাহ তাআলার যেকোন ফায়সালা মন থেকে গ্রহণ করার এবং যেকোন হুকুম শিরোধার্য করার জন্য মুমিন সর্বাবস্থায় সর্বান্তকরণে প্রস্তুত থাকে।
এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে একটি ফায়সালা শুনিয়েছেন, এর পর কিছু নির্দেশনা প্রদান করেছেন। ফায়সালা হল, আল্লাহ তাআলা মানুষের কতককে কতকের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। শ্রেষ্ঠত্ব প্রদানকৃত বিষয়গুলোর মাঝে কিছু বিষয় এমন, যা অন্য কারো পক্ষে কিছুতেই অর্জন করা সম্ভব নয়। কারণ বিষয়টি তার এখতিয়ারেই নেই।
উদাহরণত, এক নারীকে আল্লাহ তাআলা স্বাভাবিক সৌন্দর্য দান করলেন, অপর এক নারীকে তিনি তুলনামূলক আরও রূপ-সৌন্দর্য দান করলেন। এখন অপেক্ষাকৃত অধিক রূপবতী নারীকে দেখে প্রথমোক্ত নারীর মনঃপীড়ায় ভোগা ঠিক নয় যে, ইস্, আমিও যদি তার মতো রূপবতী হতাম! কারণ স্পষ্টতই তার মতো রূপবতী হওয়া এখন তার পক্ষে সম্ভব নয়। এই দুরাশার পরিণতি কেবলই আশাভঙ্গের বেদনা! কাজেই অর্থহীন প্রত্যাশার এই বেড়াজালে জড়ানোর আদৌ কোনো মানে নেই।
তদ্রূপ কেউ উচ্চবংশে জন্মগ্রহণ করল। এখন সাধারণ বংশে জন্মগ্রহণকারী কারো জন্য উচ্চবংশীয়কে দেখে এই আকাঙ্ক্ষা করা ঠিক নয় যে, ‘ইস্ আমিও যদি উচ্চবংশের হতাম।’ কারণ এই আকাঙ্ক্ষার আদৌ কোনো ফায়েদা নেই। তাই এরূপ বিষয়ে আকাঙ্ক্ষা পোষণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। বলা হয়েছে-
‘তোমরা এমন কিছুর আকাঙ্ক্ষা করো না, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের কতককে কতকের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।’
শ্রেষ্ঠত্ব প্রদানকৃত বিষয়গুলোর মাঝে কিছু বিষয় আছে এমন, আল্লাহর তাওফীক হলে চেষ্টার মাধ্যমে যা (আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ) অর্জন করা সম্ভব। এখতিয়ারী এ বিষয়গুলো আবার দুই ধরনের : দ্বীনী ও দুনিয়াবী।
দ্বীনী বিষয়ে যদি আল্লাহ কাউকে অপরের তুলনায় শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে থাকেন, যেমন কাউকে আল্লাহ তাআলা অন্যের তুলনায় বেশি ইলম, আমল বা আখলাকের তাওফীক দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে নিয়ম হল, শ্রেষ্ঠত্ব প্রদানকৃত ব্যক্তিকে হিংসা করা যাবে না, কিন্তু ঈর্ষা করা যাবে। এবং এ গুণগুলো অর্জনের সম্ভাব্য চেষ্টা করা যাবে। কুরআন-সুন্নাহ্য় নেককার লোকদের দেখে অনুপ্রাণিত হওয়ার এবং নেক কাজে প্রতিযোগিতার মনোভাব পোষণ করতে বলা হয়েছে। এই আয়াতেও সেদিকে ইশারা আছে। বলা হয়েছে-
‘পুরুষ যা অর্জন করে তাতে তার অংশ থাকবে এবং নারী যা অর্জন করে তাতে তার অংশ থাকবে।’
অর্থাৎ নেক কাজ করে আখেরাতের পুঁজি সঞ্চয় করার ক্ষেত্রে মানুষকে এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে। নারী-পুরুষে কোনোরূপ পার্থক্য না করে প্রত্যেককে নেক কর্মের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যে ব্যক্তি যত বেশি নেক কাজ করবে সে তত বেশি সুফল ভোগ করবে।
শ্রেষ্ঠত্ব প্রদানকৃত বিষয়গুলোর মাঝে যেগুলো অর্জন করা সম্ভব নয়, যা সম্পূর্ণই মানুষের এখতিয়ার বহির্ভূত সেগুলো নিয়ে মাথা ঘামানো অনর্থক, তাই সে বিষয়ে জড়াতে বারণ করা হয়েছে। কিন্তু নেক আমল করে নিজেকে এগিয়ে নেওয়া প্রত্যেকের এখতিয়ারাধীন। তাই এ বিষয়ে মনোযোগী হতে বলা হয়েছে।
আর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদানকৃত বিষয়গুলোর মাঝে যেগুলো আল্লাহর তাওফীক হলে চেষ্টার মাধ্যমে (আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ) অর্জন করা সম্ভব, তা যদি দুনিয়াবী কোনো বিষয় হয়, যেমন আল্লাহ তাআলা কাউকে স্বাভাবিক ধন-সম্পদ দান করলেন, আরেকজনকে তার তুলনায় বেশি সম্পদ দান করলেন।
এ ক্ষেত্রে বিধান হল, অধিকতর সম্পদশালীকে দেখে অপেক্ষাকৃত কম সম্পদের অধিকারী অস্থিরতা বা হীনম্মন্যতায় ভোগা কিংবা হিংসার শিকার হওয়া ঠিক নয়। তবে শরীয়তসম্মত পন্থায় সম্পদ উপার্জন করা এবং সম্পদ বৃদ্ধির চেষ্টা করা জায়েয।
লক্ষণীয়, নিজস্ব প্রয়োজনে বা নিজের তাগিদে শরীয়তসম্মত পন্থায় সম্পদ উপার্জন ও সম্পদ বৃদ্ধির প্রয়াস এক বিষয় আর অন্যের সম্পদ দেখে অস্থিরতা, হীনম্মন্যতা বা হিংসার শিকার হওয়া আরেক বিষয়। এটি ভালোভাবে উপলব্ধি করা প্রয়োজন। স্বীকৃত পন্থায় সম্পদ উপার্জন করা এবং সম্পদ বৃদ্ধির চেষ্টা করার অনুমোদন রয়েছে শরীয়তে। কিন্তু অন্যের সম্পদ দেখে অস্থিরতায় ভোগা বা কামনাদগ্ধ হওয়ার সুযোগ নেই।
এই হল এই আয়াতের মৌলিক শিক্ষা। আয়াতে এর পর আরেকটি বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করে গভীর একটি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। বলা হয়েছে-
‘তোমরা আল্লাহর কাছে তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।’
আল্লাহ তাআলা যেহেতু সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত তাই তিনি জানেন- কার জন্য কী উপযোগী। তিনি প্রত্যেককে তার জন্য যা উপযোগী, সে অনুসারে অনুগ্রহ করে থাকেন। তাঁর অনুগ্রহও বৈচিত্র্যপূর্ণ। আল্লাহ কাউকে সন্তান না দিয়ে সম্পদ প্রদান করে অনুগ্রহ করেন। হয়তো তার কারণ এই যে, সন্তান না থাকার কষ্ট সে বরদাশত করতে পারলেও আর্থিক অভাব সে বরদাশত করতে পারবে না। কাউকে সম্পদ না দিয়ে সন্তান দান করে অনুগ্রহ করেন। কেননা সম্পদের তুলনায় সন্তান তার কাছে বেশি প্রিয়। কাউকে তিনি উভয় নিআমতই দান করেন। কারণ উভয় নিআমতের কদর হয়তো সে করতে পারবে। এভাবে নানা হিকমতে বিভিন্ন জনকে বিভিন্ন কিছু প্রদান করা হয়। এই হিকমত পূর্ণরূপে উপলব্ধি করা আমাদের পক্ষে সম্ভবও নয়। কাজেই অন্য কেউ কোনো বিষয়ে আমার চেয়ে এগিয়ে থাকলে সে বিষয়ে মনঃপীড়ায় ভুগে সেটি অর্জনের জন্য উঠে পড়ে লাগার প্রয়োজন নেই। আল্লাহ তাআলা আপন হিকমত অনুসারেই তাকে তা প্রদান করেছেন। আমার জন্য যা উপযোগী তা-ও তিনি আমাকে প্রদান করবেন। আল্লাহর অনুগ্রহের প্রকাশ নানাভাবে হয়ে থাকে। তাই অনির্দিষ্টভাবে আল্লাহর কাছে ‘অনুগ্রহ’ প্রার্থনা করাই উত্তম। আমি যে অনুগ্রহের উপযুক্ত হব, তা আল্লাহ আমাকে প্রদান করবেন।
তবে হাঁ, সংশ্লিষ্ট উসূল ও আদাবের প্রতি লক্ষ্য রেখে নির্দিষ্টভাবে কোনো কিছু প্রার্থনা করার অবকাশও আছে শরীয়তে। কুরআন-সুন্নাহ্র অন্যান্য বক্তব্য থেকে যা প্রমাণিত হয়। সেক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলা আপন হিকমত অনুসারে উপযুক্ত স্থানে তা প্রদান করে থাকেন। উপযুক্ত স্থান না হলে তা প্রদান না-ও করে থাকেন।
এ আয়াত থেকে আমরা যে শিক্ষাগুলো নিতে পারি-
ক. আল্লাহ তাআলা তাঁর অসীম হিকমতে মানুষের কতককে কতকের উপর নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে থাকেন। এগুলোর মাঝে কিছু আছে, যাতে মানুষের কোনোরূপ এখতিয়ার নেই। মানুষের কর্তব্য হল, আল্লাহ তাআলার এই ফায়সালাসমূহ মন থেকে মেনে নেওয়া। এখতিয়ার বহির্ভূত বিষয় কামনা না করা।
খ. এখতিয়ারভুক্ত দ্বীনী বিষয় অর্জনে সচেষ্ট হওয়া কাম্য, বরং তা প্রশংসনীয়।
গ. নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে এখতিয়ারভুক্ত দুনিয়াবী বিষয় অর্জনের চেষ্টা করা জায়েয।
ঘ. বান্দার জন্য কী উপযোগী তা আল্লাহ তাআলা সবচেয়ে ভালো জানেন। এবং আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ অতি বিস্তৃত ও বৈচিত্র্যপূর্ণ। সুতরাং নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে কাউকে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করা হলে তা নিয়ে অস্থিরতার শিকার না হয়ে আল্লাহর কাছে ‘অনুগ্রহ’ প্রার্থনা করা কর্তব্য। কারণ ‘উপযুক্ত ক্ষেত্রেই’ আল্লাহ ‘উপযুক্ত অনুগ্রহ’ করে থাকেন।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি সুন্দর ও অর্থবহ দুআ এ ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক। তিনি দুআ করতেন-
اَللهُمَّ ارْزُقْنِيْ حُبَّكَ وَحُبَّ مَنْ يَنْفَعُنِيْ حُبُّهُ عِنْدَكَ، اَللّٰهُمَّ مَا رَزَقْتَنِي مِمَّا أُحِبُّ فَاجْعَلْهُ قُوَّةً لِيْ فِيْمَا تُحِبُّ، اَللّٰهُمَّ وَمَا زَوَيْتَ عَنِّي مِمَّا أُحِبُّ فَاجْعَلْهُ فَرَاغًا لِيْ فِيْمَا تُحِبُّ.
قال الترمذي : حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ.
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমাকে আপনার মহব্বত দান করুন। এবং ঐসব লোকদের মহব্বত দান করুন, যাদের মহব্বত আমার জন্য আপনার কাছে উপকারী হয়।
হে আল্লাহ! আমার পছন্দনীয় যেসব জিনিস আপনি আমাকে দান করেছেন সেগুলোকে আপনার পছন্দনীয় কাজে আমার সহায়ক বানিয়ে দিন। আর আমার পছন্দের যেসব জিনিস আপনি (আমাকে প্রদান না করে) আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন, তা আমার মানসিক প্রশান্তি ও অবসরের উপায় বানিয়ে দিন, যার বদৌলতে আমি আপনার পছন্দনীয় কাজে নিরত হতে পারি। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৪৯১
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই প্রার্থনা থেকেও আমরা শিক্ষা পাই যে, আল্লাহ তাআলা আপন হিকমত ও অনুগ্রহে যাকে যা দিয়েছেন তা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত বিষয় আল্লাহর সন্তুষ্টির কাজে ব্যয়ের ফিকির করা কর্তব্য। আরো কর্তব্য হল, আল্লাহ তাআলার অসীম হিকমতে বান্দাকে যা প্রদান করা হয়নি তা নিয়ে অযথা ফিকির না করা। তা থেকে মনকে চিন্তামুক্ত রেখে কল্যাণকর কাজে মশগুল হওয়া। এটিই মুমিনের পক্ষে উত্তম। খোদ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও এই প্রার্থনা করতেন। আল্লাহ সকল মুমিন মুসলিমকে এই গুণ দান করুন।